নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জীবন থেকে এক একটি আনন্দ কুঁড়িয়ে নিতে চাই...

বৃষ্টি'র জল

সহজ সরল, সত্য স্বীকারোক্তিতে বিশ্বাসী। বর্তমানে আনন্দ খুঁজে নিয়ে সামনের দিনে এগিয়ে যাই।

বৃষ্টি'র জল › বিস্তারিত পোস্টঃ

অরণ্য-অরিত্রি - পর্ব ২

১৫ ই জানুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ১২:৪৯

অরণ্য এখন বেশ ব্যস্ত তার নতুন অফিসে। আগের মত সময় পায় না, ফলে অরিত্রির সাথেও খুব একটা দেখা হয়না ইদানিং। যে একটা দিন ছুটি পায় সেদিন বাসায় ঘুমোতেই পছন্দ করে সে। অরিত্রিও এখন ক্লাস ছাড়া আর বাসা থেকে বেরুতে পারেনা, তাই অরণ্য তার ছুটির দিনটা ঠিক করেছে রবিবার। যাতে অরিত্রির সাথে দেখা করা যায়।

সারা সপ্তাহ খাটুনির পর অরণ্য ঐ একটা ছুটির দিন ই সময় পায় ঘুমানোর বা নিজেকে সময় দিতে। তাই মাঝে মাঝে অরিত্রি ই চলে যায় অরণ্যের চিলে কোঠায়। কখনো ক্লাস ফাঁকি দিয়ে আবার কখনো ক্লাস শেষে দুপুরে। যাতে অরণ্য ঘুমোতে পারে দুপুর পর্যন্ত।

অরিত্রির খুব পছন্দ অরণ্যের বাসাটা। ছোটবেলা থেকেই অরিত্রির চিলেকোঠার খুব সখ। যদিও অফিসের কাছে ভাড়া কমে কোন বাসা না পেয়ে অগ্যতা এই চিলেকোঠায় ওঠা।
চিলেকোঠাটা পেয়ে যেন অরিত্রির সংসার করার স্বপ্ন পূরণ হয়ে গেল। এমনিতেও অরণ্যের টিভি, খাট, আলমারি, সোফা, ফ্রিজ এসব কিছুই অরিত্রির পছন্দে কেনা। টুকটুক করে সংসার সাজাচ্ছে অরণ্য। অরিত্রি'র পরিবারে যা যা আছে সব কিছুই অরণ্য কিনছে যাতে অরিত্রি'র পরিবার বলতে না পারে যে, "ছেলের তো কিছুই নাই! মেয়েকে রাখবে কিভাবে?"

অরণ্যের সখ ছিল এল ই ডি টিভি কেনার।
একদিন বিকেলে অরণ্যের ফোন আসলো। ঘুম ঘুম চোখে অরিত্রি বললো,
"হুম বলো, হঠাৎ এই সময়!"
অরণ্য উতশুক হয়ে জিজ্ঞেস করলো, "তোমাদের টিভি ২টা সনি'র না? আমি সনি'র শো রুম থেকে বেরুলাম, দারুণ দু'টা এল ই ডি মডেল দেখলাম। তোমাকে বাসায় গিয়ে ছবি পাঠাবো।"
অরিত্রি আস্তে করে বলে উঠল, "এল ই ডি!"
"কেন, এলইডি ই তো চলছে এখন, আমার তো খুব পছন্দ, কেন তুমি চাওনা?"
"আমার না এল ই ডি কে টিভি বলে মনে হয়না, শান্তি পাইনা দেখে। যেন কম্পিউটারের দিকে তাকিয়ে আছি"
"তবে কি পছন্দ তোমার" খুব ঠান্ডা ভালবাসা মাখা কণ্ঠে অরণ্য জানতে চাইলো।
"আমার তো সি আর টি পছন্দ, টিভি বলে মনে হয়" একটু হেসে খুব আদুরে হয়ে উত্তর দিল অরিত্রি।

কিছুদিন পর এক সন্ধ্যায় অরণ্য খুব খুশি খুশি হয়ে কল করলো অরিত্রি কে, " কি করছেন ম্যাডাম?"
"এই তো কাজ করছি ক্লাসের, অফিস শেষ? কোথায় এখন?"
"জি অফিস শেষ, একটা সুখবর, আপনার সি আর টি কেনা হয়ে গেছে ম্যাডাম"
খুব অবাক হয়ে, ঠোঁটে হাসি নিয়ে অরিত্রি বললো, " সত্যি! বলনিতো কাল রাতে যাবে যে আজ। আমি দেখবো!"
অরণ্য বললো, "হুট করেই কিনে ফেললাম, বাসায় গিয়ে ছবি দিচ্ছি। তবে ম্যাডাম আপনাকে আমি সি আর টি কিনে দিয়েছি ঠিক কিন্তু আমাকে আপনি এল ই ডি কিনে দিতে হবে। মনে আছে তো, বাসা ভাড়া, সব ধরণের বিল আমি দেব। এবং সংসারের সব ফার্নিচার আমি কিনবো আর সব ইলেক্ট্রনিক্স আপনি, আর বাজার খরচও আপনার? সো যখন জব করবে আমার এল ই ডি কিনে দিবে।"
খুব হেসে অরিত্রি বললো, " জি জনাব মনে আছে সব। আপনাকে ধন্যবাদ সি আর টি কেনার জন্য, এলইডি পাওনা রইলেন"

ভালই কাটছে সময় তাদের, অরিত্রি এখনো রান্নাবান্না ভাল পারেনা বলে, যেদিন সকালে চিলে কোঠায় যায় অরিত্রি, সেদিন সকালের নাস্তা এবং দুপুরের খাবার অরণ্যই তৈরি করে অথবা বাইরে থেকে নিয়ে আসে। টিভি দেখতে দেখতে খায় তারা, খাবার শেষে ঘর গোছানোর কাজে অরণ্য কে সাহায্য করে অরিত্রি। দুপুরে খেয়ে কখনো ঘুমায় কখনো বা দু'জন বেরিয়ে যায় ঘুরতে।

শীতে পা এ ঠান্ডা লাগবে বলে বাসায় পরতে অরিত্রি'র জন্যও এক জোড়া জুতো কিনলো অরণ্য। চিলেকোঠায় এলে একদিন, অরিত্রিকে জুতো জোড়া বের করে দিল অরণ্য। মনে মনে খুব খুশি হয়েছিল অরিত্রি। নিজেকে রাজকুমারি মনে হল তার।
অরণ্য তার অনুভূতিগুলো, মনের কথা গুলো কখনোই প্রকাশ করেনা, করতে পারেনা। খুব চাপা, কম কথা বলা মানুষ।
সে তার কাজের মধ্য দিয়েই অরিত্রি'র প্রতি তার ভালবাসা প্রকাশ করার চেষ্টা করে।
এমনি করেই সামনের দিনগুলোতে একসাথে ভাল থাকতে চায় দু'জন।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ১৫ ই জানুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ২:৩২

একজন সত্যিকার হিমু বলেছেন: তারা ভাল থাকবে এই কামনা করি ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.