নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জীবন থেকে এক একটি আনন্দ কুঁড়িয়ে নিতে চাই...

বৃষ্টি'র জল

সহজ সরল, সত্য স্বীকারোক্তিতে বিশ্বাসী। বর্তমানে আনন্দ খুঁজে নিয়ে সামনের দিনে এগিয়ে যাই।

বৃষ্টি'র জল › বিস্তারিত পোস্টঃ

অরিত্রির চিঠি

১৯ শে মে, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:৪৭

কেমন আছো তুমি অরণ্য?
কেমন কাটছে তোমার এই জীবনের দিন? আজ হঠাৎ তোমায় খুব মনে পড়ছে জানো? খুব ইচ্ছে হচ্ছে তোমায় কিছুটা ছুঁয়ে দেই।
তোমার মনে আছে, শেষের দিকের সময়গুলোতে তোমাকে ছুঁ'লে কি ভীষণ বিরক্ত হতে তুমি?
তোমার ঠোঁট, কাঁধ, আর তোমার গুল্টুস পেট টা, ধরলেই কেমন রাগ হতে, বাব্বা! বলতে, "পেট ধরলে ভেতরে নাকি গ্যাস বেড়ে যায়", কি উদ্ভট কথাগো! আজো আমার তা বোধগম্য হলনা।

বাইরে কোথাও গেলে তোমার হাতটা যদি ধরতাম, ছাড়িয়ে নিতে।
মনে আছে? এক বার সওরোয়্যার্দি উদ্যানের কালি মন্দিরের ওখানে শীতের সন্ধ্যায়, তুমি পকেটের ভেতর দু' হাত ঢুকিয়ে হাঁটছিলে আর তোমার বাম হাত টা জড়িয়ে ধরেছিলাম বলে কি ভীষণ রাগ হয়েছিলে তুমি? খুব বিরক্ত হয়েছিলে, দূরে সরিয়ে দিয়েছিলে আমায়। তারপর থেকে আর কখনো তোমায় ছুঁইনি। যখন তোমার ইচ্ছে হয়েছিল, তুমি এগিয়ে এসেছিলে, ছুঁয়েছিলে আমায়। কিন্তু আমি, ইচ্ছে করলেও তোমাকে কখনো ছুঁইনি, পাছে তুমি বিরক্ত হও।
আচ্ছা, তুমি কি তা বুঝতে পেরেছিলে? মনে হয় পাওনি। খুব চাইতাম জানো, তুমি একবার উপলব্ধি কর যে, সেদিনের পর থেকে তোমাকে আর আমি ছুঁইনা।

আচ্ছা, এখন হাঁটার সময় কি করো? বউ কে পাশে নিয়ে হাঁটো? নাকি প্রথম দিকের কোন পহেলা বৈশাখে পুরো একটা মেলা যেমন আমার কাঁধে এক হাত রেখে গল্প করতে করতে হেঁটেছিলে ওমন করে তোমরা দু'জন গল্প করে হেঁটে যাও?
প্রথম বছরের পর থেকে আমার সাথে হাঁটার সময় প্রতিবার তুমি আমায় ফেলে আগে আগে হাঁটতে। আর আমি তোমার পেছন পেছন অনুসরণ করে তোমার হাঁটার সাথে তাল মিলিয়ে নিতে হাঁপিয়ে যেতাম। নির্বাক ভাবে ভূতের মত হেঁটে যেতাম আমরা। তোমার চাওয়া ছিল, আমিও যেন দ্রুত হাঁটার অভ্যেস করি।
এখন কিন্তু আমি ভালই দ্রুত হাঁটতে পারি জানো তো?

অরণ্য, কি ভীষণ তোমায় ছুঁতে ইচ্ছে হত তখন বলো! কেমন এক উত্তাল ঢেউ ছিল মনে। সারাটিক্ষণ পাগলের মত তোমায় ভাবতাম, ভালবাসতাম। কেমন চাইতাম তোমায়। কি ভীষণ বিশ্বাস করেছিলাম তোমাকে। কিশোরী তখন আমি কত পাগল ছিলামগো!

তুমি আমায় এমন বানিয়ে দিলে যে, এখন পুরুষের শরীর দেখলে ঘেন্না লাগে। পুরুষ কেউ আমায় ছুঁবে ভাবতেই গা গুলিয়ে ওঠে, কাছে আসলেই অস্বস্তিতে মরে যাই আমি। জানো? মনের সেই উত্তাল ঢেউ গুলো আজ কোথায় যেন হারিয়ে গেছে। এখন আর ইচ্ছে হয়না কারো হাত ধরে হেঁটে চলি। কেউ আমার কাঁধে হাত রেখে গল্প করে হেঁটে যাক ভাবতে বিচ্ছ্রি লাগে এখন।

কি সুন্দর অস্বাভাবিক এক জীবন তুমি দিলে আমায় অরণ্য।
কত অদ্ভুত ভাবে নিজের সব কিছু সাজিয়ে নিলে তুমি, সংসার, সঙ্গি। সন্তানের জনকও হলে। কি দারুণ নাম রাখলে! কত নিষ্ঠুর তুমি, আমাকে আবার পইপই করে এসব কিছু জানালে।

তখন আমার বুকে একটুও পাথর ভাঙ্গেনি বিশ্বাস কর। বরং তোমার নিষ্ঠুরতা ভেবে আর তোমার সুখি জীবনের কথা শুনে হাসি এসেছিল খুব। কতটা স্বার্থপর তুমি!
এক সময় কত কি ইচ্ছে ছিল, স্বপ্ন ছিল জীবন নিয়ে, তোমায় নিয়ে। আর এখন, এই জীবনে কোন চাওয়া নেই, ইচ্ছে নেই। বাস্তবতার সাথে তাল মিলিয়ে শুধু চলছি। নিজের উপর আরোপিত দায়িত্ব গুলো এড়াতে পারবোনা বলে লড়ছি।

তবুও বলব, বেশ আছি। এখনো নিজের মনের রাজত্যে চলছি। কাউকে ঠকাচ্ছি না, লুকোচুরি করছি না, যখন ইচ্ছে তোমায় ভাবছি, যখন ইচ্ছে ঘৃণা করছি। কিন্তু মাঝে মাঝে হয় কি, পুরোনো সেই নিজেকে খুব মনে পড়ে খুব কষ্ট হয়।

তুমি ভাল থাকো অরণ্য, নিজের সংসার, সন্তান আর ভবিষ্যৎ নিয়ে। যে সুখের জন্য চলে গেলে সেই সুখ যেন তুমি খুঁজে পাও অরণ্য।

-ইতি
অরিত্রি

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১৯ শে মে, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:৫৫

কামাল১৮ বলেছেন: যেকোন স্মৃতি হোক সেটা শুখের বা দুঃখের মধুর।

২| ১৯ শে মে, ২০২১ রাত ৯:২৬

ঢুকিচেপা বলেছেন: “ তুমি ভাল থাকো অরণ্য, নিজের সংসার, সন্তান আর ভবিষ্যৎ নিয়ে। যে সুখের জন্য চলে গেলে সেই সুখ যেন তুমি খুঁজে পাও অরণ্য।”
-আমিন

৩| ১৯ শে মে, ২০২১ রাত ১১:০৩

রাজীব নুর বলেছেন: হাহাকার ভরা চিঠি। কষ্টের চিঠি।

৪| ২০ শে মে, ২০২১ রাত ১:১৭

মাহমুদুর রহমান সুজন বলেছেন: চিঠি বেশ হয়েছে। শুভকামনা রইল।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.