নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বুনোগান

বুনোগান › বিস্তারিত পোস্টঃ

আদর্শিক সততার নায়ক ভাষা সৈনিক আবদুল মতিন

১০ ই অক্টোবর, ২০১৪ সকাল ৯:১২

ভাষা সৈনিক আব্দুল মতিনের জীবনাবসান হল। সুদীর্ঘ্য ৯৪ বছর তিনি বেঁচেছিলেন। বেঁচে ছিলেন এই সমাজের যত কুলষতা, বৈষম্য, নির্যাতনকারিদের বিরুদ্ধে আজীবন সংগ্রামের মধ্য দিয়ে। তিনি ভালবাসতেন মানুষকে। তাই মানুষের বিরুদ্ধে মুনাফালোভী শাসকশ্রেণীর যে কোন চক্রান্তের তিনি ছিলেন অগ্রগামী প্রতিবাদকারী। স্বভাবতই দর্শনগত ভাবে তিনি ছিলেন নাস্তিক। কিন্তু তিনি ছিলেন অসাম্প্রদায়ীক। শুধু ধর্মীয় বৈষম্যই নয়, তিনি ছিলেন জাতি, ধর্ম, বর্ণ, লিঙ্গ সকল বৈষম্যের বিরুদ্ধে সোচ্চার। তিনি কখনই একপেশে তথাকথিত মুক্তমনাদের মত ধর্ম বিদ্বেষী ছিলেন না। বরং তিনি ছিলেন বিজ্ঞান মনষ্ক। তিনি সামাজিক বিজ্ঞান, ঐতিহাসিক বস্তুবাদের চর্চা করেছেন, মানুষকে তিনি বিজ্ঞানের আলোয় শিক্ষিত করতে চেয়েছেন, যে চর্চায় অধিবিদ্যাবাদ আপনিতেই ঝরে পরে। তাই তিনি কখনই শোষিত জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হননি। তিনি ভাষা আন্দোলন করেছেন, মাতৃভাষার মর্যাদা চেয়েছেন, তাই বাংলাদেশের অন্যান্য শতাধিক ভাষার মর্যাদাকেও তিনি উর্দ্ধে তুলে ধরেছেন। তিনি শোষিত মানুষদের অর্থনৈতিক রাজনৈতিক মুক্তি চেয়েছেন কিন্তু শোষিত মানুষদের হিন্দু, মোসলমান, বাঙালি, বিহারি, চাকমা, মারমা, আর্য্য, দ্রাবিড়, নারী, পুরুষ ইত্যাদি ভাগে বিভক্ত করেননি। তাই তার মুক্তিযুদ্ধ ছিল সার্বিক মানুষের মুক্তিযুদ্ধ, শুধুমাত্র বাঙালি জাতির আংশিক মুক্তিযুদ্ধ নয়। তাই শোষক শ্রেণীর বর্তমান রাষ্ট্র তাঁকে ধারণ করতে পারে না। তাঁর আদর্শিক সততার কাছে মাথা নত করলেও রাষ্ট্রীয় মর্যাদা তাঁকে দিতে পারে না। তাঁর মর্যাদা এর থেকে অনেক বড়। তিনি পেয়েছেন জনগণের মর্যাদা। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি নাস্তিক ছিলেন কিন্তু হিপোক্রেট ছিলেন না। তাই তিনি তাঁর মরদেহ বিজ্ঞানের উদ্দেশ্যে দান করে গেছেন। জনগণ তাঁর এই দান সশ্রদ্ধ চিত্তে গ্রহণ করেছে। তাঁর অবদান যেমন সাধারণ মানুষের কাছে চির অম্লান হয়ে থাকবে, তেমনি তাঁর কাছে প্রগতিশীলদের, মুক্তমনাদের শিক্ষণীয় রয়ে গেছে অনেক কিছু।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.