নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বুনোগান

বুনোগান › বিস্তারিত পোস্টঃ

মানুষের জৈবিক আচরণ: প্রবৃত্তিগত ব্যক্তি আচরণ

২২ শে মার্চ, ২০২৩ দুপুর ১২:৪৮



প্রানী জগতের সবারই জৈবিক প্রবৃত্তি রয়েছে। এই প্রবৃত্তির তাড়নায় তাদের আচরণ প্রকাশ পায়। ক্ষুধার তাড়নায় তারা খাদ্য অন্বেষণ করে।। ভয়ের কারণে তারা শিকারী থেকে থেকে পালিয়ে বেড়ায়। অন্ধকার, অজানা জায়গা, অজানা শব্দে তারা ভয় পায়, কারণ সেখানে শিকারি ওঁত পেতে থাকতে পারে। এজন্য পরিচিত পরিবেশে ও অনেকের মাঝে থাকতে তারা স্বাচ্ছন্দ বোধ করে। শিকারি প্রাণী শিকারকে আক্রমণ করবে এটা তার স্বাভাবিক তাড়না। নিরীহ প্রাণী শিকারি প্রাণী দেখে পালিয়ে যাবে এটা নিরীহ প্রাণীর স্বাভাবিক তাড়না। আবার কোণঠাসা হলে নিরীহ প্রাণীও বাঁচার তাগিদে প্রতি আক্রমণ করে থাকে।
প্রাণীদের রয়েছে যৌন তাড়না। তাই সঙ্গীর সাথে মিলনের আকাংখায় তারা উন্মুখ থাকে। তাদের রয়েছে মাতৃত্ববোধ। তাই সন্তান লালন পালনে তারা যত্নশীল। সন্তানের নিরাপত্তার জন্য তারা আশ্রয়ের সন্ধান করে। এই সকল প্রবৃত্তিই তাদের আচরণ তৈরি করে দেয়।
প্রবৃত্তির বাইরে তারা কোন আচরণ করতে পারে না। কেউ যদি খাদ্যের অন্বেষন না করে তাহলে বুঝতে হবে সে অসুস্থ। বেশীর ভাগ প্রাণীরই যৌন সঙ্গম করার কিছু সময় চক্র রয়েছে, এই সময় চক্রের বাইরে তারা যৌন কর্ম করতে পারে না। আক্রান্ত হলে অবশ্যই ভয়ে পালাবে অথবা প্রতি আক্রমণ করবে। কিন্তু শিকারী দেখলেই নিরীহ প্রাণিরা আক্রমণ করতে এগিয়ে যাবে এই আচরণ তারা করতে পারে না। প্রবৃত্তিগত আচরণের কারণেই বিবর্তন এগিয়ে গেছে।
প্রতিকূল পরিবেশে একটি ভাইরাসে জীবনের কোন আচরণ থাকে না। কিন্তু অনুকূল পরিবেশে খাদ্য অন্বেষণে তারা বাহকের কোষে প্রবেশ করে এবং সেখানে বংশ বিস্তার করে। এটা তার চেতন অবস্থার আচরণ। ছায়ায় থাকা কোন উদ্ভিদ আলোর দিকে বেঁকে যাবে এটাও চেতন আচরণ। দূরে থাকা কোন শিকারকে শিকার করতে একটি সিংহ কোন কোন পথে কোন কৌশলে এগিয়ে যাবে এটা প্রচ্ছন্ন সচেতন আচরণ। শিকার দেখলে সিংহরা দল বেধে এগিয়ে যাবে এই প্রাক ধারণা আমরা করতে পারি। কিন্তু একটি সিংহ কোন পথে এগিয়ে যাবে এটার প্রাক ধরণা আমরা করতে পারি না।
মানুষের ক্ষেত্রেও এইসব প্রবৃত্তিগত জৈবিক আচরণ রয়েছে। এগুলো স্বাভাবিক ও মৌলিক আচরণ। জৈবিক প্রবৃত্তিগত আচরণ যতই আদিম মনে হউক না কেন আধুনিক মানব সমাজে এই সমস্ত আচরণ একই ভাবে উপস্থিত রয়েছে। খাদ্য অন্বেষণের জৈবিক তাড়না মানুষকে সক্রিয় রাখে। সে শিকারে বের হয়, ফল-মূল সংগ্রহে জঙ্গল চষে বেড়ায়, সে পশু পালন ও চাষাবাষ শিখে নেয়। কায়িক শ্রম লাঘব করার জন্য সে ছোট বড়, সাধারণ ও জটিল যন্ত্রপাতি বানানোর কৌশল আয়ত্ব করে। সে খাবার রান্না করা শিখে, শিখে আগুনের ব্যবহার। মৃৎ শিল্পে তারা দক্ষ হয়ে উঠে।
জৈবিক প্রবৃত্তিগত যৌন তাড়না মানুষের বংশ বৃদ্ধি ঘটায়। আবার যৌন তাড়না মানুষের সাথে মানুষের বিভিন্ন সম্পর্ক তৈরি করে। যৌনতাকে ঘিরে মানুষের মধ্যে বিভিন্ন আবেগগত আচরণ দেখা যায়। মনুষ্য প্রজাতির সবচেয়ে নিকটতম আত্মীয় গরিলা ও শিম্পাঞ্জীদের যৌন আচরণের সাথে মানুষের যৌন আচরণের মিল রয়েছে। শিম্পাঞ্জীরা যৌন মিলনের ক্ষেত্রে বহুমুখিগামী। পুরুষেরা মনে করে নারী মাত্রই তার হেরেম ভুক্ত। নারীদের অন্য পুরুষদের হাত থেকে রক্ষা করা, তাদের সাথে যৌন মিলন করা, তাদের সন্তুষ্ট রাখার অধিকার একমাত্র তাদেরই রয়েছে। এ নিয়ে অন্য পুরুষদের প্রতি হিংসা, প্রতিযোগিতা, মারামারি লেগেই রয়েছে। তবে আলফা পুরুষের শক্তি ও আধিপত্য অন্যদের সংযত থাকতে বাধ্য করে। নারীদের মধ্যেও উন্নত বীজের পুরুষদের নিয়ে হিংসা ও দ্বন্দ্ব রয়েছে। এক্ষেত্রে আলফা নারীরা সর্বোচ্চ সুবিধা লাভ করে থাকে। সকল নারীর পুরুষ সঙ্গী নির্বাচনে পছন্দ অপছন্দের ব্যপার রয়েছে। কিন্তু পুরুষদের ক্ষেত্রে পছন্দ অপছন্দের ব্যপার নেই। নারীরা মূলত সন্তান লালন পালনের দিকেই বেশী মনোযোগী হয়ে থাকে। গরিলা বা বন মানুষেরা অবশ্য অবাধ যৌনতায় বিশ্বাসী। হিংসা পরানয়তা এদের মধ্যে নাই বললেই চলে। যে কোন আন্ত কলহ তারা যৌনতা দিয়ে মিটমাট করে নেয়। অর্থাৎ যৌন সম্পর্ক এখানে শান্তি স্থাপনের একটি কার্য্যকর উপায় হিসেবে দেখা যায়। এই যৌন প্রবৃত্তির জন্যই দুই দল শিম্পাঞ্জীদের মধ্যে টেরিটরি নিয়ে যুদ্ধ বেঁধে যায়। এক দলের পুরুষেরা চায় না অন্য দলের পুরুষেরা তাদের উপর আধিপত্য করুক। এক দল হেরে গেলে তাদের সকল পুরূষদের তাড়িয়ে দিয়ে নারীদের রেখে দেয়া হয়। উপরোক্ত যৌন প্রবৃত্তি মানুষের মধ্যেও রয়েছে। আধুনিক সামাজেও পরিবার বা কোন প্রতিষ্ঠানে নারীদের প্রতি পুরুষদের আচরণ বেশ নমনীয়। সকল ক্ষেত্রেই পুরুষেরা নারীদের নিজের অধিকারভুক্ত মনে করে। যৌন হিংসা সকলের মধ্যে খুবই প্রকট। কোন স্বামি বা স্ত্রী পর পুরুষ বা নারীর প্রতি আগ্রহ সহ্য করতে পারে না এবং ভীষণ প্রতিহিংসা পরায়ণ হয়ে উঠে। এখনো অনার কিলিং অনেক সমাজে পাকাপোক্ত ভাবে রয়েছে। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কিছু কিছু আলফা পুরুষ/নারীরা আধিপত্য কায়েম করার জন্য ষরযন্ত্রে মত্ত। সমাজ নেতা বা রাজনৈতিক নেতার মধ্যেও আধিপত্য বজার রাখার প্রবৃত্তি রয়েছে। বিয়ে যত না ব্যক্তিগত, তারচেয়ে পারিবারিক। দুই পরিবার বা দুই গোষ্ঠির মধ্যে শান্তি স্থাপনের জন্য বিয়ে এখনো কার্য্যকর সমাধান। বিয়ে একটি পারিবারিক সন্মানের বিষয়। যুদ্ধ বিগ্রহ হলে পরাজিত দেশের নারীদের ধর্ষন একটি স্বাভাবিক ব্যপার। মানুষের মধ্যে এইসব জৈবিক প্রবৃত্তি রয়েছে বলেই সমাজে এর বিভিন্ন প্রতিফলন ঘটছে। এই সমস্ত জৈবিক প্রবৃত্তি ভিন্ন হলে মানুষের সামাজিক আচরণও ভিন্ন হতো।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২২ শে মার্চ, ২০২৩ দুপুর ১:১৮

হাসান কালবৈশাখী বলেছেন:

মানুষ বাদে বেশিরভাগ প্রাণী বছরে একবারেই সঙ্গম করে
বানর শিম্পাঞ্জি বছরে একবারই সঙ্গম করে।
কুকুরও তাই বছরে একবার ভাদ্র মাসে।
ব্যাঙ সারা জীবনে একবার।

২| ২২ শে মার্চ, ২০২৩ বিকাল ৩:১৮

শাওন আহমাদ বলেছেন: বাহ

৩| ২২ শে মার্চ, ২০২৩ বিকাল ৩:৪১

নাহল তরকারি বলেছেন: বিয়ে কোন সময় সম্মানের জিনিস হতে পারে না। বিয়ে হচ্ছে অসহ্য যন্ত্রণা।

৪| ২২ শে মার্চ, ২০২৩ বিকাল ৫:৩৪

রাজীব নুর বলেছেন: এসব আমি বুঝি কম।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.