নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বুনোগান

বুনোগান › বিস্তারিত পোস্টঃ

মানব ইন্দ্রিয় এর ক্ষমতা ও বাস্তব জগত ঃ অস্তিত্ব অনস্তিত্বের প্রশ্ন

২৭ শে মার্চ, ২০২৩ দুপুর ১২:২৩



প্রকৃতিতে যা কিছুর অস্তিত্ব রয়েছে তার সবটাই বাস্তব জগত। মানুষও প্রকৃতির অংশ। প্রকৃতি তার নিজের সম্পর্কে নির্বিকার। কিন্তু একমাত্র মানুষই প্রকৃতির রহস্যকে ভেদ করার ক্ষমতা রাখে। এ যেন প্রকৃতিই মানুষের মাধ্যমে নিজেকে চিনতে চেষ্টা করছে।
বাইরের জগতকে চেনার জন্য অন্যান্য প্রাণীর মত মানুষেরও কয়েকটি সংবেদনশীল ইন্দ্রিয় রয়েছে। দেখার জন্য রয়েছে চোখ, শুনার জন্য রয়েছে কান, অনুভবের জন্য রয়েছে ত্বক ইত্যাদি। কিন্তু প্রশ্ন হোল এইসব ইন্দ্রিয় দিয়ে বাস্তব জগতের কতটুকু আর জানতে পারি? তবে যা ই জানতে পারি না কেন তার সবই এই ইন্দ্রিয়ের মাধ্যমেই জানতে হয়। তাহলে প্রশ্ন জাগে বাস্তব জগতে ইন্দ্রিয় গ্রাহ্যতার বাইরেও কি আরও কিছু তথ্য রয়ে গেছে যা আমাদের ইন্দ্রিয়ের সক্ষমতার বাইরে?
প্রথমে এই প্রশ্নটা নিয়েই আলোচনা করা যাক। মানুষ ও অন্যান্য জীবের ইন্দ্রিয় লক্ষ লক্ষ বছর ধরে বিবর্তনের ফল। প্রকৃতিতে যা কিছু রয়েছে সেগুলোর অন্তত প্রাথমিক এবং জীবের বেঁচে থাকার জন্য যতটুকু প্রয়োজন ততটুকু প্রভাব ধরতে পারার ক্ষমতা এদের রয়েছে। প্রকৃতিতে যা কিছু তার সবগুলোই পরস্পর ক্রিয়া প্রতিক্রিয়াশীল। এই ক্রিয়া প্রতিক্রিয়ার জন্যই অপ্রত্যক্ষ কোন কিছুর অস্তিত্বও শেষ পর্যন্ত অদক্ষ ইন্দ্রিয়ের নিকট ধরা পরে যায়।
এখন দেখা যাক মানুষ কিভাবে বাস্তব জগত সম্পর্কে অবহিত হয়। এক্ষেত্রে সর্ব প্রধান ভূমিকা পালন করে মানুষের দর্শন ইন্দ্রিয়। বাইরের জগতের যে কোন বস্তু থেকে আলো প্রতিফলিত হয়ে যদি মানুষের চোখে এসে পৌছায় তাহলে তার একটি প্রতিরূপ মস্তিষ্কের নিউরনে তথ্য হিসেবে সঞ্চিত হয়। এখানে আলো একটি বাস্তব অস্তিত্ব এবং আলো শুধুমাত্র অস্তিত্ব-মান বস্তু থেকেই প্রতিফলিত বা উৎসারিত হতে পারে। সুতরাং চোখ যা দেখে তার সবই অস্তিত্ব-মান বাস্তব বস্তুর তথ্য। খালি চোখে যা দেখা যায় না সেগুলো যন্ত্রের সাহায্যে বিবর্ধিত করে আমরা দেখার জগতকে আরও বড় করতে পারি। আবার কিছু বস্তু যেগুলো আলো প্রতিফলিত করে না সেগুলোকেও পরোক্ষভাবে দেখা সম্ভব। যেমন ব্ল্যাক হোল আলো প্রতিফলিত না করলেও তার পেছনের আলোগুলোকে দেখে আমরা তার অস্তিত্ব ও অবয়ব বুঝতে পারি। সুতরাং দর্শন ইন্দ্রিয়ের মাধ্যমে আমরা প্রথমত বাইরের জগতের আলো আঁধারের তথ্য সংগ্রহ করতে পারি। আলোর সাতটি স্পেক্টার্ম এর ভেতরের বিভিন্ন তরঙ্গ রঙ হিসেবে দেখতে পাই। শুধু রঙ দেখে তরঙ্গের ধারণা আমরা পাই না। আলো ছায়া ও প্রতিফলিত রঙের পার্থক্য থেকে আমরা বাইরের বস্তুর আকার ও ত্রিমাত্রিক ছবিও পেয়ে থাকি। দুই চোখের দূরত্বের জন্য আমরা বস্তুটির পার্সপেক্টিভ ছবিও পেয়ে থাকি। ফলে বস্তুগুলো পরস্পর যেভাবে সামনে ও পিছনে রয়েছে তার ধারনাও আমরা প্রতিফলিত ছবি থেকে পেয়ে থাকি। কিন্তু দর্শন ইন্দ্রিয় প্রতি মুহুর্তে যে প্রতিচ্ছবি মস্তিষ্কে প্রেরণ করে তার সবই স্থির চিত্র। প্রতিটি মুহুর্তে চোখে যে আলো এসে পড়ছে আমরা এক এক বারে শুধু ততটুকুই দেখি। গতিশীল বস্তুর প্রতিটি মুহুর্তের ছবি আমরা পৃথক পৃথক ফ্রেমে স্থির চিত্র হিসেবেই দেখতে পাই। বস্তুর গতিশীলতা বুঝার জন্য আমাদের মস্তিষ্কের স্মৃতি ও বিশ্লেষণ ক্ষমতার শরণাপন্ন হতে হয়। এমন কি একবার দেখা বস্তুটি দ্বিতীয়বার দেখে চিনতে হলেও মস্তিষ্কের স্মৃতি ও বিশ্লেষণ ক্ষমতার উপরই নির্ভর করতে হয়। মস্তিষ্কের স্মৃতিপটে জমতে থাকা বস্তু বা ঘটনাগুলোকে পরস্পরের সাথে তুলনা করে একই ধরণের বস্তু বা ঘটনাবলীকে আমরা চিনতে পারি এবং নতুন আসা তথ্যগুলোকেও স্মৃতিপটের রাখা পূর্বের তথ্যের সাথে তুলনা করে চেনার চেষ্টা করা হয়। এভাবে দর্শন ইন্দ্রিয়ের মাধ্যমে আলোর সাহায্যে যতটুকু তথ্য পাওয়া সম্ভব আমরা শুধুমাত্র ততটুকু তথ্য সম্পর্কেই জানতে পারি। এগুলোর সবই স্থির অবস্থার তথ্য। গতিশীল বস্তুর গতি বা পরিবর্তন, স্থানের পরিবর্তন বা সময়ের পরিবর্তন আমরা দর্শন ইন্দ্রিয়ের স্থির চিত্র থেকে বুঝতে পারি না। মস্তিষ্কের স্মৃতি ও ফ্রেমগুলোকে জোড়া লাগানোর ক্ষমতা থেকে আমরা গতি, পরিবর্তন, পরিসর বা সময়ের ধারণা লাভ করি। দেখার মাধ্যমে দৃশ্যমান বস্তুসমূহের শুধুমাত্র অস্তিত্ব সম্পর্কে নিশ্চিন্ত হওয়া যায়। বস্তুর অন্যান্য গুণাবলী জানতে হলে মস্তিষ্কের স্মৃতি ক্ষমতা ও বিশ্লেষণ ক্ষমতার প্রয়োজন পরে।
দর্শন ইন্দ্রিয়ের মত শ্রবণ ইন্দ্রিয়ের মাধ্যমেও বাইরের বস্তুর অস্তিত্ব জানতে পারি। বস্তুর কম্পন বা প্রতিফলিত কম্পন তরঙ্গ শ্রবণ ইন্দ্রিয়ের মাধ্যমে মস্তিষ্ক শব্দ হিসেবে তথ্য সংগ্রহ করে। এখানে শব্দ বাইরের জগতের বস্তুর অস্তিত্বকেই জানান দেয়। এভাবে ত্বকের স্পর্শের অনুভূতি থেকেও বাইরের বস্তুর অস্তিত্ব জানা যায়, জানা যায় বস্তুর তাপীয় অবস্থা। পেশীর ভার বহন ক্ষমতা থেকে বস্তুর ভর সম্পর্কেও আমরা জানতে পারি।
এভাবে ইন্দ্রিয়ের দ্বারা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে বাইরের জগত তথা এই বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ডের যা কিছু তথ্য আমরা পাই তার সবই বস্তু ও বস্তুর সাথে সম্পর্কিত শক্তির তথ্য। ইন্দ্রিয় দ্বারা জানার জগতে বস্তু এবং সম্পর্কিত কয়েকটি শক্তি ছাড়া অন্য আর কিছুর অস্তিত্ব নাই। মহাবিশ্বে অন্য কোন কিছুর অস্তিত্ব যদি থাকে তাহলে তাকে অবশ্যই বস্তু ও তার সাথে সম্পর্কিত শক্তির সাথে ক্রিয়া প্রতিক্রিয়ায় জড়াতে হবে এবং একমাত্র তাহলেই সেই অস্তিত্ব মহা বিশ্বের বস্তু জগত ও জীব জগতে কোন প্রভাব বিস্তার করতে পারবে এবং আমরাও সেই অস্তিত্ব সম্পর্কে জানতে পারব। আর বস্তু জগত বা জীব জগতের উপর কোন অস্তিত্ব যদি ক্রিয়া না-ই করে থাকে তাহলে সেই অস্তিত্ব অস্তিত্বহীনতারই সমান।

মন্তব্য ৭ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৭) মন্তব্য লিখুন

১| ২৭ শে মার্চ, ২০২৩ রাত ১০:৩৪

রাজীব নুর বলেছেন: পড়লাম অথচ কিছুই বুঝতে পারলাম না।

২৮ শে মার্চ, ২০২৩ সকাল ১০:০২

বুনোগান বলেছেন: দুঃখিত। আমারই সীমাবদ্ধতা।

২| ২৮ শে মার্চ, ২০২৩ ভোর ৬:৪৩

কামাল১৮ বলেছেন: এর একটু সহজ করে লিখতে হবে,যাতে পাঠক বুঝতে পারে।বস্তুবাদ সম্পর্কে অনেক পাঠকের কোন ধারনা নাই।

৩| ২৮ শে মার্চ, ২০২৩ ভোর ৬:৫০

কামাল১৮ বলেছেন: পোষ্ট দিয়ে মন্তব্যের উত্তর দেন না কেনো।এটা মনে হয় ঠিক না।

২৮ শে মার্চ, ২০২৩ সকাল ৯:৫৭

বুনোগান বলেছেন: মাত্র দেখলাম। উপদেশের জন্য ধন্যবাদ। আসলে সহজ করে লেখা সহজ না। আবার পড়ে দেখলাম। এখানে বিজ্ঞানের কিছু কথা রয়েছে যেগুলো সরাসরি উপস্থাপন করা হয়েছে। মনে হয় আর একটু ব্যাখ্যার প্রয়োজন রয়েছে। তবে প্রশ্ন করলে আমার পক্ষে আলোচনা করা সহজ হবে।

৪| ৩০ শে মার্চ, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:১৯

কামাল১৮ বলেছেন: বস্তু সম্পর্কে পাঁচ ইদ্রিয়্রর মাধ্যমে যা জানলাম,সেটা সঠিক না বেঠিক সেটা জানবো কি ভাবে?

০২ রা এপ্রিল, ২০২৩ বিকাল ৩:১২

বুনোগান বলেছেন: ধরুন চোখের কথা, চোখের ভিতর দিয়ে আলো মস্তিষ্কের সেন্সরে আঘাত করলে তার স্মৃতি মস্তিষ্কের নিউরনে জমা থাকে। আলো প্রবেশ না করলে নিউরন উত্তেজিত হয়না এবং কোন তথ্যও লাভ করে না। এখন এই আলোক তরঙ্গ বাইরের কোন আলোর উৎস বা কোন বস্তু থেকে প্রতিফলিত হয়েই কেবলমাত্র আসতে পারে। সুতরাং বাইরে যে কোন বস্তু ও আলোর অস্তিত্ব রয়েছে সেটা নিশ্চিত হওয়া যায়। কিন্তু আলোর আচরণ এবং কোন বস্তু থেকে কোন তরঙ্গের আলো প্রতিফলিত হয় তা আমরা সঠিকভাবে জানতে পারি মস্তিষ্কের তথ্য বিশ্লেষণের ক্ষমতা, পর্যবেক্ষণ ও গাণিতিক বিশ্লেষণের মাধ্যমে। সুতরাং ইন্দ্রিয়ের মাধ্যমে বাইরের জগতের বস্তুর অস্তিত্ব সম্পর্কে জানা যায়। কিন্তু বস্তু জগতের সম্পূর্ণ তথ্য পেতে হলে বৈজ্ঞানিক পর্যবেক্ষণ করতে হয়। আর বাইরে যদি কোন বস্তুর অস্তিত্বই না থাকে তাহলে কোন কিছুই পর্যবেক্ষণ করা যায় না। ঝোপের আড়ালে কোন বাঘ দেখলেই হরিণ পালিয়ে যায়। আর বাঘটির বাস্তব অস্তিত্ব আছে বলেই হরিণটি আক্রমণের শিকার হতে পারে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.