![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
প্রথমেই ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি আরেক জনের লেখা শেয়ার করার জন্য। আসলে আমাদের জার্মান প্রবাসে ম্যাগাজিনের কথা সবার জানা নেই। আর এবারের বিষয় ছিল কালচারাল শক। অনেক চমৎকার লেখা প্রকাশিত হয়েছে এ বিষয়ে তাই আপনাদের সাথে শেয়ার না করে পারলাম না ।
------------------------------------------------------------------------------
এই প্রবাসে এসে আমরা অনেক কিছুরই সম্মুখীন হই। এর কোনটা আসে একান্তই অপ্রত্যাশিতভাবে। কোনটা আসে অবধারিতভাবেই। লেখার প্রথমে ছোট ভাই রাশেদুলের কাছে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। বেচারা আমাকে বলতে বলতে এখন বলা বন্ধ করে দিয়েছে। খুব সামান্যই তার চাহিদা। যা আমার জন্যে ‘আল্পস পর্বত’ এর মত। সে লেখা চেয়েছিলো। মা দিবসে এবং বন্ধু দিবসে। আইস্ক্রীম ফ্রীজ থেকে বের করলে কিছুক্ষণ নিজ গুণে ঠান্ডা থাকে। এরপর এক সময় গলে যায় অভিমানে। রাশেদুল আমাকে বলতে বলতে থেমে গেছে। যাইহোক, একটা বিশেষ পর্ব রেখে দিলাম তার জন্যে। আগেই না বলি।
প্রথমে কালচারাল শক দিয়ে শুরু করবো। এখানে ঘটনা প্রবাহ অনেকঃ-
ঘটনা প্রবাহ একঃ
প্রথম জার্মানীতে পা দিলাম। সামান্য ঠান্ডা। একদম মন জুড়ানো স্নিগ্ধ বাতাস। ছোট ভাইদের রান্না ভাত আর মুরগী খেলাম প্রায় ষোল ঘন্টা পরে। নতুন ঝাঁ চকচকে আমার রুম। বিছানা দেখলেই ঘুম লাগে। এই সময় প্রকৃতির ডাক আসলো। টয়লেটে বসেছি। কি পরিস্কার টয়লেট!! গুণগুনিয়ে গান ধরলাম। মুগ্ধের মত চারিদিকে তাকিয়ে দেখি। যা দেখি তাই ভালো লাগে। অবশেষে শৌচকার্যের সময় আসলো। সর্বনাশ! বদনা কই? আগে খেয়াল করে বসিনি। এদিক ওদিক খুঁজে বদনা পেলাম না। কোনও মগও নেই। কিভাবে মুক্তি পেয়েছিলাম সে কথায় না যাই। শুধু এতটুকুই বুঝলাম জার্মানীরা অনেক পরিস্কার।
ঘটনা প্রবাহ দুইঃ
বাথরুম খানিকটা নোংরা লাগছে। ভাবলাম পরিস্কার করি। আচ্ছামত পানি ঢেলে ঘষে ঘষে ধুয়ে ফেললাম। একদম ঘেমে একাকার। এবারে পানি নর্দমা দিয়ে চালান করে দিতে হবে। প্রচন্ড খিদে পেয়েছে। দ্রুত গোসল সেরে খেতে হবে। সর্বনাশ! নর্দমা কই? তন্নতন্ন করে খুঁজেও নর্দমা পেলাম না। এদেশে কোন নর্দমা নেই। অবশেষে মগ দিয়ে পানি সেঁচে শুকনা করতে আমার সময় লেগেছিলো এক ঘন্টা। সুতরাং নতুন যারা আসছেন সাবধান!
ঘটনা প্রবাহ তিনঃ
প্রথম দাওয়াত পেলাম ‘বার্বিকিউ’ এর। বিশাল আনন্দ মনে। ডয়েচ যেহেতু বুঝতাম না সুতরাং কি লিখেছে তাও দেখিনি। নাচতে নাচতে পার্টিতে গেলাম খালি হাতে। দাওয়াত দিলেই কি কিছু কিনে নিয়ে যেতে হয়? এরপরের পর্বে পদে পদে ধরা। অবশ্য তারা খুবই ফ্রেন্ডলি। তারা বুঝেছে যে এটা আমাদের সংস্কৃতিতে নেই। শেষে আবার চেইন শপে যেয়ে বিয়ার, মাংস কিনে তবেই স্বস্তি।
ঘটনা প্রবাহ চারঃ
কিছুদিন আগের ঘটনা। আমাদের বাড়িওয়ালী ‘ফ্রাউ ভেহ্’ এর জন্মদিন। আমি অত ঝামেলাতে না যেয়ে ফুল কিনলাম। তারা খুব ফুল পছন্দ করে । আমার ছোট ভাই মিঠুনের শখ হলো উনাকে ঘড়ি দেবেন। চটপট ঘড়ি কিনে আমরা গেলাম উনার পার্টিতে। ভরা দরবারে আমি দিলাম ফুল। হাগ করে উনি স্মিত হেসে ধন্যবাদ দিলেন। মিঠুন দিলো ঘড়ি। উনি প্যাকেট খুলে হাতে পড়ে বললেন,
-এটা ঢিলা। আমি ঢিলা ঘড়ি পড়িনা। সাইজ করে এনে দে।
মিঠুন হতবাক। আমি স্তব্ধ। উনি নেবেন না তো নেবেনই না। অবশেষে মিঠুন ঘড়ি ঠিকমত সাইজ করে এনে দিলো। এ থেকে কি বুঝলেন? জার্মানীরা শতভাগকে শতভাগই বুঝে। নিরানব্বই দশমিক নিরানব্বই হলেও তারা অনেক সময় ত্যাড়ামি করে।
অনেক লেখলাম কালচারাল শখ নিয়ে। এবারে আসি কালচারাল ধাক্কা নিয়ে। যাকে নিয়ে লেখবো প্রটোকল অনুযায়ী তার নাম উল্লেখ করলাম না। আমাদের গ্রুপের সাথে এটা যায়না। যাহোক, উনি রেইসেপাস পেয়েছেন। জীবনের দীর্ঘ একটা সময় বাংলাদেশে থেকে এখন উনি টাক পড়ে যাওয়া বয়সে জার্মানী সাজতে চান। আমি এক বেলা ভাত না খেলে আমার জীবন চলে না। এটা বাঙ্গালী মাত্রই জানেন। আমি যেখানেই যাই বিনীত অনুরোধ করি যেন ভাত দেয়। তো কোন একদিন তার বাসায় গেলাম। দুপুরে প্রচন্ড খিদে পেয়েছে । টেবিলে যেয়ে দেখি এলাহী জার্মান খাবার। এর একটাও চিনিনা। মুখে নিলাম লবণে ভরা। মেজাজটাই বিগড়ে গেলো। বাচ্চারা মহা আনন্দে সেগুলো খাচ্ছে। মজার ব্যাপার সেইসব আইটেমের মধ্যে শুকরের মাংসও আছে। আমি বললাম,
-ভাত নেই?
উনি আবার কলিজা ছিদ্র করে ফেলা শ্লেষের হাসি দেন। এক্ষেত্রেও দিলেন।
-না সুফল। আমরাতো ভাত খাইনা। খেলেও মাঝেমাঝে। তোমাকে এটাই খেতে হবে।
মনেমনে টাক্লুর নিকুচি করে বললাম,
-ভাইয়া, আমি মনেপ্রাণে বাংলাদেশি। দীর্ঘ সাতাশ বছর যে দেশে জল-খাবার খেয়ে বড় হয়েছে তাকে ভুলে সভ্য সাজার ইচ্ছা নাই।
বাসায় এসে ভাত রান্না করে খেলাম। এরপরে সেখানে গেলে খেয়ে যেতাম।
---------------------------------------------------------------------------
**************************************************
---------------------------------------------------------------------------
প্রকাশিত হল "জার্মান প্রবাসে - সেপ্টেম্বর ২০১৪" - কালচারাল শক
------------------------------------------------------------
ডাউনলোডঃ http://goo.gl/myvMlM (৭.৭ মেগাবাইট)
নতুন সমাজ, নতুন পরিস্থিতির সাথে আস্তে আস্তে নিজেদের খাপ খাইয়ে নিতে শিখে যায় প্রায় সবাই। তবে পুরোনো থেকে নতুনে পা-রাখার এ যাত্রাকালে জানতে বা অজান্তে বহুবার শিকার হতে হয় কালচারাল শকের। আমাদের অভিজ্ঞতার ঝুলিতে জমা এরকমই কিছু টক মিস্টি সাংস্কৃতিক অভিঘাতের গল্প নিয়ে এবারের 'জার্মান প্রবাসে'।
ম্যাগাজিন ডাউনলোড/দেখতে ক্লিক করুনঃ http://goo.gl/myvMlM (৭.৭ মেগাবাইট)
এবারের ম্যাগাজিনে রয়েছে-
জাহিদ কবীর হিমন, মৃদুল রায়, রাশেদ সেলিম, শাহ্ ওয়ায়েজ এবং তৌসিফ সাজ্জাদের এর লেখায় থাকল বিদেশে দৈনন্দিন জীবনে পাওয়া মজার কালচারাল শকের গল্প।
সাম্প্রতিক এক ইউরোপিয়ান বিয়ে ঘুরে আসা অভিজ্ঞতার বিবরন রইল তানজিয়া ইসলামের রোলিংস্টোন সিরিজের এবারের লেখাটিতে।
শক এর কালচার, কালচার এর শক লেখায় রশিদুল হাসান জানাচ্ছেন তাঁর ভিন্নধর্মী তিক্ত কালচারাল শকের গল্প।
মনকাড়া কিছু ছবির সাথে সাথে অপূর্ব লেখনীতে ছবির গল্প হিসেবে থাকল মোহাম্মদ রাইসুল ইসলামের সকাল লেখাটি।
সাফওয়াত আবেদীন তাঁর নিজস্ব অনুভবে অন্যরকম আমস্টারডামের গল্প শুনিয়েছেন ভ্রমন কাহিনী ওলন্দাজদের শহরে লেখার প্রথম পর্বে।
আর সাথে কুইজ তো রইলই।
এছাড়া ফাহাদ হোসেন, জয়ন্ত দে, শরিফুল ইসলাম এবং দেবরাজ করের তোলা অসাধারণ কিছু ছবি নিয়ে থাকল "ছবিমেলা"। আর থাকল মুশফিকুল ইসলামের অঙ্কনে একটি কার্টুন।
ডাউনলোডঃ http://goo.gl/myvMlM (৭.৭ মেগাবাইট)
------------------------------------------------------------
চাইলে আপনিও লেখা/ছবি পাঠাতে পারেন, পরবর্তী সংখ্যার থিমঃ “বিশ্ব শিক্ষক দিবস আর জার্মান প্রবাসে”।
লেখা/ছবি পাঠানঃ [email protected]
অথবা পেজের ইনবক্সে পাঠানঃ Click This Link
ছবির জন্য, বিস্তারিতঃ http://goo.gl/90IVlk
লেখার জন্য, বিস্তারিতঃ http://goo.gl/faytEy
-----------------------------------------------------
জার্মান প্রবাসে আড্ডা দিতে যোগ দিন আমাদের ফেসবুক ফোরামে, গ্রুপ লিংকঃ https://www.facebook.com/groups/BSAAG (৩২,০০০+ মেম্বার্স)
১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১:২৬
ক্যপ্রিসিয়াস বলেছেন: ধন্যবাদ যাযাবর, ভাই একদম ঠিক বলেছেন। একদম শুরুর দিকেতো অনেক বেশি সমস্যায় পড়তে হয় তার উপর দেশের মায়া ও রেশ তার সাথে যোগ হয়। ভাল থাকবেন। ধন্যবাদ ভাই।
২| ১৩ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ১:১৭
জাফরুল মবীন বলেছেন: অনেক কিছু জানা হলো।
মুগ্ধ করল অাপনার দেশীয় সংস্কৃতির প্রতি শ্রদ্ধা।
অার অবাক করলো-“এদেশে কোন নর্দমা নেই ”
ধন্যবাদ ও শুভকামনা জানবেন।
১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১:২৮
ক্যপ্রিসিয়াস বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই আপনাকেও, আমার মনে হয় বিদেশে আসলে দেশের প্রতি মায়াটা একটু বেশি লাগে। দেশকে তখন মন থেকে অনুভব করা যায়। অনেক ধন্যবাদ। ভাল থাকবেন।
৩| ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ সকাল ১০:০৯
সোহানী বলেছেন: অনেক ভালো লাগলো লিখাটা। আসলে নিজেরে পরিবেশের বাইরে গেলেই নতুন এডজাস্টমেন্টের প্রয়োজন হয় সেটা লং টার্ম বা সর্ট টার্ম যেভা্বেই হোক। কেই শিখে সহজভাবে কেউ শিখে বিব্রতভাবে.....
১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১:৩০
ক্যপ্রিসিয়াস বলেছেন: এক দম ঠিক বলেছেন, একদম নতুন পরিবেশে এসে কম বেশি সবাই মোটামুটি একটুকু কমবেশি গাবড়ে যায়। তার উপরে চার পাশের এতসব অচেনা মানুষের সমাগম । ধন্যবাদ আপু মন্ত্যবের জন্য। ভাল থাকবেন।
৪| ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ সকাল ১০:২৩
ইমরান আশফাক বলেছেন: আপনার লেখা বা পরিবেশনার ধরনটা একটু অন্যরকম, আমার ভালো লেগেছে।
৫| ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১:৩১
ক্যপ্রিসিয়াস বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই , ভাল থাকবেন।
৬| ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ ভোর ৬:২৯
হরিণা-১৯৭১ বলেছেন:
কোনটাই শক হবার কথা নয়, সাধারণ ধারণার ব্যাপার।
৭| ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:৪৯
ক্যপ্রিসিয়াস বলেছেন: প্রাশ্চাত্যের কালচারের সাথে আমাদের কালচারের মিল নেই বলেই এখানে শক এর কথা এসেছে। জন্মের পর থেকে যে জিনিস দেখে দেখে সবাই অভস্ত্য হয়ে গেছে হঠাত কতে তার ব্যাতিক্রম যেটি কিনা সেই সমাজের জন্য অতি সাধারন ব্যাপার সেটাই লেখক বুঝিয়েছেন এখানে। আর এটা আপনার কাছে সাধারন হতে পারে, কিন্তু লেখকের কাছে বিষয়টা শক মনে হয়েছে । আর অধিকাংশ বাঙ্গালির কাছেই ইউরোপিয়ান কালচারের অনেক কিছুই শকিং। ধন্যবাদ মন্ত্যবের জন্য।
©somewhere in net ltd.
১|
১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ১১:০০
যাযাবর বেদুঈন বলেছেন: প্রবাস জীবনের অভিজ্ঞতা নিয়ে দারুণ একটা লেখা শেয়ার করার জন্য অশেষ ধন্যবাদ আপনাকে।
কালচারাল পার্থক্যের সাথে মানিয়ে চলাটা আসলে অনেকের ক্ষেত্রেই সহজে হয়ে উঠে না। অনেক ক্ষেত্রে সেটা সম্ভবও না।