নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মন যা জানেনা, চোখ তা দেখেনা

close your eyes and try to see

ক্যাপটেন জ্যাক স্প্যারো

দিন রাত্রি পার হয়ে, জন্ম মরণ পার হয়ে, মাস, বর্ষ, মন্বন্তর, মহাযুগ পার হয়ে চ'লে যায়, ... তোমাদের মর্মর জীবন-স্বপ্ন শেওলা-ছাতার দলে ভ'রে আসে, পথ আমার তখনও ফুরায় না... চলে... চলে... চলে... এগিয়ে চলে... অনির্বাণ তার বীণ শোনে শুধু অনন্ত কাল আর অনন্ত আকাশ... সে পথের বিচিত্র আনন্দ-যাত্রার অদৃশ্য তিলক তোমার ললাটে পরিয়েই তো তোমায় ঘরছাড়া করে এনেছি!... চল এগিয়ে যাই।

ক্যাপটেন জ্যাক স্প্যারো › বিস্তারিত পোস্টঃ

The Treasure of Sierra Madre (1948)

১৮ ই জুলাই, ২০১৪ সকাল ৯:৪৩





মেক্সিকান রেভ্যুলিউশন শুরু হয় ১৯১০ সালে। রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের মধ্য দিয়ে পোরফিরিও ডিয়াজের কাছ থেকে ক্ষমতা কেড়ে নেয় ফ্রান্সিস মাডেরো। ১৯১৫ সালে ফ্রান্সে নির্বাসিত অবস্থায় মৃত্যু ঘটে পোরফিরিও ডিয়াজের।



The Treasure of Sierra Madre সিনেমার কাহিনী তারও কয়েক বছর পরের, ১৯২৫ সালের। যখন ব্যন্ডিটরা নিজেদের পুলিশ বানিয়ে বলে, “Badges? We ain’t got no badges. We don’t need no badges. I don’t have to show you any stinking badges.”



অস্থিতিশীল মেক্সিকোর টেম্পিকো শহরে নিজেদের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য আগত দুই আমেরিকান- ফ্রেড ডাব আর বব কার্টিনকে নিয়ে শুরু হয় সিনেমার কাহিনী। ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য আসলেও দূর্ভাগ্যই তাদের সঙ্গী। তীব্র গরমের মাঝে কাজ করেও মজুরির টাকা না পাওয়ায় ক্ষীপ্ত দু’জন। তাদের মত হতভাগাদের জন্য গড়ে ওঠা একটি স্বল্পমূল্যের হোটেলে যেয়ে পরিচয় হয় ঘটে বৃদ্ধ হাওয়ার্ডের সাথে। হাওয়ার্ডের কাছ থেকে জানতে পারে সিয়েরা মাদ্রের সোনার কথা।



হঠাত করেই ভাগ্য যেন ফিরে তাকাল। ফ্রেড ডাব লটারি জিতে গেল। লটারির টাকা আর নিজেদের পকেটের শেষ সম্বলটুকু দিয়ে তারা সিয়েরা মাদ্রের স্বর্ণের খোঁজে বেড়িয়ে পড়ল।



গুপ্তধন সেটা স্বর্ণ বা অন্যকিছু হোক, চাইলেই তো আর পাওয়া যায় না। ট্রেন ভ্রমণ শেষে, জনবসতি ছেড়ে গহীন বনের ভিতর দিয়ে পাহাড় পর্বত পাড়ি দেয়ার পর ডাব আর কার্টিন যখন ক্লান্তির শেষ সীমানায়, হাওয়ার্ড বলল তারা তাদের গন্তব্যে এসে পৌঁছেছে। অন্যান্য গুপ্তধন উদ্ধারের গল্পে শেষ মূহুর্তে সবাই গুপ্তধনের খোঁজ পায়। এরা তিনজন তো ৩০ মিনিটেই সোনার খনিতে চলে আসল। বাকি সময় কি করবে? আমি আসলে ফ্রেড ডাবের মত চিন্তা করছিলাম,

“I thought all you had to do was find it. Pick up, put it in sacks, and carry them off to the nearest bank.”



ঘটনা হল সিয়েরা মাদ্রে পর্বতের মাটি-বালিতে সোনা ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে, অভিযাত্রীদের সেটা আলাদা করে নিতে হবে। স্বর্ণ উদ্ধার ভালোই চলছিল। দূর্ঘটনাক্রমে স্বর্ণ খনি ধ্বসে পড়ল, ডাব আটকা পড়ল। কার্টিন এগিয়ে গেল উদ্ধার করতে। আর এসময়েই মনে পড়বে ডাব আর কার্টিনের সাথে হাওয়ার্ডের আগের রাতের কথোপকথন, “ Only I know what kind of ideas even supposedly decent people get when gold’s at stake.”



লোকালয় ছেড়ে বহু দূরে যেখানে শুধু তিন জন মানুষ আর তাদের পরিশ্রমে অর্জিত সোনা। এদের একজন পূর্বঅভিজ্ঞতা সম্পন্ন বৃদ্ধ, আর বাকি দুজন জীবনে প্রথমবারের মত এত সম্পদের অধিকারী হতে যাচ্ছে। হাওয়ার্ড, ডাব আর কার্টিন, যেকোন দুজনকে যদি বাদ দেয়া যায়, তবে তো সব সোনা একজনের হবে। হাওয়ার্ড তো আগেই বলেছে, “I know what Gold does to men’s souls.” কে কে স্বর্ণের প্রলোভন থেকে নিজেকে বাচাতে পারবে না? ডাব নাকি কার্টিন? নাকি হাওয়ার্ড তাদেরকে ফাঁদে ফেলে নিজেই সব সোনা নিয়ে ভেগে যাবে? The Treasure of Sierra Madre গুপ্তধন উদ্ধারের কোন গল্প নয়, সভ্যতার বাইরে মানুষের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের উপর স্বর্ণ/গুপ্তধনের প্রভাব নিয়েই সিনেমার গল্প।



সিনেমার এই পর্যায়ে এসে এই তিন চরিত্রের সাথে লর্ড অব দ্যা রিংস সিনেমার স্যাম, ফ্রোডো আর গোলুম (Gollum) এর কথা মনে পড়ে গেল। বিশেষ করে গোলুম (Gollum) চরিত্রটি। কাহিনী-প্রেক্ষাপট আলাদা হলেও একজন অসহায়, নিরুপায় ব্যাক্তি দুবেলা খাবারের জন্য অন্যের কাছে যাকে হাত পেতে সাহায্য নিতে হয়, যে হাড় ভাঙ্গা খাটুনির পরও বসের চিটিংএর শিকার হয়, বসকে পিটিয়ে নিজের পাওনা টাকা তুলে নেয়। অসহায়ত্ব, অবিশ্বাস এবং হিংস্রতায় পূর্ণ এ ব্যাক্তি গুপ্তধন উদ্ধারের পর স্বভাবতই বাকিদের প্রতি সন্দেহ প্রকাশ করে। এই সন্দেহ-অবিশ্বাসের বশবর্তী হয়ে তার হিংস্রতার সবচেয়ে ভয়ংকর চেহারাটা দেখানো হয়েছে এই সিনেমাতে।



১৯২৭ সালে প্রকাশিত জার্মান লেখন বি, ট্রাভেন এর “The Treasure of Sierra Madre” থেকেই ১৯৪৮ সালে সিনেমার পর্দায় নিয়ে আসেন পরিচালক জন হাস্টোন। ফ্রেড ডাব, বব কার্টিন আর হাওয়ার্ড চরিত্রে অভিনয় করেন যথাক্রমে হাম্ফ্রে বোগার্ট, টিম হল্ট এবং পরিচালকের বাবা ওয়াল্টার হাস্টোন।



লেখক বি, ট্রাভেন নিজেই একটি রহস্যময় চরিত্র। তার আসল পরিচয় সম্পর্কে যথেষ্ট বিতর্ক রয়েছে। ট্রেজার অব সিয়েরা মাদ্রে ছাড়াও তার আরো বিখ্যাত উপন্যাস আছে – The Death Ship (1926), The Bridge in the Jungle (1927) এবং Jungle Novels. ধারণা করা হয় তার লেখা “The White Rose” বই থেকেই এন্টি- নাৎসি সংস্থা White Rose এর নামকরণ করা হয়।(এটা নিয়ে অন্য একটা থিওরি-ও আছে)



চলচ্চিত্র ইতিহাসের অন্যতম বিখ্যাত ব্যক্তি জন হাস্টোন। তিনি একাধারে পরিচালক, কাহিনীকার এবং অভিনেতা ছিলেন। বেশি পরিচিত তার পরিচালিত ক্লাসিক সিনেমাগুলোর জন্য। যার শুধু “Moulin Rough (1952)” সিনেমাটি কয়েকবছর আগে দেখিছিলাম। ৪৬ বছরের ক্যারিয়ারে ১৫ বার অস্কারের নমিনেশন পান। “The Treasure of Sierra Madre”র সেরা পরিচালক এবং সেরা স্ক্রিনরাইটার এর পুরস্কার পান।



Casablanca (1942) এর পর হাম্ফ্রে বোগার্টের কোন সিনেমা দেখলাম। টিম হল্ট আর ওয়াল্টার হাস্টোন অভিনীত আমার দেখা একমাত্র সিনেমা “The Treasure of Sierra Madre”। মূল চরিত্রে এই তিনজনের অসাধারণ অভিনয়ের কারণেই তারা সবচেয়ে বিখ্যাত। সেরা পার্শ্ব চরিত্রে ওয়াল্টার হুস্টোন অস্কার লাভের মধ্যদিয়ে প্রথমবারের মত ‘বাবা-ছেলে’ একত্রে অস্কার পাওয়ার গৌরব অর্জন করেন।



Must watch movie, না দেখে থাকলে সময় করে দেখে ফেলুন।



The Treasure of Sierra Madre (1948)

Director: John Huston

Starring: Humphrey Bogart, Walter Huston, Tim Holt

IMDB rating: 8.4

Download link: StageVuStageVu



মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৩ শে আগস্ট, ২০১৪ রাত ৮:২৩

শেখ আমিনুল ইসলাম বলেছেন: চমতকার রিভিউ। অনেক ভালো লাগল। মুভিটি আমার সংগ্রহে আছে। দেখে নিব।

২| ১৮ ই নভেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৪৬

মাহবুবুল আজাদ বলেছেন: আপনার রিভিউ পড়ে মুভিটা দেখার ইচ্ছা হল, সময় করে দেখব।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.