নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
শিক্ষা, টেকনোলোজী, সামাজিক অর্থনীতি ও রাজনীতি জাতিকে এগিয়ে নেবে।
আমাকে আমার সমসাময়িকদের থেকে একটু বেশী চাকুরী খুঁজতে হয়েছে, ইন্টারভিউ দিতে হয়েছে গড়ে কিছুটা বেশী; এক সময় ইন্টারভিউ দেয়া অভ্যাস হয়ে গিয়েছিল, বেশ ভালো লেগেছে! আর, কাজে থাকা অবস্হায় ইন্টারভিউ দেয়া খুবই আনন্দের ব্যাপার: ভয় ডর, শংকা আশংকা কিছুই থাকে না, সবকিছু নিজের কন্ট্রোলে, হাসিখুশী, মনে মনে আনন্দ; ইন্টারভিউ'র সময় যারা অকারণ প্রশ্ন করে, তাদেরকে উল্টো ঠেংগানো যায়!
চাকুরী নেই, ২/৩ টা ইন্টারভিউ দিলাম, খবর নেই; একটা লোভনীয় কোম্পানী থেকে ইন্টারভিউতে ডেকেছে; অনেক সময় হাতে নিয়ে কোম্পানীর অফিসের এলাকায় চলে গেলাম; দিনটিও ভালো, কয়েক লাইন কবিতা পড়ে মনটাকে সতেজ করলাম; আশেপাশে যাকে দেখছি সালাম দিচ্ছি; সব ভালো। সময় মতো অফিসে গেলাম; সেক্রেটারী কনফারেন্স রুমের দরজা অবধি এগিয়ে দিলো; গ্রাউন্ড ফ্লোরে; দরজা খোলা। ঢুকে আমি যাকে দেখলাম, হতবাক হওয়ার মতো কথা, আমার ক্লাশমেট। আমি দৌড়ে গিয়ে বললাম,
-কি খবর শ্রীনি, তুমি কেমন আছে? কি রকম সৌভাগ্যের দিন!
শ্রীনি মোটেই কোন ইমোশান দেখালো না, হ্যান্ডশেক করে বসতে বললো ইশারায়; মুখে বললো,
-আমরা কি কোনভাবে পরিচিত?
আমি ইউনিভার্সিটির নাম বলে বললাম,
-তোমার মনে নেই, আমরা অনেকগুলো কোর্সেই একই সেকশনে ছিলাম।
- ইউনিভার্সিটি ঠিক আছে, তোমাকে দেখেছি বলে মনে হচ্ছে না!
-কি বল? মনে আছে, তুমি অংকে "এ" না পাওয়ায় ড: ফ্রাংকের সাথে ২০ মিনিট তর্ক করেছিলে?
-তর্ক করেছিলাম, মনে আছে; তবে, তোমাকে মনে পড়ছে না! যাক, চল ইন্টারভিউ শুরু করি!
-শ্রীনি, তোমার হার্ডডিস্ক ছোট; তুমি তোমার ক্লাশমেটকে মনে রাখতে পারনি, তুমি কিসের ইন্টারভিউ নেবে? আমি যাচ্ছি।
রুমের পেছনে একটা দরজা ছিল, উহা যে 'ফায়ার ডোর' আমি খেয়াল করিনি; সেটা খুলে বের হয়ে গেলাম; চারিদিকে ফায়ার এলার্ম বাজছে। আমি পেছন থেকে অফিসের সামনে এলাম; সেক্রেটারী দৌড়ে এসে বললো,
-কি হয়েছে?
-অনেক গরম গরম প্রশ্ন করেছে আমাকে!
আমি আমার পথ ধরলাম; সেক্রেটারী গিয়ে এলার্ম থামালো।
এক কোম্পানীতে কাজ করছিলাম, সেই কোম্পানীর সাবসিডিয়ারীতে আমার চাকুরীর সম-মানের লোক নেয়ার জন্য ইন্টারভিউ চলছে; ফোন করলাম ইন্টারভিউ দেয়া যাবে কিনা! ওপাশ থেকে থেকে সেক্রেটারী বললো, কোয়ালিফিকেশনে মিললে একখানা রেজুমে নিয়ে চলে যেতে। লান্চের সময় গেলাম; সেক্রেটারী আমাকে একটা কফি ধরায়ে দিয়ে বললো, "ফোন করে দেখি কোন ম্যানেজার ফ্রি আছে, কথা বলতে পারবে"; সে ফোন হাতে নেয়ার সময় দেখলাম পাশে এক কনফারেন্স রুমে লোকজন খাচ্ছে। সেক্রেটারীকে প্রশ্ন করলাম, "ওখানে কি হচ্ছে"?
-ক্যানডিডেটদের জন্য লান্চের ব্যবস্হা আছে; ইন্টারভিউ'এর পর, আপনিও খেয়ে যাবেন!
-আগে খাওয়া যায় না?
-অবশ্যই খাওয়া যায়, আপনি খেয়ে নেন, পরে আমি ইন্টারভিউ'এর ব্যবস্হা করবো।
ভালো করে খেলাম, সেক্রেটারীও খেতে গেলো কনফারেন্স রুমে; আমি এসে ভিজিটর রুমে সোফায় বসে রেস্ট নিচ্ছি; কখন ঘুমিয়ে গেছি কে জানে! কে একজন নাম ধরে ডাক দিলো, উঠলাম; উনি আমার ইন্টারভিউ নেবেন; ঘুম থেকে ডেকে তোলাতে উনাকে আমার পছন্দ হয়নি; আমি বললাম, "ইন্টারভিউ কালকে দেয়া যাবে? আমার কাঁচা ঘুন ভাংলে, আমি কিছু মনে করতে পারি না"।
উনি বললেন, "ঠিক আছে"। আর যাওয়া হয়নি।
চাকুরী করছিলাম, বাজারের অবস্হা বুঝার জন্য ইন্টারভিউ দিতে গেলাম; প্রথম ৩ জনের সাথে ভালোই আলাপ হলো; চতুর্থজন আসে না, আধাঘন্টা কেটে গেলো, উনিই প্রজেক্ট-লীড, হয়তো ব্যস্ত, চা খেলাম, গান গাইলাম, খবর নেই। ৪০ মিনিট পরে, দৌড়ে এসে উপস্হিত; তেমন কোন আলোচনা না করেই সোজাসুজি টেকনিক্যাল প্রশ্ন, একটা, দুইটা, উত্তর দিলাম; ৩ নং প্রশ্ন, উত্তর দিলাম, কমন পড়েই চলছে। উনি প্রশ্ন করছেন একটা কাগজ দেখে। আমি বললাম, "আপনার ৪ নম্বর প্রশ্নটি কি হবে আমি অনুমানে জানি"। তিনি বললেন, "বলুন"; আমি প্রশ্নটা বলে, উহার উত্তর বললাম, মিলে গেছে। উনি বললেন যে, উনি ব্যস্ততার জন্য প্রস্তুতি নিতে পারেননি, ইন্টারনেট থেকে প্রশ্ন প্রিন্ট করে নিয়েছেন। আমি বললাম যে, সকালে বের হওয়ার আগে আমিও ইন্টারনেট দেখে এসেছি; ভালো। আমার চাকুরী হয়নি।
২৩ শে জুন, ২০১৭ ভোর ৪:১৮
চাঁদগাজী বলেছেন:
লোকজন একটু দম নিক।
চাকুরীর ইন্টারভিউগুলো আমার কাছে ভালো লাগে; কেহ কেহ চাকুরী না দেয়ার চেস্টা করে, দেখেলেই বুঝা যায়।
২| ২৩ শে জুন, ২০১৭ ভোর ৪:৩৫
ধ্রুবক আলো বলেছেন: বেশ মজা লাগলো, বেশ একটা অভিজ্ঞতা হলো, এ রকম আমাকেও করতে হবে।
চাকরি না হোক চাকরি যারা করে তাদের বুঝিয়ে দিতো হবে যে আপনাদের চাকুরীর যোগ্যতা আপনার নাই।
২৩ শে জুন, ২০১৭ সকাল ১০:১১
চাঁদগাজী বলেছেন:
আমি সব সময় সাধারণ চাকুরী করেছি; সাধারণ চাকুরীর ইন্টারভিউতে যত ধরণের ম্যাজিকেল কান্ড ঘটে!
৩| ২৩ শে জুন, ২০১৭ ভোর ৫:১৪
রিদওয়ান হাসান বলেছেন: চাকরির ইন্টারভিউ তখনও আমার জীবনে শিল্প হয়ে ওঠেনি। অতি ভয়কাতুরে হওয়ার কারণে আমি নার্ভাসনেসের চাদরে নত হয়ে থাকতাম সেকালে। এমন একসময় আমার ইন্টারভিউয়ের ঘণ্টা বাজে। সময়-স্থান মতো একেবারে খাপেখাপ টাইম আর পরিণত পোষাকে গিয়ে উপস্থিত হয়েছিলাম চাকরিজীবনের আঁতুড়ঘরে। সুন্দর প্রশ্নোত্তর হলো। ধাত্রীমায়ের চোখের ভাষা আমায় অলিখিতভাবে চাকরির আশ্বাস দিল, আর লিখিত যেটা দিল, সেটা দুই সপ্তাহ ট্রেনিংয়ের একটা নির্জলা ফরম ছাড়া অন্য কিছু নয়। আমি তখনো ভাবিনি, বাসের সিটের পাশে চাকরির বিজ্ঞপ্তি পেয়ে ইন্টারভিউ দিতে এলে তার এত ফরম্যালিটি করা লাগে। কলমও একটা নিয়ে যাইনি। রিসেপশনে গিয়ে কলম চাইতে গিয়ে মেডামের অবাক চোখগুলো ছিল দেখার মতো। তারপর ওই ফরম জমা দিতে গিয়ে ওই ঐন্দ্রজালিক নয়নের ট্রাপে আবার পরে গেলাম, ট্রেনিং ফী চাইলে পকেট থেকে গজগজে টাকার একটা নোট ধরিয়ে দিলাম। এরপর ডেট ফিক্সট হলো।
ডেট অনুযায়ী গিয়ে দেখলাম অফিস উধাও। এখন সেটা মেয়েদের বুটিক হাউজ।
২৩ শে জুন, ২০১৭ সকাল ১০:১৭
চাঁদগাজী বলেছেন:
১০০% বাংলাদেশী ইন্টারভিউ
৪| ২৩ শে জুন, ২০১৭ ভোর ৬:৩৬
উম্মে সায়মা বলেছেন: হাহাহা। পড়ে মজা পেলাম ভাই আমারও অনেক ইন্টারভিউ দেয়ার অভিজ্ঞতা হয়েছে। চাকরি থাকা অবস্থায়ও অনেক দিয়েছি।
রিদওয়ান ভাইয়ের ঘটনা কি সত্যি? হাহাহা
২৩ শে জুন, ২০১৭ সকাল ১০:১৯
চাঁদগাজী বলেছেন:
চাকুরী থাকা অবস্হায় ইন্টারভিউ দেয়া খুবই আনন্দের ব্যাপার।
৫| ২৩ শে জুন, ২০১৭ সকাল ৮:৩৮
তাতিয়ানা পোর্ট বলেছেন: Hahahaha.
২৩ শে জুন, ২০১৭ সকাল ১০:১৯
চাঁদগাজী বলেছেন:
আপনাদেরকে হয়তো এগুলোর মধ্য দিয়ে যেতে হবে না।
৬| ২৩ শে জুন, ২০১৭ সকাল ৯:৩৯
নাগরিক কবি বলেছেন: চাঁদগাজী ভাই : ইউ আর রিয়েলি জিনিয়াস
২৩ শে জুন, ২০১৭ সকাল ১০:২১
চাঁদগাজী বলেছেন:
ইন্টারভিউ সব সময় কিছুটা টেকনিক্যাল, বাকীটুকু মানসিক
৭| ২৩ শে জুন, ২০১৭ সকাল ১০:৪৪
রাজীব নুর বলেছেন: ১। আজকাল ইন্টারভিউ দিয়ে সরকারী চাকরী পাওয়া যায় না। আগেই সিলেক্ট হয়ে থাকে। তবে, লোক দেখানো ইন্টারভিউ নেওয়া হয়। পিয়ন বা অফিস সহকারীর চাকরি নিতে হলেও ১৫/২০ লাখ টাকা দিতে হয়।
২। বেসরকারি কিছু প্রতিষ্ঠানে ইন্টারভিউ'র মাধ্যমে চাকরি হয়।
৩। আমাদের দেশে বেশির ভাগ চাকরি'ই আত্মীয় স্বজন বা পরিচিতদের মাধ্যমে হয়।
৪। আমি অনেকবার দেখেছি- একটা মেয়ে কোথাও চাকরির জন্য অন্টারভিউ দিতে গেলে- সাথে তার মা অথবা বাবা যায়। নিরাপত্তাহীনতার কারনে। চিন্তা করুন একটা ডেশের অবস্থা?
৫। আমাদের দেশে জমা দিয়ে ১০০ জনের মধ্যে ৭ জনের চাকরি হয়।
৮| ২৩ শে জুন, ২০১৭ সকাল ১১:১৭
হানিফঢাকা বলেছেন: ইন্টারভিউ দেও্য়া এবং নেওয়ার অনেক মজার অভিজ্ঞতা আছে আমার
৯| ২৩ শে জুন, ২০১৭ দুপুর ১:০৫
রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: যোগ্যতা থাকলে স্বতঃস্ফূর্ততা এমনিতেই আসে, আপনার যেমন এসেছে ।
১০| ২৩ শে জুন, ২০১৭ দুপুর ১:৩০
বাবুরাম সাপুড়ে১ বলেছেন: আপনার চাকরীর মভিজ্ঞতার কাহিনী ভালো লাগলো !
১১| ২৩ শে জুন, ২০১৭ দুপুর ২:১৪
জে আর সিকদার বলেছেন: দারুন মজা পেলাম!
১২| ২৩ শে জুন, ২০১৭ দুপুর ২:২৬
ধ্রুবক আলো বলেছেন: কয়েকবার ইন্টার্ভিউএ আমাকে জিজ্ঞেস করছিলো, আপনার গার্লফ্রেন্ড আছে? তখন উত্তর দিতে পারি নাই, তবে এখন যদি জিজ্ঞেস করে সুন্দর একটা উত্তর দিয়ে দেব।
১৩| ২৩ শে জুন, ২০১৭ বিকাল ৩:৩৩
নতুন বলেছেন: ভাল... ++
আপনি কিছুটা অস্থির প্রকৃিতির?
১৪| ২৩ শে জুন, ২০১৭ বিকাল ৪:৩২
বর্ষন হোমস বলেছেন: ইন্টার্ভিউ গুলো সবসময়ই মজার হয়।ভাইভায় নানা ক্যাচালের প্রশ্ন করে থাকে।উত্তর গুলোও দিতে হয় ঘুরিয়ে পেচিঁয়ে।ভাইভা সম্পর্কিত পোষ্ট দেখলেই পড়ে ফেলি।আপনার অভিজ্ঞতা দারুণ।
©somewhere in net ltd.
১| ২৩ শে জুন, ২০১৭ ভোর ৪:১১
ওমেরা বলেছেন: ভাইয়া আপনি কি রাজনীতি নিয়ে লিখা ছেড়ে দিলেন তবে এ লিখা গুলো খুব ভাল লাগছে ।
ইন্টারভিউ দিতে যেয়ে না তবে একবার জীম থেকে বের হওয়ার সময় আর একবার একটা মার্কেটে ভুলে ফায়ার ডোর খুলে ছিলাম , সে যে কি অবস্থা হয়ে ছিল !
ধন্যবাদ ভাইয়া ।