নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সম্পদহীনদের জন্য শিক্ষাই সম্পদ

চাঁদগাজী

শিক্ষা, টেকনোলোজী, সামাজিক অর্থনীতি ও রাজনীতি জাতিকে এগিয়ে নেবে।

চাঁদগাজী › বিস্তারিত পোস্টঃ

সমবায় নিয়ে আপনাদের কোন ধরণের অভিজ্ঞতা আছে?

১৭ ই জুলাই, ২০২০ রাত ৯:৪৯



সমবায়ের উদ্দেশ্য অনুসারে ইহার ডেফিনেশন বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন রকম; আমেরিকায় সবচেয়ে বড় সমবায় হচ্ছে হাঊজিং'এ; ইহা ব্যতিত, কনজিউমার্স সমবায় আছে, এরা নিজেদের জন্য গ্রোসারী বা সুপার মার্কেট চালায়, কমদামে কিনাকাটা করে নিজেদের ব্যয় কমায়। আমেরিকা ক্যাপিটেলিষ্ট দেশ হওয়াতে ইহা সমবায়কে বেশী উৎসাহিত করে না; কিন্তু যেসব গরীব দেশ ধর্মীয় কিংবা অজ্ঞানতার কারণে সোস্যালিজমকে ভয় পায়, তাদের জন্য 'সমবায়' একটা বিশাল সমাধান হতে পারে।

তৃতীয় বিশ্বে সমবায়টা অনেকটা "প্রাইভেট কর্পোরেশনের" মতো; সাধারণত: ৩য় বিশ্বের প্রায় দেশ সমবায়ের জন্য কিছু মুলধন ঋণ হিসেবে আইএমএফ ও বিশ্ব ব্যাংক থেকে পেয়ে থাকে। বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্হিতিতে, ইহা বেকারত্ব কমাতে সক্ষম হবে।

বাংলাদেশের নিম্ন মধ্যবিত্তের কাছে এককভাবে ব্যবসা করার মতো ক্যাপিটেল নেই; আবার, ব্যাংকগুলো বিনা কোলেটারেল'এ নিম্ন মধ্যবিত্তকে ঋণ দেয় না; ফলে, মধ্যবিত্ত ও নিম্ন মধ্যবিত্তরা ছোট শিল্পে, কিংবা বড় ধরণের কনজুমার্স ব্যবসায় যেতে পারেনা; বাংলাদেশে নতুন দোকান ও ছোট ব্যবসা শুরু করা বর্তমানে মোটামুটি অসম্ভব; আসলে, বেকারত্বের কারণে এই ধরণের ব্যবসা প্রয়োজনের চেয়ে বেশী।

বাংলাদেশের সমবায় আইন আমার জানা নেই; ব্লগার শংখচিল বললেন, উনি সমবায়ে দীর্ঘদিন বড় পদে ছিলেন, দেশী বিদেশী অভিজ্ঞতা আছে; এবং বর্তমানে একটি দুগ্ধ সমবায়ের বড় ধরণের কর্মকর্তা; আশাকরি, উনি পোষ্ট দিয়ে বাংলাদেশের সমবায় নিয়ম কানুন ও সম্ভাবনা ব্যাখ্যা করবেন।

আপনাদের মাঝে কেহ কোন না কোনভাবে সমবায়ের সা্থে জড়িত থাকলে, বর্তমান সময়ের সমবায়গুলো কি রকম করছে, এই ব্যাপারে জানাবেন।

মন্তব্য ৩২ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (৩২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৭ ই জুলাই, ২০২০ রাত ৯:৫৫

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:
সমবায় নিয়ে আমার কোন অভিজ্ঞতা নেই।
তবে আমার আগ্রহ আছে।

১৭ ই জুলাই, ২০২০ রাত ৯:৫৯

চাঁদগাজী বলেছেন:


যারা জানেন (বাংলাদেশে), তাদের থেকে কিছুটা তথ্য পান কিনা দেখেন।

২| ১৭ ই জুলাই, ২০২০ রাত ১০:৪৪

নুরুলইসলা০৬০৪ বলেছেন: আমি যখন ক্লাস এইটে পড়ি(৬২/৬৩)তখন নিজ উদ্দোগে গ্রামে সমবায় সমিতি গড়ে তুলি মাসিক এক টাকা চাঁদা।মেট্রিক পাশকরা পর্যন্ত আট নয় হাজার টাকা হয়।তার পর আমি কলেজে পড়ার জন্য অনেক দুরের শহরে চলে আসি আর খোঁজ নেয়া সম্ভব হয় নাই।

১৭ ই জুলাই, ২০২০ রাত ১১:০৯

চাঁদগাজী বলেছেন:



আপনি ব্যতিত আর কেহ পরিচালনায় ছিলো না? কোন ধরণের লোকজন সদস্য হয়েছিলেন? উহা কি বন্ধ হয়ে গিয়েছিলো; তারা টাকা ফেরত পেয়েছিলেন?

৩| ১৭ ই জুলাই, ২০২০ রাত ১১:১০

নতুন বলেছেন: সমমনা মানুষ হলে সমবায় সমিতি সফল হবে।

আমাদের দেশের মানুষের ধ্যান্দাবাজি মনভাবের জন্য দেশে এমন উদ্দোগ বেশি গড়ে উঠে না।

১৭ ই জুলাই, ২০২০ রাত ১১:৪৯

চাঁদগাজী বলেছেন:



১৯৭৫ সালের পর, মানুষ সরকারের সাথে মিলে খারাপ হয়ে গেছে; এরপরও গরীব বাংগালীদের জন্য ইহাই জীবন রক্ষার পথ।

৪| ১৭ ই জুলাই, ২০২০ রাত ১১:২১

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: আমি একটা মাঝারি মাপের সমবায় কোম্পানির উপদেষ্টা হিসাবে কাজ করেছিলাম। বাংলাদেশে এই ধরনের প্রতিষ্ঠান গুলি সরকারের সমবায় অধিদপ্তরের অনুমতি নিয়ে মুলত অনেকটা ব্যাংকের মত কাজ করে। এখানে যারা চাকরী করে এদের অনেকেই আগে ব্যাঙ্কে চাকরী করত। এরা মানুষের কাছ থেকে আমানত নেয় অনেকটা ব্যাংকের এফডিআরের মত নির্দিষ্ট সুদে। এই টাকা এরা আবার বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে ধার দেয় অনেকটা ব্যাংকের মত নির্দিষ্ট সুদে। তবে এদের আমানত ও ঋণ উভয়ের সুদ ব্যাংকের চেয়ে বেশী। বাংলাদেশ ব্যাংক এগুলির খবর রাখেনা। ব্যাংকের মত এরা চালাচ্ছে কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংকের খবর নাই। ফলে এরা অনেক অনিয়ম করে। কিন্তু এদের কাছ থেকে ঋণ নেয়ার ক্ষেত্রে ঝামেলা কম। এরা সহজেই ঋণ দেয়। আমি যেখানে কাজ করেছি সেটার মালিকরা মুলত বাটপার। এদের ধান্ধা ছিল জনগণের থেকে টাকা নিয়ে নিজেদের নামে ভালো জমি কেনা। এছাড়া এই সমিতির নাম ব্যবহার করে দেশে বিদেশের কিছু বিনিয়োগকারীকে আকৃষ্ট করে আরও কিছু টাকা কামান। কয়েক মাস পরে এরা মোটামুটি ভালো টাকা কামিয়ে অফিস বন্ধ করে পালিয়ে যায়। আমি এদের সম্পর্কে প্রথমে বুঝতে পারিনি। আর আমি অন্য বিষয় দেখতাম। পরে এদের সম্পর্কে জানতে পারি ও কাজটা ছেড়ে দেই। বাংলাদেশে কিছু ভালো সমিতি সম্ভবত আছে।

১৭ ই জুলাই, ২০২০ রাত ১১:৫৫

চাঁদগাজী বলেছেন:



সমবায় শুধু নিজের সদস্যদের ঋণ দিতে পারে; আপনি যা বলেছেন, সেটা সমিতির সেটিং ব্যবহার করে স্ক্যাম চালু করেছিলো।

৫| ১৭ ই জুলাই, ২০২০ রাত ১১:৩৪

রাজীব নুর বলেছেন: ধারনা নাই।
একেবারেই ধারনা নাই।

১৮ ই জুলাই, ২০২০ রাত ১২:০২

চাঁদগাজী বলেছেন:



সমস্যা নেই, ইহা পৃথিবীর আদিতম ফাইন্যান্সিয়েল সিষ্টেমের অংশ।

৬| ১৭ ই জুলাই, ২০২০ রাত ১১:৫৩

স্বপ্নের শঙ্খচিল বলেছেন: আশা করি ২/৩ দিনের মধ্যে পোষ্ট করা যাবে,
তবে তা ধাপে ধাপে আলোচনা চলবে,
সেক্ষেত্রে ধারনা পেতে সুবিধা হবে ।

....................................................................
সমবায় আন্দোলন ও প্রয়োগ দীর্ঘ দিনের ,
ক্ষুদ্র ক্ষদ্র সমবায়ীরা সীমিত আকারে ব্যবস্হাপনায়
লাভ করতে পারে,

.....................................................................
বড় আকারের সাফল্য হাতে গোনা যায় ।

১৮ ই জুলাই, ২০২০ রাত ১২:০১

চাঁদগাজী বলেছেন:


ধন্যবাদ, মুল ব্যাপারগুলো (রেজিষ্ট্রেশন, কমিটি, ইলেকশান, ব্যবসার সুযোগ, চাকুরীর সুযোগ, সদস্যদের শেয়ার, লভ্যাংশ বিতরণের নিয়ম, সমবায় ব্যাংক'এর সুযোগ) নিয়ে পোষ্ট দেবেন।

৭| ১৭ ই জুলাই, ২০২০ রাত ১১:৫৮

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: বাংলাদেশে অনেক এলাকায় - অনেকের জমিতে বর্ষায় বা অন্য সময় বাঁধ দিয়ে জল আটকিয়ে মাছ চাস হয়। সেখানে কিঞ্চিত সমবায়ী বাতাস আছে।

১৮ ই জুলাই, ২০২০ রাত ১২:০৩

চাঁদগাজী বলেছেন:


আচ্ছা; মনে হয়, অনেকের জমিতে মাছ চাষ হয় একই সাথে।

৮| ১৭ ই জুলাই, ২০২০ রাত ১১:৫৯

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: ওরা ঋণদাতাদের সদস্য বানিয়ে নেয়। এভাবেই বড় মাপের সমবায় কোম্পানি গুলি ব্যাংকের মত কাজ করছে।বাংলাদেশ ব্যাংকের খবর নাই। কৌশল খাটিয়ে এভাবে করছে। অনেকেরই উদ্দেশ্য খারাপ থাকে।

১৮ ই জুলাই, ২০২০ রাত ১২:০৫

চাঁদগাজী বলেছেন:



বুঝেছি, ওরা স্ক্যাম করার জন্য নিজস্ব প্রসেস বের করে; ওগুলো সমবায়ের মাঝে পড়ে না, সেগুলো বড় ধরণের ক্রাইম। সমবায় শুধু সদস্যদের মাঝে লেনদেন, বাকীদের সাথে ব্যবসায়িক সম্পর্ক।

৯| ১৭ ই জুলাই, ২০২০ রাত ১১:৫৯

আহা রুবন বলেছেন: আমাদের গ্রামে মাংসের জন্য পাড়াগুলোতে সমবায় আছে। ওরা সবাই চাঁদা দিয়ে বাছুর কেনে। তাদের একজন বা অন্য কেউ লালন-পালন করে জবাইয়ের আগে হাটে নিয়ে দাম যাচাই করে। ক্রয় মূল্যের চেয়ে যে পরিমাণ টাকা বেশি হল তার অর্ধেক গোরু পালনকারী নেয়। রোজার ঈদের আগের দিন জবাই করে সব সদস্যরা ভাগাভাগি করে নেয়। সাধারণত দিন মজুর, চাষি, তাঁত শ্রমিকেরা এতে জড়িত।

১৮ ই জুলাই, ২০২০ রাত ১২:০৭

চাঁদগাজী বলেছেন:



এটা ভালো ধরণের সমবায়; ছোট, কিন্তু দরকারী; আমেরিকায় এই আদলের সমবায় আছে, সেগুলো বড়, এগুলো কনজুমার কো-অপারেটিভ।

১০| ১৮ ই জুলাই, ২০২০ রাত ১২:১২

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
আমার একটা খারাপ অভিজ্ঞতা আছে!!
টাকা ধার দিয়েছিলাম সদস্যদের। তারা
যে আইডি আর ঠিকানা দিয়েছে তা আর
খুঁজে পাইনি। টাকা নিয়ে ভেগেছে।

১৮ ই জুলাই, ২০২০ রাত ১২:৫৮

চাঁদগাজী বলেছেন:



ভয়ানক ব্যাপার!

ঢাকায়, নাকি বরিশালে?

১১| ১৮ ই জুলাই, ২০২০ রাত ১২:২৫

ডার্ক ম্যান বলেছেন: বাংলাদেশে সমিতির অভাব নাই ।

১৮ ই জুলাই, ২০২০ রাত ১২:৫৯

চাঁদগাজী বলেছেন:



সম্ভব, এই ধরণের অর্থনীতিতে সমিতি কোন না কোনভাবে সাহায্য করতে পারে।

১২| ১৮ ই জুলাই, ২০২০ রাত ২:৩৪

ডঃ এম এ আলী বলেছেন:


সমবায়ের কথা বলতে গেলে একটু পিছনে ফিরেতাকাতে হয় । তৎকালীন ভারতবর্ষের ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায় এদেশের ভাগ্যবিড়ম্বিত কৃষকের জীবনযাত্রার মান অত্যন্ত নিন্ম এবং এযাবৎকাল পর্যন্ত তাদের অবস্থার কোনো পরিবর্তন পরিলক্ষিত হয়নি। কৃষকের আর্থসামাজিক অবস্থা উন্নয়নে কবিতা লেখা ও জমিদারী চালানোর পাশাপাশি আআমাদের বিশ্বকবি রবিন্দ্রনাথ ঠাকুর যে সকল পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিলেন তা হয়ত আমাদের অনেকের জানা নেই । গ্রামীণ সমাজের মানুষের চির দারিদ্র্য, অশিক্ষা ও কুসংস্কারের অন্ধকার দূর করে সামন্তবাদী মহাজননের ঋণের চাকায় পিষ্ট কৃষককুলের দায়মুক্তির জন্য সর্বপ্রথম তিনি গ্রামীণ ব্যাংক স্থাপন, সমবায় আন্দোলন শুরু করেন । তাঁরভাবনাগুলি বাস্তবায়ন সার্বিকভাবে তৎকালীন প্রান্তিক মানুষের জীবনকে কতটুকু প্রভাবিত করেছে সে বিষয়গুলি আমাদের অনেকের কাছেই অজানা ।

সাধারণ অর্থে সমবায় বলতে বুঝায় একটি সমাজের কিছু ব্যক্তি একত্রিত হয়ে কোন অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করা । অনেক বিশেষজ্ঞের ধারণা মতে তাঁর সমবায়ের ধারনাটি মূলত আয়ারল্যান্ড ও রুশ সমাজ কাঠামোর উন্নয়ন ভাবনা থেকে এসেছে। তিনি সমবায় ভাবনাটির এমন কিছু সুনির্দিষ্ট তত্বগত দিকে আলোকপাত করেছেন যা প্রচলিত ধারণা থেকে কিছুটা ভিন্ন । বাহ্যিক কিছু অর্থনৈতিক সামাজিক কর্মপ্রক্রিয়ায় সংস্লিষ্ট কিছু সঙ্ঘবদ্ধ মানুষের সমন্বিত রূপ হলো তার মতে সমবায়। তবে তিনি সংঘবদ্ধতার তুলনায় অধিক গুরুত্ব আরোপ করেছেন মানসিক একাত্মতার উপর অর্থাৎ আদর্শগত ঐক্যবদ্ধতা। কেবলমাত্র এবং অর্থ বিনিয়োগ করে নয় বরং কাউকে না ঠকিয়ে মানসিক ঐক্যবদ্ধতার সমন্বিত রুপের ভিতর নিহিত রয়েছে একটি আদর্শ সমাজ কাঠামো ।
এখানে প্রসঙ্গত উল্লেখ যে ততকালীন পাকিস্তান আমলে ১৯৫৯সালে কুমিল্লা মডেল ' এর একটি অন্যতম অঙ্গ ছিল দ্বি-স্তর সমবায় পদ্ধতি যা বর্তমানে বিআরডিবি কর্তক বাস্তবায়িত হচ্ছে। এর রূপকার ছিলেন ড.আখতার হামিদ খান

সুত্র - Click This Link
ডঃ আখতার হামিদ খান একজন উন্নয়ন কর্মী এবং সমাজ বিজ্ঞানী হিসাবে পরিচিত ছিলেন। তিনি ১৫ জুলাই ১৯১৪ সালে ভারতের আগ্রায় জন্মগ্রহন করেন। তিনি বাংলাদেশসহ বিশ্বের অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশে অংশীদারিত্বমূলক পল্লী উন্নয়নের বিস্তার ঘটিয়েছেন। তাঁর বিশেষ অবদান ছিল পল্লী উন্নয়নে ১৯৫৯ সালে সম্বন্বিত প্রকল্প প্রতিষ্ঠা যা ‘কুমিল্লা মডেল’ হিসাবে সুপরিচিত। ‘কুমিল্লা মডেল’ এর একটি অন্যতম অঙ্গ ছিল দ্বি-স্তর সমবায় পদ্ধতি যা বর্তমানে বিআরডিবি কর্তক বাস্তবায়িত হচ্ছে।
বলা হয়ে থাকে (Click This Link ) দ্বি-স্তর বিশিষ্ট সমবায় ব্যবস্থা সমবায় আন্দোলনের উন্নত ও আধুনিক রূপ । দ্বিস্তর সমবায় বা কুমিল্লা পদ্ধতির সমবায়ের আওতায় গ্রাম পর্যায়ে জনগণকে সংগঠিত করে প্রাথমিক সমিতি এবং থানা (উপজেলা) পর্যায়ে প্রাথমিক সমিতিসমূহের ফেডারেশন হিসাবে থানা কেন্দ্রীয় সমবায় সমিতি (Thana Central Cooperative Association-TCCA) গঠন করা হয়। এই ব্যবস্থার মাধ্যমে সমবায়ীদের প্রাথমিক ও কেন্দ্রীয় প্রতিষ্ঠানের অধীনে সমন্বয় ও সহযোগীতার মাধ্যমে সরকারী সেবাসমূহ ও প্রশিক্ষণ গ্রহণ নিশ্চিত করা হয়েছে। যাটের দশকে দ্বি-স্তর বিশিষ্ট সমবায় পদ্ধতিটি সত্তরের দশকে Integrated Rural Development Program (IRDP) এবং পরবর্তীতে আশির দশকে Bangladesh Rural Development Board (BRDB) তে উন্নীত হয়েছে।
কুমিল্লা মডেলের সফলতা তৎকালীন কুমিল্লা অঞ্চলের জনগণের ভাগ্য উন্নয়নে অভূতপূর্ব ভূমিকা রেখেছিল। এ পদ্ধতির মাধ্যমে দেশব্যাপী ভৌত ও প্রশাসনিক অবকাঠামো গড়ে তোলা হয়েছে এবং সরকারী- বেসরকারী সেবা গ্রহণের জন্য শক্তিশালী সেবা গ্রহণকারী ব্যবস্থা সৃষ্টি করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য আমাদের এলাকায় ১৯৬৯ সালে দ্বি-স্তর সমবায় কার্যক্রম শুরু করা হয়। এই দ্বি স্তরের প্রাথমিক স্তরে গ্রামীণ ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের সমবায় পদ্ধতির আওতায় সংগঠিত করে শেয়ার ও সঞ্চয় জমার মাধ্যমে পুঁজি গঠন, প্রশিক্ষণ ও ঋণ সহায়তা প্রদানের মাধ্যমে কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধিতে সহায়তা প্রদান ও দারিদ্র বিমোচনের ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েথাকে । এ প্রসঙ্গে আমার মনে পড়ে ১৯৭০ সনের মাঝামাঝি সময়ে থানা সদর থেকে কয়েক জন কর্মকর্তা আসেন আমাদের গ্রমের বাড়িতে। তারা কথা বলেন আমার দাদা ও বাবার সাথে । তাদের কথা মত বাবা, চাচা ও আমি পাড়ার সকলের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে সকলকে আমাদের বাড়িতে বিকাল ৪টায় আসতে বলা হয় । বিকাল ৪টার দিকে দেখি পাড়ার বয়স্ক মানুষেরা আমাদের বাড়িতে এসে জর হয়েছেন । সেখানে সকলকে বাড়ির বাহিরের ঘরে( বাংলা ঘর নামে একেডাকা হত )বসিয়ে সকলের সামনে থানা সদর থেকে আসা লোকজন সমবায় সমিতি নিয়ে বেশ লম্বা-চওড়া একটা ভাষণ দেন। তারপরে বুঝালেন কিভাবে সমবায় সমিতি গঠন করতে হবে এবং সমবায় সমিতির মাধ্যমে কি কি সুফল পাওয়া যেতে পারে । তাদের পরামর্শ অনুযায়ী সেদিনই আমাদের বাড়িতে বসে একটি প্রাথমিক সমবায় সমিতি গঠন করা হল। সমিতির সভাপতি করা হল আমার দাদাকে আর কে কে কোন পদবীতে ছিলেন তা আমার এখন বিস্তারিত মনে নেই । সদরের লোকজন বলেছিলেন বৈঠকে সকলে মিলে যা আলোচনা করা হয় তা সব কাগজে লিখতে হবে এবং সমাবেশে যারা হাজির ছিলেন প্রত্যেকের নাম লিখে তার পাশে স্বাক্ষর বা টিপসহি নিতেহবে। আমার মনে আছে সেসময় আমাদের গ্রামের বেশীর ভাগ মানুষই স্বাক্ষর দিতে জানতনা।তারা টিপ সই দিত। সে ছিল এক বিরাট ঝামেলার কাজ টিপ দেয়ার পর এখানে সেখানে হাতের আঙ্গুলে লাগা কালী দিয়ে ম্যসাকার করে ফেলতো। বৈঠকে যা আলোচনা হয় সেটা কাগজের পাতায় লেখাকে নাকি বলা হবে বৈঠকের রেজুলেসন ।

এর পর থেকে সকলের মুখে মুখে রেজুলেশন কথাটি চালু হয়ে গেল। বৈঠকে কার কি প্রয়োজন তা অলোচনা হত , সিদ্ধান্ত হতো কাকে কত টাকা ঋণ দেওয়া হবে, কত দিনের জন্য ঋণ দেওয়া হবে এবং তা কিভাবে তারা পরিশোধ করবে, ঋণ নিয়ে কি কাজ করবে, কারা কারা ঋণের ব্যহার তদারকি করবেন,সময়মত ঋণ পরিশোধ না করলে তার নীজের ও সমিতির অন্যান্য সদস্যের কি সমস্যা হবে ইত্যাদি । সমিতির সাপ্তাহিক সভায় উপস্থিত হয়ে আলোচনা করে সকলে মিলে যদি সিদ্ধান্ত নেয় সেচের জন্য পাওয়ার পাম্প এর প্রয়োজন তাহলে সরকারি অর্থে গ্রামে একটি পাওয়ার পাম্প এবংসেটি পরিচালনার জন্য একজন ড্রাইভার দেয়া হবে । প্রাথমিক সমিতির বৈঠকে আলোচনার প্রেক্ষিতেগৃহীত সিদ্ধান্তগুলি বাস্তবায়ত হতে দেখা গিয়েছিল। অনেকেই পেয়েছিল কৃষি কাজের জন্য ঋন আর গ্রামে এসেছিল একটি পাওয়ার পাম্প যার মাধ্যমে শুরু হয় পাওয়ার পাম্পের ইরিগেশন ।আমাদের বাড়ীতে বসে সন্ধায় যে সমস্ত বৈঠক হতো তার রেজোলেশন লেখার দায়িত্বটি পরে আমার ও ছোট কাকার উপর।বৈঠকে তুমুল আলোচনা সমালোচনা, কথাকাটি সে এক ভিষন আজব ঘটনা ।
তবে সভার শেষ পর্যায়ে সভাপতি হিসাবে দাদার দেয়া বক্তব্য দেখতাম সকলেই শুনছে চুপ করে । সব আলোচনা সমালোচনা বন্ধ হয়ে সকলেই সমস্বরে সমস্যা সমাধানের সিন্ধান্তটিতে সম্মতি জানাত । আমরা দুই চাচা ভাতিটা মঝা করে লিখতাম তা । তারপরে রেজুলেসন বুকের পাতায় দাদার স্বাক্ষরের পরে সভায় উপস্থিত সকলের স্বাক্ষর ও টিপসই নিতাম ।

এতো গেলো প্রথমিক সমিতির কাজ কারবার । তবে দ্বি-স্তর বিশিষ্ট সমবায়ের দ্বিতীয় স্তরে থানায় বসে কি হত তা জানা নেই । তবে দেশ স্বাধিনের পরে দেখেছি থানা সমবায় সমিতির দৃর্দান্ত কার্যকলাপ , তাদের সুপরিসে বীজ, সার, সেচ যন্ত্র ও তার জ্বালানি তেল , ঋণ মঞ্জুর ও আদাযের বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহনের দৃশ্যাবলী।দৃশ্যাবলীর প্রকৃত স্বরুপ আর নাই বা বললাম ।জানিনা এখন উপজেলা পর্যায়ে সমবায় স্তরটির কি কার্যকলাপ এবং তাদের পারফরম্যনসই বা কি ।

এর পরের সমবায়ের ইতিহাস আরো অনেক লম্বা যা লিখতে গেলে আরেক মহাকাব্য হয়ে যাবে ।

ধন্যবাদ মুল্যবান একটি বিষয়ে আলোচনার সুযোগ তৈরী করে দেয়ার জন্য ।

১৮ ই জুলাই, ২০২০ ভোর ৬:৩১

চাঁদগাজী বলেছেন:


আমার মনে আছে, ড.আখতার হামিদ খান কুমিল্লায় প্রথম ট্রাক্টর ও বিদেশী গরু আনেন; উনি ততকালীন সময়ে (পুর্ব পাকিস্তান ) বিশাল উদ্যোগ নিতে চেয়েছিলেন পুরো দেশে। মনে হয়, যুদ্ধের কারণে তিনি চলে যান প: পাকিস্তান।

কবিগুরু চেষ্টা করেছিলেন; তবে, সেই সময় সব কিছু ছিলো শ্লো, মানুষের শ্রেণী বিভাগ ছিলো ভয়ংকর; সর্বোপরি, কলোনিয়েল সিষ্টম এগুলোর পক্ষে ছিলো না।

১৩| ১৮ ই জুলাই, ২০২০ ভোর ৪:৩০

নুরুলইসলা০৬০৪ বলেছেন: আমার কাজিন যে ৭ম শ্রেনীতে পড়তো,আমি চলে আসার পর সে বছর বছর খানেক চালায়।তার পর সে যখন কলেজে পড়ার জন্য শহরে চলে যায় তখন হিসাব করে সকলের টাকা দিয়ে দেয়।আমরা দুই জন ছাড়া আর কোন লেখা পড়া জানা লোক ছিল না।
গরিব কৃষক এবং যুবকরা সদস্য ছিল।পাঁচের অধিক শেয়ার কেনা যেত না।

১৮ ই জুলাই, ২০২০ ভোর ৬:১৬

চাঁদগাজী বলেছেন:


ভালো অভিজ্ঞতা

১৪| ১৮ ই জুলাই, ২০২০ সকাল ৮:৫৭

দারাশিকো বলেছেন: বাংলাদেশে যেসব সমবায় সমিতি আছে তাদের বেশিরভাগই ঋণদান সমবায় সমিতি। এদের আলাদা পারমিশন নিতে হয়। সমবায় অধিদপ্তর থেকে নিবন্ধন নিতে হয়, আবার সম্ভবত মাইক্রো ক্রেডিট রেগুলারেটরি অথরিটির পারমিশনও লাগে। মাইক্রো ক্রেডিট রিলেটেড ইস্যু একসময় বাংলাদেশ ব্যাংক ডিল করতো, আলাদা অথরিটি হওয়ার পর থেকে আর করে না। যেহেতু, সমবায় সমিতি কোন ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান না এবং এদের নিয়ন্ত্রণের জন্য আলাদা অথরিটি আছে, তাই বাংলাদেশ ব্যাংক এখানে কোন ভূমিকা রাখে না। একমাত্র, কোন সমবায় যদি নামের সাথে 'ব্যাংক' যুক্ত করে তাহলে বাংলাদেশ ব্যাংক নাক গলাবে।

যেহেতু সদস্যদের থেকে মাসিক চাঁদা আদায় করে সেটা থেকে উচ্চ সুদে ঋণ দেয়া যায়, তাই এই ধরনের সমবায় সমিতির সংখ্যা বেশি। যতটুকু জানি, এ ধরনের সমবায় সমিতি থেকে সদস্যরা সুদ পায় না, লাভ পায়। এছাড়া, সমবায় দোকান আছে, হাউজিং আছে। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে একএকটি নির্দিষ্ট এলাকার স্থায়ী বাসিন্দারা সমবায় দোকান চালু করলে নিজেরাই উপকৃত হতে পারতেন। সদস্যরা অপেক্ষাকৃত কম মূল্যে ভালো পণ্য যেমন পাবেন, তেমনি বছর শেষে লাভের ভাগও পেতে পারতেন।

তবে সকল সমবায় সমিতিতেই একটা কমন সমস্যা রয়েছে। সমবায় সমিতি যারা পরিচালনার দায়িত্ব থাকে তাদের মূল উদ্দেশ্য থাকে নিজেদের ভাগ্য পরিবর্তন করা। সদস্যদের লাভ দিলেও পরিচালনার সময়ে যত দুই নাম্বারি উপায়ে সম্ভব টাকা মেরে দিতে থাকে। তারা বেতন নেয়, লাভের ভাগ নেয়, আর চুরি-চামারি তো আছেই।

১৮ ই জুলাই, ২০২০ সকাল ১০:০৯

চাঁদগাজী বলেছেন:


ধন্যবাদ, আপনি বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে ভালো তথ্য দিয়েছেন। বাংলাদেশে সমবায়ের বারোটা বাজিয়ে মহাজনি করে বেড়াচ্ছে হয়তো অনেকেই।

যাক, সমবায়ের মুল উদ্দেশ্য ঠিক রেখে উহা করলে সদস্যদের চাকুরী হয়, ব্যবসা করা যায়, নিজেরা কম দামে দরকারী পণ্য ইত্যাদি পেতে পারে, লভ্যাংশ থেকে সদস্যদের আয় হয়।

১৫| ১৮ ই জুলাই, ২০২০ বিকাল ৫:০৫

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:

লেখক বলেছেন: ভয়ানক ব্যাপার!
ঢাকায়, নাকি বরিশালে?

গাজীসব ঘটনা ঢাকার। বরিশালের মানুষ এত খারাপ না।
এতদিন ঢাকাকেই নিজের ভাবতাম এখন মনে হয় আমিও
আপনার মতো ঢাকার পরবাসী!!

১৮ ই জুলাই, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:০০

চাঁদগাজী বলেছেন:



আপনি কি একন ঢাকায়, নাকি বরিশালে? ঢাকায় না থাকাই ভালো।

১৬| ১৮ ই জুলাই, ২০২০ রাত ৯:২৫

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:

ঢাকাতেই আছি
বললেই চলে যাওয়া যায়না
শিকড় গেড়েছে বহুদূর।

১৯ শে জুলাই, ২০২০ রাত ২:৩৭

চাঁদগাজী বলেছেন:



ভালো, খুবই হুশিয়ার থাকুন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.