![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
শিক্ষা, টেকনোলোজী, সামাজিক অর্থনীতি ও রাজনীতি জাতিকে এগিয়ে নেবে।
এসএসসি পরীক্ষা শেষ, বেশ হালকা লাগছে; ভাবছি, দু'চারদিন অলসভাবেই কাটিয়ে দেবো। বাজার বার, লোকজন বাজারে চলে গেছেন, সুর্য হেলিয়ে পড়েছে, আমি কাছারীতে শুয়ে রূপকথার একটা বই পড়ছিলাম। হঠাৎ কাছারীর পাশ থেকে, অনেকটা মেয়েলী গলায় কে একজন অনেকটা সুর করে বলছে,
-মাসী, পিষিরা, কথা শোন, বাড়ীর লোকজনের অমংগল হবে, বাড়ীতে ভুজংগ আছে। আমি মা মনসাকে বলে ভুজংগ তাড়িয়ে দেবো।
শুনতে ভালোই লাগলো; সে আবারো একই কথা বললো। আমি কাছারী থেকে বের হয়ে এলাম; ধুতিপরা একটা কিশোর, খালি গা, মাথায় টিকি, গায়ে পৈতা; ঘাঁড় থেকে কাপড়ের ব্যাগের মতো কি একটা ঝুলছে। আমাকে দেখে বললো,
-আদাব কাকা।
-আদাব, তুমি কোন গ্রামের ছেলে?
-কাকা, আমি দাস গ্রামের ছেলে, নাম নরেন্দ্র চক্রবর্তী, বারীন্দ্র চক্রবর্তীর ছেলে।
-দাস গ্রাম? সে তো অনেক দুর!
-হ্যাঁ, রমেশ কাকার কাছে এসেছিলাম; উনি বাবার বন্ধু, বাবা পাঠায়েছিলেন, বাবার অসুখ, ঘরে কিছু নেই। রমেশ কাকা পরিবারসহ শহরে গেছেন, দেখা হয়নি।
ইতিমধ্যে, আমার মা, চাচীরা এসে যোগ দিয়েছেন। নরেন্দ্র তার মুখস্হ করা সেই বাক্যটি আবার বললো। আমি প্রশ্ন করলাম,
-ভুজংগ কি জিনিষ?
-সর্প
-বাড়ীতে তা'হলে সর্প আছে?
-আছে কাকা; গৃহস্তের বাড়ীতে শস্য থাকে, শস্য থাকলে ইঁদুর থাকে, ইঁদুর থাকলে সর্প থাকে।
আমার মা নরেন্দ্রকে বললেন, "বেলা তো পড়ে গেছে বাবু, তোমাকে তো বাড়ী ফিরতে হবে?"
-হ্যাঁ পিষিমা, ফিরতে হবে। পিষিমা, আমাকে খাবারের জল দেন।
আমি বললাম, "তুমি দুপুরে খেয়েছ?"
-না কাকা, খাওয়া দাওয়া হয়নি!
-তুমি ঠাকুরের ছেলে, মুসলমান বাড়ীতে খেতে সমস্যা নেই তো?
-খাওয়া কি ঠিক হবে?
-অবশ্যই ঠিক হবে!
আমার মায়ের পছন্দ হয়নি; তিনি বললেন,
-ঠাকুরদের ছেলেকে খাওয়ানো কি ঠিক হবে, ওর মা বাবা যদি মন খারাপ করে?
-মা, সে বাচ্চা মানুষ, না খেয়ে আছে; খেলে অসুবিধা হবে না।
মা গিয়ে খাবার নিয়ে এলেন: ভাত, মাছ, ডাল। নরেন্দ্র হাতমুখ ধুয়ে, কাছারীতে আমার টেবিলে বসে খেলো। মা ও চাচীরা চাল, ডাল, সীমের বীচি ও কয়েকটা পাকা কলা নিয়ে আসলেন।
আমি বললাম, "নরেন্দ্র, ভুজংগের কি হবে?"
-এখন মা মনসার মন্ত্র পড়ে দেবো, সব সর্পগুলো বাড়ী ছেড়ে চলে যাবে।
আমি হাসলাম; মা ইশারা দিলেন চুপ করতে। নরেন্দ্র চোখ বন্ধ করে সংস্কৃত ভাষায় কি একটা মন্ত্র পড়লো, তারপর বললো,
-মা মনসা তাঁর সর্পদের এ বাড়ী থেকে নিয়ে যাবেন।
মা বললেন, "বেলা বেশী পড়ে গেছে, নরেন্দ্র তুমি রওয়ানা হয়ে যাও।"
নরেন্দ্র চাল, ডাল, কলা ব্যাগে নিয়ে প্রস্তুত হলো।
-আদাব কাকা, মাসী, পিষিরা।
আমি বললাম, "পথে তো রাত হয়ে যাবে, নরেন্দ্র !"
-মা মনসা সাথে থাকবেন।
মা বললেন, "এখানে রাতে থেকে যাও, কাল ভোরে চলে যেও।"
-না পিষিমা, মা চিন্তিত হবেন, তিনি ঘুমাবেন না
১১ ই মে, ২০২১ রাত ১:১৫
চাঁদগাজী বলেছেন:
গত শতাব্দীর ৬০ দশকে বাংলার অবস্হা অনেক খারাপ ছিলো।
২| ১১ ই মে, ২০২১ রাত ১:২৭
রাজীব নুর বলেছেন: ৬০ দশক এর চেয়ে এখন কি অবস্থা ভালো?
তখন তো মানুষ এরকম বোধ আর লোভী ছিলো না।
১১ ই মে, ২০২১ রাত ১:৩০
চাঁদগাজী বলেছেন:
তখন মানুষের মাঝে আশা ছিল, এখন মানুষ হতাশা ও এনার্খীতে ভুগছে
৩| ১১ ই মে, ২০২১ রাত ১:৩৯
রাজীব নুর বলেছেন: তখনকার মানুষের জীবনটা সহজ সরল ছিলো। হানকি ভরা পানিপাত পেলেই খুশি। পেঁয়াজ, কাঁচা মরিচ আর লবন দিয়ে হাসি মুখে খেয়ে নিতো। এখনও ভিক্ষুকও পছন্দ না হলে খাবার নেয় না।
এখন জীবন বড় জটিল, আর কুটিল
১১ ই মে, ২০২১ রাত ১:৪৫
চাঁদগাজী বলেছেন:
দারিদ্রতাকে অনেকেই "সরল" জীবন বলেছে; আমার মনে হয়, ওখানে সরলতা ছিলো না, ছিলো অনেক কষ্ট।
৪| ১১ ই মে, ২০২১ রাত ১:৫৯
নেওয়াজ আলি বলেছেন: এখন যাযাবরের বেশ ধরে ইয়াবা বাণিজ্য করে কিছুদিন আগে ঢাকার বসিলায় একদল ইয়াবাসহ Rab হাতে ধরা পড়েছে
১১ ই মে, ২০২১ রাত ২:০৪
চাঁদগাজী বলেছেন:
জাতির বড় অংশের মরাল নষ্ট হয়ে গেছে; শিক্ষিতদের দক্ষতা কম; প্রশাসনে আছে ক্রিমিনালরা।
৫| ১১ ই মে, ২০২১ ভোর ৪:০৩
কামাল১৮ বলেছেন: ষাটের দশকের চিত্রটা সুন্দর ফুটে উঠেছে।
১১ ই মে, ২০২১ ভোর ৫:১৬
চাঁদগাজী বলেছেন:
সেই সময়টা ছিলো ভয়ংকর; কিন্তু একটা আশা ছিলো সমানে ভালো কিছু ঘটবে; এখন সামনের সয় নিয়ে মানুষ চিন্তিত, অপদার্থ এক জেনারেশন আসছে সামনে।
৬| ১১ ই মে, ২০২১ দুপুর ২:৪২
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:
ধর্মই উপমহাদেশের বিরাট সর্বনাশের কারণ।
১১ ই মে, ২০২১ বিকাল ৩:০৩
চাঁদগাজী বলেছেন:
সব মিথ্যার জন্য একসময় মুল্য দিতে হয়; ধর্ম হলো মিথ্যাকে আশ্রয় করে, সবচেয়ে বড় সংস্কৃতি।
©somewhere in net ltd.
১|
১১ ই মে, ২০২১ রাত ১:১৩
রাজীব নুর বলেছেন: নরেন্দ্র মিথ্যা কিছু বলে নি। সে যা বিশ্বাস করে তা-ই বলেছে।
আসলে দারিদ্রতা আর অশিক্ষা নরেন্দ্রদের পিছিয়ে রেখেছে।