![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
শিক্ষা, টেকনোলোজী, সামাজিক অর্থনীতি ও রাজনীতি জাতিকে এগিয়ে নেবে।
গ্রামের খোলা আলো, বাতাসে গ্রামের মেয়েরা বড় হয়, এদের মনগুলো আকাশের মতই সীমাহীন উদার। আমাদের পাশের গ্রামের ১টা কিশোরীকে সবাই পাগলী ডাকতো, সে কিছু মনে করতো না; কিন্তু আমি পাগলী ডাকলে সে মন খারাপ করতো।
আমাদের উত্তর পাশের গ্রামে এক বাড়ীর নাম ছিল, বড় বাড়ী; ধনে-মানে, গুণে-জ্ঞানে, এরা বড় কিছু ছিলেন না, এরা জনসংখ্যার দিক থেকে বড় ছিলেন; লোক সংখ্যা বেড়ে যাবার পর, মাঠের অপর পাশে এরা আরেকটি বাড়ী করেছেন, সেটার নাম ছোট বাড়ী; সেখানেও অনেক পরিবার। এই বাড়ীর লোকেরা পেশার দিক থেকে কৃষক ছিলেন; চাষবাস করে ভালোই চলতেন। এই বাড়ীর নারীদের রূপের ও গুণের সুনাম ছিলো; এবং এই ২ বাড়ীর লোকেরা নিজেদের মাঝে বিয়ে শাদীটা সেরে ফেলতেন; ফলে, এদের সুন্দরীরা নিজ বাড়ীতেই থেকে যেতেন। আমাদের সময়, পুরাতন বড় বাড়ীর সবচেয়ে প্রসিদ্ধ লোক ছিলেন, পন্ডিত; উনার নাম আমার মনে নেই, সবাই উনাকে পন্ডিত নামেই চিনতেন, তিনি আশেপাশের কয়েক গ্রামে, রাতের আসরে, সুর করে পুঁথি পাঠ করতেন; এই পন্ডিতের ছিল খুবই রূপসী এক কন্যা, জোসনা।
জোসনার বয়স যখন ১০ বছর, তার মায়ের মৃত্যু হয়; জোসনা রান্না করতো, বাবার কাপড় চোপড় ধুয়ে দিতো, ঘরদোর পরিস্কার রাখতো; তারপর, আশে পাশের ২ গ্রামে ঘুরে বেড়াতো; সব বাড়িতে তার নানী, দাদী, চাচী, সখি ছিলো। নিজ বাড়ীতেই জোসনার ২ খালা ছিলো, তারা মেয়ের পাড়া-বেড়ানো পছন্দ করতেন না; খালারাই জোসনাকে পাড়া বেড়ানোর কারণে পাগলী ডাকতেন; এতে গ্রামের অনেকেই তাকে পাগলী ডাকতেন; জোসসনা এই নিয়ে কখনো মন খারাপ করতো না, শব্দটাকে তার নামের পরিপুরক হিসেবে নিতো, মনে হয়; কিন্তু আমি পাগলী ডাকলে মন খারাপ করতো, আমাকে জোসনাই ডাকতে হতো।
জোসনা দুই এক সপ্তাহ পর, আমাদের বাড়ীও ঘুরে যেতো, আমাদের বাড়ীর মেয়েদের সাথে আড্ডা দিতো; আমি কাছারীতে থাকলে, কাছারীতে ঢুকে দেখা দিয়ে যেতো, বইপত্র উল্টায়ে দেখতো, বইয়ের ছবি দেখতো। আমি দশম শ্রেণীতে থাকাকালীন একবার আমার পড়ার সময় কাছারীতে এসেছিল, আমাকে পড়তে দেখে বলে,
-তুই খালি বই পড়িস, আমার সাথে একটু খেলতে পারিস না?
-কি খেলা তুই জানিস?
-যদু, মধু, রাম, সাম!
-এতো ৪ জনের খেলা, আর লোক কই?
-আরে বেকুব, আমার সাথে খেললে ৪ জন লাগবে না।
সে এক বিচিত্র হাসি হেসে চলে গেলো। আমাদের কাজের বুড়ো মিয়া ছিলেন সেখানে; তিনি এই নিয়ে অনেক দিন অবধি হাসতেন, বলতেন,
- আরে মিয়া, আপনি বেকুব, জোসনা আপনাকে ২ জনের যদু মধু খেলা শিখাতে চেয়েছিল, সেখানে রাম সাম নেই, আপনি বুঝেন নি।
কলজের প্রথম বর্ষে পড়ার সময় শীতের ছুটিতে বাড়ীতে এসেছি; লেখার কাগজ নেই; দুপুরবেলা মেঠো পথ দিয়ে, জোসনাদের বাড়ীর পাশ দিয়ে বাজারে যাচ্ছি; দুর থেকে কার শিশ শুনে পাশের দিকে তাকালাম; দেখি, জোসনা; ছোট বাড়ী থেকে দৌড়ায়ে আমার দিকে আসছে; এখন সে বড়, ১৪/১৫ বছরের মেয়ে।
-কই যাস? সে আমাকে প্রশ্ন করলো।
-বাজারে যাচ্ছি কাগজ কিনতে!
-আমার খুব সন্দেশ খেতে ইচ্ছে করছে, কিনবি?
-আমি নিয়ে আসবো।
-এখুনি আনবি। সে শাড়ীর আচলে বাঁধা গিটু থেকে ১টা সিকি বের করলো।
-ওটা রাখ, লাগবে না, আমার কাছে পয়সা আছে।
-তুই এখানে আসবি সন্দেশ নিয়ে, আমি বাড়ীর পেছন থেকে তোকে দেখবো।
বাজার ছিল আধা-মাইলের ভেতরে, আমার মনে হচ্ছিল, এ যেন শত মাইল দুরে; এত উৎসাহ আমি জীবনে কখনো অনুভব করিনি; আমার এত ভালো লাগছে যে, জোসনার জন্য সন্দেশ কিনবো। আমি সব পয়সা দিয়ে ১৬ টুকরা সন্দেশ কিনলাম; বাতাসের বেগে ফিরে এলাম। জোসনা ছোট বাড়ীর দিক থেকে একটা ১০/১১ বছরের মেয়ের হাত ধরে আসলো, তার চাচাতো বোন, সীমা; আমার জন্য অপেক্ষা করছিল।
আমার হাতে সন্দেশের পাতিল দেখে বললো,
-তুই কাগজ কিনিস নাই? সব পয়সা দিয়ে সন্দেশ কিনেছিস?
-আমি বিকেলে কিনে নেবো।
-চল, বাড়ী চল।
-না, তুই যা।
-আমার সাথে সন্দেশ খাবি না?
-না, তোদের বাড়ীর লোকজন কি মনে করবে?
-তুই লজ্জা করিস? তুই বড় হয়ে গেছিস! আচ্ছা, চল এখানেই খাবো, বসে পড়।
সে পাতিলের কভার খুলে মেয়েটার হাতে সন্দেশ দিলো, এবার আমাকে খাইয়ে দিতে চাইলো; আমি হাতে নিলাম। সে খেলো। তারপর আমাকে বলে,
-তুই সীমাকে একটা সন্দেহ খাইয়ে দেয়, এটা তোর হয়ে যাক; দেখছিস কি সুন্দরী মেয়ে, আমার হৃদয়ের টুকরা; একে তোর জন্য রেখে দিবো, এখন পড়ছে, আরো পড়ালেখা করাবো; তুই পড়ালেখা করছিস, আমি তো কোনদিন স্কুলে যেতে পারিনি।
০৩ রা আগস্ট, ২০২১ রাত ১০:১৮
চাঁদগাজী বলেছেন:
প্রেম টেম নেই, ছিলো সুন্দর সম্পর্ক।
২| ০৩ রা আগস্ট, ২০২১ রাত ১০:১০
শূন্য সারমর্ম বলেছেন: পাগলি বললে রাগ করা ;সুন্দরী জোসনার সন্দেশ আবদার; হাতের সব টাকায় সন্দেশ কেনা ;মিস্টিমুখের পর সীমাকে আপনার জন্য রেখে দেয়া।
০৩ রা আগস্ট, ২০২১ রাত ১০:১৯
চাঁদগাজী বলেছেন:
এসব মেয়েরা প্রকৃতির মতো উদার ছিলো সব অবস্হায়।
৩| ০৩ রা আগস্ট, ২০২১ রাত ১০:১৫
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
যুবক বয়সের প্রথম প্রেম পাঠ
ভুলে গেলেন কেমন করে !!
আস সে কোথায় আর
আপনি কোথায়?
বড় জানতে ইচ্ছা করে !!
০৩ রা আগস্ট, ২০২১ রাত ১০:২০
চাঁদগাজী বলেছেন:
তার নিজ বাড়ীতে বিয়ে হয়েছে, আমি কচুরীপানার মতো ভাসছি।
৪| ০৩ রা আগস্ট, ২০২১ রাত ১০:২৫
ডঃ এম এ আলী বলেছেন:
বেশ সুন্দর গল্প ।
তার পরের টি সীমাকে
নিয়ে লেখা হোক , সেটাও
মনে হয় উপভোগ্য হবে ।
০৩ রা আগস্ট, ২০২১ রাত ১০:৩৫
চাঁদগাজী বলেছেন:
সীমা অনেক রিজার্ভ ছিলো; তেমন বের হতো না, আমাকে দেখলে হাসতো; মনে হয়, জোসনার কথাগুলো ওর মনে পড়তো।
৫| ০৩ রা আগস্ট, ২০২১ রাত ১০:৫৮
ডঃ এম এ আলী বলেছেন:
সীমা কি মনে মনে হাসতো ?
যা দেখে আপনার মনে হতো
সে হাসছে । ভালো্ইতো, মনে
হয় হয় আপনি তার মনের
ভিতরটা দেখতে পেতেন ।
সেগুলিইতো গল্পের জন্য
একটি ভাল উপাদান ।
০৩ রা আগস্ট, ২০২১ রাত ১১:০২
চাঁদগাজী বলেছেন:
কৈশোরের জীবনটা অদ্ভুত ছিলো, সব মেয়েদের ভালো লাগতো!
৬| ০৩ রা আগস্ট, ২০২১ রাত ১১:২৯
ডঃ এম এ আলী বলেছেন:
সব মেয়েদেরকে ভাল লাগাটা এখনো
বজায় রাখেন , তাহলে আর যেখানে
সেখানে কোন ক্যাচাল ম্যাচাল
সহজে বাধবেনা
০৩ রা আগস্ট, ২০২১ রাত ১১:৪১
চাঁদগাজী বলেছেন:
নারীদের প্রতি আমার মনে অনেক অনেক সমীহ।
৭| ০৩ রা আগস্ট, ২০২১ রাত ১১:৩২
মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: মনের আকাশের জোসনা এখনো অম্লান আছে?
০৩ রা আগস্ট, ২০২১ রাত ১১:৪১
চাঁদগাজী বলেছেন:
অবশ্যই আছে।
৮| ০৪ ঠা আগস্ট, ২০২১ ভোর ৫:০২
কামাল১৮ বলেছেন: খারাপ লোকের পাল্লায় পড়লে জীবন বরবাদ হয়ে যেতো।সমাজে খারাপ লোকের অভাব নাই।
০৪ ঠা আগস্ট, ২০২১ ভোর ৫:১৫
চাঁদগাজী বলেছেন:
আমার কৈশোরে গ্রামে খারাপ মানুষজন চোখে পড়েনি।
৯| ০৪ ঠা আগস্ট, ২০২১ ভোর ৫:২৩
স্বপ্নের শঙ্খচিল বলেছেন: নারীদের প্রতি টান,
কেন জানি মনটা উচাটান,
নারীর ছলাকলা
করে যে মন উতালা !
০৪ ঠা আগস্ট, ২০২১ ভোর ৬:১১
চাঁদগাজী বলেছেন:
বিশাল অনুভবতা
১০| ০৪ ঠা আগস্ট, ২০২১ সকাল ১০:৫২
হাবিব বলেছেন: এভারের শিরোনামটা বেশি ভালো হয়েছে। ছন্দময় শিরোনাম।
০৪ ঠা আগস্ট, ২০২১ বিকাল ৫:০৮
চাঁদগাজী বলেছেন:
আমার দেয়া শিরোনামগুলো পাঠক আকর্ষণ করতে পারে বলে আমার ধারণা; অনেকে "শিরোনামহীন" পোষ্ট লেখেন, ইহা পাঠক কমায়।
১১| ০৪ ঠা আগস্ট, ২০২১ সকাল ১১:৪৩
রাজীব নুর বলেছেন: নারীদের প্রতি যারা শ্রদ্ধা সম্মান দেখায় তাঁরা জীবনে সফলতা পায়।
নারীদের নিয়ে আপনার চিন্তা ভাবনা অনেক উন্নত।
আমার কৌতূহলী মন জানতে চায়- আপনি কি প্রেম করে বিয়ে করেছেন?
০৪ ঠা আগস্ট, ২০২১ বিকাল ৫:০৯
চাঁদগাজী বলেছেন:
পরিচায়ে মাধ্যমে আমার বিয়ে হয়েছিলো।
১২| ০৪ ঠা আগস্ট, ২০২১ বিকাল ৪:৫৯
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
পরীমনির বাসায় র্যাবের অভিযান, দেখুন সরাসরি
০৪ ঠা আগস্ট, ২০২১ বিকাল ৫:১২
চাঁদগাজী বলেছেন:
দেখবো।
আপনার ষ্ট্যাটাস কি?
আপনার মুক্তি চেয়ে পোষ্ট দিলে, এডমিন আমার উপর অখুশী হবেন; কয়েকটা নোটীশ জমা হয়ে আছে; তাই, কিছু বলছি না।
১৩| ০৪ ঠা আগস্ট, ২০২১ বিকাল ৫:১২
হাবিব বলেছেন: আমার দেয়া শিরোনামগুলো পাঠক আকর্ষণ করতে পারে বলে আমার ধারণা; অনেকে "শিরোনামহীন" পোষ্ট লেখেন, ইহা পাঠক কমায়।
----আপনার ধারনা ঠিক। আপনার নামটাও পাঠক সংখ্যা বৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।
০৪ ঠা আগস্ট, ২০২১ বিকাল ৫:২৬
চাঁদগাজী বলেছেন:
তা'ঠিক।
বর্তমানে, বেশ কিছু পরিমাণ ব্লগার "চাঁদগাজী" নিকটার উপর ভয়ানক বিরক্ত।
১৪| ০৪ ঠা আগস্ট, ২০২১ বিকাল ৫:২৬
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন: দেখবো।
আপনার ষ্ট্যাটাস কি?
আমি জেনারেল !!
না দেবার আবশ্যকতা নাই
আই হ্যাভ টু ওয়েট
০৪ ঠা আগস্ট, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:৩৩
চাঁদগাজী বলেছেন:
আমি ঠিক আছি; কিন্তু অনেকগুলো নোটীশ জমা হয়েছে; নোটীশ জমা হওয়ার পর, আমাকে জেনারেল করা হয়, বা কমেন্ট ব্যান করে দেয়া হয়।
১৫| ০৪ ঠা আগস্ট, ২০২১ রাত ৮:১৫
আহমেদ জী এস বলেছেন: চাঁদগাজী,
আপনার এ জাতীয় টুকরো টুকরো জীবন কাহিনীগুলো মধুরতম।
তবে আপনি যে বোকার হদ্দ সেটা প্রকাশ হয়েছে আপনাদের কাজের বুড়ো মিয়ার কথায়। রসিক বটে।
আপনি তো দেখি শরৎচন্দ্রের গল্পের নায়ক শ্রীকান্তের মতো!
০৪ ঠা আগস্ট, ২০২১ রাত ৯:০৪
চাঁদগাজী বলেছেন:
গ্রামের মেয়েরা গ্রামের আলো-বাতাসে সহজ, সরল হয়ে বড় হয়; তারা নিজের অনুভুতি ইত্যাদি সহজ করে বলে।
১৬| ১৭ ই আগস্ট, ২০২১ রাত ৮:১৭
খায়রুল আহসান বলেছেন: সুন্দর, জীবনঘনিষ্ঠ গল্প।
আপনাদের কাজের বুড়ো মিয়ার রসবোধের প্রশংসা করতেই হয়। তিনি পরিস্থিতির সঠিক ব্যাখ্যাটা বুঝেছিলেন বলে মনে হয়।
১৮ ই আগস্ট, ২০২১ রাত ২:০৯
চাঁদগাজী বলেছেন:
তিনি খুবই ফানি ছিলেন; আমাকে মেয়েদের সাথে দেখলে আমার সাথে জোক করতেন।
১৭| ১৮ ই আগস্ট, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:৪৭
মিরোরডডল বলেছেন:
শুধু মেয়েরা না, গ্রামের নারী পুরুষ সব মানুষের মাঝেই একধরণের সরলতা আছে, যেটা খুবই ভালো লাগে ।
বাজার ছিল আধা-মাইলের ভেতরে, আমার মনে হচ্ছিল, এ যেন শত মাইল দুরে; এত উৎসাহ আমি জীবনে কখনো অনুভব করিনি; আমার এত ভালো লাগছে যে, জোসনার জন্য সন্দেশ কিনবো। আমি সব পয়সা দিয়ে ১৬ টুকরা সন্দেশ কিনলাম; বাতাসের বেগে ফিরে এলাম।
তারুণ্যের আবেগ মেশানো অনুভবের প্রকাশ । চমৎকার !
তুই পড়ালেখা করছিস, আমি তো কোনদিন স্কুলে যেতে পারিনি।
আহা ! এই লাইনটা পড়ে আমার জোসনার জন্য খুব মায়া লেগেছে ।
সে যদি পড়ালেখা করতো, তাহলে সীমার কথা বলতো না, নিজেকে নিয়েই ভাবতো ।
সে বুঝতে পেরেছিলো ব্যবধানটা কোথায় !
১৯ শে আগস্ট, ২০২১ ভোর ৪:৪৯
চাঁদগাজী বলেছেন:
আপনি অনেক কিছু খেয়াল করেছেন।
©somewhere in net ltd.
১|
০৩ রা আগস্ট, ২০২১ রাত ১০:০৫
রানার ব্লগ বলেছেন: চমৎকার প্রেম কাহিনী