![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
Convocation শব্দটার সাথে আলীর পরিচয় বেশী দিনের নয়, মাত্র তিন মাসের ।সে অবশ্য এই ডিপা্র্টমেন্ট এ এক বৎসর যাবত মেসেঞ্জার কাম পিয়ন হিসেবে কাজ করছে ।কিন্তু তিন মাস আগে এই শব্দটা প্রথম শুনতে পায় হেড স্যার এর মুখে ।হেড স্যার এ নিয়ে মহা ব্যস্ত, স্যার কে এর আগে এত ব্যস্ত সে দেখেনি ।প্রথম দিকে তারও উৎসাহের কোনো সীমা ছিল না । প্রায় বাড়ীতে ফোন করে বলত সে এই অনুষ্ঠানের জন্য অনেক ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে, এখন বাড়ী আসতে পারবে না । এই শব্দটার অর্থ সে এক স্যার কে জিজ্ঞেস করেছিল একবার কিন্তু স্যার যে কি বাংলা শব্দ বললো সে ঠিক বুজতে পারল না । একদিন অনুষ্ঠানের কিছু কাজ়ে হেড অফিস থেকে তার ডাক পরলো ।আলী অতি উৎসাহ নিয়ে হেড অফিস এ গেলো । ডিপার্টমেন্ট এর সব স্যার এর জন্য একটা করে ব্যাগ নেয়ার জন্য তার ডাক পরেছে । সবার জন্য কালো বোরকার মত একটা পোশাক, একটা মগ আর একটা কোর্ট পিন দিয়েছে । পিয়নদের জন্য কিছুই নেই, যেন তারা ইউনিভার্সিটির কেউ না ।পরক্ষনেই আলীর মন ভালো হয়ে গেল সে Convocation শব্দটার মানে শিখেছে, ব্যাগ এর গায়ে লিখা আছে । এস.এস.সি পর্যন্ত পরালেখা মাঝে মাঝে তাকে ভালই কাজ দেয় । নতুন শব্দের সাথে পরিচয়টা বেশ সুখের হল আলীর । সমাবর্তন শব্দটা অনেকটা ভদ্রলোক গোছের । ভদ্রতার আবেশ আলীর গায়েও লাগলো । সমাবর্তনের অনুষ্ঠান উপলক্ষে পুরো ইউনিভার্সিটিতে আজ সাজ সাজ রব । আলী সকাল সকাল রেডি হয়ে একটা রিক্সা নিল । রিকশাওয়ালারা কখনো সমাবর্তন অনুষ্ঠা্নে যেতে পারবে না ভেবে আলীর মনটা বেশ ফুরফুরা হয়ে গেল । ইউনিভার্সিটিতে নেমে আলী বেশ অবাক হল, সবাইকে অনেক সুন্দর লাগছে । হেড স্যার এর গাড়ীর সামনে গিয়ে ড্রাইভার জাহাঙ্গির কে তার মোবাইলটা দিল ছবি তোলার জন্য । মোবাইল টা সে নতুন কিনেছে, কেমেরা আছে এমন মোবাইল সে অনেক দিন ভেবে ছিল কিনবে ।কিনতে পেরে সে মহা খুশি আজকে ছবি তুলতে পারছে । আলীকে দুপুরের খাবার পর্যন্ত বাহিরে অপেক্ষা করতে হবে । ইউনিভার্সিটির প্রধান কাজ হচ্ছে শিক্ষা দেয়া । কিন্তু আলীর মত অল্প শিক্ষিত বা অশিক্ষিতের সংখাটাও এখানে কম নয় যারা সারা জীবন বিশ্ববিদ্যালয় থেকেও শিক্ষিত হতে পারে না কিংবা সমাবর্তন অনুষ্ঠানে প্রবেশের অনুমুতি পায় না । অনুষ্ঠান শেষে সবাই এক এক করে অথবা গ্রুপ ছবি তুলছে । সে এক দেখার মত দৃশ্য ।
©somewhere in net ltd.