![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বাবার হয়ত যথেষ্ট বয়স হয়েছে, টের পাচ্ছিনা। মনের দিক থেকে বাবা এখনও অনেক তরুন। আমার বাবাকে দেখে আমার ধারনা হয়েছে যে বয়স শুধু শরীরেরই বাড়ে। মানুষের আবার বয়স কি? বাবার শরীরের বয়স বাড়ার ব্যাপারটা বাবা নিজেই টের পাচ্ছেন কিছুদিন থেকে। চামড়া নরম হয়ে আসছে, মাংসপেশিগুলো আগের মত শক্ত নেই। ভারী কিছু বিয়ে নিতে গিয়ে পারেন না। বাবা তার পরিবারকে গত ৩০টি বছর ধরে আগলে রেখেছেন তার স্নেহ দিয়ে। কখনো অন্যায়ের পথে যাননি, তাই হয়ত আমাদের তেমন টাকাও হয়নি, ভালোবাসা পেয়েছেন, তাতে কি? ভালবাসা দিয়েতো আর পৃথিবী কেনা যায় না। অবসরে যাচ্ছেন। চিন্তায় বোধহয় মুখে ভাত রোচে না । সামনের মাসে কিভাবে চলবে। এদিকে মা তার ভেতরে সব ব্যাথা জমিয়ে এখনো মুখে হাসি ধরে রেখেছেন। বাসায় তার এক ছেলে বাদেও আরেকটি মেয়ে আছে। মেয়ে কলেজে পড়ে। কবে সে বড় হবে আর কবে তার বিয়ে দেবেন, এত দ্রুত বুড়ো হয়ে গেলেতো চলবে না। হাতের ব্যাথা থাকুক কি চোখে ঝাপসা দেখুক কাজ তো তার করতেই হবে। নাহয় এতবড় ঘর সামলাবে কে? আর আমি তাদের অপদার্থ ছেলে। মাসের শেষ। সময় আর টাকা দুটোই দেখা দিয়ে চলে যাচ্ছে, রাখতে পারিনি অথবা চেষ্টাও করছিনা। স্বপ্ন আর চাহিদা একে অপরের সাথে মারামারি করেই যাচ্ছে। নিজের ব্যাস্ততা যে অনেক, বন্ধু-সমাজ সব ছাপিয়ে পরিবারকে সময় দেয়াই হয়না আর এখন।
গ্রীষ্মের রাত, কালবৈশাখী ঝড়ের ঠিক আগে, ছাদে অনেক বাতাস। বাবা বসে আছেন সেখানে, পাশে গিয়ে বসলাম। বাবার ইদানিং ধারনা হয়েছে তিনি আর বেশীদিন বাঁচবেন না। ইনিয়ে বিনিয়ে আমাকে বললেন। আমি ভাব দেখাই, বাবা তুমি অযথাই চিন্তা করছ। এদেশের যা অবস্থা, জীবনেরই নিরাপত্তা নেই, আমি বাইরে চলে যাব। অনেক টাকা হবে আমাদের। তোমরাও থাকবে আমার সাথে। বাবা অন্য দিকে ফিরে রইল। অস্পস্টভাবে শুনতে পাই “তুই দেশে থেকে কিছু করতে পারবি না?” ক্লান্ত হননি তিনি। আমিই এ বয়সে ক্লান্ত হয়ে পড়ছি।
©somewhere in net ltd.
১|
৩১ শে মার্চ, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৪৩
দিশেহারা রাজপুত্র বলেছেন: বাবারা ক্লান্ত হন না। তারা হারতে জানে না।