![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মাহবুবুল আলমের জীবন সংক্ষিপ্ত বৃত্তান্ত জন্ম ও বংশ: কবি-কথাসাহিত্যিক, কলামিস্ট ও শিক্ষাবিদ মাহবুবুল আলম, ১৯৫৯ খ্রীষ্টাব্দের ১ জানুয়ারী, কুমিল্লা জেলার তিতাস উপজেলাধীন হাইধন কান্দি গ্রামের সম্ভ্রান্ত মোল্লা পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। বাবা বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ ও স্বনামধন্য শিক্ষক সাহেব আলী মাস্টার, মা বিদুষী গৃহিনী রাবেয়া খাতুনের নয় সন্তানের মধ্যে মাহবুবুল আলম তাঁদের ষষ্ঠ সন্তান। শিক্ষা: স্থানীয় ইসলামাবাদ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে প্রাথমিক শিক্ষা, পাঁচ পুকুরিয়া উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এস.এস.সি, নিমসার জুনাব আলী কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করে, তেজগাও কলেজ থেকে বি.এ ও এম.এ ডিগ্রী লাভ করেন। লেখালেখি: সত্তর দশকের গোড়ার দিকে তিনি সিলেট সমাচার, যুগভেরী, বাংলার বার্তাসহ বিভিন্ন পত্রিকা সাময়িকীতে ছড়া, কবিতা গল্প ফিচার লিখে তার সাহিত্য প্রতিভার বিকাশ ঘটান। সাথে সাথে সাহিত্যাঙ্গণের সম্পাদক হিসাবে মৌলভীবাজারের সমসাময়িক সাহিত্যানুরাগীদের মুখপাত্র সাহিত্যের কাগজ ‘প্রসূন’ সম্পাদনা করেন। একজন শিক্ষাবিদ হিসাবে দেশের শিক্ষা বিস্তারেও তিনি নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছেন, সেই লক্ষ্যে তিনি প্রতিষ্ঠা করেছেন-সানমুন ক্যাডেট স্কুল এন্ড কলেজ, হলিল্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্কুল, মিশো মিউজিক কেয়ার প্রভৃতি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। প্রকাশিত গ্রন্থসংখ্যা: ৩৮। উপন্যাস-৮, কাব্যগ্রন্থ-৯, ছড়ার বই-৩, কলাম সমগ্র-৫, নাটক-৭, গবেষনা-২, শিশুতোষ-২, প্রবন্ধ-নিবন্ধ-২টা। পুরষ্কার: সাহিত্যক্ষেত্রে অবদানের জন্য তিনি কবিতাঙ্গন এ্যাওয়ার্ড (২০০৭), ড.মমিনুল হক একাডেমি ইউ.কে এ্যাওয়ার্ড (২০০৮) সংশপ্তক বঙ্গবীর ওসমানী পদক, অলইন্ডিয়া চিলরেন্ড লিটারারী ফউন্ডেশন ‘উৎপল হোমরায়’ স্মৃতি পুরস্কার-২০১২ ও ভারতের পূর্ব মেদিনীপুরের কবি ও কবিতা পত্রিকা সন্মাননা-২০১২, দুইবাংলা কবিতা উৎসব সন্মাননা-২০১৩, সাপ্তাহিক কালপুরুষ পত্রিকা সন্মাননা-২০১৩সহ বিভিন্ন পদক ও সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন।
মাহবুবুল আলম //
বাংলাদেশে সাম্প্রতিক ঘটে যাওয়া গুলশান ও শোলাকিয়ার ঈদের জামাতের কাছাকাছি পর পর দুইটি জঙ্গি হামলার ঘটনায় দেশের মানুষ যখন শোকবিহ্বল ও হতবাক এবং দেশ যখন এক ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে ঠিক তখনই আমাদের দেশের অন্যতম বিরোধীদল বিএনপি নেত্রী এই মুহূর্তে গুলশানের ঘটনাকে উপলক্ষ করে নির্বাচনের দাবি তোলেন। দেশে জঙ্গী হামলা চলছে, এর মধ্যে তিনি নির্বাচন দেয়ার কথা বলেন। এটাই কী দেশের প্রতি তার দায়িত্বশীলতার পরিচয়? এমন প্রশ্ন এখন করছেন দেশের বিভিন্ন শ্রেণীপেশার মানুষ। গুলশানে হামলার আগে-পরে ফ্রান্স, আমেরিকা, ব্রাসেলস ও ইস্তান্বুলে ‘হাইসিকিউরিটি প্লেসে’ হামলার ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু সেসব দেশের কোনো রাজনৈতিক দল তাদের সরকারের পদত্যাগ দাবি করে নির্বাচনের দাবি তোলেনি। তাই খালেদা জিয়ার এ দাবি ঘোলাপানিতে মাছ শিকারের নামান্তর বলেই মনে করছে সবাই। কেউ কেউ এমন কথাও বলছেন এসব হামলার পেছনে বিএনপি-জামায়াত ও লন্ডনে নির্বাসিত তার পুত্র তারেক রহমানের সংশ্লিষ্টতার বিষয়টি বিভিন্ন মিডিয়ায় প্রকাশিত হয়েছে। আর এ কারণেই শাক দিয়ে মাছ ঢাকার মতোই দেশের এ কান্ত্রিকালে তিনি নির্বাচনের দাবি করেছেন। এবং ষ্পষ্টতঃ সরকারকে হুমকী দিয়েই বলেছেন নির্বাচন না দিলে এসব জঙ্গিহামলা বন্ধ হবে না এবং এর চেয়েও ভয়াবহ পরিস্থিত সৃষ্টি হতে পারে! খালেদা জিয়ার এমন বক্তব্য নিয়ে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকা ও টেলিভিশনের টকশো’তে তার সমালোচনাও চলছে।
এ ছাড়াও বেশ কিছু নির্দিষ্ট তথ্যও বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের কাছে এসেছে মন্ত্রনালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়ছে। সে দিন রাতে ওই ৫ জঙ্গির কাছেও আরব থেকে সরাসরি ফোন আসছিল। গুলশান-বনানী এলাকার ফোন পরিষেবা বন্ধ করে দিয়েছিল সেনাবাহিনী। তার পরেও দেখা যায় ওই বেকারিতে কয়েকটি স্যাটেলাইট ফোন সক্রিয় ছিল। স্যাটেলাইট ফোনের মাধ্যমে জঙ্গিরা দেশের ভেতর ও দেশের বাইরে আরবের কয়েকটি দেশসহ পাকিস্তানের সাথে যোগাযোগ রাখছিল। জঙ্গিরা সেনাবাহিনীর অফিসারদেরও তাদের সঙ্গে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছিল। বলেছিল, তাহলে শেখ হাসিনা সরকারের পতন ঘটিয়ে বাংলাদেশে শরিয়ত আইন প্রতিষ্ঠা করা যাবে।
এ বিষয়ে আনন্দবাজার পত্রিকার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার লন্ডনবাসী ছেলে তারেক জিয়ার ফোনও ১ জুলাই সারারাত ব্যস্ত ছিল। তার ফোন থেকেও ঢাকা, করাচি ও আরবে কথা বলার প্রমাণ মিলেছে। গোয়েন্দাদের দাবি, তার এক বিশ্বস্ত চাকরের নামে নথিভুক্ত ফোনে সেই রাতে কথা বলছিলেন তারেক জিয়া। বাংলাদেশের গোয়েন্দাদের দাবি, শুক্রবার রাতে জঙ্গি হানা চলার সময়ে করাচি এবং মধ্য এশিয়ার মধ্যে কয়েক হাজার ফোন কল গিয়েছে। পাশাপাশি দুবাই, সিরিয়া থেকেও ওই সময় ঢাকায় অজস্র ফোন এসেছে এবং গিয়েছে। বাংলাদেশের গোয়েন্দারা মনে করছেন, জিম্মি অবস্থায় করাচি, আরব এবং ঢাকার মধ্যে অজস্র ফোনালাপ থেকেই স্পষ্ট হচ্ছে কোন কোন দেশ এই ঘটনার নেপথ্যে কলকাঠি নেড়েছে।
আনন্দবাজার পত্রিকার প্রতিবেদনে আরও বলা হয় ফাঁসির আসামি জামাতে ইসলামি নেতা মির কাসেম আলিকে জেল থেকে মুক্ত করাটাও গুলশনের জঙ্গি হানার অন্যতম লক্ষ্য ছিল বলে মনে করছেন বাংলাদেশের গোয়েন্দারা। প্রভাবশালী গোয়েন্দাদের দাবি—পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই এই ঘটনার সঙ্গে সরাসরি জড়িত। ভারতীয় গোয়েন্দা এবং গুপ্তচর সংস্থাগুলি এখন সেই তথ্যের বিশ্লেষণ করছে। বাংলাদেশের নিরাপত্তা এজেন্সিগুলি জানতে পেরেছে, হাসিনা সরকারকে উৎখাত এবং তাকে হত্যার ছক হিসাবে জঙ্গিগোষ্ঠীর হাতে প্রায় ১৫০ কোটি টাকা পৌঁছেছে। এই হামলার পিছনে সেই টাকাও থাকতে পারে বলে আশঙ্কা করছে ঢাকা।
এ ব্যাপারে আজ ১২ জুলাই ২০১৬ দৈনিক জনকন্ঠে প্রকাশিত মমতাজ লতিফ ‘জঙ্গির উন্মত্ততা ও এক নেত্রীর নিরবতা’ শিরোনামের নিবন্ধে বলেছেন,‘প্রধানমন্ত্রীর জঙ্গীদের প্রতি ‘জিরো টলারেন্স’ নীতিকে কারা পরিহাস করল, কারা দীর্ঘদিনের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিকে বিনষ্ট করে বর্তমান সরকারের প্রতি ভারত, চীন ও জাপান এবং পশ্চিমাদের ক্ষুব্ধ করতে চাইছে’ সেটিও এবার বের করা প্রয়োজন। বিপরীতে, দেখা গেল জামায়াতমিত্র, পেট্রোলবোমায় মানুষ হত্যাকারী নেত্রী পরপর দুদিন বিবৃতি দান ও সংবাদ সম্মেলন করল, যা করতে আগে তাকে কখনও দেখা যায়নি। এমনকি বিডিআর হত্যাকান্ডে ও নয়, পেট্রোলবোমায় হত্যার পর তো নয়ই। সংবাদ সম্মেলনে তিনি ছিলেন উজ্জ্বল ও ঝলমলে। শোকের কোন চিহ্নমাত্র তার মুখে ছিল না। এসব কিছু তদন্ত করে দেখতে হবে।’
এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ বলেছেন, গুলশানে হামলার দিন তারেক রহমানের কর্মচারী পরিচয়ে খালেদা জিয়াকে পাকিস্তান ও লন্ডন থেকে টেলিফোন করা হয়েছিল। এতেই প্রমাণ হয় খালেদা জিয়া এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত। খালেদা জিয়া প্রথম দিন জাতীয় ঐক্যের কথা বলার দু’দিন পরই বলছেন, এ সরকার ক্ষমতা ছেড়ে দিয়ে নির্বাচন দিলেই নাকি সব জঙ্গী-সন্ত্রাসী কর্মকান্ড বন্ধ হয়ে যাবে। তাহলে কি আপনার (খালেদা) নির্দেশে এ হামলা হচ্ছে? যখন সারাবিশ্বে সন্ত্রাসবাদ চলছে, তখন নির্বাচন দিয়ে আপনি কিভাবে সন্ত্রাস বন্ধ করবেন? জাতিকে তার জবাব আপনাকে দিতে হবে। তিবে আশার কথা এই যে খালেদা জিয়া নির্বাচনের দাবি করলেও দেশের মানুষ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি তাদের পূর্ণ সমর্থনের কথা ব্যক্ত করে বাংলাদেশের পাশে থাকার অঙ্গিকার ব্যক্ত করে বলেছেন, জঙ্গিবাদ এখন কোন নির্দিষ্ট অঞ্চল কিংবা একা কোন দেশের সমস্যা নয়, এটি এখন বৈশ্বিক সমস্যা। তাই সবাইকেই ঐক্যবদ্ধভাবে এ সমস্যার সমাধান করতে হবে।
দেশের সকল শ্রেণী-পেশার মানুষের অভিমতও তা ই। বিএনপিকে বাদ রেখেই জঙ্গিবাদ দমনের জাতীয় ঐক্যমত্য সৃষ্টি হয়েছে, তাই গতকাল ঢাকায় সাম্প্রদায়িকতা, জঙ্গীবাদসহ অপশক্তি মোকাবেলায় দেশের সামাজিক, সাংস্কৃতিক এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী সকল শ্রেণী-পেশার মানুষকে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন দেশের বিশিষ্টজনরা। গতকাল এক বিবৃতিতে দেশের বিশিষ্টজন ও বরেণ্য ব্যক্তিরা বলেন, তাদের আরও লক্ষ্য জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করা। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশে নিরাপত্তা ঝুঁকির বার্তা পৌঁছে দেয়া। এর মধ্য দিয়ে তারা দেশে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করে জাতীয় অগ্রগতির পথ রুদ্ধ করতে চায়। তাদের দীর্ঘমেয়াদী লক্ষ্য মুক্তিযুদ্ধের চেতনার অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গঠনের বিপরীতে মধ্যযুগীয় তালেবানী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা। তারা বলেন, আমরা বিশ্বাস করি দেশের অগণিত মানুষ ধর্মের অবমাননা ও ধর্মের নামে নিষ্ঠুরতা মেনে নেবে না। তারা শান্তিপূর্ণ ও নিরাপদ বাংলাদেশের অগ্রযাত্রায় বদ্ধপরিকর। কেবল আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দ্বারা এ জাতীয় কর্তব্য সম্পন্ন করা সম্ভব নয়- প্রয়োজন একাত্তরের মতো সমাজের শক্তির ঐক্যবদ্ধ উন্মোচন ও সক্রিয়তা। আমরা দেশের সামাজিক, সাংস্কৃতিক এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী সকল শ্রেণী-পেশার মানুষদের কাছে আহ্বান জানাই, আসুন আমরা সমবেতভাবে এ অপশক্তির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াই। কতিপয় বিপথগামীর কাছে মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ী বাংলাদেশ পরাস্ত হতে পারে না।’
শেষ করবো এই বলেই যে, তাহলে কি খালেদা জিয়া জামায়াত-শিবিরের সাথে মিলে এসব অপকর্ম করাচ্ছেন, তা না হলে তিনি এত জোর দিয়ে বলেন কি করে নির্বাচন দিলেই সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে! একদিকে জঙ্গি মোকাবেলায় জাতীয় ঐক্যের কথা বলেন, আবার অন্যদিকে দেশের এ ক্রান্তিকালে নির্বাচনের দাবি করেন। তাহলে এ মুহূর্তে খালেদা জিয়ার কন্ঠে কন্ঠে কন্ঠ মিলিয়ে সারা বিশ্বেই নির্বাচনের দাবি তোলা উচিত। খালেদা জিয়া না হয় তার জাদুর কাঠি! বলে বাংলাদেশের জঙ্গিদের নিমূল করতে পারলেন, কিন্তু সারা বিশ্ব এই সমস্যার মোকাবেলা করবে কিভাবে? তা হলেতো তাকে বিশ্বের নেতৃত্ব নিজ হাতে তোলে নিতে হবে। আশা করি তিনি তা পারবেন! আর পারবেন তার অধঃস্তন মওদুদ আহমদ। একটু আগে টিভির ক্রলে দেখলাম মওদুদ আহমদ বলেছেন বিএনপি বাদ দিয়ে জঙ্গিউত্থান ঠেকানো যাবেনা। তা হলে তার এ বক্তব্যে আমরা কি বুঝতে পারলাম, এটা বুঝতে পারলাম যে, ওনাদের হাতেই রয়েছে জঙ্গিদের নিয়ন্তণের সূতো। তারা যেভাবে যখন নাচাতে চাইছেন তাদেরই সৃষ্ট সে ফ্রাঙ্কেস্টাইন আদেশ তামিল করে সেভাবেই নাচবে।
©somewhere in net ltd.