নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

পোষাক তৈরীর কারখানায় মাসিক বেতনে কামলা দেয় মাস শেষে মাইনের আশায়, যে মাইনে দিয়ে চলবে নিজের পরিবার ও সমাজের জন্য কিছু একটা করার প্রচেষ্টা মাত্র। নিতান্তই সাদামাঠা গ্রাম থেকে আসা স্বল্প শিক্ষিত মানুষ।

চোরাবালি-

চোরাবালি- › বিস্তারিত পোস্টঃ

জাতি অসৎ হলে সরকার তথা প্রাশসনের কিইবা করার থাক-

২০ শে নভেম্বর, ২০১৯ সকাল ১১:৪০

আমার চলাচল সচারচর বাসা - অফিস, অফিস - বাসা। গার্মেন্টেস এ কামলা খাটি তাই দেশের খবরাখবর বলতে, কনটেইনটার বাহি লড়ি ও কাভার্ডভ্যান ধর্মঘট ছাড়া কিছু খোজ রাখার সময় থাকে না বা প্রয়োজনও থাকে না। এর বাইরে যেটুকু সময় পাই সেটুক হয় বাচ্চাদের সাথে অথবা পোষাপাখিদের সাথে ব্যয় করি। অতিব দরকার ছাড়া বাইরে যাই না।

গতকাল রাত ৮টার দিকে বের হলাম একটু প্রয়োজনে। জেলা শহর ও আমি যেহেতু বের হইনা সে জন্য এটা আমার জন্য বেশ রাত। কিপটামি স্বভাব ও স্বারিরিক পরিশ্রম বিবেচনায় আমি ১০মিনিটের রাস্তায় সর্বদা পা'জোড়া ব্যবহার করি। তো পা জোড়ার ব্যবহারে যখন এগিয়ে চলেছি, চারিদিকে শুধু লবন লবন শব্দ, এবং মোটামুটি বাজার ফেরত সবার হাতেই লবনের ব্যাগ। ঘটনা কি? রাষ্ট্রকি তা হলে পেয়াজের গন্ধ দুর করতে লবন নিয়ে মেতে উঠল নাকি। কাজ সেরে হাটছি এককাপ লাল চা' খাবার আশায়। পথে চোখে পড়ল কমলা লেবু, চায়ের কথা ভুলে কমলা লেবু কিনতে গেলাম, দোকানী আমার কাছে কমলা বিক্রিতে যতটা না আগ্রহী তার থেকে বেশি আগ্রহী হয়ে উঠল লবনের কথা নিয়ে। আমি নড়েচড়ে উঠলাম তা হলে কি লবন গুজব সত্যিই নাকি। এজনই কি হাতে হাতে লবন।

এবার গিয়ে দাড়ালাম এক মুদি দোকানে, সেখানেও লাইন লবনের জন্য। এক মহিলা আসল ৫কেজি লবন কিনতে, দোকানী ১কেজির বেশি বিক্রি করবে না। মহিলা নাছোর বান্দা সেও কিনবে, শেষমেশ দোকানদারকে প্রস্তাব করছে দাম বেশি হলেও তার ৫কেজিও লাগবে। আমি গিয়েছিলাম মেথি কিনতে, এসব কান্ড কারখানা দেখে ভুলেই গেলাম আমার মেথির কথা।

বাঙালির একটা স্বভাব আছে তা হল দাম বাড়তি দেখলেই অধিক পরিমানে কিনে স্টক করা। সদ্য পেয়াজের দাম আজ দেশিটা ১৫০ আমদানি করাটা ১২০ আগামীকাল ইনশাল্লাহ আরো অনেক কমে যাবে। পেয়াজের দামের সময় প্রতিটা দোকানে পেয়াজ কেনার হিড়িক। আমি ৫০করে "স্বপ্ন" থেকে পেয়াজ কিনে ঘর ফিরলাম, বাসায় গিয়ে শুনি পেয়াজ নাকি ১০০। খোজ নিতে গিয়ে দেখি সত্যিই ১০০। এখানে এমন তো নয় যে পেয়াজ সে রাতে কিনে এনেছে যার ফলে দাম বৃদ্ধি। প্রতিটা দোকানেই অনন্ত ১সপ্তাহের পিয়াজ স্টক থাকে, আড়তেও তাই। এখানে খুচরা বিক্রেতা থেকে আড়ৎদার কেও কিন্তু সৎ না। এখানে প্রশাসন বা সরকারপক্ষের কেও কিন্তু দাম বাড়ায়নি। দাম যা বাড়ানোর বাড়িয়েছে আমার-আপনার মত কারো ভাই, কারো প্রতিবেশ, কারো আত্মীয়। এখানে আমাদের আত্মীয়, প্রতিবেশী, ভাই এরাই কিন্তু চারিদিকে অতিরিক্ত লাভের আশায় দাম বৃদ্ধি করছে। আর প্রশাসনে এদেরই কেও না কেও।

মোড়ের রিক্সওয়ালা থেকে শুরু করে দেশের সর্বস্তরের মধ্যে সৎলোকের দেখা মেলা বড়ই কষ্টকর।
আকাশে মেঘ, অফিস সময়, আর উৎসব বাড়লেই রিক্সভাড়া দিগুন, আমরাও আজ ৫মিনিটের রাস্তা হাটতে চাই না। আমাদের আর্থিক স্বচ্ছলতায় শরীর একটু গরম হলেই ছুটে যায় ডাক্টারের কাছে, ডাক্টার বসেই আছে লম্বা প্রেসক্রিপশন নিয়ে, জ্বরের এক দিনেই ৩টা টেস্ট, এন্টিবায়োটিক, ভিটামিন এবং এমন সব ভৃতিকর কথা বলবে যে আপনি আবার ৩দিন বাদে ছুটতে বাধ্য। প্রেসক্রিপশন হাতে নিয়ে গেলেন ফার্মেসিতে, এবং ৫টা অষুধের মধ্যে ২টি নকল অষুধ গছিয়ে দিবে। বাড়িতে এসে খাবেন আর মুচকি মুচকি হাসবেন, যাহ রোগ তুই বিদেয় হ।

আমরা কথায় কথায় সরকারী লোকজনদের ঘুষ/দুর্নীতি নিয়ে দোষ দিয়ে থাকি। কিন্তু নিজের দিকে আঙুল তুলি না। গার্মেন্টেস এ কামলা খাটি এটা বেশ মজার জায়গা যেখন থেকে National and International চিটার বাটপারের দেখা মেলে। একজন মার্চেটডাইজার ৫-১০বছর চাকরী করে বিলাসবহুল বাড়ি, গার্মেন্টস এর মালিক বনে যান, কিভাবে যান সে কথা থাক, কাখানায় শ্রমিকদের টিফন দেয়া হয় সেটা কখনও মালিককৃত বরাদ্দের সমমানের থাকে না, বিভিন্ন সময় শ্রমিকদের উপহার সামগ্রী দেয়া হয় সেখানেও একই অবস্থা। ৩০হাজার টাকা বেতনে চাকরী করে ৫তলা বাড়ি বানিয়ে ফেলে নিশ্চয় সৎপথে না সেটা নিঃস্বন্দহে বলা যায়।

ঠিক এভাবে প্রতিটা স্তরে আজ অসৎ লোকে ভরপুর। সেখানে প্রশাসন বা সরকারের কিইবা করার আছে যদি না মানুষ নিজেদের অবস্থান থেকে সৎ না হয়।

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ২০ শে নভেম্বর, ২০১৯ দুপুর ২:২৫

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: একটি জাতি হিসাবে, এখন আমরা সকলেই ,সমস্ত স্তরে দুর্নীতির দোষে দূষিত ।প্রত্যেকেই অনেক বেশি উপার্জন করতে চাই,সেখানে বৈধ বা অবৈধ কোন বিষয় নয় ।
প্রশাসন, দায়িত্বশীল ব্যক্তি, মাঝারি, দরিদ্র বা ধনী সবাই আরও অনেক উপার্জনের জন্য দৌড়াচ্ছেন ।এ জন্য সবাই অনেক অবৈধ কাজ করছে ।প্রত্যেকে স্বল্প সময়ের মধ্যে অনেক উপার্জন করতে চায়,আর এই জন্যই এখন আমরা কিছু কিছু ক্ষেএে শীর্ষস্থানীয় ।এই অবস্থানটির ভাল অর্থ নাও হতে পারে ।
যদি আমরা সবাই কোন না কোন দোষে দোষী হই ,তবে কে আমাদের রক্ষা করবে অথবা আমরা কিভাবে ,কোন অষুধের
সাহায্যে নিরাময় হব ?

২০ শে নভেম্বর, ২০১৯ দুপুর ২:৩৯

চোরাবালি- বলেছেন: গার্মেন্টসে কামলা খাটি তাই মাথাও গার্মেন্টস কেন্দ্রিক। তবে আমার যেটা মনে হয় আমাদের সমাজের নৈতিকতার ১২টা বাজিয়েছে আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা। আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থায় নৈতিকতা বলতে কিছু আছে বলে আমার জানা নাই।

একটা বাচ্চা যখন জন্ম হয় তখনই মা মুচকি মুচকি হাসে, বাবা বলে ডাক্টর হবে, ডাক্টার হয়ে টাকা কামাবে, চাচা বলে ওটা হবে, ওটা হয়ে টাকা কামাবে, মোট কথা যে যাই বলুক তার মূলমন্ত্র টাকা কামানো। শিক্ষা, বিজ্ঞাপন, রডিও, টিভি যেখানেই যান মানুষের অর্থটাকে আগে প্রদর্শণ করা হয়।

নাটক দেখবেন, আগে দেখাবে তার অট্টালিকা, গাড়ি, শিক্ষায়- দুধে পানি মিশিয়ে কিভাবে লাভ করা যায়, পরিবার- ওমুকের এতটাকা, তেমুক আত্মীয় গাড়ীতে ঘোরে, সমাজে- টাকাওয়ালাদের অতিরিক্ত আপ্যায়ণ, এভাবে প্রতিটি ক্ষেত্রেই শেখানো হয় টাকা আর টাকা ছাড়া কিছু নাই।

২| ২০ শে নভেম্বর, ২০১৯ বিকাল ৪:৪১

রাজীব নুর বলেছেন: না ভাই আপনার সাথে একমত হতে পারলাম না।
এই জাতি মহান জাতি। এরা সবাই অসৎ নয়। বিশ্বাস করুন এরা সবাই অসৎ নয়।

২১ শে নভেম্বর, ২০১৯ সকাল ৯:২৮

চোরাবালি- বলেছেন: সবাই খারাপ বা সবাই অসৎ হতে পারে না কখনও। আমি বিশ্বাস করি মেজরিটি এখনও সৎ কিন্তু তারা নির্বাক। নিজেকে বাচিয়ে চলে সর্বদা যেটাও অসৎ এর সামিল

৩| ২০ শে নভেম্বর, ২০১৯ বিকাল ৪:৪৮

বাংলার জামিনদার বলেছেন: আপনার পর্যবেক্ষন একদম সঠিক। যেখানে চোর ঘুষখোরের আদর আছে, কিন্তু সৎ লোকের কোনো বেইল নাই, ইভেন পরিবারের বাপ মা, সন্তান স্ত্রীর কাছেও নাই, সেখানে আর কি করবে? এটাই আমরা সবাই, যারা সৎ তারা ইনফেক্ট সুযোগ পায়নাই।

২১ শে নভেম্বর, ২০১৯ সকাল ৯:৩০

চোরাবালি- বলেছেন: সৎভাবে আজ সরকারী নয় বেসরকারী চাকরী করা সবথেকে কঠিন। সকারী চাকরীর তাও একটা নিশ্বচয়তা আছে চাকরী থাকবে বড় জোর স্পেশাল হবে (ওএসডি)।
সবাই এখন টাকাটাকে প্রাধান্য দেয় মানুষকে নয়

৪| ২০ শে নভেম্বর, ২০১৯ রাত ৮:০৯

জগতারন বলেছেন:
অনেক দিন পরে একটি আত্মবিশ্লেষন মূলক লিখা পাইলাম।
লেখক চোরাবালি- -কে আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানাই এমন সুন্দর একটি প্রবন্ধ আমাদের উপহার দেওয়ার জন্য।
এরকম আরো লিখুন ভাই; এভাবেই দেশের মানুষ সচেতন হইবে।

ব্লগার রাজীব নুর-এর সাথে আমি দ্বিমত পোষণ করিতেছি।
এই প্রবন্ধে লেখক সামগ্রিকভাবে তাহার বাস্তব কর্মজীবন থেকে পর্যবেক্ষন তুলিয়া আনিয়াছেন।
আমরা সবাই জানি দেশের সকল মানুষই খারাব না।
তবে সামগ্রীকভাবে বাংলাদেশটি দুর্নীতি গ্রস্ত জাতি।
শুধু বাংলাদেশই না বলতে পৃথিবীর প্রায় সকল মুসলমান দেশই দুর্নীতিতে ভরিয়া গেছে।
মুসলমাদের এখন এক ক্রান্তি কাল চলিতেছে।
ইহা হইলো বিশ্ব সভ্যতার সাইকেল বা চক্র।
এক এক দেশ বা মহাদেশ এক এক সময়ে সভ্যতায় উদ্ভাসিত হইয়া উঠে।
আবার এক এক দেশ বা জাতি তাহাদের স্বেচ্ছাচারিতায় সভ্যতার মাফকাঠিতে তলানিতে যাইয়া পৌঁছে।

২১ শে নভেম্বর, ২০১৯ সকাল ৯:৩৩

চোরাবালি- বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে।
সৎলোকেরা আজ নির্বাক। গা বাচিয়ে চলে। আর না বাচিয়ে চলেই বা উপায় কি। শাসনভার যেখানে আত্মকেন্দ্রিকদের হাতে

৫| ২১ শে নভেম্বর, ২০১৯ ভোর ৬:১৩

অগ্নিবেশ বলেছেন: দোযোখ-টোজোখ, কেয়ামত-টেয়ামতের ভয় কি কেউ পায় না?

২১ শে নভেম্বর, ২০১৯ সকাল ৯:৪০

চোরাবালি- বলেছেন: মসজিদে নামাজ পড়তে গিয়ে আশেপাশের লোক দেখে বেশ অসস্তী লাগে। যে কিনা কিছু সময় আগেই গলার উপর পা দিয়ে ঘুষ আদায় করল সেই এখন নামাজে। তারপরও যদি আল্লাহ হেদায়েত দান করতেন।

আমাদের মুফতিরা আজ শুধু বয়ান করেন নামাজ না পরলে জাহান্নাম, মসজিদ বানাইলে কালকিয়ামত পর্যন্ত সোয়াব, মানুষ খাওয়ালে সোয়াব। কিন্তু কোন ঈমামকে বলতে শুনেছেন- হারাম টাকা দান করাও হারাম? বলা কখনও কি বলেছে- কেও হারাম টাকা দান করবেন না, যারা হারাম খায় তাদের বাসায় দাওয়াত কে ফিরিয়ে দিতে দেখেছেন? কিছু লোক করে, তাদের সংখ্যা আজ সমাজে বড়ই নগণ্য। এবং তাদেরকে আমরা সহ্য করতে পারি না।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.