নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

পোষাক তৈরীর কারখানায় মাসিক বেতনে কামলা দেয় মাস শেষে মাইনের আশায়, যে মাইনে দিয়ে চলবে নিজের পরিবার ও সমাজের জন্য কিছু একটা করার প্রচেষ্টা মাত্র। নিতান্তই সাদামাঠা গ্রাম থেকে আসা স্বল্প শিক্ষিত মানুষ।

চোরাবালি-

চোরাবালি- › বিস্তারিত পোস্টঃ

আসুন ভালো কিছু চিন্তা করি # ৩

৩০ শে নভেম্বর, ২০১৯ সকাল ১১:৩২

(সরকারী নয় বেসরকারী প্রতিষ্ঠানই সৎলোকের জন্য কষ্টকর)
সমাজের দুর্নীতি নিয়ে সব থেকে বেশি কথা বলা বেসরকারী পর্যায়ের লোকেরা কিন্তু তারা নিজেদের মধ্যেকার দুর্নীতির কথাগুলি ভুয়ে যায়। তারা সরকারী লোকদের সাথে কাজ করতে গিয়ে দুর্নীতির কারনে সমস্যায় পড়তে হয় বলেই তারা বলে বেড়ায় অধিকতর। সরকারী চাকরী তাও অনন্ত টিকে থাকবে কিন্তু বেসরকারী কোম্পানীতে গ্রুপের চালে চাকরি করাই দায় সৎ মানুষদের। বেসরকারী কামলা সুবাদে এটা আমার কামলা ক্ষেত্র নং ১১। আমি বিশ্বাস করি এদেশে চাকুরীপ্রার্থী যেমন আছে দাতার সংখ্যাও নেহাতই কম নয় তার থেকে বড় কথা সর্বপরি রিজিকের মালিক আমার সৃষ্টিকর্তা। সরকারী পর্যায়ের মত বেসরকারী পর্যায়েও আছে কিছু দারুন চিত্র। হয়ত কিছু গিফট হয়তবা কিছু বকশিস, সর্বপরি তেল। আমি যেহেতু গার্মেন্টস এ কামলা খাটি সেহেতু সে সেক্টরের কিছু চিত্রই বর্ণনা করি।

অফিসের কাজে মোটামুটি সবাইকে বাইরে যেতে হয় কম বেশি যে টাকা কোম্পানী প্রদান করে থাকে। কাজ সেরে দিনের শেষে বিল দাখিল করবেন হিসবা বিভাগে। তারা বিল দেয়ার সময় রাউন্ড হিসেবে প্রদান করবেন বাকিটা মুচকি হাসি। যেমন কেও বিল দিল ৫৩০টাকা। ৫০০টাকা দিয়ে হাসি দিবে। সবাই গাড়ীর ড্রাইভারদের তেল চুরির অভিযোগ তোলে। ড্রাইভার যখন তেলে বিল জমা দিবে তার আগে তাকে ভ্যায়িকেল বিভাগ থেকে স্বাক্ষর গ্রহণ করতে হবে কিলোমিটার হিসাব দেখিয়ে, সেখানেও তাকে হিসেব নিকেষ করতে হয় তারপর যখন সে হিসাব বিভাগে যাবে আছে রাউন্ডের ফ্যাকরা। এই রাউন্ড ফ্যাকরা তারা করে সর্বপরি সবার সাথে, এডমিন, এইচআর, বাণিজ্যিক, সেলস সব ডিপার্টমেন্টের সাথে। অন্য দিকে আছে শ্রমিকদের বেতন প্রদানের সময় রাউন্ড ফ্যাকরা সেখানে অবশ্য তারা ১/২ বা ৫টাকা বেশি করতে পারে না। কিন্তু মজার গরমিল ঘটনায় হিসেবে। কোন মালিকের পক্ষেই সম্ভব না ২/৩হাজার লোকের হিসেব একটা একটা করে যোগফল দেখা, রেনডম বেসিস দু'একটা বিভাগ হিসেব করে দেখবে। ২০১২তে নতুন একটা কোম্পানীতে জয়েন করলাম। যেহেতু তারা এদেশের বেতন হিসেবে আমাকে মোটামুটি উচ্চ বেতনেই নিয়েছেন তাই আমাকে অনুরোধ করলেন আমি যেন বেতন সীটটা একটু দেখে দেই। কিছুটা কৌশলগত কারনে এইচআর থেকে ইআরপি কপি নিলাম এবং একাউন্টস থেকে হার্ড ও এক্সেল কপি নিলাম। এক্সেল কপির এবং হার্ড কপি'র যোগফল ঠিক আছে, হাতে সময় ছিল তাই ক্যালকুলেটর ধরলাম যোগফলে রাউন্ড ৪৫হাজার (সঠিক মনে নেই তবে এরকমই) টাকা কম ক্যালকুলেটরের হিসেবে। এক্সেল টানলাম, এইচ আর'রের সঙ্গে কথা বল, তারা বলল কোথাও সমস্যা হচ্ছে তবে মেনুয়্যাল কিছু এন্টি করতে হয় তাই ইআরপির সঙ্গে ঠিক থাকে না। এক্সেল কপি প্রিন্ট নেয়ার জন্য রো-গুলি একবারে ন্যারো করলাম আর ভেসে উঠল হাইড করা রো যেখানে রাউন্ড ফিগারটি বসানো।

সব থেকে সৎ ডিপার্টমেন্ট এইচআর কে ভেবে থাকেন সবাই কিন্তু সেখানেও ঘাপলা কম নয়। তারা কোম্পানীর মধ্যে নিজেদের লোক বানিয়ে ফেলেন, লোক নেয়ার সময় ২০০/৫০০/১০০০টাকা যার থেকে যেমন পারেন বিভিন্ন বিষয় দেখিয়ে ড্রেস, আইডি কার্ড, খাবার চামচ ইত্যাদির জামানত হিসেবে। পরবর্তীতে যার অধিকাংশই ফেরত দেয়া না। আবার তারা কিছু পেয়ারের লোক বেছে নেন তাদের বেতন বাৎসরিক একটু বেশি বৃদ্ধি করে তার সাথে অতিরিক্তের একটা অংশ নিয়ে নেন। যেমন কারো বেতন ৮৫০০টাকা তারা ৯৫০০ সফটওয়ারে ইনপুট দিবে, যেহেতু অধিক লোকের কারবার তাই একটা একটা করে ফাইলের সঙ্গে মিলিয়ে দেখা সম্ভব না মালিকের পক্ষে। এই যে ১০০০টাকা অতিরিক্ত যোগ করে দিল তার থেকে ৭০০-৮০০টাকা নিয়ে নিবেন বেতন পাওয়ার পরের দিনই। যদি না দেয় তা হলে বেতন থেকে একহাজার টাকা কমে যাবে ফলে ২০০টাকা তার লস হবে ভেবে তারা নিয়মিত ২০০টাকার লোভে টাকা ফেরত দেন।

আরেক ডিপার্টমেন্ট এডমিন যাদের দাপটে টেকা দায়। যেসব কোম্পানী খাবার সরবরাহ করে সেখানে তাদের % নির্ধারণ হয়ে থাকে মিল প্রতি এবং তাদের জন্য সর্বদা এক্সটা ভালো মানের খাবার। কোম্পানী বিভিন্ন সময় শ্রমিকরে মাঝে উপহার সামগ্রী বিতরণ করেন যেটা কখনই বাজেটের সাথে মিল পাওয়া যায় না। একবার কোম্পানী ছাতা দিল যার সরবরাহ মূল্য ২৮০ যে ছাতা বাজারেও সর্বচ্চ ২৫০খুচরা মূল্য। ঘোষণা হল বিড়ানি খাওয়াবে বিফ যারা বিফ খাবে না তাদের জন্য চিকেন বাস্তবে পাওয়া যায় বয়লার মূরগীর বিরিয়ানি যাতে মাংশ খুজে পাওয়া মুশকিল। এম ডি ভোজন রসিক, ঘোষণা করলেন সর্বচ্চ মানের ইফতার সরবরাহ করার জন্য এবং একটা করে বিরিয়ানির প্যাকেট দেয়ার জন্য ইফতার শেষে যার মধ্যে মাংশ যেন অনন্ত ১/৩ থাকে। যখন বিল এল তখন প্রতি ইফতার বিল হল ১৬৭টাকা আর বিরিয়ানির বিল হল সম্ভবত ২৭০বা ২৮০ এমন। অস্বাভাবিক বিল দেখে হিসেব চাইলাম তাতে যে হিসেব পাওয়া গেল সেখানে প্রতি প্যাকেট খাবারে অনন্ত ৪০০ থেকে ৪৫০গ্রাম মাংশ থাকার কথা। হিসেব সহ এমডিকে উপস্থান করলে এমডি সাপ্লায়ারকে ডেকে চৌদ্দগুষ্ঠি উদ্ধার করলেন বিভিন্ন ধর্মীয় উদাহরণও দিলেন যে গরীবের হক নষ্ট করলে কি হয় কিন্তু কে শোনে কার কথা সমাজে যখন টাকাটাই সব। আর সাপ্লায়ার তার বন্ধু তাই বিল দিয়ে দিলেনও।

২০০৯এ একটা কারখানায় জয়েন করলাম, মালিকের মুখের ভাষা মোটামুটি মাঠপাশ আবার অত্যন্ত সফট হৃদয়ের কাউকে সহজে বাদ দেন চাকুরী থেকে এবং তার এলাকার কেও এলে তার অনন্ত একটা জব দেন থাকা খাওয়ার মত। তো সেখানে কোন মার্চেন্ডাজার টিকে না বেশি দিন। ঘটনা কি!! ঘটনা এক দারুন কারবার। মালিকের পণ্য উৎপাদনে যে যে পণ্য দরকার তার সবাই আলাদা কারখানা আছে। প্রায় ৩০টা প্রডাক্টের কারখানা তার। যারাই আসে সুবিধা করতে পারে না পণ্য ক্রয়ে তাই বেশিদিন টিকতে চায় না, শুধু বেতনে কি আর কারখানার মালিক হতে পারবে!!!

পারসেজ ডিপার্টমেন্ট সম্পর্কে সবারই কম বেশি ধারণা আছে, আর তাদের তো একার দোষ না, সব ডিপার্টমেন্ট পার করে তাকে টিকে থকতে হয়। বছর খানেক আগে অডিট ইনচার্জ জিঙ্গেস করল টিস্যু বক্স কত করে, আমি বললাম বসুনধরা ৪৫ বা ৫০ আর টয়লেট টিস ১৫ বা ১৭ এমন। আমার কথা বিশ্বাস না হওয়ায় সে তার পিয়ন দিয়ে কিনতে পাঠালো, পিয়ন বিল দিলে আমার কথায় মিল পেল। যার কারণ ছিল পারসেজ ডিপার্টমেন্ট যে বিল দাখিল করেছে তাতেত টিস্যু খুচরা মূল্য থেকেও ৩টাকা বেশি।

স্টোর মালামাল নিয়ে আসলে বকিশস ছাড়া গাড়ি নামাবে না, সরবরাহকারী সম্পর্ক ঠিক না ঠিক তার মাল সর্বদা কম পরবে, গুনগত মান ঠিক পাবে না হত্যাদি।

আমার নিজেস্ব বিভাগ বাণিজ্য- যেখানে সিএন্ডএফ নিয়োগ থেকে শুরু করে যে যেখানে সুযোগ পায় সেখানেই চায় সুচ ঢুকাতে, আর না করে উপায়ও থাকে না, একাউন্টস ডিপার্টমেন্টের রাউন্ড, অডিট ডিপার্টমেন্টর বকশিস, বসের জন্য উপহার সামগ্রী ইত্যাদি। একটা বিদেশী কোম্পনীতে জব করতাম সেখানে দেখতাম একাউন্টস ম্যানেজার সিও কে বিভিন্ন অকেশনে বিভিন্ন জায়গার ঘুরতে নিয়ে যায়, বিমানের দুরুত্ব হলে বিমানে, আর বাসের দুরত্ব হলে বিলাসবহুল বাসে। খোজ নিলাম তারা কি শেয়ারে টাকা খরচ করে নাকি একজন। খোজ মিলল সব টাকা ব্যয় করেন একাউন্টস ম্যানেজার। বিনিময়ে বিভিন্ন ফ্যাসিলিটিজ আছে। এসব বিভিন্ন ম্যানেজের গ্যারাকলে আমি বেচারা চাকরী পরিবর্তন করতে করতে কাহিল।

তারপরও চিন্তু করি কোন ভাবেই যদি ভালো কিছু চিন্তা করা যেত।


সমাজের দুর্নীতি নিয়ে সব থেকে বেশি কথা বলা বেসরকারী পর্যায়ের লোকেরা কিন্তু তারা নিজেদের মধ্যেকার দুর্নীতির কথাগুলি ভুয়ে যায়। তারা সরকারী লোকদের সাথে কাজ করতে গিয়ে দুর্নীতির কারনে সমস্যায় পড়তে হয় বলেই তারা বলে বেড়ায় অধিকতর। সরকারী চাকরী তাও অনন্ত টিকে থাকবে কিন্তু বেসরকারী কোম্পানীতে গ্রুপের চালে চাকরি করাই দায় সৎ মানুষদের। বেসরকারী কামলা সুবাদে এটা আমার কামলা ক্ষেত্র নং ১১। আমি বিশ্বাস করি এদেশে চাকুরীপ্রার্থী যেমন আছে দাতার সংখ্যাও নেহাতই কম নয় তার থেকে বড় কথা সর্বপরি রিজিকের মালিক আমার সৃষ্টিকর্তা। সরকারী পর্যায়ের মত বেসরকারী পর্যায়েও আছে কিছু দারুন চিত্র। হয়ত কিছু গিফট হয়তবা কিছু বকশিস, সর্বপরি তেল। আমি যেহেতু গার্মেন্টস এ কামলা খাটি সেহেতু সে সেক্টরের কিছু চিত্রই বর্ণনা করি।

অফিসের কাজে মোটামুটি সবাইকে বাইরে যেতে হয় কম বেশি যে টাকা কোম্পানী প্রদান করে থাকে। কাজ সেরে দিনের শেষে বিল দাখিল করবেন হিসবা বিভাগে। তারা বিল দেয়ার সময় রাউন্ড হিসেবে প্রদান করবেন বাকিটা মুচকি হাসি। যেমন কেও বিল দিল ৫৩০টাকা। ৫০০টাকা দিয়ে হাসি দিবে। সবাই গাড়ীর ড্রাইভারদের তেল চুরির অভিযোগ তোলে। ড্রাইভার যখন তেলে বিল জমা দিবে তার আগে তাকে ভ্যায়িকেল বিভাগ থেকে স্বাক্ষর গ্রহণ করতে হবে কিলোমিটার হিসাব দেখিয়ে, সেখানেও তাকে হিসেব নিকেষ করতে হয় তারপর যখন সে হিসাব বিভাগে যাবে আছে রাউন্ডের ফ্যাকরা। এই রাউন্ড ফ্যাকরা তারা করে সর্বপরি সবার সাথে, এডমিন, এইচআর, বাণিজ্যিক, সেলস সব ডিপার্টমেন্টের সাথে। অন্য দিকে আছে শ্রমিকদের বেতন প্রদানের সময় রাউন্ড ফ্যাকরা সেখানে অবশ্য তারা ১/২ বা ৫টাকা বেশি করতে পারে না। কিন্তু মজার গরমিল ঘটনায় হিসেবে। কোন মালিকের পক্ষেই সম্ভব না ২/৩হাজার লোকের হিসেব একটা একটা করে যোগফল দেখা, রেনডম বেসিস দু'একটা বিভাগ হিসেব করে দেখবে। ২০১২তে নতুন একটা কোম্পানীতে জয়েন করলাম। যেহেতু তারা এদেশের বেতন হিসেবে আমাকে মোটামুটি উচ্চ বেতনেই নিয়েছেন তাই আমাকে অনুরোধ করলেন আমি যেন বেতন সীটটা একটু দেখে দেই। কিছুটা কৌশলগত কারনে এইচআর থেকে ইআরপি কপি নিলাম এবং একাউন্টস থেকে হার্ড ও এক্সেল কপি নিলাম। এক্সেল কপির এবং হার্ড কপি'র যোগফল ঠিক আছে, হাতে সময় ছিল তাই ক্যালকুলেটর ধরলাম যোগফলে রাউন্ড ৪৫হাজার (সঠিক মনে নেই তবে এরকমই) টাকা কম ক্যালকুলেটরের হিসেবে। এক্সেল টানলাম, এইচ আর'রের সঙ্গে কথা বল, তারা বলল কোথাও সমস্যা হচ্ছে তবে মেনুয়্যাল কিছু এন্টি করতে হয় তাই ইআরপির সঙ্গে ঠিক থাকে না। এক্সেল কপি প্রিন্ট নেয়ার জন্য রো-গুলি একবারে ন্যারো করলাম আর ভেসে উঠল হাইড করা রো যেখানে রাউন্ড ফিগারটি বসানো।

সব থেকে সৎ ডিপার্টমেন্ট এইচআর কে ভেবে থাকেন সবাই কিন্তু সেখানেও ঘাপলা কম নয়। তারা কোম্পানীর মধ্যে নিজেদের লোক বানিয়ে ফেলেন, লোক নেয়ার সময় ২০০/৫০০/১০০০টাকা যার থেকে যেমন পারেন বিভিন্ন বিষয় দেখিয়ে ড্রেস, আইডি কার্ড, খাবার চামচ ইত্যাদির জামানত হিসেবে। পরবর্তীতে যার অধিকাংশই ফেরত দেয়া না। আবার তারা কিছু পেয়ারের লোক বেছে নেন তাদের বেতন বাৎসরিক একটু বেশি বৃদ্ধি করে তার সাথে অতিরিক্তের একটা অংশ নিয়ে নেন। যেমন কারো বেতন ৮৫০০টাকা তারা ৯৫০০ সফটওয়ারে ইনপুট দিবে, যেহেতু অধিক লোকের কারবার তাই একটা একটা করে ফাইলের সঙ্গে মিলিয়ে দেখা সম্ভব না মালিকের পক্ষে। এই যে ১০০০টাকা অতিরিক্ত যোগ করে দিল তার থেকে ৭০০-৮০০টাকা নিয়ে নিবেন বেতন পাওয়ার পরের দিনই। যদি না দেয় তা হলে বেতন থেকে একহাজার টাকা কমে যাবে ফলে ২০০টাকা তার লস হবে ভেবে তারা নিয়মিত ২০০টাকার লোভে টাকা ফেরত দেন।

আরেক ডিপার্টমেন্ট এডমিন যাদের দাপটে টেকা দায়। যেসব কোম্পানী খাবার সরবরাহ করে সেখানে তাদের % নির্ধারণ হয়ে থাকে মিল প্রতি এবং তাদের জন্য সর্বদা এক্সটা ভালো মানের খাবার। কোম্পানী বিভিন্ন সময় শ্রমিকরে মাঝে উপহার সামগ্রী বিতরণ করেন যেটা কখনই বাজেটের সাথে মিল পাওয়া যায় না। একবার কোম্পানী ছাতা দিল যার সরবরাহ মূল্য ২৮০ যে ছাতা বাজারেও সর্বচ্চ ২৫০খুচরা মূল্য। ঘোষণা হল বিড়ানি খাওয়াবে বিফ যারা বিফ খাবে না তাদের জন্য চিকেন বাস্তবে পাওয়া যায় বয়লার মূরগীর বিরিয়ানি যাতে মাংশ খুজে পাওয়া মুশকিল। এম ডি ভোজন রসিক, ঘোষণা করলেন সর্বচ্চ মানের ইফতার সরবরাহ করার জন্য এবং একটা করে বিরিয়ানির প্যাকেট দেয়ার জন্য ইফতার শেষে যার মধ্যে মাংশ যেন অনন্ত ১/৩ থাকে। যখন বিল এল তখন প্রতি ইফতার বিল হল ১৬৭টাকা আর বিরিয়ানির বিল হল সম্ভবত ২৭০বা ২৮০ এমন। অস্বাভাবিক বিল দেখে হিসেব চাইলাম তাতে যে হিসেব পাওয়া গেল সেখানে প্রতি প্যাকেট খাবারে অনন্ত ৪০০ থেকে ৪৫০গ্রাম মাংশ থাকার কথা। হিসেব সহ এমডিকে উপস্থান করলে এমডি সাপ্লায়ারকে ডেকে চৌদ্দগুষ্ঠি উদ্ধার করলেন বিভিন্ন ধর্মীয় উদাহরণও দিলেন যে গরীবের হক নষ্ট করলে কি হয় কিন্তু কে শোনে কার কথা সমাজে যখন টাকাটাই সব। আর সাপ্লায়ার তার বন্ধু তাই বিল দিয়ে দিলেনও।

২০০৯এ একটা কারখানায় জয়েন করলাম, মালিকের মুখের ভাষা মোটামুটি মাঠপাশ আবার অত্যন্ত সফট হৃদয়ের কাউকে সহজে বাদ দেন চাকুরী থেকে এবং তার এলাকার কেও এলে তার অনন্ত একটা জব দেন থাকা খাওয়ার মত। তো সেখানে কোন মার্চেন্ডাজার টিকে না বেশি দিন। ঘটনা কি!! ঘটনা এক দারুন কারবার। মালিকের পণ্য উৎপাদনে যে যে পণ্য দরকার তার সবাই আলাদা কারখানা আছে। প্রায় ৩০টা প্রডাক্টের কারখানা তার। যারাই আসে সুবিধা করতে পারে না পণ্য ক্রয়ে তাই বেশিদিন টিকতে চায় না, শুধু বেতনে কি আর কারখানার মালিক হতে পারবে!!!

পারসেজ ডিপার্টমেন্ট সম্পর্কে সবারই কম বেশি ধারণা আছে, আর তাদের তো একার দোষ না, সব ডিপার্টমেন্ট পার করে তাকে টিকে থকতে হয়। বছর খানেক আগে অডিট ইনচার্জ জিঙ্গেস করল টিস্যু বক্স কত করে, আমি বললাম বসুনধরা ৪৫ বা ৫০ আর টয়লেট টিস ১৫ বা ১৭ এমন। আমার কথা বিশ্বাস না হওয়ায় সে তার পিয়ন দিয়ে কিনতে পাঠালো, পিয়ন বিল দিলে আমার কথায় মিল পেল। যার কারণ ছিল পারসেজ ডিপার্টমেন্ট যে বিল দাখিল করেছে তাতেত টিস্যু খুচরা মূল্য থেকেও ৩টাকা বেশি।

স্টোর মালামাল নিয়ে আসলে বকিশস ছাড়া গাড়ি নামাবে না, সরবরাহকারী সম্পর্ক ঠিক না ঠিক তার মাল সর্বদা কম পরবে, গুনগত মান ঠিক পাবে না হত্যাদি।

আমার নিজেস্ব বিভাগ বাণিজ্য- যেখানে সিএন্ডএফ নিয়োগ থেকে শুরু করে যে যেখানে সুযোগ পায় সেখানেই চায় সুচ ঢুকাতে, আর না করে উপায়ও থাকে না, একাউন্টস ডিপার্টমেন্টের রাউন্ড, অডিট ডিপার্টমেন্টর বকশিস, বসের জন্য উপহার সামগ্রী ইত্যাদি। একটা বিদেশী কোম্পনীতে জব করতাম সেখানে দেখতাম একাউন্টস ম্যানেজার সিও কে বিভিন্ন অকেশনে বিভিন্ন জায়গার ঘুরতে নিয়ে যায়, বিমানের দুরুত্ব হলে বিমানে, আর বাসের দুরত্ব হলে বিলাসবহুল বাসে। খোজ নিলাম তারা কি শেয়ারে টাকা খরচ করে নাকি একজন। খোজ মিলল সব টাকা ব্যয় করেন একাউন্টস ম্যানেজার। বিনিময়ে বিভিন্ন ফ্যাসিলিটিজ আছে। এসব বিভিন্ন ম্যানেজের গ্যারাকলে আমি বেচারা চাকরী পরিবর্তন করতে করতে কাহিল।

তারপরও চিন্তু করি কোন ভাবেই যদি ভালো কিছু চিন্তা করা যেত।

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ৩০ শে নভেম্বর, ২০১৯ দুপুর ১২:০৮

হাবিব বলেছেন: বাস্তব চিত্র উঠে এসেছে আপনার লেখায়।

৩০ শে নভেম্বর, ২০১৯ দুপুর ১২:৫০

চোরাবালি- বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে

২| ৩০ শে নভেম্বর, ২০১৯ দুপুর ১২:১৭

হাসান রাজু বলেছেন: সততা!!!
একজন সরকারি কর্মকর্তা বা কর্মচারী অসৎ । দেশকে ঠকিয়ে এই অসততার দায় নিজের বিবেকের কাছে, লাভ নিজের পকেটে ।
বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা নিজের মেধা খরছ করে সরকারি কর্মকর্তার সাথে আতাত করে দেশকে ঠকিয়ে প্রতিষ্ঠানের ফায়দা করে দিচ্ছে। এই অসততার দায় নিজের বিবেকের কাছে লাভ অন্যের পকেটে ।

৩০ শে নভেম্বর, ২০১৯ দুপুর ১২:৫০

চোরাবালি- বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে। লাভ অন্যের দায় নিজেদের, সুন্দর বলেছেন

৩| ৩০ শে নভেম্বর, ২০১৯ দুপুর ১:৩৮

রাজীব নুর বলেছেন: ‘দড়ি ধরে মারো টান/ রাজা হবে খানখান ।’ কারো কাছে কি পরিচিত লাগছে ? যারা চিনতে পারছো না, তারা নিশ্চিত এই ছবিটি দেখোনি । ‘হীরক রাজার দেশে’ না দেখলেও তোমরা তো অনেকেই গুপী গাইন বাঘা বাইন দেখেছো, তাই না ?

৩০ শে নভেম্বর, ২০১৯ দুপুর ২:১০

চোরাবালি- বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.