নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মো: চঞল মাহমুদ

যারা বার বার ভূল করে,আমি তাদেরই একজন,স্বপ্নহীন মানুষ হিসেবে বেঁচে আছি.প্রতিটি জীব সৃষ্টির পেছনে প্রকৃতির একটি উদ্দেশ্য থাকে.সব সময় চাই যেন তার ইচ্ছাটা বাস্তবায়ন করতে পারি.আমি স্রষ্টাকে খুঁজিনা.আমি আমাকেই খুঁজিয়া বেড়াই.

মো: চঞল মাহমুদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

ফেসবুকে ভূয়া "লাইক" দৌরাত্ন্য

০৫ ই আগস্ট, ২০১৩ বিকাল ৩:২৬

বাংলাদেশ

থেকে ফেসবুকে সবচেয়ে বেশি ভুয়া লাইক

করা হচ্ছে। সম্প্রতি ‘গার্ডিয়ান’-এ

প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে,

বাংলাদেশের স্বল্প আয়ের কর্মী ও

ফ্রিল্যান্সাররা একেবারে কম

খরচে ভুয়া লাইক বাড়ানোর কাজ

করছেন।

বাংলাদেশে গড়ে উঠেছে ভুয়া লাইক

জোগানদাতা ‘ক্লিক ফার্ম’। এ ধরনের

প্রতিষ্ঠানগুলো ফেসবুক, টুইটার,

ইউটিউবসহ সামাজিক যোগাযোগের

ওয়েবসাইটে কোনো ব্র্যান্ডকে জনপ্রিয়

করার কাজ নিচ্ছে একেবারে স্বল্প

মূল্যে।

‘গার্ডিয়ান’-এর অনুসন্ধানমূলক

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভুয়া এসব

ফেসবুক লাইকের

কারণে ভোক্তারা কোনো ব্র্যান্ড

সম্পর্কে ভুল ধারণা পান।

‘গার্ডিয়ান’-এর

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভুয়া লাইক

বাড়ানোর কাজ করছেন বাংলাদেশের

রাজধানী ঢাকাকেন্দ্রিক

গড়ে ওঠা ক্লিক ফার্মের বেশ কয়েকজন

কর্মী। এসব প্রতিষ্ঠান থেকে প্রতি এক

হাজার লাইক জোগান দিতে মাত্র ১৫

মার্কিন ডলার দাবি করা হয়। অথচ,

এসব ক্লিক ফার্মে যেসব সাধারণ

কর্মী কাজ করছেন, তাঁদের আয় খুবই কম।

লাইক বাড়ানোর কাজ যাঁরা করেন,

তাঁরা ছোট একটি ঘরের ছোট

একটি মনিটরের সামনে বসে দিন-রাত

কাজ করেন। মাত্র এক ডলার আয়ের জন্য

অমানুষিক পরিশ্রম করেন তাঁরা।

যুক্তরাজ্যের চ্যানেল ফোরের

ডিসপ্যাচেস

অনুষ্ঠানে ভুয়া ফেসবুকে লাইকের

বিষয়টি তুলে ধরা হয়।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ ধরনের

ভুয়া লাইকের কারণে ক্ষতির

মুখে পড়তে পারে ফেসবুক ও গুগলের

বিজ্ঞাপন ব্যবসা। কারণ, একেবারেই

কম খরচে অপরিচিত ব্র্যান্ডকে বিশাল

লাইক এনে দিতে কাজ করছেন স্বল্প

আয়ের কর্মীরা।

কম্পিউটার নিরাপত্তাপ্রতিষ্ঠান

সফোসের নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ গ্রাহাম

ক্লুলেই জানিয়েছেন, অনেক

প্রতিষ্ঠানের সামাজিক যোগাযোগের

ওয়েবসাইটগুলোতে দ্রুত

জনপ্রিয়তা পাওয়ার আগ্রহ থাকে। এর

ফলে এসব প্রতিষ্ঠানের ব্র্যান্ড ভ্যালু

বাড়ে ও ক্রেতা জুটে যায়। সামাজিক

যোগাযোগনির্ভর অনেক প্রতিষ্ঠান এখন

ভুয়া লাইকের কারণে প্রতিযোগিতার

মুখে পড়ছে। জনপ্রিয়তার দিক

থেকে পণ্যের মান ভালো হলেও

সামাজিক যোগাযোগের লাইকের দিক

থেকে পিছিয়ে পড়ছে।

লাইকের গুরুত্ব

ফেসবুকে লাইকের গুরুত্ব রয়েছে।

ক্রেতাদের প্রভাবিত করতে লাইক

গুরুত্বপূর্ণ। এক সমীক্ষায় দেখা গেছে,

৩১ শতাংশ ক্রেতা কোনো পণ্য কেনার

আগে পণ্যটির রেটিং, রিভিউ, ফেসবুক

লাইক, টুইটার ফলোয়ার ইত্যাদি বিষয়

বিবেচনায় নেন। অর্থাত্, ক্লিক

ফার্মগুলো ক্রেতাদের ভুল

ধারণা দিতে যথেষ্ট প্রভাব ফেলছে।

ডিসপ্যাচেস

প্রোগ্রামে বাংলাদেশে ভুয়া লাইক

তৈরির ক্ষেত্রে ‘ফেসবুকের রাজা’

নামে একজনের পরিচিতি তুলে ধরা হয়,

যিনি ফেসবুকে অসংখ্য ভুয়া অ্যাকাউন্ট

তৈরি করে হাজার হাজার ভুয়া লাইক

জোগানোর জন্য এ খ্যাতি পেয়েছেন।

যুক্তরাজ্যের আইনজীবী স্যাম

ডি সিলভা এ প্রসঙ্গে জানিয়েছেন,

ভুয়া লাইক বাড়ানোর

মাধ্যমে যুক্তরাজ্যের বেশ

কয়েকটি আইন ভাঙা হচ্ছে।

এতে ক্রেতাদের ঠকানো হচ্ছে।

শেয়ারইট ডটকম

‘গার্ডিয়ান’ জানিয়েছে,

ঢাকা থেকে নিবন্ধনকৃত শেয়ারইট

ডটকম নামের একটি সাইট ফেসবুক,

টুইটার, গুগল প্লাস, লিঙ্কডইন ও

ইউটিউবে লাইক বাড়ানোর

ক্ষেত্রে দালালির ভূমিকা রাখছে। এ

সাইট থেকে বিনা মূল্যেই

ফেসবুকে লাইক বাড়ানো ও সার্চ

ইঞ্জিনের র্যাঙ্কিং বাড়ানোর অফার

দেওয়া হচ্ছে।

ক্রাউডসোর্সিং-ভিত্তিক এ

সাইটটি থেকে দাবি করা হয়েছে,

তারা এখন পর্যন্ত ১৪ লাখ ফেসবুক

লাইক বাড়িয়েছে এবং এ সাইটটির ৮৩

হাজার নিবন্ধিত

ব্যবহারকারী রয়েছেন।

শেয়ারইটের মালিক সারফ আল-

নোমানি ডিসপ্যাচেসকে জানিয়েছেন,

এ সাইটটি থেকে যত ক্লিক করা হয় তার

৩০ থেকে ৪০ শতাংশ বাংলাদেশ

থেকে আসে। অর্থাত্, ২৫ হাজারের

বেশি বাংলাদেশি কর্মী লাইক

বাড়ানোর এই কাজ করছেন। শুধু তা-ই

নয়, অনেক প্রতিষ্ঠানও

শেয়ারইটকে লাইক বাড়ানোর

কাজে ব্যবহার করছে।

অবশ্য ফেসবুকের তথ্য অনুযায়ী, লাইক

জোগানোর দিক থেকে বিশ্বের তৃতীয়

অবস্থানে রয়েছে ঢাকা। এ

ক্ষেত্রে প্রথম স্থানটি মিসরের

রাজধানী কায়রোর।

দায়ী কে?

নব্বইয়ের দশক থেকেই ইন্টারনেটের

ভুয়া বিজ্ঞাপন এ শিল্পের জন্য

হুমকি হয়ে রয়েছে।

পিপিসি বা পে পার ক্লিক নামে ক্লিক

করে আয় বা বিজ্ঞাপন দেখে আয়ের

ধারণা ভুয়া বিজ্ঞাপন আরও

বাড়িয়েছে। এর

ফলে তৈরি হয়েছে অনেক ভুয়া বিজ্ঞাপন

নেটওয়ার্ক,

যারা প্রতারণা করে চলেছে প্রতিনিয়ত।

এ সমস্যা এখনো রয়েছে।

চলতি বছরের

ফেব্রুয়ারি মাসে মাইক্রোসফট ও

কম্পিউটার নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠান

সিমানটেক মিলে বিশ্বজুড়ে ১৮ লাখ

কম্পিউটারে যুক্ত থাকা একটি বটনেট

সরিয়ে ফেলেছে। মাইক্রোসফটের

দাবি, এ বটনেট প্রতিদিন ৩০ লাখ

ক্লিক করতে ব্যবহার করা হতো। অবশ্য

মাইক্রোসফট ও সিমানটেকের

গবেষকেরা বটনেট সরিয়ে ফেললেও

ক্লিক ফার্মগুলো এখন ভিন্ন

পন্থা বেছে নিয়েছে। সস্তা শ্রমের

বাজার

হিসেবে বাংলাদেশকে বেছে নিয়ে ক্লিক

করার কাজ করিয়ে নিচ্ছে।

ডিসপ্যাচেসের শনাক্ত

করা একটি ক্লিক ফার্মের ব্যবস্থাপক

রাসেল এ প্রসঙ্গে জানিয়েছেন,

তিনি যে কাজ করেন তা বৈধ জেনেই

করেন। ভুয়া লাইক বাড়ানোর কাজ

যাঁরা দেন, তাঁদের দোষারোপ করেন

তিনি।

বাংলাদেশ প্রেক্ষাপট

সামাজিক যোগাযোগের

ওয়েবসাইটগুলোতে ব্র্যান্ডের

প্রচারণার কাজ করছেন ফ্রিল্যান্সার

আলী আসগর। অনলাইন মার্কেটপ্লেস

ফ্রিল্যান্সার ডটকমে ইন্টারনেট

মার্কেটিং বিভাগে বিশ্বসেরা ছিলেন

তিনি। প্রথম

আলো ডটকমকে তিনি জানিয়েছেন,

সামাজিক যোগাযোগের

ওয়েবসাইটে কোনো ব্র্যান্ডের

প্রচারণার কাজ এখন অনেক

প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ। এখন মাত্র এক

থেকে দুই ডলার খরচেই হাজার লাইক

জোগান দেওয়ার জন্য ফ্রিল্যান্সার

সাইটগুলোতে বিড করা হয়। ফলে,

যাঁরা সত্যিকারের

ফ্রিল্যান্সিং করেন, অনলাইন

মার্কেটপ্লেসগুলোতে তাঁদের সুনাম নষ্ট

হচ্ছে।

আলী আসগর বলেন,

বাংলাদেশে ভুয়া ফেসবুক লাইক

তৈরিতে কাজ করছেন অনেক

ফ্রিল্যান্সার। সত্যিকারের লাইক

বাড়াতে কষ্টকর

প্রচারণা চালাতে হয়। কিন্তু

বাংলাদেশের অনেক ফ্রিল্যান্সার এখন

ভুয়া লাইক বাড়ানোর সফটওয়্যার

ব্যবহার করে একেবারে কম খরচে কাজ

করে দেন। এ ধরনের লাইক প্রতারণার

ফলে কাজদাতারা বাংলাদেশি ফ্রিল্যান্সার

ওপর বিশ্বাসযোগ্যতা হারাচ্ছে।

পাশাপাশি লাইক বাড়ানোর কাজের

জন্য একেবারে কম দাম অফার করছে।

আলী আসগরের মতে,

কোনো ব্র্যান্ডকে জনপ্রিয়

করতে সামাজিক যোগাযোগের

সাইটে যে পরিশ্রম করতে হয়, তার জন্য

অনেক বেশি শ্রমমূল্য হওয়া উচিত।

কিন্তু ভুয়া লাইকের দৌরাত্ম্য

বিশ্ববাজারে সুনাম ক্ষুণ্ন হওয়ার

পাশাপাশি এখন এ ধরনের কাজ

হারাতে বসেছেন অনেক দক্ষ

ফ্রিল্যান্সার।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.