![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
১১০০ কোটি (১১ বিলিয়ন) আলোকবর্ষ দূরে দুটি গ্যালাক্সির (ছায়াপথ/নক্ষত্রম-ল) একীভূত হওয়ার বিরল ঘটনা উদ্ঘাটন করেছেন জোতির্বিজ্ঞানীরা। ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সির হার্শেল মহাশূন্য পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের টেলিস্কোপে এই ঘটনা ধরা পড়েছে বলে মার্কিন মহাকাশ সংস্থা নাসা গত বুধবার জানিয়েছে। ইউরোপীয় এই সংস্থার সঙ্গে এই প্রকল্পে একযোগে কাজ করছে নাসা।
হার্শেল ছাড়াও নাসার হাবল স্পেস টেলিস্কোপ ও স্পিটজার স্পেস টেলিস্কোপসহ ভূমি আর মহাশূন্যের অনেকগুলো টেলিস্কোপের পাওয়া উপাত্ত বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, বহুদূরের দুটি গ্যালাক্সি মিলেমিশে একাকার হয়ে যাচ্ছে; আর তাতে জন্ম নিচ্ছে নতুন নতুন নক্ষত্র।
গবেষকরা ধারণা করছেন, শেষ পর্যন্ত ওই জুটি বিশালাকার একটা ডিম্বাকার গ্যালাক্সিতে পরিণত হবে।
গবেষণালব্ধ এই ফল জোতির্বিদ্যার একটি রহস্য উদ্ঘাটনে সহায়তা করবে। আমাদের এই মহাবিশ্বের বয়স যখন ৩০০ থেকে ৪০০ কোটি (৩-৪ বিলিয়ন) বছর ছিল তখন কীভাবে গ্যালাক্সিগুলো তৈরি হয়েছিল। এই গ্যালাক্সিগুলো কি ধীরে ধীরে ছোট ছোট গ্যালাক্সিগুলোকে টেনে নিয়ে বড় হয়েছে, নাকি অপেক্ষাকৃত দ্রুতগতিতে দুটি বড় গ্যালাক্সি একীভূত হয়ে তৈরি হয়েছে_ তা নিয়ে দ্বিধায় ছিলেন বিজ্ঞানীরা।
এই নতুন উপাত্ত থেকে বিজ্ঞানিরা স্থির হতে পারবেন যে, গ্যালাক্সির মহামিলনেই তৈরি হয়েছে বিশাল ডিম্বাকার নক্ষত্রপুঞ্জ। ন্যাচার সাময়িকীর অনলাইন ইস্যুতে ২২ মে প্রকাশিত গবেষণা প্রতিবেদনে ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানী আই ফু ও আসান্থা কুরেই বলেন, নতুন নতুন নক্ষত্র সৃষ্টি করতে করতে একীভূত হওয়া এই গ্যালাক্সি দুটি পুরোপুরি ধুলা ও গ্যাসের বিশাল মেঘের মধ্যে লুকানো। হার্শেলের ইনফ্রারেড ডিটেক্টরের ভেতর দিয়ে গ্যালাক্সিগুলোর একীভূত হওয়ার উপাত্ত তুলে এনেছে। ৪ বছর ধরে কাজ করা হার্শেল সবচেয়ে বড় তরঙ্গ দৈর্ঘ্যের অবলোহিত রশ্মি নির্ণয় করার মতো করে নকশা করা হয়েছে। এটির খুঁজে পাওয়া উপাত্ত নিয়ে এখনও গবেষণা চালাচ্ছেন জোতির্বিজ্ঞানীরা।
নতুন এই গবেষণায় হার্শেলকে দিয়ে পৃথিবী থেকে ১১০০ কোটি আলোকবর্ষ দূরে এইচএক্সএমএমজিরোওয়ান নামের এই গ্যালাক্সির ওপর নজর রাখা হয়। এতে পাওয়া যায় মহাবিশ্বের ৩০০ কোটি বছর বয়সের উপাত্ত। কাছাকাছি দুটি গ্যালাক্সি দেখে প্রথমে বিজ্ঞানীরা ভেবেছিলেন, তারা বুঝি একটি গ্যালাক্সিরই প্রতিবিম্ব দেখছেন। কিন্তু বিশদ গবেষণার পর তারা বুঝতে পারেন, আসলে তারা তাকিয়ে আছেন গ্যালাক্সির মহামিলনের দিকে।
গবেষণায় বের হলো, ওই গ্যালাক্সি দুটি বছরে ২ হাজার নক্ষত্রের সৃষ্টি করছে, যেখানে আমাদের গ্যালাক্সি মিল্কি ওয়ে (ছায়াপথ/আকাশগঙ্গা) বছরে এক-দুটি নক্ষত্রের জন্ম দিচ্ছে। ওই দুটি গ্যালাক্সিতে নক্ষত্রের সংখ্যা হবে প্রায় ৪০০ বিলিয়ন।
মহাবিশ্বে গ্যালাক্সির একীভূত হওয়া সাধারণ ঘটনাই। কিন্তু এই নতুন দুটি গ্যালাক্সির একীভূত হওয়ার ঘটনাকে বিজ্ঞানীরা বিরলই বলছেন। এত বড় ধরনের গ্যলাক্সির এভাবে একীভূত হওয়ার ঘটনা সচরাচর দেখা যায় না। আর এতে যে প্রচুর পরিমাণ গ্যাস ও নক্ষত্রেরও জন্ম হচ্ছে তাও নতুন একটি বিষয়।
©somewhere in net ltd.