নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি একজন অতি সাধারন বাংলাদেশী। আমি আমার দেশ ও দেশের মানুষকে খুব ভালবাসী। আগ্রহী যে কেউ আমার সাথে বন্ধুত্ব করতে পারেন।
করোনা কালে বার্ধক্য বিষয়ক জটিলতার জন্য আমার ৮০ উর্ধ বাবাকে পেস মেকার প্রতিস্থাপনের জন্য জাতীয় হৃদরোগ ইনিষ্টিটিউট (NICVD). তে নিতে হয়েছিল। সে সময় আমার বাবাকে (CCU)তে প্রায় ২০/২৫ দিন রাখা হয়েছিল। আর হয়তো দুর্ভাগ্য বশতই সম্রাটের সাথে পরিচয় হয়েছিল আমার কারণ সেও ওখানে ভর্তি ছিল। আমার বাবার বেডের কয়েকটা বেড পর একজন যুগ্ম সচিবের ২০/২২ বছরের শারীরিক ও মানষিক প্রতিবন্ধী ও হৃদযন্ত্র সহ বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গের মারাত্নক জটিলতা নিয়ে ভর্তি ছিল। যাকে দেখে সবারই অত্যান্ত্ মায়া লাগতো, আর প্রায় সকলেই ওর কাছে গিয়ে ওর মায়ের নিকট কুশলাদি জানতে চাইতো। আর সেই বেডের প্রায় সাথেই ছিল ক্যাসিনো সম্রাটের বেড। ওখানে গিয়ে কথা বল্লেই সেও, বিভিন্ন কথার সুত্র ধরে আমার সাথে গল্প জুড়ে দিতো...। তার নিরাপত্তার জন্য গেটে ৪ জন ও তার বেডের সাথে ২জন পুলিশ সর্বদা নিযুক্ত থাকতো। নার্সদের কাছে শুনেছিলাম তার হার্টে ২টি রিং পরানো আছে, তার দ্রুত ঘুমানো উচিৎ, কিন্তু সে প্রায় প্রতি রাতেই ১/২ পর্যন্ত পুলিশদের সাথে তার নিজের গুনগাঁথা নিয়ে অড্ডা দিতো। অনেক সময়, রাতে পুলিশদের দিয়ে বাইরে থেকে ভাল ভাল খাবার নিয়ে এসে সকলে মিলে খেতো আর আড্ডা দিতো। এর মধ্যে একদিন দেখেছিলাম, এক সিনিয়ার পুলিশ অন্য জুনিয়ার পুলিশকে অভয় দিয়ে বলছে, আরে খা,খা ভাল জিনিস, স্যারে যখন দিছে ভালবেসে অসুবিধা নাই খা.. জুনিয়ারটি কিছু সময় ইতস্তত করে তারপর বড়ভাইয়ের কথা মত খেতে শুরু করলো। এই বিষয়টা দারুণ উপভোগ করেছিলাম। নার্স বলছিল যে, এবার নিয়ে ২বার আসলো এখানে, ১মবার খুব কড়াকড়ি ছিল, ডাক্তাররাও পুলিশের অনুমতি ছাড়া আসতে পারতো না.. কিন্তু এবার এমন ভাবেই টাকা ছড়াইছে যে, বাইরে থেকে খাবারও হাজির.. প্রায়ই দেখতাম ওর সাগরেদরা টিফিনক্যরিয়ারে করে খাবার নিয়ে এসে বিভিন্ন জনের সাথে ভিডিও কলে সম্রাটের সাথে কথা বলিয়ে দিচ্ছে... কিন্তু সবচেয়ে অবাক হয়েছিলাম একদিন, যেদিন দেখলাম একজন একটু উচু পর্যায়ের এক পুলিশ কর্মকর্তা কিছু কাগজপত্রে সম্রাটের সই নিয়ে কুশিলাদি জিজ্ঞাসা শেষে যাবার সময় বলছে,” আপনাকে এভাবে দেখে খুবই কষ্ট লাগছে স্যার, আপনার থাকার কথা ছিল কোথায় আর আপনি আছেন কোথায় স্যার..” পাঠকগণ আপনারা অনেকেই হয়তো দেখে থাকবেন যে,পুলিশ, র্যাব, বা সেনা বাহিনীর কোন অপেক্ষাকৃত নিম্ন পদমর্যাদার কর্মকর্তা বা কর্মচারী তার উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার কাছ থেকে বিদায় নিতে গেলে, সরাসরি তাঁর সামনে না ঘুরে, কয়েক পা পিছিয়ে এসে তারপর সালাম বা স্যালুট দিয়ে ঘুরে স্থান ত্যাগ করে, শোকাহত পুলিশটিও ঠিক তেমনি ভাবে সম্রাটকে সালাম ও শুভকামনা জানিয়ে বিদায় নিল। বুঝলাম আসলে সত্যিই, টাকায় কি না হয়...!!!
NICVD র পরিবেশ নিয়ে সব সময় সে ছিল নাখোশ, সব সময়ই বলতো, এখানে আর থাকবো না, দ্রুতই চলে যাবো, পিজিতে আমার আলাদা রুম ছিল, ছিল আলাদা বারান্দা সুন্দর ঘুরে বেড়ানো যেত আর এখানে, বিছানা আর টয়লেট ছাড়া যাবার কোন জায়গাই নাই... সে তার কথা রেখেছিল, অতিদ্রুতই সে আবার পিজিতে ফিরে গিয়ে।
তাকে একদিন বলতে শুনেছিলাম যে,”আমি তো খুন করিনি, বা মাদকের সাথেও জড়িত না, যে আমার মৃত্যুদন্ড হবে... আজ হোক বা কাল ছাড়া তো পাবোই, তখন দেখবোনে...” অবশেষে আজ তার আশা পূর্ণ হয়েছে, সে তার পুরনো রুপে ফিরে এসে, নতুন করে তার অবস্থান সকলকে জানান দিয়েছে। এখন ভাবছি, সে নিজে কি দেখে, আর অন্যদের কি দেখায়..কারণ, সব সম্ভবের দেশে কোন কিছুই তো আর অসম্ভব নয়... মুক্ত হয়েই দলবল নিয়ে সম্রাটের মহড়া
২৭ শে আগস্ট, ২০২২ দুপুর ১২:৪৫
সাইবার সোহেল বলেছেন: আমরা তো ধীরে ধীরে বলার অধিকারও হারিয়ে ফেলছি, তাই যেটুকু বলেছেন তাই অনেক... অবস্থা এমনই হচ্ছে যে, সবকিছু শুধু দেখবেন, আর যদি তাও না পারেন চোখ বুজে থাকবেন...
২| ২৯ শে আগস্ট, ২০২২ দুপুর ২:৩৩
নীল আকাশ বলেছেন: এটাই বাংলাদেশ
২৯ শে আগস্ট, ২০২২ রাত ৯:২৮
সাইবার সোহেল বলেছেন: জ্বী, আপাতত এটাই বর্তমান বাংলাদেশ... তাই আগামীর বাংলাদেশ নিয়েও শঙ্কিত...
©somewhere in net ltd.
১| ২৭ শে আগস্ট, ২০২২ দুপুর ১২:১৬
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: কিছু বলার ভাষা নাই।