নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি অধম।

দাদুচাচা

আমি মানুষ।

দাদুচাচা › বিস্তারিত পোস্টঃ

লোহার মাছ ! রান্নার মেন্যু লোহার মাছ !!

২০ শে মে, ২০১৪ দুপুর ১:১৪





পুরোনো গাড়ি থেকে তৈরি হচ্ছে ‘ওষুধ’। তা পাত্রের খাবারে ফেলুন। সে খাবার খেলে খিটখিটে মেজাজ ঠিক হয়ে যায়, দূর হয় শারীরিক দুর্বলতা। রক্তশূন্যতায় আক্রান্তদের নির্ভরতার প্রতীক হয়ে উঠছে ‘আয়রন ফিশ’!



বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডাব্লিউএইচও)-র সাম্প্রতিক সমীক্ষা অনুযায়ী, এ মুহূর্তে বিশ্বের অন্তত ১৬০ কোটি মানুষ রক্তশূন্যতায় আক্রান্ত। রক্তশূন্যতার কারণে মানব দেহে দেখা দেয় নানা ধরণের জটিলতা। চেহারায় মলিনতা, মেজাজ খিটখিটে হয়ে যাওয়া এবং শরীর দুর্বল লাগার মতো কিছু লক্ষণ দেখা দেয় শুরুতে, যা সাধারণের পক্ষে কোনো রোগের পূর্ব লক্ষণ বলে মনে করা সম্ভব নয়।



রক্তস্বল্পতাজনিত রোগে আক্রান্ত মানুষ অনুন্নত এবং উন্নয়নশীল দেশেই বেশি। এ রোগ হয় মূলত রক্তে আয়রন কমে যাওয়ার কারণে। কম্বোডিয়ায় কর্মরত ক্যানাডিয়ান গবেষকরা আয়রন ডেফিসিয়্যান্সি বা রক্তে আয়রনের স্বল্পতাজনিত রোগের এক মহৌষধ উদ্ভাবন করেছেন। ওষুধটির নাম ‘আয়রন ফিশ!'



মস্তিষ্কের রক্ত চলাচলে ব্যাঘাতের কারণে এই রোগ যে কোনো সময় যে কারও হতে পারে একেবারে হঠাৎ করেই। স্ট্রোক হলে বাকশক্তি, দৃষ্টিশক্তিও হারিয়ে যেতে পারে। শরীরের যে-কোনো অংশ অসাড়ও হতে পারে। সারাজীবন হয়তো বা হুইলচেয়ারে চলতে হতে পারে। তবে এটা নির্ভর করে মস্তিষ্কের কোন অংশে স্ট্রোক হয়েছে বা আঘাতটা কত বেশি তার ওপর।



২০১০ সালের এক সমীক্ষা অনুযায়ী, কম্বোডিয়ায় আয়রনের স্বল্পতাজনিত রোগের বিস্তার ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। সে দেশের শতকরা ৫৫ ভাগ শিশু এবং ৪০ ভাগ অন্তঃস্বত্ত্বা নারীই রক্তশূন্যতায় ভুগছে। পৃথিবীর অন্যান্য দেশের মতো কম্বোডিয়াতেও আয়রনের ঘাটতি কমাতে ‘আয়রন ট্যাবলেট' খাওয়ানো হয়। কিন্তু রোগ সম্পর্কে সচেতনতার অভাব এবং আয়রন ট্যাবলেট সবার ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে না থাকায় রোগীর সংখ্যা বেড়েই চলেছে।



কিন্তু ক্যানাডীয় এক গবেষক দল উদ্ভাবন করেছেন এমন এক ওষুধ যা কম্বোডিয়ার সাধারণ মানুষও উৎসাহ নিয়েই গ্রহণ করছে। হেলেন কেলার ইন্টারন্যাশনালের হয়ে কম্বোডিয়ায় কাজ করতে এসে তারা প্রথমে কাজ শুরু করেন একটি গ্রামে। সেই গ্রামের মানুষকে খাদ্যের সঙ্গে আয়রন গ্রহণ করানোর জন্য প্রথমে ঘরে ঘরে গিয়ে একটা করে লোহার খণ্ড দিয়ে আসা হয়। সবাইকে বলা হয়, দৈনন্দিন খাবার রান্না করার সময় যেন তারা লোহার খণ্ডটিও বিশেষ উপায়ে ব্যবহার করেন।



গ্রামবাসীরা লোহার খণ্ডটি ব্যবহার করায় কোনো আগ্রহই দেখালেন না। গবেষকদের তখন অন্য রাস্তা ধরতে হলো। সবাইকে তারা বললেন, লোহার খণ্ড পছন্দ না হলে লোহার তৈরি পাত্রে রান্না করতে। কিন্তু লোহার পাত্রেও কারো আগ্রহ নেই। কম্বোডিয়ার অন্যান্য অঞ্চলের মতো সেই গ্রামের বেশির ভাগ মানুষও অ্যালুমিনিয়ামের পাত্রেই রান্না করতে লাগলেন। আয়রনের অভাবজনিত রোগ কী আর তাতে কমে!



নিয়মিত মাছ খেলে কিন্তু আয়রনের ঘাটতি খুব একটা দেখা দেয়না। কিন্তু কম্বোডিয়ার মানুষের সেই সঙ্গতি থাকলে তো! গবেষকরা তাই এবার কম্বোডিয়ায় খুব জনপ্রিয় এক মাছের আদলে বানালেন লোহার মাছ ‘আয়রন ফিশ'। কম্বোডিয়ার সেই গ্রামে এখন অনেকেই অ্যালুমিনিয়ামের পাত্রে রাখা খাবারেই ছেড়ে দেন ধাতব এ মাছ। আয়রন ফিশের আয়রন খাদ্যে মেশানোর জন্য সঙ্গে দেয়া হচ্ছে লেবুর রস। ব্যস, মানুষ তৃপ্তিভরে খাচ্ছে আর এর ফলে কয়েক মাসের মধ্যেই গ্রামটির অর্ধেকেরও বেশি মানুষ হয়ে গেছেন রক্তশূন্যতামুক্ত।



রাজধানী নমপেনের অদূরে এক বাড়িতে জ্বলছে আগুন। কাছে গেলে দেখবেন, আগুনের উৎস বিশাল এক চুল্লি। চুল্লিতে পুড়ে গলছে লোহার বড় বড় টুকরো। পুরোনো গাড়ি ভেঙে তা থেকে পাওয়া টুকরো টুকরো লোহা এভাবে গলিয়েই তৈরি করা হচ্ছে ‘আয়রন ফিশ'। বাড়ির মালিক লাও ফুন জানালেন, “লোহার তৈরি এমন মাছ শুধু বিক্রি করেন না, নিজেরাও খান।”



দুই সন্তানের জননী সোথ সোখেউমও বললেন, “আয়রন ফিশ' তাঁর শরীরের দুর্বলতা, মেজাজের খিটখিটে ভাব দূর করেছে।”



এক গ্রামে সুফল পাওয়া গেলেও ‘আয়রন ফিশ' এখনো কম্বোডিয়া সরকার এবং বড় বড় এনজিওগুলোর স্বীকৃতি পায়নি। আরেক গ্রামের ১৫শ মানুষের মাঝে এখন পরীক্ষা করে দেখা হবে ‘আয়রন ফিশ'-এর কার্যকারিতা। সফল হলেই সরকারের স্বীকৃতি পাওয়া যাবে বলে আশা করছেন ক্যানাডীয় গবেষক লরেন রামজে।







View this link

মন্তব্য ২ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২০ শে মে, ২০১৪ দুপুর ১:৩৭

মাথা ঠান্ডা বলেছেন: ব্যাপারটা আর ও জানতে হবে।

২| ২০ শে মে, ২০১৪ বিকাল ৫:০১

রাকি২০১১ বলেছেন: ভাল লক্ষন মনে হচ্ছে। অপেক্ষায় আছি ভাল কিছুর।
পোস্টের জন্য ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.