![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
প্রথম পর্বের লেখার ভূমিকা এখানেও প্রযোজ্য।
১ম পর্ব দেখতে এখানে ক্লিক করুন।
১ম পর্বের পর. . . . . . .
রনীন্দ্রনাথের অন্যান্য বৈশিষ্ট্যসমূহের মধ্যে একটি হলো মনে যা আসতো তিনি তাই লিখতেন। আগের লেখার সাথে পরের লেখার মিল রাখার কোন যৌক্তিকতা উনি খুজে দেখতেন না। তাই কিছুদিন পূর্বে উনি যেখানে লিখেছেন, মরণ রে তুঁহু মম শ্যামসমান, কিছুদিন পর সেই সুর পাল্টে, তার শ্যামের ঘাড়ে লাথি মেরে তিনি বলে উঠলেন মরিতে চাহিনা আমি সুন্দর ভুবনে মানবের মাঝে আমি বাচিবারে চাই। এই পরস্পর বিরোধী বক্তব্য তাকে নিয়ে যায় অনন্য উচ্চতায় এবং তিনি বুঝতে পারেন বড় কবি হলে যা খুশি তাই লেখা যায়। তাই একের পর এক পরস্পরবিরোধী লেখা লিখতে শুরু করলেন যাকে তার ভক্তরা উভমুখী দৃষ্টিভঙ্গী হিসেবে বিবেচনা করে তার প্রশংসায় পঞ্চমুখ হলেন। তার পরস্পরবিরোধী ভাবধারার লেখার উদাহরণ দিলে আমার এই লেখা মহাকাব্য হয়ে যাবে তাই কেবল দু একটি উদাহরণ টেনে দিচ্ছি যা সাধারণ পাঠকমাত্রই বুঝতে পারবেন।
রাহুর প্রেম কবিতায় কবির প্রেমের মাত্রা অধিক ছিল বলে তিনি কিছুতেই তার প্রেমকে ছাড়তে চাইছিলেন না, তাই লিখেছেন
রোগের মতন বাধিব তোমায় দারুণ আলিঙ্গনে
মোর যাতনায় হইবি অধীর আমারি অনলে দহিবে শরীর
নিশিদিন শুধু আমি ছাড়া আর কিছু না রহিবে মনে।
অথবা
পূর্বজনমের অভিশাপ-সম
রব আমি কাছে কাছে ,
ভাবী জনমের অদৃষ্টের মতো
বেড়াইব পাছে পাছে ।
কিন্তু তার এই প্রেম পাল্টে যায় কিছুদিন পর যখন তার জীবনে বিচ্ছেদের ঘটনা ঘটে, তখন তিনি লিখেন
........... তারপর যদি তুমি ভুলো
মনে করাব না আমি শপথ তোমার
আসা যাওয়া দু’দিকেই খোলা রবে দ্বার
যাবার সময় হলে যেও সহজেই আবার আসিতে হয় এসো
সংশয় যদি রয় তাহে ক্ষতি নেই তবু ভালো বাস যদি বেসো।
এখান থেকে রবীন্দ্র পাঠকেরা উদ্বুদ্ধ হয় এবং বুঝে নেয় যে প্রেমের ক্ষেত্রে চিরন্তন বলে কিছু নেই। এটা পরিবর্তনযোগ্য।
গীতাঞ্জলী কাব্যে রবীন্দ্রনাথ তার পুরস্কার লাভের আশায় নিজেকে খুব সাহসী এবং প্রভুর প্রতি নির্ভরশীল হিসেবে প্রমান করতে চেয়ে লিখেন
বিপদে মোরে রক্ষা কর এ নহে মোর প্রার্থনা
বিপদে আমি না যেন করি ভয়
অথচ পুরস্কারটা পেয়ে গেলেই তিনি তার ভীতু এবং আসল রূপ তুলে ধরেন, তিনি লিখেন
ওরে নবীন, ওরে আমার কাঁচা,.
ওরে সবুজ, ওরে অবুঝ,
আধমরাদের ঘা মেরে তুই বাঁচা।
রবীন্দ্রনাথ অত্যন্ত নিষ্ঠুর প্রকৃতির লেখক ছিলেন। না, তার সেই নিষ্ঠুরতা লেখার বিষয়বস্তুতে ছিলো না। ছিল পাঠকের প্রতি তার আচরণে। পাঠকের ধৈর্য কিংবা পাঠ করার সীমাবদ্ধতার প্রতি তার কোন নজর ছিল না, এমনকি পাঠকের আর্থিক সংগতির কথাও কোনদিন চিন্তা করেননি তিনি। তাই তার উপন্যাসের দৈর্ঘ্য, কবিতার দৈর্ঘ্য আর রচনার পরিমান সবগুলোই সাধারণ পাঠকের সীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। জনৈক পাঠকের মতে, রবীন্দ্রনাথ জমিদার ছিলেন বলে তার লেখালেখি করার জন্য কাগজ কলমের অভাব হয় নি। তাই তিনি সারাজীবন শুধু লিখেই গেছেন। পাঠকের এত পরিমান অর্থ আছে কিনা যা দিয়ে তার সমস্ত লেখা কিনে পড়তে পারবে সে চিন্তা তিনি একবারও করেন নি। রবীন্দ্রনাথ সম্পর্কে এক উঠতি লেখক আক্ষেপ করে বলেছিলেন রবীন্দ্রনাথ আমাদের আগে জন্মগ্রহন করায় এত পরিমান লেখা লিখতে পেরেছেন, আমাদের সময়ে এত পরিমান লিখতে পারতেন না। কারণ এখন আমরা যাই লিখতে যাই, গিয়ে দেখি রবীন্দ্রনাথ আগেই তা লিখে বসে আছেন। আমরা যদি রবীন্দ্রনাথের আগে জন্মগ্রহণ করতাম তবে রবীন্দ্রনাথ এই সমস্যায় পড়তেন। এই হিসেবে রবীন্দ্রনাথ যথেষ্ট ভাগ্যবান লেখক একথা স্বীকার করতেই হবে।
তার সমস্ত লেখা মুটামুটি একই ভাবধারার ছিল প্রেম কিংবা আনন্দ বিষাদ। তার লেখায় কোন বিদ্রোহ নেই, বিজ্ঞান ভাবনা নেই, সন্যাস কিংবা বৈরাগ্য নেই। তিনি শরৎচন্দ্রের শ্রীকান্তের মত বনে বাদাড়ে ঘুরে বেড়াতে পারেন নি, হিমু হয়ে খালি পায়ে রাস্তায় রাতের বেলা হাটতে পারেন নি, ফেলুদার মত গোয়েন্দাগিরি করতে পারেন নি। মোট কথা চরিত্রের যে বৈচিত্র তা তিনি খুব কম আনতে পেরেছেন তার লেখায়। এ কারণে এত লেখা লিখেও তিনি একটা অনুগল্প লিখতে পারেন নি, লিখতে পারেন নি কোন রম্য রচনা, কোন গোয়েন্দা সিরিজ, ভূতের গল্প, রূপকথা। হাজার হাজার গান লিখেছেন কিন্তু একটা পপ কিংবা ব্যান্ড সংগীত লিখতে পারেন নি। রবীন্দ্রনাথের গানের একটা নিজস্ব ধারা আছে বলে রবীন্দ্রভক্তরা বলেন রবীন্দ্রসংগীত হলো রবীন্দ্রনাথের সৃষ্ট একটা সুরের ধারা যা রবি ঠাকুর নিজে লিখে নিজে সুর করে অনেক ক্ষেত্রে গেয়ে গেছেন। কিন্তু সমালোচকরাও তাকে ছেড়ে দেন নি। অনেকেই এই অভিযোগ করেছেন যে আসলে রবীন্দ্রনাথ এই ধারার বাইরে কোন সুর জানতেন না বা গাইতে পারতেন না। এটা ছিল তার সীমাবদ্ধতা। রবীন্দ্রনাথের একই ধারার গান শুনতে শুনতে বিরক্ত হয়ে সমালোচনা করতে গিয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে এক শ্রোতা বলে ফেলেছিলেন, তিনি এত লিখলেন, কই একটা নজরুলগীতি, লালনগীতি তো লিখতে পারলেন না। সাধারণ পাঠক নিশ্চয়ই একে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতেই দেখবেন।
চলবে. . . ...
২৯ শে মে, ২০১৫ দুপুর ১২:৩৪
আমি দামাল ছেলে বলেছেন: ধন্যবাদ.......।
©somewhere in net ltd.
১|
২৯ শে মে, ২০১৫ দুপুর ১২:২৪
তোজি বলেছেন: চলুকককককক
অসাধারন হয়েছে