নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মানুষ দেখতে পছন্দ করি, এবং মানুষের গল্প শুনতে পছন্দ করি...
গতবছর ডিসেম্বরের শেষের দিকে মানে এক সপ্তাহ আগে আমার শখের গিটারের নেকটা ভেঙ্গে গিয়েছিলো...
মাঝে ঠিক করলেও, আজ একটা গান 'বার কর্ডে' বাজাতে গিয়ে, আবার আগের জায়গায় ভেঙ্গে গেলো...
মনটা আবার খারাপ হয়ে গেলো...
এই গিটারটা আমার মা ২০১৪ সালে আমার জন্মদিনে উপহার দিয়েছিলেন...
আমার মায়ের চাকরির উপার্জিত টাকা দিয়ে এই গিটার কেনা, তাই এই গিটারের প্রতি ভালোবাসাও দ্বিগুণ...
সেদিনের সেই খুশির ব্যাখ্যা কাউকেই বর্ণনা করেও শেষ করা যাবে না। এতই ভালোলাগা কাজ করেছিলো সেদিন...
আমার এই গিটারের সাথে অনেক আবেগ, অনেক মায়া, অনেক ভালোবাসা জড়িয়ে আছে...
আর মাকে, মিহিরকে শোনানো কত গানের যে স্মৃতি, যা লিখেও শেষ করা যাবে না...
গিটার আহামরি বাজাতে পারি তাও না...
মূলত আমি শুধু গিটারের বেসিকটাই শিখেছি। তাও মাত্র দুইটা মেজর-মাইনর স্কেল দিয়ে। একটা C মেজর স্কেল। আরেকটা Am স্কেল।
মূলত এই দুই স্কেলের মধ্যেই যেকোন গানের সুর তোলার চেষ্টা করি।
আবার কয়েকজনকে গিটারও শেখায়, এই দুই স্কেল আর এই গিটারটি দিয়ে...
আবার অনলাইনে ফ্রীতেও একটা ৫/৬ জনের ব্যাচকে শেখাই। তবে ছোট্ট একটা শর্ত প্রযোজ্য দিয়ে...
যাদের কাজ শুধু দিনে একবার কুকুর অথবা বিড়ালকে বিষ্কুট বা অন্যকিছু খাওয়ানো সামর্থ্যনুযায়ী...
আমি এই গিটারের সাউন্ডহোলের পাশে ফুলের ডিজাইন দিয়ে আর্ট করেছি। বিভিন্ন ট্যাটু করেছি।
কতকিছুই না করেছিলাম এই গিটারটিকে...
এই গিটার দিয়েই নিজের লেখা ও সুরেই করেছিলাম ৫টি মৌলিক গান...
একেকটা গানের কত স্মৃতি...
একেকটা সুরের কত গল্প...
একেকটা আঙ্গুলের কত শত ব্যথা...
সব গানই মিহিরকে নিয়ে লেখা...
আমার এখনও মনে পড়ে 'বার কর্ড' আয়ত্বে আনার জন্য কত সপ্তাহে যে এই গিটারের উপর অত্যাচার চালিয়েছি...
আমার হাতের আঙ্গুল যখন ব্যথা হয়ে যেতো, রক্ত পড়তো, তখন নিজেই আবার গিটারটিকে খুটিয়ে খুটিয়ে দেখতাম...
কোনো ফ্রেডের ক্ষতি হয়েছে কী না! স্ট্রিং গুলো ঠিকাছে কী না! কোথাও রক্তের দাগ আছে কী না ইত্যাদি ইত্যাদি...
এই গিটার ছিলো আমার অবসরের সঙ্গী। মন খারাপের সাথী। আর খুশিতে থাকলে, তার টুং টাং শব্দে নিজেই সুখের সমুদ্রে তলিয়ে যাওয়ার সাক্ষী...
বলতে গেলে নিজের আপন ছোট ভাইই ভাবতাম এই গিটারকে...
কতবার যে আমরা কথা বলেছি, স্বপ্নে, বাস্তবে, কল্পনায়...
পাশে রেখেই ঘুমাতাম...
প্রতিদিন পরিষ্কার কাপড় দিয়ে মুছতাম। সপ্তাহে একদিন সরিষার তেল দিয়ে স্নান করাতাম...
অনেক বেশি যত্ন নিতাম, যাতে তার শরীরে কোন প্রকার ময়লা না জমে...
আমার কোন বন্ধু বাসায় আড্ডা দিতে এসে যদি এই গিটারে হাত দেয়, তাহলে আমার বুক কেঁপে উঠতো...
পরমুহূর্তে অন্য আরেকটা গিটার দিয়ে বলতাম, এইটাতে বাজা। এইটাতে যা খুশি কর। কিন্তু ওই গিটারে ভুলেও হাতও দিসনা। ওইটা আমার প্রিয়দেরও প্রিয়...
মাঝে ইন্ডিয়া গিয়েছিলাম, চেয়েছিলাম তাকেও নিয়ে যেতে...
শুধুমাত্র মা রাগারাগি করেছেন বলে নিয়ে যেতে পারিনি...
তবে যাওয়ার আগে এমনভাবে কভার পরিয়েছি যে, যাতে তার শরীরের কিংবা স্ট্রিং এর কোন ক্ষতি নাহয়...
এসেই যাতে আমার সাথে টুং টাং শব্দে কথা বলতে পারে...
মাঝে প্রায় বলতে গেলে ২/৩ বছর গিটারের আশে-পাশেও ছিলাম না কোন একজনকে কথা দেওয়ার কারণে...
সেই গল্প অন্য আরেকদিন...
পরে মিহিরের অনেক রাগারাগি, জোড়াজুড়িতে আবার ২০২০ সালে এই গিটার নিয়ে নতুন ভাবে নিত্যদিনের সঙ্গী হিসেবে জীবন চলা শুরু করলাম...
কত নির্ঘুম রাত এই গিটারের টুং টাং শব্দে কাটিয়ে দিয়েছিলাম...
কতশত রাতের অন্ধকারকে গান শুনিয়েছি...
ঝিঁঝিঁ পোকার তালে তালে কত সুর বাজিয়েছি...
আহা...
যেদিন এই গিটারের নেকটা ভেঙ্গে গিয়েছিলো, সেদিন অনেক কান্না করেছিলাম...
মাঝে ঠিক করার পর, রিস্ক নিয়ে আর বাজাতে চাইনি। আজ কোন দুঃখে যে বাজাতে গেলাম, তাও ৫ মিনিটের জন্য!
আফসোস করতে করতে এখনও এই আফসোস মন থেকে যাচ্ছে না...
এখনও আমার পাশেই আছে, আমার মত মন খারাপ করে, আমার দিকেই তাকিয়ে আছে...
নতুন বছরে প্রিয় জিনিস হারানোর বেদনা সবার না হোক, এইটাই সর্বদা কামনা করি...
সবাই ভালো ও সুস্থ থাকুন..
নয়ন বড়ুয়া
জানুয়ারি, ২০২৪
০৭ ই জানুয়ারি, ২০২৪ রাত ১১:৫৫
নয়ন বড়ুয়া বলেছেন: কন্ঠ তেমন সুন্দর না বলে শেয়ার করতে চাইনি। তার উপর আবার মন ভীষণ খারাপ। ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।
২| ০৮ ই জানুয়ারি, ২০২৪ রাত ১২:১৮
মিরোরডডল বলেছেন:
একটি গিটারের আত্মকাহিনী শোনার পর যদি সেই গিটারের টুং টাং না শুনি তাহলে কিভাবে কি!
আগের রেকর্ড করা কিছু নেই!
এতক্ষন যার গল্প শুনলাম তাকে একবার দেখবো নাহ?
আহত গিটারের একটা ছবিতো দেয়া যেতো।
৩| ০৮ ই জানুয়ারি, ২০২৪ রাত ১:০৩
মিরোরডডল বলেছেন:
নাহ কণ্ঠ নিয়ে কিছু বলবো না।
চ্যানেলের সবগুলো গান শুনলাম।
গানের কথা সুর খারাপ না, ভালোই হয়েছে।
you play well.
রাগ প্র্যাকটিসে সেটা বোঝা গেছে।
শুধু একটা বিষয়ে বলি, উচ্চারণে আরেকটু ফোকাস করবে।
আজম খানের পাপড়ি গানটাতে কথা কে শোনা যাচ্ছে কতা।
keep practising more.
আশা করি সামনে আরো ভালো কিছু শুনবো।
thanks for sharing.
০৮ ই জানুয়ারি, ২০২৪ রাত ১:২৮
নয়ন বড়ুয়া বলেছেন: ওটা স্ত্রীর রাগ ভাঙ্গানোর জন্য হুট করে গাওয়া...
অসংখ্য ধন্যবাদ।
৪| ০৮ ই জানুয়ারি, ২০২৪ সকাল ৯:০৫
রাজীব নুর বলেছেন: এবার আমার কন্যা একটা গিটার উপহার পেয়েছে। জন্মদিন উপলক্ষ্যে তার মামা মামী একটি হাওয়াই গিটার তাকে উপহার দিয়েছে।
০৮ ই জানুয়ারি, ২০২৪ সকাল ৯:৪৬
নয়ন বড়ুয়া বলেছেন: জন্মদিনের উপহার সবসময় স্পেশাল হয়। আর সেটা যদি গিটার হয়, তাহলে তো কথায় নেই। এই আনন্দের সীমা ব্যাখ্যাও করার মত না। অসংখ্য ধন্যবাদ রাজীব দা।
৫| ০৮ ই জানুয়ারি, ২০২৪ সকাল ৯:৩২
বিজন রয় বলেছেন: আপনি গান পছন্দ করেন?
০৮ ই জানুয়ারি, ২০২৪ সকাল ৯:৪৬
নয়ন বড়ুয়া বলেছেন: হুমম। ভীষণ ভালো লাগে। শুভ সকাল দাদা।
৬| ০৮ ই জানুয়ারি, ২০২৪ সকাল ১০:৩১
মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন: আপনার গিটারটা সারিয়ে তুলুন। শুভকামনা।
০৮ ই জানুয়ারি, ২০২৪ সকাল ১০:৪২
নয়ন বড়ুয়া বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ। শুভ সকাল দাদা।
৭| ০৮ ই জানুয়ারি, ২০২৪ দুপুর ১:৫৮
রোকসানা লেইস বলেছেন: ঠিক হয়ে যাক আবার পুরানো গিটার
বেজে উঠুক টুংটাং সুর তুলে
মাঝ রাতে কুয়াশা
চাঁদ পরেছে ঢাকা
ইচ্ছেরা হয় যদিও দূরাশা
অভিমান ভুলে স্বপ্নরা সাজুক
রূপকথার গল্পে মেলুক ডানা..........
০৮ ই জানুয়ারি, ২০২৪ দুপুর ২:৩৫
নয়ন বড়ুয়া বলেছেন: এমন সুন্দর ছন্দের মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ কবি।
৮| ০৮ ই জানুয়ারি, ২০২৪ দুপুর ২:৩০
প্রামানিক বলেছেন: আমারও ইলেক্ট্রিক কীবোর্ডের কী ভেঙে গেছে। ঠিক করতে পারতেছি না। ফেলে রেখেছি।
০৮ ই জানুয়ারি, ২০২৪ দুপুর ২:৩৯
নয়ন বড়ুয়া বলেছেন: আপনার গান আগের মত শুনিনা দাদা। সুস্থ মনে, একটি গান অথবা আবৃত্তি শোনায়েন দাদা। মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ দাদা।
৯| ০৮ ই জানুয়ারি, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫৯
শেরজা তপন বলেছেন: এমন প্রিয় গিটারের একটা ছবি দিলেন না কেন ? বিশেষ একতা গিটার নিয়ে এমন পাগলামীর গল্প আমি শুনিনি কখনো!
মিহিরকে নিয়ে লেখা সবগুলো গান মা'কে শুনিয়েছেন?
মিহিরের সাথে এখন আপনার সম্পর্ক কি?
গিটার বাজানো নিয়ে এত পাগলামী করলেতো আপনার আরো অনেক অনেকদূর যাবার কথা ছিল...
কার কথার জন্য ২/৩ বছর গিটারের আশে পাশে ছিলেন না জানার ইচ্ছে রইল?
০৮ ই জানুয়ারি, ২০২৪ রাত ৮:২২
নয়ন বড়ুয়া বলেছেন: এই গিটারটি আমার কাছে খুবই স্পেশাল। গান দুইজনকেই শোনাতাম। শখের বশে শেখা, তাই বেসিক পর্যন্তই শিখেছিলাম। অত সিরিয়াস ভাবে শিখিনি। আমার এক বন্ধুর জন্য। যে এখন মৃত। মারা গেছে। মূলত গিটার বাজাতে বসলেই, তার কথা বেশি মনে পড়তো, তার স্মৃতি ভাসতো, মূলত এগুলো থেকে দূরে থাকার জন্যই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। আর মিহির আমার স্ত্রী। ধন্যবাদ তপন দা। মন্তব্যের জন্য। আর গিটারের ছবি তুলিনি, আমার ক্যামেরার সেটিংটা ১৯৮০ সালের ছবির মত হয়ে গেছে। ছবি তুলে শান্তি পাচ্ছি না। তাই দিইনি।
১০| ০৯ ই জানুয়ারি, ২০২৪ রাত ১২:৩৫
বাকপ্রবাস বলেছেন: শ্রাবন্তি বিদেশ গিয়ে আসার সময় পার্থ এর জন্য গিটার এনেছিল, গিটারটার কী হল জানিনা কিন্তু সংসারটা ভেঙ্গে গেছে
০৯ ই জানুয়ারি, ২০২৪ রাত ১২:৫৫
নয়ন বড়ুয়া বলেছেন: হুমম...
পার্থ দা ভীষণ প্রিয় একজন মানুষ।
১১| ০৯ ই জানুয়ারি, ২০২৪ রাত ১২:৪৯
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: আপনি শায়মা আপুকে বার কর্ড ধরা শিখিয়ে দিয়েন। উনি নাকি পারে না। একজনে বলেছে।
০৯ ই জানুয়ারি, ২০২৪ রাত ১:০৫
নয়ন বড়ুয়া বলেছেন: বলেন কী! ইজি তো...
তিনদিনেই শিখে যাবেন, যদি E মেজর কর্ড middle finger দিয়ে ধরে, স্লাইড করে এক ফ্রেড পরে F মেজর ধরে index finger কে barr হিসাবে ধরলেই হয়ে যাবে। শুধু একটু কষ্ট করতে হবে। এই তিনদিন ৩০ মিনিট টানা প্রাকটিস করতে হবে। আর Lrb এর "হাসতে দেখো"টা অথবা "রূপালী গিটার" দিয়ে বারে প্রাকটিস করতে পারবেন। তবে ধৈর্য্য রাখতে হবে। আয়ত্বে চলে আসবে সহজেই। প্রথমে বারে F আর G তারপর Am আয়ত্বে এসে গেলেই, সব পারবে...
এটাতো গেলো মেজর বার কর্ডের।
মাইনর বার কর্ড তো আরও সহজ।
যদি উনার বুঝতে অসুবিধা হয়, তাহলে বলিয়েন। আশা করি ইতেই বুঝবেন। যদি তাও রা বুঝে, বলতে বলিয়েন। ধন্যবাদ।
১২| ০৯ ই জানুয়ারি, ২০২৪ রাত ১:১০
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: ওনার বুঝতে অসুবিধা হবে না। কিন্তু উনি একটু নাচুনে টাইপের তো তাই একটানা ৩০ মিনিট প্র্যাকটিস করতে পারবেন না। মাঝ খানে উঠে নাচানাচি শুরু করবেন। তাতে কি কোন সমস্যা হবে? উনি এখন দেশে নাই। আসলে আপনার সাথে পরিচয় করিয়ে দিব।
বার কর্ড ধরতে পারলে এক কর্ড থেকে আরেক কর্ডে যাওয়া সবচেয়ে সহজ। কিন্তু ধরাটার প্র্যাকটিস করাই অনেক কঠিন কাজ।
০৯ ই জানুয়ারি, ২০২৪ রাত ১:১৯
নয়ন বড়ুয়া বলেছেন: একদম ওপেন কর্ডও ঠিকমত ধরতে না জানলে তাহলে 'শায়মা' আপুর এক মাসের মত টাইম লাগবে। তবে আমি যেটা ফলো করতে বলেছি, ওটা দিয়ে এই দুইদিন এক মনে প্রাকটিস করলে, সহজেই আয়েত্বে চলে আসবে। আর একদম যদি না জানেন, তাহলে বইলেন, আপুকে দেখিয়ে দেবো...
১৩| ১০ ই জানুয়ারি, ২০২৪ রাত ২:২২
রিয়াদ( শেষ রাতের আঁধার ) বলেছেন: আমি গিটার বাজাতে পারি না, ব্যাপার স্যাপার গুলোও বুঝি না। তবু এইটুকু বুঝি প্রিয় কিছু হারাবার বেদনা বরাবরই ভিতরে গিয়ে লাগে।
১০ ই জানুয়ারি, ২০২৪ সকাল ১০:৪৮
নয়ন বড়ুয়া বলেছেন:
©somewhere in net ltd.
১| ০৭ ই জানুয়ারি, ২০২৪ রাত ১১:৪৬
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: গিটারের নেক ভেঙে যাওয়াতে আমারও মন খারাপ হলো। আমি গিটারিস্ট নই, গিটার আমার প্রিয় বস্তুও না। তবে, প্রিয় বস্তু হারিয়ে গেলে বা নষ্ট হয়ে গেলে কতখানি বেদনা হয়, তা তো আমরা সবাই বুঝি।
আপনার একটা গান শেয়ার করতে পারতেন! আপনি হয়ত জানেন না, আমি গানের ভেতর বাঁচি, গান আমার এতটা জীবন জুড়ে। আমি আর কী, আমার দুই ছেলের কথা বলতে গেলে আমার নিজের হার্ট-বিট বন্ধ হইয়া যাইবার উপক্রম হয়
সুন্দর লেখা।