নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

একজীবনে শুধু মানুষের গল্প শুনতে চাই, আর নিজের মত করে গল্পগুলো লিখতে চাই...

নয়ন বড়ুয়া

মানুষ দেখতে পছন্দ করি, এবং মানুষের গল্প শুনতে পছন্দ করি...

নয়ন বড়ুয়া › বিস্তারিত পোস্টঃ

জীবনের গল্পঃ ব্রাজিল ও আমি...

৩১ শে জানুয়ারি, ২০২৪ রাত ৮:৩০



মামার বাড়িতে একবার ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা প্রীতি ম্যাচ হয়েছিলো। জার্সিবিহীন প্রীতি ম্যাচ। যে যার খুশিমত পোষাক পরার প্রীতি ম্যাচ। কেউ শার্ট পরে, কেউ টি-শার্ট পরে, কেউ বা খালি গায়ে...
আমি ছিলাম রেফারি।
নিরপেক্ষ রেফারি।
ব্রাজিল দলের সবাই মানলেও আর্জেন্টিনা দলের কয়েকজন সেটা মানতে নারাজ। কেন না আমি হলাম ব্রাজিলের একজন কট্টর সমর্থক। তাদের দাবী আমি সাউড টানবো। ফাউল না হলেও ব্রাজিল দলের পক্ষে ফ্রি-কিক দেবো...
প্রতি বছর এই ব্রাজিল - আর্জেন্টিনার ম্যাচে ঝগড়া হওয়ার কারণে অন্য কেউ রেফারি হতে চাই না...
তাই বাধ্য হয়ে আমাকেই রেফারির দ্বায়িত্ব পালন করতে হলো...
দর্শকও ছিলো বেশ...


শুরুতেই আর্জেন্টিনা ১-০ গোলে এগিয়ে। টেনশন যতটা না ব্রাজিল দলের, তারও বেশি আমার। এদিকে কারসাজিও করা যাচ্ছে না, যদি ধরে ফেলে!
আর দর্শকসারির আওয়াজেও মনের ভেতর একধরণের ভীতি কাজ করছিলো...
সবকিছুই ঠিকঠাক মত খেলছিলো। হঠাৎ এক আর্জেন্টাইন খেলোয়াড়, তার পক্ষের খেলোয়াড়কে ডি-বক্সের ভেতর বল এ মারতে গিয়ে পায়ে মেরে দিলো। জার্সিবিহীন হওয়ায় আমি না চিনে সাথে সাথে বাঁশি এবং পেনাল্টির সিদ্ধান্ত দিয়ে দিই। ওদিকে প্রিয় ব্রাজিল দলের ক্যাপ্টেন বাবু দা বলতে লাগলেন, ওই ওইটা ওদের দলের খেলোয়াড়। আমি শুনেও না শোনার ভান করে পাশ কেটে চলে গেছি...
অনেক তর্কাতর্কির পরও আমি ছিলাম আমার সিদ্ধান্তে অনড়। মাঝে রেগে গিয়ে একজনকে বললাম, রেফারি তুই নাকি আমি? একটা হলুদ কার্ড দেখিয়ে ভয় দেখালাম, সে বোকাটা লালকার্ড দেখার ভয়ে আর তর্ক করলো না...
হাফ টাইম শেষ। ১-১ এ ড্র।


২য় হাফে আর্জেন্টিনার খেলোয়াড়রা রাফ খেলতে শুরু করলো। ওরা হুদাই হলেও বল না মেরে প্রিয় ব্রাজিল দলের খেলোয়াড়দের পায়ে মারতে লাগলো। আমি নীরব ছিলাম। কারণ বিরতির সময় চা-সিগারেট খেতে গিয়ে কার্ডগুলো কোথায় রেখেছি ভুলে গেছি। বাঁশি দিয়ে কার্ড খুঁজতে যেয়ে দেখি, পকেটে কোন কার্ড নাই। মুখে লাল কার্ড বললে ওরা সেটা মানতে নারাজ। ওদের দাবি কার্ড ছাড়া মুখের কোন সিদ্ধান্তে ওরা মাঠ থেকে যাবে না...
কী আর করার!
আমার কাজিন প্লাবনও রাফ খেলার জন্য গোলকিপার থেকে স্ট্রাইকারে চলে গেলো...
সে কী মাইর। এরে মাইর, ওরে মাইর...
শেষে মি. টুইস্ট চিপসের লাল প্যাকেটকে কার্ড বানিয়ে তাকে মাঠ থেকে বের করে দিলাম...
যত্তসব ফাউল খেলোয়াড়...


আর্জেন্টিনার ডি-বক্সের ভেতরে হাতে বল লাগলো এক ব্রাজিলের খেলোয়াড়ের, অথচ সেটা আমি জানি না, সে যে ব্রাজিল দলের খেলোয়াড়!
মনে করেছিলাম সে আর্জেন্টিনার!
যা হবার তাই হলো, দিলাম পেনাল্টি। ফলাফল ব্রাজিল ২-১ গোলে জিতে গেলো...
খেলা শেষে আর্জেন্টিনা দলের খেলোয়াড়রা আমার দিকে তেড়ে আসলেও কাজ হয় না। একে তো আমি সিনিয়র, তার উপর সবাই জানে আমার ঘাড় একটু ত্যাড়া...
কয়েকজন তাও সাহস করে বলতে আসলেও, তখন দেয়াল হয়ে দাঁড়ায় ব্রাজিল দলের খেলোয়াড়রা...
তাই ভয়ে কেউই আর সামনে এলো না...
ম্যাচ শেষে আমার প্রশংসাই পঞ্চমুখ সবাই...
দর্শক থেকে শুরু করে, ব্রাজিল দলের খেলোয়াড় পর্যন্ত...
অসৎ রেফারিরা বরাবরই একদলের প্রিয় থাকে, সেটার প্রমাণ আমি নিজে...

নয়ন বড়ুয়া
ডিসেম্বর, ২০২২
(বিশ্বকাপ ফাইনালে ফ্রান্স - আর্জেন্টিনার ফাইনাল ম্যাচের পর লেখা)

মন্তব্য ১৩ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১৩) মন্তব্য লিখুন

১| ৩১ শে জানুয়ারি, ২০২৪ রাত ৯:০৭

এম ডি মুসা বলেছেন: আপনি কি ব্রাজিলকে বেশি সুযোগ দিয়ে জিতিয়ে দিলেন নাকি? তবে আপনার গল্প ১ দুই তিন দিয়ে আমার পড়তে সুবিদা হয়েছে

০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ রাত ১২:২৯

নয়ন বড়ুয়া বলেছেন: হুমম, অনেকটা সেরকমিই...
বেশিরভাগ এইভাবে লেখার অভ্যাস আছে...
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ...

২| ৩১ শে জানুয়ারি, ২০২৪ রাত ১০:১৮

গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেছেন: আমাদের সময় বলের মালিক যে সেই ছিল রেফারি প্লাস এক দলের খেলোয়াড়।

০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ রাত ১২:৩৪

নয়ন বড়ুয়া বলেছেন: তাহলে তো তার কথায় শেষ কথা হতো! আমাদের অবশ্য এমনটা হতো ক্রিকেট খেলায়। যার কাছে ব্যাট, বল থাকতো তার কথায় আমাদের কাছে বেদবাক্যর মত থাকতো...
তাকে রাগানোও যেতো না। একবার একজনকে রাগানোর ফলে, দুইদিন ক্রিকেট খেলতে পারিনি। পরে তাকে অনেক অনুনয়, বিনয় করে রাজী করিয়ে আগের মত নিয়মিত মাঠে খেলেছিলাম। তখনকার সময় অর্থসংকট প্রচুর ছিলো। চাইলেই ব্যাট, বল কেনা যেতো না...
আহা, আর এখন সবকিছু চাইলেই মুহূর্তে কেনা যায়, কিন্তু সেই সঙ্গী কিংবা আগ্রহটা আর নাই...
আপনার মন্তব্যে পুরো নস্টালজিক হয়ে গেলাম।
ধন্যবাদ দাদা মন্তব্যের জন্য...

৩| ৩১ শে জানুয়ারি, ২০২৪ রাত ১০:৪৪

সোনাগাজী বলেছেন:



এখন খেলেন?

০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ রাত ১২:৩৬

নয়ন বড়ুয়া বলেছেন: না। আগের মত দৌড়াতেও পারিনা, আবার দমও নাই। তাছাড়া বাইক এক্সিডেন্টের পর, আর ফুটবল খেলার সাহসও করিনি...

৪| ০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ সকাল ১১:৪৮

রাজীব নুর বলেছেন: আমি এক সময় খুব ফুটবল খেলতাম। ফুটবল আমার প্রিয় খেলা। আমি পুরো মাঠ জূড়ে খলতাম। গোলকিপার হিসাবেও আমার বেশ সুনাম ছিলো।
আমার প্রিয় দল হচ্ছে আর্জেন্টিনা।

০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ দুপুর ২:১২

নয়ন বড়ুয়া বলেছেন: বাহ দাদা। জেনে ভালো লাগলো। আমি অবশ্য গোলকিপার নাহয় মেইন স্ট্রাইগারে খেলতাম। তবে বেশিরভাগ পজিশন ছিলো গোলকিপার। স্কুলে খেলতাম স্ট্রাইগারে। পাড়ায় গোলকিপারে...
কত স্মৃতি যে মনে পড়ছে এখন...
আহা...
পুরা নস্টালজিক।
ধন্যবাদ দাদা মন্তব্যের জন্য...

৫| ০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ বিকাল ৩:২৩

শূন্য সারমর্ম বলেছেন:



ব্রাজিল ক্রোয়েশিয়ার কোয়ার্টারের ম্যাচে আপনি রেফারি থাকলে ভালো হতো।

০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ বিকাল ৩:২৬

নয়ন বড়ুয়া বলেছেন: হাহাহ...
আমি রেফারি থাকলে তো, ব্রাজিলের হেক্সা কমপ্লিট হয়ে যেতো...
সেমিতে যেভাবেই হোক প্রিয় আর্জেন্টিকে ৭ গোল দিয়ে পাপ মোছন করতাম...
আর কত শত রেকর্ড তৈরিতে সাহায্য করতাম...
আহা...

৬| ০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৭

রাজীব নুর বলেছেন: পোষ্টে আবার এলাম। কে কি মন্তব্য করেছেন সেটা জানতে।

০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ বিকাল ৫:৫০

নয়ন বড়ুয়া বলেছেন: শুভ সন্ধ্যা রাজীব দা...

৭| ১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ দুপুর ১:১৮

সোনালি কাবিন বলেছেন: আমি ব্রাজিলের সাপোর্টার।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.