নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

একজীবনে শুধু মানুষের গল্প শুনতে চাই, আর নিজের মত করে গল্পগুলো লিখতে চাই...

নয়ন বড়ুয়া

মানুষ দেখতে পছন্দ করি, এবং মানুষের গল্প শুনতে পছন্দ করি...

নয়ন বড়ুয়া › বিস্তারিত পোস্টঃ

"রাজকুমার" সিনেমার রিভিউ

১৮ ই জুন, ২০২৪ সকাল ৯:১৩



#স্পয়লার_এলার্ট

গতকাল শাকিব খানের "রাজকুমার" মুভিটা দেখেছিলাম।
অন্ধবিশ্বাস কিংবা ধারণা মানুষকে কতটা ভয়ংকর করতে পারে, একটা সুখের সংসার কী সহজে না শেষ হয়ে যায়, এই অন্ধবিশ্বাস আর জবানের কারণে তারই একটা ঝলক নিয়ে পুরো একটা মুভি...
স্পেশালি শাকিব খানের অভিনয়, ভাষা, চাল-চলন বেশ ভালো লেগেছে...
একসময় যে মানুষ প্রচুর ট্রলের শিকার হতো, আজ সে মানুষ নিজেকে এমনভাবে বিল্ডআপ করলো, যে কেউ চাইলে হিংসা করতে পারে...
শাকিব খানের স্ক্রিপ্ট সিলেক্টে অবাক হচ্ছি...
পুরো মুভির নিচের এজাজুল ইসলাম আর শাকিব খানের কনভার্সেসনের এই পার্টে এসে বেশ হেসেছি...

"- আপনি এই দেশে করেনটা কী?
- আমি হইতাছি পেট সিটার।
- কীসের চিটার?
- আরেহ চিটার না, পেট সিটার। যেরকম বেবি সিটার থাকে, সেরকম পেট সিটার। এই দেশে ধনীরা তাগো কুত্তা-বিলাই রেখে যখন কাজে কামে যায়, তহন তাগো কুত্তা বিলাই দেহার লাইগা একজন মানুষরে দ্বায়িত্ব দেয়, সে হইতেছে পেট সিটার।
- তাহ এই কাজ কইরা টাকা-পয়সা কিছু পাওয়া যায়?
- আরেহ পাওয়া যায় না মানে! ৮/১০ ঘন্টা কাম করি, ১৭০ ডলার, ১৮০ ডলার, মাঝে মধ্যে ২০০ ডলারও পাই। লগে টিপস তো আছেই।
- আচ্ছা ভাই, আমাকে একটা এরকম কাজ দেওয়া যায়? আমি তো ধরেন দেশে, অনেক কুত্তারেই টোস্ট বিষ্কিট খাওয়াইছি...
- আরেহ, টোস্ট বিষ্কিট খাওয়াইলে হইবো না! এই কাম করতে ট্রেনিং লাগে। এইটা একটা প্রফেশন। লাইসেন্স লাগে।
- কুত্তা পালতে লাইসেন্স!
- হ্যাঁ। এই যে মনে করো, এহন আমি যে কুত্তাটার দেখাশুনা করি, এই কুত্তারে দুই ঘন্টা পরপর খাবার দিতে হয়। আর দিনে একবার দুই পদের ওষুধ খাওয়াতে হয়।
- কীসের ওষুধ!
- ওষুধ দুই পদের। একটা হইতেছে হজমের ওষুধ। আরেক পদের ওষুধ হইতেছে, ডিপ্রেশনের লাইগা।
- কুত্তার ডিপ্রেসন!
- হ। কুত্তার ডিপ্রেসন। এই যে অনেক্ষণ সে, তার মালিক ছাড়া থাকে, তার ডিপ্রেশন হইতে পারে না! এর লাইগা তারে ডিপ্রেশনের ওষুধ খাওয়াইতে হয়। উহ, তারপর মনে করো, বেলা ৩ টায়, এই কুত্তারে নিয়ে যখন হাঁটতে বের অই, তহন পকেটের মধ্যে পলি ব্যাগ নিয়ে বের অইতে হয়। কুত্তা হাঁটতে হাঁটতে, যতবার প্রোডাক্ট ডেলিভারী দেয়, ততবারিই প্রোডাক্ট পলি ব্যাগে ভইরা, ডাস্টবিনে ফেলাই দিতে অয়।
- কীসের প্রোডাক্ট!
- হাগু। হাগু।
- ইয়াক। মানে কুত্তার গু পলি ব্যাগে ভইরা, তার পেছনে পেছনে হাঁটতে হয়!
- হুম। হুম।
- মানে, যতবার সে প্রোডাক্ট ডেলিভারী করবে ততবার!
- হ্যাঁ। সবাই এইডা করে। তুমি রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাইতেছো, তোমার কুত্তায় হেইগে দিছে, তুমি গু সাফ করবে না, কেডা করবো! যদি ঠিকমত সাফ না করো, পুলিশ তোমারে টিকিট দিয়া দিবো।
- ভাইরে ভাই, মাফ চাই। জীবনে টাকার দরকার আছে, কিন্তু এত দরকার নাই যে, কুত্তার প্রোডাক্ট ডেলিভারী কইরা টাকা কামাইতে হবে!
- কী কইলাম তোমারে! এই দেশের মানুষ কুত্তারে, নিজের পোলাপান মনে করে। তোমার পোলাপান যদি, রাস্তায় হেগে দেয়, তুমি কী করবা?
- পা দিয়ে, বালিচাপা দিয়ে চইল্যা আসবো।
- তুমি গু পাও দিয়ে বালিচাপা দিবা, পুলিশ তোমারে মাটিচাপা দিব! যাই, আমার ডিউটির সময় হয়ে গেছে...
- হ্যান্ডশেক করা লাগবে না ভাই, আপনে এমনেই যান।
- হ্যান্ডশেক করলো না। মনে করছে, হাতের মধ্যে কুত্তার গু লাইগা আছে"।


আহমেদ শরীফের শেষের দিকের দেশপ্রেম পুরো ইমোশন করিয়ে দিলো...
মাহিয়া মাহি আর আরোশ খানের গেটআপ কিংবা লুক নিয়ে যে সমালোচনা হয়েছিলো, সেটা তারা তাদের অভিনয় দিয়ে পুষিয়ে দিয়েছিলো...

আমি অনেক আগে, নবাব, শিকারি মুভি দেখার পর
আমার এক বন্ধুকে বলেছিলাম, শাকিব খান ভালো ডিরেক্টরের হাতে পড়লে, বাংলাদেশে সবাইকে অবাক করিয়ে দেবে...
সেটাই হচ্ছে...
তার "প্রিয়তমা" মুভি তেমন ভালো লাগেনি, তাই সেটা নিয়ে কোন রিভিউ লিখিনি।
বাট "রাজকুমার" আসলেই ভালো ছিলো...
টিকিটের জন্য "তুফান" এখনো দেখতে পারিনি। তবে শীঘ্রই দেখবো....
আর কাল "দরদের" টিজার দেখে তো মার্ভেলের "মুননাইট" সিরিজের মার্ক স্পেক্টরের চরিত্রটার কথা মনে করিয়ে দিলো...

বাংলা সিনেমা ঘুরে দাঁড়াচ্ছে দেখে ভালো লাগছে। আমাদের হলিউড, বলিউড মুভির মত ফিল করাচ্ছে দেখে ভালো লাগছে...
এই অল্প বাজেটে আমাদের এতকিছু ফিল করাচ্ছে, যা সত্যিই ডিরেক্টর এবং সিনেমার কলাকৌশলীরা অবশ্যই প্রশংসার দাবি রাখে...

আমরা নিশো, শাকিব খান, শরীফুল রাজসহ প্রমুখদের ফ্যানবেজরা একে অন্যকে ট্রল না করে, বাংলা সিনেমার এই জয়জয়কারকে অভিবাদন জানাই...
বাংলা সিনেমার জয় হোক...
ব্লগের সকলকে ঈদের শুভেচ্ছা। সকলের ঈদ ভালো ও আনন্দময় হোক...

ছবিঃ গুগল থেকে

মন্তব্য ৯ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (৯) মন্তব্য লিখুন

১| ১৮ ই জুন, ২০২৪ সকাল ১০:০৬

কামাল১৮ বলেছেন: এতোদিনে বুঝতে পেরেছেন আন্ধবুশ্বাস ভয়ংকর।সমস্ত ধর্মগুলো অন্ধগুলো অন্ধ বিশ্বাসের উপর প্রতিষ্ঠিত।

১৮ ই জুন, ২০২৪ রাত ৮:৪৪

নয়ন বড়ুয়া বলেছেন: সব পবিত্র ধর্মীয় বইয়েই শান্তির বাণী লেখা আছে। মানুষই সেটার সঠিক ব্যাখ্যা না করে, ভুল ব্যাখ্যা আগলে ধরে, কিছু সংখ্যক মানুষ জীবন পরিচালনা করে...
কোন ধর্মই ক্ষতির কারণ নয়।
মানুষই ক্ষতির কারণ সৃষ্টি করে আসছে...

মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
ঈদ মোবারক...

২| ১৮ ই জুন, ২০২৪ দুপুর ১২:০৮

নজসু বলেছেন:



মুভিটা আমিও দেখলাম গতকাল। অন্ধ বিশ্বাস নিয়ে বললেন। এই অন্ধ বিশ্বাসটাই সিনেমার শেষে কিন্তু প্রাধান্য পেয়েছে। আপনি কি সেটা খেয়াল করেছেন? তারিক আনাম খান যখন মাহিয়া মাহীকে বলেছিলেন মা ছেলের যদি সাক্ষাত হয় তাহলে মা তার আদরের সন্তানের মরা মুখ দেখবেন। তারিক আনামের অভিশাপটা কোন বিশ্বাসে ফেলবেন? অন্ধ নাকি চক্ষুষ্মান বিশ্বাস? মা ছেলের যখন সাক্ষাত হলো তখন মাকে দেখতে হলো ছেলের লাশ। পরিচালক রায়হান রাফী কোরআনের একজন হাফেজ মানুষ। তিনি আসলে কি দেখাতে চেয়েছিলেন? এক দিকে ধর্মীয় গোঁড়ামী দেখালেন অন্য দিকে অন্ধ বিশ্বাসের সত্যতা প্রমাণ করে দিলেন।

সামান্য একটা মুখের কথায় স্বামী স্ত্রীর সম্পর্ক নষ্ট হয়ে যাবে এটা আমিও সমর্থণ করিনা। খুবই দুঃখ এবং লজ্জাজনক। স্ত্রী কোন বাদি দাসি নয় যে, তাকে যাচ্ছেতাই করার অধিকার স্বামী রাখে। বরং সে একজন সম্মানীতা। তাকে তার যথার্থ সম্মান ও অধিকার প্রদান করা প্রতিটি পুরুষের দায়িত্ব। কথায় কথায় তালাক দেবার প্রবণতাও একটি বাচ্চাসূলভ মানসিকতা। পৃথিবীতে এত শব্দ থাকতে, সামান্য ঝগড়া লাগতেই তালাক বলতে হবে কেন? একজন মেয়ে তার পিতা মাতা, পরিবার, পরিচিতজন সবাইকে ছেড়ে যখন একজন পুরুষের বাড়িতে চলে এল। যে পুরুষের জন্য সব কিছু ছেড়ে দিল, সে পুরুষ তার সাথে দুর্ব্যবহার করবে, তার গায়ে হাত তুলবে এটা শুধু ইসলামের দৃষ্টিতে নয় মানবতার দৃষ্টিতেও বর্বর কাজ। তাই এহেন কাজ থেকে বিরত থাকতে হবে। একটি সিনেমা দিয়ে, একটি চরিত্র দিয়ে পুরো ধর্মটাকে বিচার করা যাবে না।

আহমেদ শরীফের শেষ দৃশ্যে ও আমার দেশের মাটির সাথে তার অভিনয় দেখে গা শিহরে উঠছিলো। আমার চোখ দিয়ে পানি পড়ছিলো। মনের অজান্তেই দেশের প্রতি শ্রদ্ধা আর ভালোবাসা আরও গভীর হচ্ছিলো। জীবনে কিছু পাই আর না পাই আমার সোনার এই দেশেই যেন আমার মৃত্যু হয়। এই দেশের একখন্ড মাটিতেই যেন সুখের নিদ্রা দিতে পারি।

১৮ ই জুন, ২০২৪ রাত ৮:৪৯

নয়ন বড়ুয়া বলেছেন: তবে শেষের পার্টটা অন্যভাবে মৃত্যু দিয়ে মুভিটার সমাপ্তি করতে পারতো। কারণ ভিলেন সম্ভবত বাংলাদেশে ইললিগ্যাল ব্যবসার জন্য বাংলাদেশে ব্যান, সেই মানুষই আবার বাংলাদেশে আসলো, তাও আমেরিকার মত একটা দেশ থেকে!
আর মুভির পরিচালকের নাম ছিলো, হিমেল আশরাফ।
নিজের দেশেই সবকিছুই হোক...
মাটি, পানি, এই দেশের প্রকৃতির গন্ধ যে শান্তি, সুখ তা অন্যদেশে সম্ভব না...
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ...
ঈদ মোবারক...

৩| ১৮ ই জুন, ২০২৪ দুপুর ১:১৮

শায়মা বলেছেন: ডায়ালগ পড়ে আমি হাসতে হাসতে শেষ!
তবে হ্যাঁ আমি মানুষ নিজেকে বিল্ড করতে চাইলে পারবে না এ আমি মানিনা।

ইচ্ছা এবং সেইভাবে এগিয়ে যাওয়া এটাই সবচাইতে বড় কথা।

১৮ ই জুন, ২০২৪ রাত ৮:৫০

নয়ন বড়ুয়া বলেছেন: কথা সত্য আপা...
ঈদ মোবারক আপা...

৪| ১৮ ই জুন, ২০২৪ রাত ১০:২২

নজসু বলেছেন:



আমি ভেবেছিলাম রায়হান রাফী। ধন্যবাদ আপনাকে।

৫| ২০ শে জুন, ২০২৪ বিকাল ৫:৪০

এম ডি মুসা বলেছেন: আমি সিনেমা দেখিনা ভাই

২২ শে জুন, ২০২৪ রাত ১১:০৩

নয়ন বড়ুয়া বলেছেন: ব্যাপার না মুসা ভাই...
ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.