![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
খ্যাপাটে কিম জং উনের পারমাণবিক বোমা পরীক্ষার প্রেক্ষিতে কোরীয় উপদ্বীপে চীনের চিরাচরিত নীতি উল্টে যাবার একটা লক্ষণ দেখা দিলো বলেই মনে হয়। এতদিন উত্তর কোরিয়ার একমাত্র পরাশক্তি মিত্র হিসেবে পরিচিত চীন আসলে কোরীয় উপদ্বীপ সম্পর্কে কি নীতি পোষণ করে তা নিয়ে সন্দেহের অবকাশ আছে বলেই মনে হচ্ছে।
গতকাল একটি মৃদু ভূমিকম্পের দ্বারা বিশ্ব সর্বপ্রথম উত্তর কোরিয়ার সর্বশেষ পারমাণবিক বোমার পরীক্ষা সম্পর্কে অবগত হয়। স্বাভাবিকভাবেই এর বিরুদ্ধে অনেক প্রতিক্রিয়া এসেছে। তবে এসব প্রতিক্রিয়ার মধ্যে চীনের প্রতিক্রিয়া বিশেষভাবে প্রণিধানযোগ্য। শুধু এবারই নয়, সাম্প্রতিক সময়ে উত্তর কোরিয়ার ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ পরীক্ষা, হাইড্রোজেন বোমার পরীক্ষার সময়ও চীনের ভিন্ন সুর শোনা গেছে। গত মাসের শেষের দিকে দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সাথে একটি ত্রিপক্ষীয় সম্মেলনে যোগ দিয়ে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই বলেন, চীন উত্তর কোরিয়ার পরমাণু অস্ত্রভাণ্ডার ও ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ বিষয়ক পরীক্ষার বিরোধী। কারণ এতে কোরীয় উপদ্বীপে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়।
যদিও চীনের ভেটোর জন্যই জাতিসংঘ কিম জং উনের মগের মুল্লুকের বিরুদ্ধে নতুন করে নিষেধাজ্ঞা জারী করতে পারছে না, কিন্তু গত মাসেই নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে আনা একটি নিন্দা প্রস্তাবে সায় দেয় চীন। তিব্রতার বিচারে এসব এখনও অনেকটাই ঠুনকো হলেও এর অন্তর্নিহিত তাৎপর্য এড়িয়ে যাওয়া যায়না।
ফলে প্রশ্ন জাগে, উত্তর কোরিয়ার ব্যাপারে চীনের দৃশ্যমান নীতি কি আসলে মেকী? বর্তমান পৃথিবীর রাষ্ট্রসমূহের মধ্যে জাতীয়তা ও ভূগোলের প্রকৃতির মধ্যে দুই ধরণের রাষ্ট্র দেখতে পাওয়া যায়। একধরণের রাষ্ট্র জাতীয়তা ও ভৌগলিক বাস্তবতাকে অগ্রাহ্য করে রচিত হয়েছিলো মূলত বিশ্ব ব্যবস্থার স্বার্থে। উদাহরণস্বরূপ জার্মানি, ইয়েমেন, ভিয়েতনামের কথা বলা যায়। শীতল যুদ্ধের সময়ের প্রতিটি এহেন বিভক্তিই এখন তামাদি হয়ে গেছে, কেবল কোরিয়া ছাড়া।
উত্তর ও দক্ষিণ কোরিয়ার স্রষ্টা আমেরিকা ও সোভিয়েত ইউনিয়ন। চীন বর্তমানে প্রাচ্যে কার্যত একক ক্ষমতাধর হয়ে উঠি উঠি করছে। উত্তর কোরিয়া দৃশ্যত আমেরিকার বিরুদ্ধে চীনের জন্য একটি বাফার হিসেবে প্রতিভাত হলেও এটা অস্বাভাবিক নয় যে, কোরিয়া উপদ্বীপ থেকে মার্কিন প্রভাব বিতাড়িত করার জন্য চীন হয়তো আসলে কোরিয়ার একত্রীকরণ কামনা করে! এটা একটা উচ্চমার্গের রাজনৈতিক চালবাজির অংশ বলেই হয়তো চীন উপরে উপরে উত্তর কোরিয়ার ঘনিষ্ঠ মিত্র হয়ে বসে আছে। আসলে হয়তো দক্ষিণে উত্তরের লীন হয়ে যাওয়া চীনেরও চাওয়া!
এই কথাটা বছর দুয়েক আগে একজন আমাকে বলেছিলেন। এখন আমার কাছে পুরো ব্যাপারটিকে ফল্গুধারার মতো বহমান একটি উজ্জ্বল সম্ভাবনা বলেই মনে হচ্ছে...!
©somewhere in net ltd.