নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বিশ্বজোড়া পাঠশালা মোর সবার আমি ছাত্র

একজন দেশপ্রেমীক

একজন দেশপ্রেমীক › বিস্তারিত পোস্টঃ

স্বৈরাচারের গণতন্ত্র আর গণতন্ত্রের স্বৈরাচারীতা!

১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সকাল ১১:০৮

১৯৮৬ সালের কথা। দেশে তখন দোর্দণ্ডপ্রতাপে শাসন করছেন জেনারেল হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ। তাঁর প্রতিষ্ঠিত উপজেলা পদ্ধতি ও উপজেলার নির্বাচিত চেয়ারম্যানরাও তখন বেশ ক্ষমতাধর। সরকার তাদের জন্য মাথাপিছু একটি করে সবুজ রংয়ের মিতসুবিসির পাজেরো গাড়ি বরাদ্দ দিয়েছে। যেহেতু চেয়ারম্যানরা বাংলাদেশের রাজনীতিবিদ, সেহেতু তারা সেসব সরকারী গাড়িকে স্বাভাবিকভাবেই নিজের পৈত্রিক সম্পত্তি মনে করতে লাগলেন। সরকারী কাজের চেয়ে ব্যক্তিগত কাজেই গাড়ির ব্যবহার হচ্ছিলো বেশি। কেউ কেউ আবার আত্মীয়স্বজনকেও এসব গাড়িতে চড়িয়ে দূরবর্তী উপজেলা থেকে ঢাকায় আসতেন আনন্দ-উল্লাস করতে। ব্যাপারটা সরকারের ভালো লাগলো না। বঙ্গভবন থেকে কড়া ভাষায় ফরমান জারি হল, এসব আর চলবে না। মহানগর পুলিশকেও আদেশ দেয়া হল এমন কোন গাড়ি দেখা গেলেই যেন তাকে আটক করা হয়।
আলী মিয়া নামে জাতীয় পার্টির এক নেতা সেসময় বান্দরবান জেলার লামা উপজেলার চেয়ারম্যান। লোকটি নিরক্ষর হলেও চিকন বুদ্ধিতে তার কোনই কমতি নেই। একদিন তিনিও গাড়ি নিয়ে ঢাকা আসছেন। সায়দাবাদে আসতেই একজন দায়িত্বরত দারোগা আলী মিয়ার মিতসুবিসি পাজেরোটিকে থামার জন্য সংকেত দিলেন। আলী মিয়া সংকেতের কোন পরওয়াই করলেন না, সোজা ঢাকায় ঢুকে পড়লেন। নাছোড়বান্দা দারোগাও গাড়ির পিছু নিলেন। শেষে গুলিস্তানে এসে দারোগা আলী মিয়ার পথরোধ করতে সমর্থ হলেন। দারোগা চেয়ারম্যান আলী মিয়ার কাছে কঠোরভাবে তার সিগন্যাল না মানার কৈফিয়ত চাইলেন। চিকন বুদ্ধির আলী মিয়ার ঝটপট জবাব, "আমি তো উপজেলা চেয়ারম্যান। ডিসি সাহেবের পর্যায়ের অফিসার। তাই মনে করলাম আপনি আমাকে সালাম ঠুকেছেন। সেজন্যই ড্রাইভারকে গাড়ি থামাতে বলিনি।" এই উত্তর শুনে দারোগার মুখ কাতল মাছের মুখ হল, আলী মিয়াও দারোগাকে ঢাকায় গাড়ি আনার কারণ সম্পর্কে বিভিন্ন রকম হাইকোর্ট দেখিয়ে আরামসে সটকে পড়লেন।

এই সত্যি ঘটনাটা শুধু উপজেলা চেয়ারম্যানের বিখাউজ মার্কা বুদ্ধির কথা বা তৎকালীন পুলিশের পুরানো জিপ গাড়ির তুলনায় মিতসুবিসি গাড়ির গতির পার্থক্যই দেখায় না, বরং এটাও দেখায় যে একনায়কতান্ত্রিক শাসনের যুগে দেশে আইনের লোকদের এমন শক্তি ছিল যে তারা ক্ষমতাশালী লোকদের আইনের আওতায় আনার সক্ষমতা ছিল, যা আজকের গণতান্ত্রিক বাংলাদেশে কল্পনাই করা যায় না। এর দ্বারা স্বৈরাচারের গুনকীর্তন করা আমার উদ্যেশ্য নয়, বরং আমি শুধু বুঝাতে চাচ্ছি যে স্বৈরাচারের আমলেও যা গণতন্ত্র ছিলো বর্তমানে কতিথ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে তাও নেই। স্বৈরাচারের সময় যতটুকু স্বৈরাচারীতা ছিলো বর্তমানে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে তারচেয়েও বেশি স্বৈরাচারীতা চলছে।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সকাল ১১:২৯

ঢাকাবাসী বলেছেন: আপনি বলেছেন স্বৈরাচারের আমলেও যা গণতন্ত্র ছিলো বর্তমানে কতিথ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে তাও নেই। স্বৈরাচারের সময় যতটুকু স্বৈরাচারীতা ছিলো বর্তমানে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে তারচেয়েও বেশি স্বৈরাচারীতা চলছে।

১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১২:৩০

একজন দেশপ্রেমীক বলেছেন: তাই নয় কি?

২| ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১২:৫৮

বিজন রয় বলেছেন: আপনার বক্তব্য বুঝতে পেরেছি।

১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৪:১৯

একজন দেশপ্রেমীক বলেছেন: ধন্যবাদ!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.