![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ভূরাজনৈতিক দিক থেকে উপমহাদেশে চীনের ব্যাপক স্বার্থ জড়িত আছে বলেই শোনা যায়। এই স্বার্থ আবার প্রতিবেশী ভারতের স্বার্থের সাথে সাংঘর্ষিক। এর জন্যই দীর্ঘ কয়েক শতকের বিচ্ছিন্নতার পর কূটনৈতিকভাবে চীন উপমহাদেশে পা ফেলে পাকিস্তানের জরিয়াতেই। চীনের সাথে পাকিস্তানের মৈত্রী এখন অত্যন্ত উত্তুঙ্গু পর্যায়ে। চীনের সবচেয়ে বড় দূতাবাস অবস্থিত ইসলামাবাদে।
এই পাক-চীন মৈত্রীর জনক ছিলেন হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী। ১৯৫৬ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ১৯৫৭ সালের অক্টোবর পর্যন্ত তেরো মাস ছয়দিনের প্রধানমন্ত্রীত্বের সময়কালে সোহরাওয়ার্দী পাকিস্তানের পররাষ্ট্রনীতিতে ব্যাপক গতিশীলতা আনায়ন করেন। ১৯৪৭ সালে জন্মের পর প্রথমবার শহীদ সোহরাওয়ার্দীর সময়েই পাকিস্তানের পররাষ্ট্রনীতি সবচেয়ে সক্রিয় সময় অতিক্রম করে। এতোটাই সক্রিয় যে, ভারতের প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরু সোহরাওয়ার্দীর নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ-রিপাবলিকান পার্টির সমঝোতার সরকারকে পাকিস্তানের প্রথম এলেমদার সরকার হিসেবে অভিহিত করেছিলেন।
সোহরাওয়ার্দী চীন ছাড়াও আমেরিকার সাথে পাকিস্তানের কৌশলগত মিত্রতা গড়ে তোলেন। আমেরিকার সহযোগিতায় পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর আধুনিকায়নে সোহরাওয়ার্দীর গৃহীত পদক্ষেপ স্বল্পমেয়াদে কার্যকর বলেই প্রমাণিত হয়।
যাহোক, চীনের সাথে মৈত্রীর সম্পর্ক স্থাপনকে সোহরাওয়ার্দীর শাসনামলের সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ দিক হিসেবে অভিহিত করলেও খুব একটা অত্যুক্তি হবেনা। সেই থেকেই চীন উপমহাদেশের রাজনৈতিক ভারসাম্য রক্ষায় একটি স্থায়ী ভূমিকায় অবতীর্ণ হওয়া শুরু করে। পাকিস্তানের সাথে চীনের এখনকার সম্পর্ক অনেকটা মার্কিন-ইসরাইল সম্পর্কের পর্যায়ে উপনীত হয়েছে।
এদিকে বাংলাদেশ সাড়ে তিন বছরের নাতিদীর্ঘ বিরতির পর ১৯৭৫ সালেই চীনের দিকে ঝুঁকতে শুরু করে। শেখ মুজিবুর রহমানের শাসনামলের শেষের দিক থেকেই এই তৎপরতা শুরু হয়েছিলো। তিনি বেঁচে থাকলে হয়তো পাঁচ শতাব্দী পর তাঁর দ্বারা বঙ্গ-চীন মৈত্রীর নতুন পর্যায়ের সূত্রপাত ঘটতো। জিয়াউর রহমান ক্ষমতাসীন হয়ে চীনের সাথে বাংলাদেশের সম্পর্ককে এমন এক অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যান যে, বহু চেষ্টার পরও বাংলাদেশে চীনা প্রভাব খর্ব হয়নি। রাষ্ট্রবিজ্ঞানের ধ্রুপদী দৃষ্টিভঙ্গিতে যদি সামরিক বাহিনী রাষ্ট্রের সবচেয়ে শক্তিশালী রাজনৈতিক শক্তি হয়ে থাকে, তাহলে চীন বাংলাদেশের সামরিক বাহিনীর সাথে সবচেয়ে দৃঢ় সম্পর্ক স্থাপন করে এদেশের সবচেয়ে শক্তিশালী রাজনৈতিক শক্তিকে স্থায়ী মিত্রতা পাশে আবদ্ধ করে ফেলেছে! এমনকি হাসিনা ওয়াজেদের ভারতপন্থী সরকার চীনের সমর্থন টিকিয়ে রাখতে দেশে চীনা বিনিয়োগকে অকাতরে গ্রহণ করছে।
ছবিটি ১৯৫৬ সালের। এতে দেখা যাচ্ছে, সেসময় চীন সফররত পাক প্রধানমন্ত্রী হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী ও চীনের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী চৌ এন লাই পিকিংয়ের গ্রেট হলে পাক-চীন মৈত্রী চুক্তি দস্তখতের পর পরস্পর করমর্দন করছেন। চৌ এন লাই এর কয়েকমাস পর পাকিস্তানে সফর করেন। তিনি আলাদাভাবে পূর্ব পাকিস্তানেও সফর করেন। এর থেকে চীনের কাছে স্বাধীনতা-পূর্ব বাংলাদেশের কৌশলগত গুরুত্বের বিষয়টি অনুধাবন করা যায়। চীনা প্রধানমন্ত্রীকে গুলিস্তান হলে নাগরিক সংবর্ধনা দিয়েছিলো আতাউর রহমান খানের নেতৃত্বাধীন পূর্ব পাকিস্তানের প্রাদেশিক সরকার।
বর্তমানে ইসলামাবাদ থেকে ঢাকা, কলম্বো থেকে কাঠমান্ডু- উপমহাদেশের সর্বত্র চীনের সরব উপস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে ষাট বছরের আগের এই ছবিটিকে বাড়তি ঐতিহাসিক সুষমায় ভূষিত করা যেতেই পারে! কারণ এই ছবিতে যে শুরুর কথা ফুটে উঠেছে, তার প্রভাব আজো ঘোরতরভাবে বাস্তব...!
©somewhere in net ltd.
১|
২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ৯:২০
চাঁদগাজী বলেছেন:
এখনকার চীন জাতি হলো সবচেয়ে কম ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন দুর্নীতিবাজ মানুষ বিশ্বে; ডাকাতীর সহায়তা করে, নকল জিনিষ, ওভার ইনভয়েস, আন্ডার ইনভয়েসের রাজধানী; ডাকাতেরা বাংলাদেশে ডাকাতির ব্যবসা চালু করেছে।