![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
পাকিস্তান সরকারের সাবেক লাস্যময়ী পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিনা রব্বানি খারের ব্যাপারে আমি বড়ই আশাবাদী ছিলাম। কিন্তু এই বেচারি পারেন নি ব্রিটিশ ভারতের শেষ ভাইসরয় লুইস মাউন্টব্যাটেনের স্ত্রী এডুইনা মাউন্টব্যাটেনকে টেক্কা দিতে! পুরুষের মনকে মোহাবিষ্ট করার আশ্চর্য এক ক্ষমতা ছিলো চল্লিশে পা দেয়া এই ভদ্র মহিলার।
এগুলো মোটেও আমার কথা নয়। লুইস মাউন্টব্যাটেনকে নায়কোচিত মর্যাদা দিয়ে লিখিত উপন্যাসের লক্ষণাক্রান্ত ইতিহাসের বই 'ফ্রিডম অ্যাট মিডনাইট' বইতে পড়েছি, এডুইনাকে দেখলে স্বল্পবসন গান্ধীর কেমন যেন শীত শীত লাগতো। দিল্লীর বর্তমান রাষ্ট্রপতি ভবনের স্টাডিতে মাউন্টব্যাটেনের সাথে বৈঠকের সময় একবার শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্রের হাওয়ায় শীতে গান্ধী কাঁপছিলেন। সেসময় মিসেস মাউন্টব্যাটেন এসে কম্বল জড়িয়ে দেন গান্ধীর গায়ে। না জানি, সে মুহূর্তে গান্ধীর মনে মৃত স্ত্রী কস্তুরবার উষ্ণ সান্নিধ্যের কথা মনে পড়ছিলো কী না! গান্ধীর সাথে মাউন্টবাটেন দম্পতির একটি ছবি দেখেছি। এডুইনার পাশে শিশুর মতো সরল হাস্যরত গান্ধীর তখনকার মনোভাবকে আমার মেকী বলে মনে হয়নি।
জিন্নাহর মতো ক্ষুরধার ব্যক্তিত্বের শুদ্ধচারী মানুষ এডুইনার সামনে এলে হাসতেন, কোটের পকেটে দুই হাত ভরে মুখে দুর্লভ হাসি নিয়ে নিখাঁদ সাহেবী কেতায় কথা বলতেন বেগম মাউন্টবাটেনের সাথে। তবে জিন্নাহর সাথে এডুইনার কোন রসায়ন দানা বাঁধেনি জিন্নাহর কঠোর ব্যক্তিত্বসম্পন্ন ও কাটখোট্টা স্বভাবের জন্য। তিনি এডুইনাকে সম্মান দেখালেও তার সামনে নিজেকে বিগলিত হওয়া থেকে সংবরণ করেছিলেন।
অনেকে বলেন, স্ত্রীকে ভারতীয় রাজনীতিবিদ, বিশেষত কংগ্রেস নেতাদের প্রতি নিয়োজিত করা মাউন্টব্যাটেনেরই একটি কূটচাল ছিলো। খোদ গান্ধী ছাড়াও তখনকার কংগ্রেস হাই কমান্ডের বেশিরভাগ নেতাই ছিলেন বিপত্নীক। এর ফলে তাদের প্রতি এডুইনা মাউন্টব্যাটেনের আন্তরিকতা পূর্ণ উষ্ণ আচরণ ভারতে ব্রিটিশ রাজের শেষ দিনগুলোতে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যকে পারস্পরিক দরকষাকষিতে নিগুঢ় সুবিধা প্রদান করে।
আর 'নেহরু-এডুইনা' সম্পর্ক তো কিংবদন্তীতে পরিণত হয়েছে! এটা আজো পাপারাজ্জি টাইপের রাজনৈতিক ঐতিহাসিকদের গবেষণার বিষয় হয়ে রয়েছে। কেউ বলেন, জওহরলাল স্রেফ মিসেস মাউন্টব্যাটেনের প্রেমে মজে লাট্টু হয়ে পড়েছিলেন, কেউ বলেন নেহরুর সাথে এডুইনার সম্পর্ক ছিলো নেহায়েত সোল মেট বা আত্মার সখার সম্পর্ক। আমি একটা ছবি দেখছি, যাতে নেহরু আর এডুইনা হাসছিলেন। নেহরুর হাসিটা ছিলো একটু দৃষ্টিকটু ধরণের তীব্র। দন্ত বিকশিত হাসিতে প্রায় ঝুঁকে পড়েছিলেন। অন্যদিকে এই দুই জনের পাশে হংস মধ্য বক যথা স্বরূপ দাঁড়িয়ে ছিলেন স্বয়ং মাউন্টব্যাটেন। তিনি তেমন একটা হাসছিলেন না।
১৯৬০ সালে এডুইনার মৃত্যুতে গভীর শোকাকুল হয়েছিলেন নেহরু। মিসেস মাউন্টব্যাটেনের সম্মানে তার শেষকৃত্যে ভারতীয় নৌবাহিনীর একটি রণতরী পাঠিয়েছিলেন তিনি।
এই ছবিটি ১৯৪৮ সালের গরমকালের। মাউন্টব্যাটেন দম্পতিকে বিদায় জানাতে গিয়ে আবেগে আকুল হয়ে মিসেস মাউন্টবাটেনকে জড়িয়ে ধরেছেন ভারতের নতুন গভর্নর জেনারেল চক্রবর্তী রাজা গোপালাচারী। ছবিটা দেখে আমি বুঝলাম, এডুইনা মাউন্টবাটেন তৎকালীন উপমহাদেশের বেশিরভাগ বৃদ্ধ রাজনীতিবিদের বুকে কতোটা কাঁপন ধরাতে সক্ষম হয়েছিলেন..!
©somewhere in net ltd.
১|
২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৫২
সাহসী সন্তান বলেছেন: সেই রকম ব্যাপার স্যাপার তো! তয় পোস্টের শুরুতে হেনা রব্বানির একটা ছবি দিলে পোস্টটা আরো তথ্য সমৃদ্ধ হইতো.....