![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বাংলাদেশ বসবাসরত আদিবাসী জনগোষ্ঠীর জিবনে হামলা, ভূমিদখল, উচ্ছেদ এবং মামলা নতুন না। তবে আজকের ব্যাপকতা বিগত দিনের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি, আদিবাসী জনগোষ্ঠী যেন জন্মই হয় অত্যাচারিত হওয়ার জন্য এই কথিত স্বাধীন দেশে। দিনবাদিন অত্যাচারকারীর অত্যাচারের মাত্রা এবং সংখ্যা বাড়িয়াছে, অতিমাত্রা অত্যাচার সহ্য না করতে পেরে অনেকে করেছে দেশত্যাগ ; আর যারাই আছে, তারা আজ নিজ দেশে পরবাসী।
মাতৃভাষায় প্রাথমিক শিক্ষা দাবি নিয়ে অনেকদিন ধরেই আদিবাসী ছাত্র সংগঠন এবং আদিবাসী নেতারা আন্দোলন করে আসছে। সরকার বাহাদুর আদিবাসী উপর হওয়া অত্যাচার, হামলা এবং মামলা তিনিরা দেখতে পান না ; কারন টিনের চশমা যে পরে বসে আছেন। আদিবাসীদের চিৎকার করা কান্না সরকার শুনতে পান না , জানি কানে তুলা দিয়ে বসে আছেন। আদিবাসীদের জন্য কল্যাণীয় কাজ করার বিন্দুমাত্র আগ্রহবোধ বর্তমান সরকারের লক্ষণীয় হচ্ছে না।
আদিবাসী জনগোষ্ঠীকে শিক্ষার আলো থেকে যতদিন যতদূরে রাখা যায়, নিজ অধিকার - দাবি সম্পর্কে অবচেতন রাখা যায় ততদিনের একটা দিনও লাভ ; লাভ কার, হ্যাঁ লাভ আমাদের অত্যাচারী শাসকগোষ্ঠী এবং সরকারের।
বাংলাদেশ বসবাসরত আদিবাসী জনগোষ্ঠীর জন্য যদি মাতৃভাষায় প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থা করা যেত, সরকার যদি বিন্দুমাত্র সদয় হত তবে অনেক আদিবাসী শিশু আজ প্রাথমিক শিক্ষা থেকে ঝরে পরত না।
মাঝেমাঝে মাঝেমধ্যে মনে হয় রাষ্ট্র আদিবাসীদের প্রতি আন্তরিক না, নাকি আন্তরিক হতে দেওয়া হচ্ছে না। যে রাষ্ট্র একটি বৈষম্যহীন সমাজ গড়ার প্রত্যয় নিয়ে স্বাধীন হয়েছিল, আজ কেন আদিবাসীদের প্রতি এত বৈষম্য, অত্যাচার - নির্যাতন, হামলা, মামলা, খুন, ধর্ষণ, উচ্ছেদ।
সব দায় কেন রাষ্ট্র এবং সরকার নিবেন, আদিবাসী জনগোষ্ঠী বলছে, তাই সব দায় এই রাষ্ট্র এবং সরকারকে নিতে হবে। আদিবাসী জনগোষ্ঠী উপর যে হামলা হয়, কারা করে এই হামলা করে। হামলাকারীর বেশিরভাগ প্রভাবশালী, সরকারদলীয়। যে বা যারা হামলা করে তাদের উদ্দেশ্য কী, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে কারন থাকে ভূমি ; মজার ব্যাপার হল হামলাকারীদের উপর মামলা না হলেও যাদের উপর হামলা হয় তাদের উপরি মামলাও হয়।
রাষ্ট্র তার সকল উন্নয়ন কর্মযজ্ঞ করার একমাত্র স্থান বেছে নেয় আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকা, কারন এরা নিরীহ, ভূমি অধিগ্রহণ সহজ হবে এবং এরা শিক্ষিত না, আইন - আদালত বিষয়ক তেমন ধারনা নাই। রাষ্ট্র শুধু বলে দিবে ওই জমি - খাস জমি। তাতেও যদি কাজ না হয়, আছে না সেনাবাহিনী। রাষ্ট্রও নাকি সন্ত্রাস, আমি জানি না পৃথিবীর কোথাও এমন শব্দ আছে কিনা ; তবে হ্যা আমাদের দেশে আছে রাষ্ট্রীসন্ত্রাস। যদি কেউ এই সন্ত্রাসী অত্যাচার, নির্যাতন, হামলার বিরোদ্ধে বিরোধিতা করে, আওয়াজ তুলে, লেখে তবে সে হয়ে যায় রাষ্ট্রদোহী, মামলাও হবে রাষ্ট্রদোহী মামলা। প্রভাবশালীরা যেখানে সুবিধা করে উঠতে পারে না, সেখানে আরো শক্তিধর হিসেবে এগিয়ে আসে সরকার ; আর যেখানে সরকার যেখানে সুবিধা করে উঠতে পারে না, সেখানে মহাশক্তিধর হিসেবে আসে রাষ্ট্রসন্ত্রাস।
পাহাড় কিংবা সমতলে
হামলা, উচ্ছেদ, মামলা হবে সমানতালে - এই হল আমাদের সরকারের আদিবাসী বিষয়ক শ্লোগান । আমরা জানি মধুপুরে গারো অধ্যুষিত এলাকায় ' সংরক্ষিত বনভূমি ' নামে এ রাষ্ট্র সেখানে বসবাসরত গারো আদিবাসী জনগোষ্ঠীর উচ্ছেদের পাইতারা চালাচ্ছে। সেখানে আজ গারো জনগোষ্ঠী উচ্ছেদ আতংকের বসবাস করছে, ৯১৪৫.০৭ একর জমি নিয়ে টাঙ্গাইল বন বিভাগ এই প্রজ্ঞাপন জারি করেন। সিলেটের মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গলের নাহার খাসি পুঞ্জি থেকে খাসিয়া জনগোষ্ঠীর উপর উচ্ছেদ পাইতারা করেছিল এবং এখন হচ্ছে খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গা উপজেলার আলুটিলা নামক জায়গা ও তার আশেপাশে প্রায় ৭০০ একর ভূমি ' আলুটিলা বিশেষ পর্যটন এলাকা ' নামে ভূমি অধিগ্রহণ করার পাইতারা করছে। এই আলুটিলায় যুগযুগ ধরে ত্রিপুরা আদিবাসী জনগোষ্ঠীর বসবাস।
সংরক্ষিত বনভূমি, বনাঞ্চল, বনায়ন, পর্যটন কেন্দ্র, ইকো - পার্ক নাম বা শুনতে ভিন্নতা থাকলেও কাজ একটাই নিরীহ আদিবাসী জনগোষ্ঠীর ভূমি দখল এবং তাদের উচ্ছেদ।
বৈষম্যের জালেঘেরা এই শোষিত আদিবাসীরা যাবে তো যাবে কোথায়। এই জনগোষ্ঠীর জিবন এবং জিবিকাই হল ভূমি, সেই ভূমি থেকে জোরজবরদস্তি করে যখন উচ্ছেদ করা হয় - তখন, মর না হয় দেশ ছার ; এই হল নির্মম বাস্তবতা।
অত্যাচারী, শোষণকারী, দখলদারি এদের নীতি হল অত্যাচার, শোষণ, দখল করা ; আজ পাহাড়ের - কাল সমতলে, আজ আদিবাসী - কাল ধর্মীয় সংখ্যালঘু । তারপর পালা কিন্তু নীরবতাকারীদের । আজ যদি কেউ এই মনে করে, আদিবাসীদের সমস্যা, এবং এই বলে হাতেহাত রেখে বসে থাকেন, তবে তাদের পরবর্তী শিকার আপনি। আজ যদি এই অত্যাচারী, শোষণকারী, দখলদারি বিরোধে সোচ্চার না হয় কাল শুধু হতাশ হয়ে বলতে হবে বড় দেরি করে ফেলেছি, ভুল করেছি।
শিক্ষায় আমাদের দাবি - অধিকার বিষয়ে সচেতন করতে অগ্রণী ভূমিকা রাখে। শত বাধা শর্তেও আমাদের শিক্ষা গ্রহনে স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ করতে হবে নিজ আগ্রহবোধ থেকে, নিজের অধিকার সম্পর্কে জানতে এবং দাবি জানান দিতে।
আমাদের এখন আর চুপ করে বসে থাকলে চলবে না, এগিয়ে আসতে হবে ; কথা বলতে হবে, শুনতে হবে । আন্দোলন ছাড়া মুক্তি আসিবে না, অস্তিত্ব রক্ষায় ঐক্যবদ্ধ হতে হবে । ঐকতাই বল - হামলা পাহাড় কিনবা সমতলে লড়াই আমাদের করতে হবে সমান তালে । এ লড়াই আমাদের অস্তিত্বের, এ লড়াই আমাদের জিতবে হবে । স্বাধীনতার প্রকৃত লক্ষ - স্বপ্ন একটি বৈষম্যহীন, শোষনহীন, বঞ্চনাহীন অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় আবারো ঐক্যবদ্ধ হয়ে লাখ শহীদের স্বপ্ন পুরনে এগিয়ে আসতে হবে, শহীদদের স্বপ্নাদেশ এবার আমাদের আন্দোলনযুদ্ধের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠা করতে হব।
ডেভিড চিরান
১ সেপ্টেম্বর ২০১৬ , ঢাকা , বাংলাদেশ
০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ২:১১
চিরান ডেভিড বলেছেন: স্বাধীনতা এবং শহীদদের প্রতি কি আমাদের অধিকার নাই ? আমরা কি স্বাধীনতা যুদ্ধে যুদ্ধ করি নাই , বরং রাজাকার পাবে না একটাও খুঁজে ! স্বাধীনতা যুদ্ধ , দেশ গঠন এবং এখন উন্নয়নে কি অবদান রাখছিনা ?
তবে দুঃখ হল , ভালবাসার ফল হল ব্যথা আর ব্যথা ; তাই বলে ভালবাসা , ভালবাসি বলা ছাড়ছিনা । জিবনের শেষ দিন হলেও বলে যাবো আমার সোনার বাংলা , আমি তোমায় ভালবাসি ।
২| ০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ২:০৭
চাঁদগাজী বলেছেন:
আদিবাসী ও সমতলের দরিদ্রদের অবস্হা প্রায় একই।
আদিবাসী এলাকা থেকে বরিশাল ও নোয়াখালীর লোকদের না সরায়ে নেয়া অবধি শান্তি হবে না; বরিশাল ও নোয়াখালীর লোকেরা আদিবাসী এলাকায় ভয়ংকর জুলুম করছে।
৩| ০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ২:১৬
রায়হানুল এফ রাজ বলেছেন: আমি বোঝাতে চেয়েছি সব জায়গায় এই শব্দ গুলো ব্যবহার না করলেই কি নয়?
©somewhere in net ltd.
১|
০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ২:০২
রায়হানুল এফ রাজ বলেছেন: স্বাধীনতা ও শহীদ শব্দটা যেখানে ইচ্ছা সেখানে ব্যবহার করে সেগুলোর মূল্য দিন দিন নষ্ট করে ফেলছেন আপনারা।