নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার চিন্তা ভাবনার খোলা খাতা আপনাদের সবার ভালো লাগলে ভালো না লাগলে দুঃখিত

মুর্খদের সাথে তর্ক করতে ভাল্লাগেনা,মুর্খ দের এভয়েড করতে ভাল্লাগে

ধ্রুব অন্যকোথাও

আমাকে অমানুষ ডাকুন

ধ্রুব অন্যকোথাও › বিস্তারিত পোস্টঃ

চিঠি(ছেলের কথা) কিস্তি ১

২৪ শে জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১০:১৬

প্রিয় বাবা, ১/১৮/২০১৬
আসসালামু আলাইকুম।আশা করি ভালো আছেন।আমিও আপনাদের দোয়াতে বেশ আছি।নতুন করে এই বিশ্ববিদ্যালয় জীবনটা মন্দ যাচ্ছে না।হলের রুম এখনো পাই নি,আমি আপনার মতন করেই মেস এ উঠেছি।আমার রুমমেট একটা মেধাবী প্রতিবন্ধী ছেলে।ও অন্ধ।আমরা এখনি বেশ ভালো বন্ধু হয়ে গিয়েছি। আমি ফ্রি থাকলে ওর রাইটার হিসেবে পরীক্ষা দিই।আমার এই অন্ধ রুমমেট টার নাম রাহান।ও তোমার নাম জানে,তোমার লেখা ও বই পড়েছে।রাহান তোমার অনেক প্রশংসা করে।তারপর আমি সেই জামিল স্যারের সাথে দেখা করে এসেছি।তোমার অনেক কথা বলল।মানুষ টা বেশ ভালো।উনার মতন শিক্ষক পেয়ে আমি আসলেই লাকি।এই এক মাসে আমি উনার কোন ক্লাস বাদ দেই নি।তুমি ঠিকই বলেছ নতুন করে কোন কিছু শুরু করতে আসলেই ভালো লাগে।
রীনা কেমন আছে?জাহান রা সবাই ভালো আছে তো?তোমার নিজের কাজ কেমন চলছে?জানাবে আমাকে।আর টাকার জন্য ধন্যবাদ।আমি হয়তোবা টিউশনি পেয়ে যাবো সামনেই তখন আর এত টাকা লাগবেনা।প্রথমবার তো তাই।
ইতি
রাশিক

চিঠি টা লেখার পর অনেকক্ষন তাকিয়ে থাকলাম।আসলে কি লিখতেছি।কেনই বা?কি দরকার?নিজের অস্তিত্বকে আয়নায় টেনে এনে প্রশ্ন গুলা করলো।শুরুতেই দুইটা মিথ্যা কথা।প্রিয়?বাবা?
মনে মনে হাসলাম।আসসালামু আলাইকুম?প্রিয় বাবা শান্তি বর্ষিত হোক আপনার উপর?
চো* খা খা*কির পোলা।আমার মা কে রেখে দিয়ে নিজের চেয়ে ২০ বছর ছোট ছাত্রীরে যে বিয়া করলি বুক টা কাপলো না।তোর এই মাগীবাজির কারনে আমি ঢাকা ছেড়ে এই কোন গ্রামে এসে যে পড়লাম।
বালের জায়গা একটা,ইন্টারনেট পর্যন্ত নাই।

রাহান এর ব্যাপার কিছু সত্য।শালা,অন্ধ আর রুমমেট আমার।কিন্তু মেধাবী না ছাই।ব্যাটায় অন্ধ ক্যাডার।গতকাল ভাঙ্গছে হাত একই দলের অন্য গ্রুপের পোলাপানের সাথে লাগছে।ওইগুলাও আবার অন্ধ।এই অন্ধ ক্যাডার রা মারামারি করে লাশ ফেলছে গতকালকে।অন্ধ গুলি মারামারি লাগাইছে ছাদের কিনারায়।চোখে না দেখে নাকি রাজনৈতিক পদের জোশে, সেটা নিয়ে টক শো তে বিতর্ক কিংবা ফেসবুকে কমেন্ট যুদ্ধ হতে পারে কিন্তু ঘটনার আউটকাম পরিবর্তিত হবেনা।ব্যালকনী থেকে পরে গিয়ে থেতলে থাকা লাশ টা থেতলেই থাকবে।তার ছবি টাংগানো হবে,কোটায় দুর্নীতি করে চান্স পেলেও তাকে রাতারাতি মেধাবী করে দেওয়া হবে।যার হুকুমে তাকে মারা হয়েছে সে নিজেই জানাজায় যাবে আর মাটি দিয়ে আসবে এবং পারলে ফ্যাচ ফ্যাচ করে কাদবে কিছুক্ষন আর বিরুদ্ধ দলের উপর দোষ চাপিয়ে ফোস ফোস করে বিড়ির ধোয়া ছাড়বে।আর রাতের বেলায় গার্লফ্রেন্ড নিয়ে এসে বৈঠা চালাবেন পুরা দালান কাপিয়ে।

লেসন নাম্বার ১- বাংলাদেশের ছাত্র-ছাত্রীদের লাশের দাম সবচে কম।ছাত্র-ছাত্রীদের পরে আরো কম হল কৃষক,শ্রমিকদের লাশ।আমরা হলাম ৩ নাম্বারে।

মিথ্যে কথা ছেড়ে দিলাম।এরপর জামিল সাহেব এর ব্যাপারে কিছু কথা।আমার গত বছর ঢাকার ওই বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়ার পর থেকেই হতাশার জগত থেকে পালিয়ে বেড়ানোর জন্য ফাটাফাটি অষুধ হিসেবে গাজা সেবন শুরু করেছিলাম।হতাশা তো কাটেই না,কেমন জানি ঘোর লাগে।মনে হয় ধোয়ার সাথে কষ্ট গুলো ছেড়ে দিয়েছি কিন্তু আসলে ধোয়াগুলা জানালা দিয়ে বের হয়ে গেলেও কষ্টগুলা ঘরের ভিতরেই ঘুরপাক খায় আর নিঃশ্বাসের সাথে সাথে আবার ভিতরে ফিরে আসে।শান্তিটা তাই হয় ক্ষনিকের। আমি এই এলাকায় থাকি ভর্তি পরীক্ষার সময় থেকেই,ঢাকা থেকে পালানোটা খুব জরুরি ছিল,তখন থেকে বড় ভাই আর বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাঙ্কের উপজাতি কর্মচারিদের সাথে বসে গাজা খাওয়া চলতে লাগলো।ওইখানে ভদ্র-সভ্য কিছু বয়স্ক টাইপ মানুষ আসতো।এরা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক।কঠিন রকমের গাজাখোর।সেইখানে এই জামিল স্যার আসতেন।কিন্তু আমি তখনো জানতাম না উনার পরিচয়।

এরপর জীবনে আরো সম্মুখীন হলাম নয়ের ফিল্ম স্টাইলের টুইস্টের।এই নরকে আসার আগে নরকের পথ প্রদর্শক আমার বাবা বলেছিলেন এখানে আমার নতুন বিভাগে জামিল নামে উনার এক পরিচিত ভদ্রলোক আছেন।আমি এত পাত্তা দেই নাই।লোকের ইতিহাস গুলো বাবা বলেছিলেন এবং কিছু মনে আছে আমার।ভদ্রলোক নাকি অসম্ভব মেধাবী।মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পক্ষের কঠিন লোক।প্রচুর পড়াশোনা জানা।একই হলে থাকতাম।আমার প্রশ্ন তখন ছিল “বাবা,উনি কি তোমার মতন মুক্তিযোদ্ধা নাকি?”
-না।আরে ধুর।মুক্তিযুদ্ধ করতে কলিজা লাগে,ব্রেইন অত বেশি না।পোলার ব্রেইন ছিলো।
-ও আচ্ছা।না তুমি বললা চেতনার পক্ষের লোক।
-চেতনার লোক মানেই যে মুক্তিযোদ্ধা সেটা ভাবা ভুল।অনেক ফেমাস লোক দেখবা চেতনার ট্যাগ লাগায়া ঘুরতেছে কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের সময়ে হল যখন খুলে দিছিল ওরা বইসা পি সি এস পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিছে।
-জামিল সাহেব লোকটা ওই দলেই পড়েন?
বাবা কিছু না বলে দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে নিজের সাজানো গোছানো অফিস রুমের জানালা দিয়ে তাকিয়ে থাকেন।চোখের কোনায় লজ্জার রেখা।আমি কিছুক্ষন ভারী নীরবতার চাদর নুজ্জ্ব্য থেকে উঠে দাড়ালাম।
-উঠি,বাবা আজ আমি আর থাকতে পারছিনা।কাজ আছে।
এই অস্বস্তিপূর্ন মূহুর্তটাকে আরো এক লেয়ার দেওয়ার জন্য দেখি আমার বাবার বর্তমান স্ত্রী বাবার অফিসের দরজার সামনে ঠায় দাড়িয়ে।মহিলা বাবার ছাত্রী ছিলেন বর্তমানে কলিগ।আমরা আপু ডাকতাম আর এই মুহুর্তে আমার কাছে এই মহিলা অদৃশ্য।

জামিল সাহেব সম্পর্কে যা বলছিলাম।ভদ্রলোক গাজা খান কিন্তু চমতকার ক্লাস করান।নিয়মিত ক্লাস করান।সকল রকমের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সংক্রান্ত কার্যকলাপে উনাকে খুজে পাওয়া যায়। ২১ ফেব্রুয়ারি,২৬মার্চ, ১৫ আগস্ট ,১৬ ডিসেম্বর সব সময় প্রায় একই বক্তব্য নিয়ে আসেন উনি।কিভাবে দেশে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা প্রতিষ্ঠা করা যায় সেই এক কথা নিয়ে পেচাল পারতেই থাকেন।একই আলাপ মোটামুটি সবখানেই। অনেকটা হেফাজতি কিংবা অনেকটা অবাস্তব রূপে শারীয়াহ শাসন জারি করার জেরবার প্রচেষ্টা চালানো মোল্লাদের মুদ্রার অপর পিঠ এই লোক।আমার দৃষ্টিতে এরা সবাই জংগী; কেউ সেক্যুলার জংগী কেউ ইসলামী জংগী।

জামিল সাহেব এর সাথে সম্পর্ক ভালোই ছিল।উনি আমাকে উনার ক্লাসে দেখে প্রথমে অবাক হয়ে যান এবং অস্বচ্ছন্দ বোধ করতে থাকেন।কিন্তু কয়েকদিন যাওয়ার পর নিজের রুমে ডেকে নিয়ে চা নাস্তা খাওয়ান।এরপর থেকে মাঝে মাঝেই তিনি টাকা দিয়ে দেন আমি ডিপার্টমেন্টেই উনার রুমে গাজা ডেলিভারি দিয়ে আসি।

এইধরনের সম্পর্ক গুলোতে এক পর্যায়ে নোংরামির দিকে যাবেই।আমার সাথে এই জামিল সাহেবের ও তাই হল।বেশ কয়েকদিন টানা টাকা ছাড়াই এনে দিলাম এই গাজা।উনি ব্যস্ত আছেন বলে বলতেন টাকাটা পরে নিতে।তো এই তো দুয়েক দিন আগে আমি গেলাম উনার ফোন পেয়ে গাজা নিয়ে।বিশ্ববিদ্যালয় সেদিন ছিল বন্ধ।ভদ্রলোকের রুমে ঢুকলাম।
জামিল সাহেব হেসে দিলেন।
-এসেছো তাহলে।জিনিস দেখি।
আমি আমার হাতে নিলাম কাগজের প্যাকেট।ওইখানে গাজা ছিলো কিন্তু উনার হাতে আর দিলাম না।
জামিল সাহেব হাত বাড়ালেন
-দেখি,দাও তো।
-আগে টাকা দেন
-আরে টাকা নিবা আর কি।
-নাহ,আগের টাকা গুলা সহ দেন।
-মানে?
-ক্লিয়ার করেই তো বললাম,আগের টাকা গুলা দেন না হয় আমি চলে যাচ্ছি।
-আজ তো টাকা নেই হাতে।টাকা পয়সা নিয়ে খুব দুশ্চিন্তায় আছি।ছেলেমেয়েগুলাকে নিয়ে আর আমার ওয়াইফকে নিয়ে কোন জায়গায় যেতেও পারছিনা।বাসা ভাড়া,বাজারেই,নেট খরচেই সব চলে যায়।জানোই তো বেতন টা খুবই নূন্যতম।এজন্যি গাজাটা দরকার যাতে স্ট্রেস ফ্রি হয়ে চিন্তা করতে পারি।রিসার্চ এসিস্টেন্টের বেতন কিভাবে দিবো ভেবে বের করতে হবে।তুমি জিনিস টা দিয়ে যাও আমি টাকা দিয়ে দিবো পরে।
-আমার সমস্যা না এগুলা।আমার টাকা লাগবে।
এই বলে আমি বের হয়ে যাচ্ছিলাম,তখন জামিল সাহেব পিছন থেকে ডাক দিলেন।
-দাঁড়াও।
আমি জামিল সাহেবের গলার তেজে মনে মনে বেশ অবাক হলেও কিছুই বুঝতে দিলাম না।মুখটা আগের মতন ভাবলেশহীন রেখে ফিরে তাকালাম।
-বলেন?
-তুমি জানো আমার দৌড় কতদূর?তুমি আমার ব্যবসা বাজী দেখাও?দেশ টা ব্যবসায়ীরা চালায় ভালো কথা।কিন্তু এইটা বিশ্ববিদ্যালয়,বুঝছো?নাম্বার শিট টা আমার হাতেই।আর তোমার বাবার ইজ্জত তো এমনিতেই উনি কচি মেয়েদের পিছনে এবং সামনে ঢেলে দিয়েছেন।উনার ইজ্জত যা অল্প কিছু আছে তা আমি তোমার ড্রাগ ডিলিং দিয়েই পুড়িয়ে ছাই করে দিবো”।
আমি খানিকক্ষনের জন্য রাগে-ক্রোধে অনুভূতিহীন হয়ে গেলাম কিন্তু এরপর হো হো করে হেসে দিতেই জামিল সাহেব আমার দিকে চোখ বড় বড় করে তাকালেন।“কি ব্যাপার হাসছো কেন?”
“Am I being funny?What the hell is wrong with you”?
আমি আরো জোরে হেসে দিলাম।
উনি আরো রেগে গেলেন।
“What?Why are you laughing?”
আমি চিতকার করে বললাম “Nothing but remember speaking their language doesn’t make you a Bloody f*&king white trash.You blackmailing piece of shit.You want a professional drug dealer,here you get it.”এই বলে পকেট থেকে রিভলবার বের করলাম।হ্যা,আমার কাছে এখন এই জিনিস থাকেই।তবে কেন সেটার গল্প হবে পরে।
জামিল সাহেব রক্তচক্ষু হয়ে গেলেন।কিন্তু সেই সাথে মুখটাও বন্ধ করে ফেললেন।
আমি হাসতেছিলাম কারন আমি ভাবিনাই আমার দিনটা এইধরনের একটা উতকট একটা টার্ন নিবে।আমাদের ডিপার্টমেন্টের সেরা ৩ টিচারের একজনের সাথে এখানে দাঁড়িয়ে গাজার দরদাম আর তোমার চরিত্র নিয়ে ঝগড়া করতে হবে ভাবিনি।ধন্যবাদ,বাবা তোমাকে।তোমার মাগীবাজির কারনে আমার জীবনে আরো একটা কুতসিত দিন পার করতে হলো।
আকাশের দিকে তাকিয়ে কথাগুলো একনাগাড়ে বলে দিলাম।ঠান্ডা সরু চোখ করে তাকালাম জামিল সাহেবের দিকে।
-রুমে চলেন
জামিল সাহেব চুপচাপ রুমে ঢুকলেন।
আমি রুমে ঢুকে স্নিকার্স সহ পা তুলে দিলাম উনার টেবিলে।ব্যবসা যখন করতেছি প্রকৃত ড্রাগ ডিলারের ভাব নেওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ।হোক গিয়া জামিল সাহেব হতভম্ব।হোক বেয়াদবী।
মহাজ্ঞানী ইন্টারনেটের Robert Downey Jr.( IRONMAN ) এর মেমে এ বলা আছে “Do anything you want because at the end people will judge you anyways”
এর মানে যাই করোনা কেন মানুষ গাল্লাইবেই।তো আমিও মহাজ্ঞানী ইন্টারনেটের কথা অনুযায়ী কিছু চিন্তা না কইরাই দিলাম পা উঠাইয়া।
“দেখেন জামিল সাহেব।আপনার কলিজা কয়টা আমার জানা আছে।৭১ এর চেতনার যে ধরাবাধা কথা গুলা যে ছাড়েন সেগুলা মেরে আর গ্রেডিং নিয়ে ব্ল্যাকমেইল কইরা আমাকে লাভ নাই।প্রথমত আমি জানি আপনি ৭১ এর যুদ্ধের সময় বিশ্ববিদ্যালয়ে বইয়া বইয়া পি সি এস জন্য পড়ছেন”।
ভারী নীরবতার চাদর যেন গলা টিপে মারছে।
জামিল সাহেবের সবসময়ের সপ্রতিভ চোখের শেষ আলো নিভে গেল।
আমি পকেট থেকে গাজা বের করে স্টিক বানালাম।
জামিল সাহেবের দিকে একটা এগিয়ে দিলাম।উনি আতংক গ্রস্ত হয়ে এমন একটা অবস্থায় পৌছে গিয়েছেন যে এত সাধের গাজার স্টিক টাও উনার নিতে হাত কাপছে।
“আরে নেন,জামিল সাহেব।আপনাদের মতন নর্থ আমেরিকান পি এইচ ডি পাওয়া জ্ঞানীগুনি রা যাতে স্বাধীন ভাবে গাজা খেতে পারে সেজন্য তো ৭১ এ গরীব কৃষক,চাষাভুষার ছেলেমেয়েরা লাশ হয়েছে।ওরা লাশ না হলে তো আপনি পি সি এস দিতেন আর বাইরে ডিগ্রী করা হইতোনা।নেন,নেন।টান দেন।ভয়ের কিছু নেই।আজকের টার কোয়ালিটি ভালো”।
জামিল সাহেব রিভল্বারের ব্যাপার টা এখনো মাথা থেকে সরাতে পারেন নি,বুঝা যাচ্ছে।
উনার হাত এখনো কাপছে।
“কি জামিল সাহেব?ভয় পাচ্ছেন?৭১ এর চেতনা আমার সামান্য রিভলবারের ভয়ে জানালা দিয়ে চলে গেলো।মজার ব্যাপার আমি কিন্তু তথাকথিত স্বাধীনতা বিরোধীও না।আমি একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান”।
জামিল সাহেব তাও চুপ।
“মনে হয় মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হিসাবেই আমি আপনার সামনে এরকম একটা সিচুয়েশন এ এসে পড়ছি।মানে ঈশ্বর আপনাদের মতন তথাকথিত উচ্চশিক্ষিত ৭১ এর চেতনা ব্যবসায়ী হিপোক্রিট দের কথায় নয় কাজ দিয়ে ভরকায় দেওয়ার জন্যেই এইধরনের সিচ্যুয়েশনে ফেলাইছে। নিজেরে এখন সুপারহিরো লাগতেছে”।

জামিল সাহেব কিছু বলছেন না দেখে আমি গাজার স্টিক টা ধরিয়ে ঠোটে নিলাম।জোরে একটা টান দিলাম।
চমতকার সেই অনুভূতি সারা শরীর ময় ধাক্কা দিয়ে গেল।ধোয়া ছাড়লাম জামিল সাহেবের মুখ বরাবর।
“দেখুন আপনি কার সাথে কথা বলছেন হিসাব করে বলবেন।আপনাকে আমি চিনি।আপনার বাসা-বাড়ি-স্ত্রী-সন্তান সবার খবর আমি রাখি।আমার বন্ধুদের একটা বড় অংশ জার্নালিজমের এবং কড়া বামগ্রুপ করে,লুতুপুতু ইউনিয়ন কিংবা ফ্রন্ট না এবং এরা সবাই আর্মড।মিডিয়া ওয়ার এন্ড ফিজিকাল ওয়ার দুইটাই চলবে আর আমার বাপের ইজ্জতের কথা বললেন তো?হেহেহে।আমার সার্কেলের মেয়েদের কাউকে দিয়ে এবং হ্যাকার দিয়ে,ফটোশপ দিয়ে ওইরকম স্ক্যান্ডাল বের করা আমার জন্য ৫-১০ মিনিটের ব্যাপার।সো চোদনবাজি না করে টাকা দেন,না হয় জিনিস নিয়েন না।আল্লাহ হাফেজ”।

গাজার প্যাকেট হাতে,রিভলবার পকেটে ঢুকিয়ে হাটা দিলাম আর গাজার জলন্ত কাঠিটা উনার টেবিলে স্তুপ করে রাখা কাগজপত্রের উপর রেখে গেলাম।সবার উপরে আমার লাস্ট ল্যাব রিপোর্ট টা ছিল।আমি দেখেশুনে ওটার উপরেই রাখলাম।
“নাম্বার কম দিতে চেয়েছিলেন,তাই সুযোগ করে দিলাম।দুঃখের ব্যাপার এই যে এই একই ডিপার্টমেন্টে আপনার মতন লোক আছে আবার নোবেল পুরস্কার জন্য শর্টলিস্টেড মাটির মানুষ হাকিম স্যার ও আছেন।নিজেদের সম্মান নিজেদের তো রাখা দরকার।তাই না”?

বের হয়ে গেলাম,নীরবতা তখনো কাটেনি।আমি ডিপার্টমেন্ট থেকে বের হয়ে নিরাপদ দূরত্বে গিয়ে মাটিতে বসে পড়লাম।আশেপাশে কিছু না দেখে মাটিতে বসে চিতকার করে বললাম “আর কত??আর কতদিন স্রষ্টা??আমার কি এমন হওয়ার কথা??এইভাবে রিভল্বার হাতে নিয়ে শিক্ষকদের থ্রেট আর গাজার ব্যবসা???আর ইউ ফাকিং সিরিয়াস??তাহমীদ,রবিন রা সবাই এম আই টি আর ইয়েল এ বসে পৃথিবী বদলাচ্ছে আর আমি??ওদের চেয়ে বেটার রেজাল্ট করেও এই বা* করতেছি?দেশের সেবা??কি সমস্যা তোমার,ঈশ্বর”?
এরপর চুপ হয়ে রিভল্বার পকেটে ঢুকিয়ে ফেললাম।মোবাইল বেজে উঠলো।মেসেজ এসেছে।
“You fucking looser, get lost from my life”.
“ধন্যবাদ ঈশ্বর আমি আমার প্রশ্নের উত্তর পেয়ে গেলাম” বলে উঠে দাড়ালাম।মেসেজ টা নাবিলার।আমার ঢাকার ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালীন প্রেমিকা।এখনো আমিও মাঝে মাঝে টেক্সট করে ফেলি,ও করে ফেলে।দুই তিনটা টেক্সট আদানপ্রদান হয়।যার সারাংশ একটাই আমাকে ঢাকা যেতে হবে।শুধুমাত্র লুজার ছেলেরাই নিজের এরকম সর্বনাশ করে।আর কেউ না।তখন আমি একটা কথাই বলি “আমি তাহলে লুজার,আমি ওখানে আমি ফিরতে পারবোনা।”
-কেন ঢাকা আসতে পারবানা?তোমার এডমিশন তো ক্যান্সেল হয় নাই।
তখন আমি ইতিহাস বলি।
এরপর প্রথম মেসেজ টা আসে “Those who blame others for their misfortunes are loosers”.
এরপর এরকম একটা টেক্সট আসে আর আমি সব পিছুটান ফেলে দিয়ে আবারো এই জংলা বিশ্ববিদ্যালয়ের অলিতেগলিতে নিজেকে খুজতে থাকি।হ্যা,বাবা আমি আসলেই বিশ্ববিদ্যালয় জীবন খুব এঞ্জয় করছি।





মন্তব্য ১৫ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১৫) মন্তব্য লিখুন

১| ২৪ শে জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১১:৩৪

শেখ নাসির উদ্দীনসসস বলেছেন: চমৎকার একটি লেখা।আবেগীয়।

২৪ শে জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১১:৪৪

ধ্রুব অন্যকোথাও বলেছেন: পড়ার জন্য এবং মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ

১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ১১:১২

ধ্রুব অন্যকোথাও বলেছেন: আজকে তৃতীয় পর্ব আসছে

২| ২৫ শে জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১২:৪১

Necropolis Voices বলেছেন: দারুন

২৫ শে জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ৮:৪৬

ধ্রুব অন্যকোথাও বলেছেন: ধন্যবাদ পড়ার জন্য

১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ১১:১৩

ধ্রুব অন্যকোথাও বলেছেন: আজকে তৃতীয় পর্ব আসছে

৩| ২৫ শে জানুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৩:০৯

হাসান মাহবুব বলেছেন: পুরোটা পড়া হলো না। যতটুকু পড়েছি দারুণ লেগেছে।

২৫ শে জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ৮:৪৭

ধ্রুব অন্যকোথাও বলেছেন: প্রথমেই ধন্যবাদ।পুরোটা পড়ার পরের মন্তব্য শুনতে চাই।

১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ১১:১৩

ধ্রুব অন্যকোথাও বলেছেন: আজকে তৃতীয় পর্ব আসছে

৪| ২৫ শে জানুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৩:২৯

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: আজকাল বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া সন্তানেরা বাবা-মা'কে চিঠি লেখেই না ধরতে গেলে। মোবাইল এর যুগ যেহেতু!
চিঠি লেখার পর রাশিকের চিঠির মিথ্যা লাইন নিয়ে মূল্যায়নটা মজার ছিল।

২৫ শে জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ৮:৪৯

ধ্রুব অন্যকোথাও বলেছেন: ভালো বলেছেন।চিঠির ব্যাপারটা।মডার্নাইজেশন করা উচিত ছিল।তবে গল্প টা এগিয়ে যাবে।সামনে আরো মজার কিছু জিনিস পাবেন।

১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ১১:১৪

ধ্রুব অন্যকোথাও বলেছেন: আজকে তৃতীয় পর্ব আসছে

৫| ২৫ শে জানুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৩:৪৪

আবু শাকিল বলেছেন: সাম্প্রতিক চাল চিত্র।
চিঠিটা পড়তে ভাল লেগেছিল।

২৫ শে জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ৮:৪৯

ধ্রুব অন্যকোথাও বলেছেন: ধন্যবাদ

১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ১১:১৪

ধ্রুব অন্যকোথাও বলেছেন: আজকে তৃতীয় পর্ব আসছে

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.