![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সত্য যে কঠিন , কঠিনেরে ভালবাসিলাম , সে কখনো করে না বঞ্চনা
বনানী বাস কাউন্টারে বাসের জন্য দাঁড়িয়ে আছে আদিবা। টিকিট কেটে বসে আছে ২০ মিনিট হল। বাস আসছে না। বিরক্ত লাগছে ওর। এর মধ্যেই এল ফোনটা।
- হ্যালো,
- হ্যালো এটা কি তুহিনের নম্বর...
- না, রঙ নম্বর। বলে ফোন টা রেখে দিল আদিবা। বাস এসে গেছে। ফোন টা রাখতেই হত। কিন্তু বাসে উঠেই ওর খেয়াল হল এই নাম্বারে রঙ নম্বর ফোন আসার তো কথা না, নম্বর টা নতুন নেয়া। কিন্তু সাত পাঁচ ভেবে ভাবনাটা মাথা থেকে দূর করে দিল। সত্যি হয়তো রঙ নম্বর ই ছিল।
সন্ধ্যায় নম্বরটি থেকে আবার একটা ফোন এল। এবার একটু সতর্ক হল সে। কে হতে পারে। দোটানায় পড়ে ফোন টা রিসিভ করল সে।
- আপনি আদিবা তাই না
নিজের নাম শুনে আশ্চর্য হল সে। জিজ্ঞেস করলো আপনি কে?
উত্তরে হেসে বললো - আমাকে আপনি চিনবেন না, তবে আমি আপনার পরিচিত এক বন্ধুর ফ্রেন্ড। এই বলে সে চুপ করে রইলো।
- কে সেই পরিচিত ফ্রেন্ড?
- আপনি নিজেই ভেবে বের করুন কে সেই ফ্রেন্ড।
- ঠিক আছে ভেবে বের করছি কিন্তু আপনি কিছু ক্লু তো দিবেন।
- ক্লু লাগবে? আচ্ছা এটা বলতে পারি আপনার সেই ফ্রেন্ড টির বাড়ি গাজীপুরে।
- গাজীপুর?
আদিবা ভাবতে লাগলো গাজীপুরে আছে এমন কোন ফ্রেন্ড ওর? ভেবে পেল না। নওশীনদের বাড়ি ময়মনসিংহ, মনি দের বাড়ি কালীগঞ্জ না কোথায় যেন, সাহেলার বাড়ি কুমিল্লা আর ফাওমির বাড়ি তো টাঙ্গাইল। আচ্ছা ফাওমি না তো?
- আপনি কি ফাওমির ফ্রেন্ড।
- ফাওমি? না আমি ফাওমি কে চিনি না।
- তবে? আমার তো এমন কোন ফ্রেন্ড নেই যে গাজীপুর বাড়ি?
- পারলেন না তো... ঠিক আছে বলে দেই আমি মনির ফ্রেন্ড।
- মনি? মনির বাড়ি তো কালিগঞ্জ।
- হুম কালিগঞ্জ তো গাজীপুরে, জানেন না?
- ও, না জানতাম না। কিন্তু মনি আপনাকে আমার নম্বর দিল কিভাবে, ও তো জানেই না আমি নতুন নম্বর নিয়েছি।
- আপনি মনে হয় মনি কে কিছু ম্যাসেজ দিয়েছেন, ও ম্যাসেজ দেখে ভয় পেয়ে নম্বর আমাকে দিয়ে বলেছে দেখতে এটা কার নম্বর। আমি তো ভেবেছিলাম কোন ছেলে হবে এখন তো দেখছি আপনি...
আদিবার হঠাত মনে পড়ে গেল, নতুন নম্বর নিয়ে ও সব ফ্রেন্ড দের কেই দুদিন ধরে উলটাপালটা ম্যাসেজ দিয়ে মজা করছিল। সবাই বুঝে পেরেছে যে এটা অই করছে, মনি যে বুঝবে না কে জানতো। আর না বুঝলে নিজে ফোন দিবি তা না আর একজন কে দিয়ে ফোন দেয়ানো... আদিবার এবার একটু রাগ ই হল। ফোনের ওপ্রান্তে যে কথা বলছে সে একটা ছেলে। এভাবে অচেনা কোন ছেলের সাথে কথা বলা যে ওর পছন্দ না সেটা ওর বন্ধুরাও জানে, মনিও জানে। তারপরেও নম্বর একটা ছেলেকে দিল... এইসব ভাবতে ভাবতেই ওপাশ থেকে বলে উঠলো ,
- আমি জানি আপনি বিরক্ত হচ্ছেন, কিন্তু আসলে আমার মনে হল ব্যাপারটা আপনাকে বলা উচিত তাই ফোন করলাম।
এরপর ছেলেটা যা বললো তার সারমর্ম হচ্ছে, আদিবা যখন মনি কে কিছু ম্যাসেজ দিয়েছিল তখন মনি ভেবেছে মনির নম্বরে কোন দুষ্টু ছেলেরা এইসব করছে। ব্যাপার টা হ্যান্ডেল করার জন্য মনি আনিস কে ম্যাসেজ দেখায় আর নম্বর দিয়ে কল করে ধমক দিতে বলে। আনিস দুপুরে কল দিয়েছিল ধমক দেবে বলে। কিন্তু মেয়ে কণ্ঠ শুনে ও নিজেও ভরকে যায়। এরপর মনিকে জানায় এটা একটা মেয়ের নম্বর। তখন মনি বুঝতে পারে এটা আদিবার কাজ।
- আসলে মনির সাথে আপনি দুষ্টুমি করছেন এটা বুঝতে পেরে আমার মজা লেগেছে তাই আমি মনি কে বললাম আপনাকে সব জানাতে। ও কি আপনাকে বলেছে কিছু?
- না, মনির সাথে আমার কোন কথা হয়নি।
- ও... আমি ভেবেছিলাম জানিয়েছে
- সমস্যা নেই আমি ওর কাছ থেকে জেনে নেব, এখন আমি রাখি, ভালো থাকবেন। বলে ফোন কেটে দিল আদিবা। মনি কে ফোন দিল,
- এই গাধী, তুই জানতি না আমি নতুন নম্বর নিয়েছি, আমি তো সেদিনই তোদের বলছিলাম যে নম্বর চেঞ্জ করবো। ফোন দিয়েই ঝাড়ি শুরু করে দিল আদিবা।
- কই বলছিলি, আমার মনে নেই, আর তুই এমন রসের ম্যাসেজ দিচ্ছিলি কেন শুনি?
- মানে কি তোদের সাথে একটু মজাও করতে পারবো না।
- আমি তো বুঝি নাই, না বুঝে আমার এক ফ্রেন্ড কে বলছিলাম নম্বর টা কার বের করতে।
- জী মহারাণি, আপনার সেই ফ্রেন্ড ফোন দিয়েছিল, কথায় তো বেশ ভাব মারলো, কে রে ও? আদিবা টিটকারি করে কিছুটা
- ওর নাম আনিস, ডাক্তার, ময়মনসিংহ মেডিকেলে পড়ে। কি বললো রে তোকে ফোন দিয়ে...
- এই তো তোর কথায় বললো, তুই যেভাবে নম্বর দিলি এই সব, শুনে আমার খুব রাগ হচ্ছিল তোর উপর। শালা নম্বর টা নিতে পারলাম না তুই এক ছেলেকে দিয়ে দিলি...
- থাক রাগ করিস না, ও খারাপ ছেলে না, ভালো, আমি চিনি, আমি ও কে বলে দিব তোকে আর ফোন না দিতে।
- হইছে হইছে এখন আর সাধু সাজতে হবে না তোকে...
- তুই চাইলে কথাও বলতে পারিস ওর সাথে, খারাপ ছেলে না ও
- তুই ওর কাছে আমার নামে কি কি বলেছিস বলতো...
- তেমন কিছু না, যখন বুঝলাম এটা তুই তখন বলেছিলাম যে তুই আমার ছোট বেলার বান্ধবি, এখন ঢাকা ইউনিভার্সিটিতে পড়িস এত টুকুই, আর কিছু না
- হুম্ম , আচ্ছা ঠিক আছে, আর কাওকে নম্বর দিস না যেন আবার, নতুন নিয়েছি ধিরে ধিরে কয়েক জন কেই শুধু নম্বর দিব বলে...
- আচ্ছা রে, আর এমন হবে না।
- রাখছি তাহলে...
ফোন রাখার পর আদিবা কিছুক্ষণ ভাবলো। একটা সময় ছিল যখন স্কুল আর কলেজের... ফ্রেন্ড রা মিলে কত মজা করেছে... ফোন দিয়ে একে তাকে উলটাপালটা ম্যাসেজ দেয়া... অবশ্য সেই সব সিম গুলো ছিল এক্সট্রা।। মানে কারো পার্সোনাল না... পরিচিত কয়েক টা আপু কে জ্বালিয়েছিল খুব... মনে করে নিজে কিছুক্ষণ হাসলো। এখন আর এসব ভালো লাগে না... এখন বরং কেউ ফোন না দিলেই শান্তি লাগে। ভার্সিটি তে উঠে এক বছর পর নম্বর চেঞ্জ করবে বলেছিল ওর বান্ধবীদের। ভেবেছিল অপরিচিত কাওকে কোন ভাবেই নম্বর দেবে না। যাক কি আর করা। মনি তো দিল ছড়িয়ে নম্বর, এখন ঐ ছেলে আর কাওকে না দিয়ে দিলেই হয়। এখন সিম কেনা বড্ড হ্যাপা। আর এত ঘন ঘন সিম বদলালে বাবা খুব রেগে যাবে। এসব ভাবতে ভাবতেই ঘুমিয়ে গেল আদিবা।
সকালে উঠে দেখে ম্যাসেজ এসেছে একটা।
‘ আপনি নিশ্চিন্ত থাকুন আপনার নম্বর আমি কাওকে দিব না, আর আপনি না চাইলে আপনাকে আর ফোন ও দিব না। তবে একটা কথা না বলে পারছি না, আপনার ভয়েস টা অনেক মিষ্টি... টেক কেয়ার, বাই’।
১৮ ই জুন, ২০১৭ বিকাল ৩:৪০
মফস্বলের মেয়েটি বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকেও। পরের পর্ব তাড়াতাড়ি এসে যাবে ইনশা-আল্লাহ।
২| ১৮ ই জুন, ২০১৭ ভোর ৫:৫৪
সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: আপু, গল্পটি ভীষন মিষ্টি। আর সরল, সাবলীল ভাষায় লেখা বলে পড়তে আরো মজা লেগেছে।
আচ্ছা এটা কি শুধুই কাল্পনিক গল্প? নাকি আপনার বা আপনার কোন পরিচিতর বাস্তব জীবনের কাহিনী?
শেষের ম্যাসেজটি পড়ে কিন্তু পরের পর্বের আগ্রহ আরো বেড়ে গিয়েছে! জলদি দিন পরের পর্বটি।
অনেক শুভকামনা রইল।
১৮ ই জুন, ২০১৭ বিকাল ৩:৪২
মফস্বলের মেয়েটি বলেছেন: ধন্যবাদ ভাইয়া। আপনার ম্যাসেজ টি গল্পটি লিখতে আমাকে আরো অনুপ্রাণিত করবে। ঠিক ধরেছেন, গল্পটি তে কিছু কিছু বাস্তব জীবনের কাহিনী ঢুকানো হয়েছে।
৩| ১৮ ই জুন, ২০১৭ সকাল ১০:৩৭
মোস্তফা সোহেল বলেছেন: ভালই লাগছিল । এখনই পুরাটা পড়তে পারলে ভাল হত।
১৮ ই জুন, ২০১৭ বিকাল ৩:৪৪
মফস্বলের মেয়েটি বলেছেন: ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য। আসলে গল্প শুরু করা সহ্জ, শেষ বলা কঠিন। লিখে তো ফেললাম প্রথম টুকু, দেখি এখন গল্প কোন দিকে যায়!
৪| ১৮ ই জুন, ২০১৭ সকাল ১০:৪০
এডওয়ার্ড মায়া বলেছেন: আশা করি পরের পূর্ব গুলা আরো ভাল হবে।
লিখতে থাকুন।
শুভ কামনা
১৮ ই জুন, ২০১৭ বিকাল ৩:৪৬
মফস্বলের মেয়েটি বলেছেন: ধন্যবাদ। আপনাদের মন্তব্য গুলো অনুপ্রেরণাদায়ক। ভালো থাকুন।
৫| ১৯ শে জুন, ২০১৭ রাত ৮:০৩
জাহিদ অনিক বলেছেন: একটা সময় ছিল যখন স্কুল আর কলেজের... ফ্রেন্ড রা মিলে কত মজা করেছে... ফোন দিয়ে একে তাকে উলটাপালটা ম্যাসেজ দেয়া... অবশ্য সেই সব সিম গুলো ছিল এক্সট্রা।। মানে কারো পার্সোনাল না... পরিচিত কয়েক টা আপু কে জ্বালিয়েছিল খুব... মনে করে নিজে কিছুক্ষণ হাসলো। এখন আর এসব ভালো লাগে না...
ভাল লাগল
২১ শে জুন, ২০১৭ বিকাল ৪:২৬
মফস্বলের মেয়েটি বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকেও
৬| ২২ শে জুন, ২০১৭ দুপুর ১২:৫৭
বিজন রয় বলেছেন: টক-ঝাল-মিষ্টি গল্প।
++++++
৭| ০১ লা জুলাই, ২০১৭ রাত ১১:৪৭
মফস্বলের মেয়েটি বলেছেন: ধন্যবাদ, ভালো থাকুন।
©somewhere in net ltd.
১|
১৮ ই জুন, ২০১৭ রাত ১:০৫
দ্যা ফয়েজ ভাই বলেছেন: শুরুটা বেশ চমৎকার ছিলো।আশা রাখি,গতানুগতিক হয়ে যাবে না।দেখা যাক,পরের পর্বে কি হয়। ধন্যবাদ।