![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মাঝ রাতে কোনো কোনো বিশেষ এলাকার কিছু মসজিদ থেকে গুজব ছড়ানো হচ্ছে এবং সেসব গুজবে বা অপপ্রচারে মানুষের প্রাণ যেমন যাচ্ছে তেমনি সৃষ্টি হচ্ছে মানুষের মধ্যে ভয়াবহ অস্থিরতা। বলা বাহুল্য এসব মসজিদ জামাত নিয়ন্ত্রিত।
সাঈদিকে চাঁদে দেখা যাচ্ছে --সবাই বের হয়ে আসুন----এই গুজবটি মসজিদ থেকে মাইকে করা হয়েছিল। দেশের অশিক্ষিত, ধর্মান্ধ, কুসংস্কারাচ্ছন্ন কিছু মানুষ রাস্তায় বেরিয়ে এলে তাদেরকে জিহাদে উদবুদ্ধ করে কি রকম তান্ডব চালানো হয়েছিল আমরা দেখেছি। এখন ভাইটামিন 'এ' ক্যাপ্স্যুল নিয়ে বেশ হৈচৈ হচ্ছে। শিশুদের অভিভাবকদের রাতের ঘুম হারাম। হবারই কথা--মানুষের কাছে তার জীবনের চেয়েও অধিক প্রিয় তার সন্তান। সরকার তদন্ত কমিটি ঘোষণা করেছে। বিশ্ব স্বাস্থ সংস্থাও বিষয়টিকে গুরুত্বের সাথে নিয়েছে। আশা করা যায় সবরটির সত্যি-মিথ্যা বের হয়ে আসবে আগামি কয়েকদিনের মধ্যেই।
দেখা যাক বিষয়টি কি? কেউ বলছেন গুজব, কেউ বলছেন চারদিকে সব শিশুরা আসুস্থ হয়ে পড়ছে, মরে যাচ্ছে। খবরটি প্রথমে ছড়ানো হয় চট্টগ্রামের একটি মসজিদ থেকে মাইকিং করে (সূত্র-bdnews24.com)---তারপর সেটি চলে যায় জামাত নিয়ন্ত্রিত/সমর্থিত মিডিয়ায়। আমি নিজেও জামাতি মিডিয়া ছাড়া বিষয়টির পক্ষে আমাদের জাতীয় দৈনিকগুলোতে এধরণের কোনো নিউজ পড়িনি। তবে পরদিন যেভাবে খবরটি ছড়ায় সেটি খুব অন্যরকম---বন্ধুদের কাছ থেকে টেলিফোন পেতে থাকেন অনেকেই এই ভাবে যে তার বন্ধুর পাশের বাড়ীতে এতোজন, এলাকায় এতোজন শিশু অসুস্থ কিম্বা মারা গেছে---সাধারণ মানুষ ঘাবড়ে যেতে থাকেন। এভাবেই এই খবরটি জনে জনে চাউড় হতে থাকে আর উদ্বিগ্ন আভিবাকেরা তাদের শিশুদের নিয়ে হাসপাতালে ভিড় করতে থাকেন।
যদি বিষয়টি সত্যি হয় তাহলে অবশ্যই ভয়াবহ। ক’বছর আগে গনচীনে বাচ্চাদের দুধ নিয়ে এরকম একটি আতংক তৈরী হয়েছিল আমরা জানি। আমাদের দেশেও হয়েছিল। এধরণের জনগুরুত্বপূর্ণ বিষয় সবার আগে জানাতে হয় যথাযথ কর্তৃপক্ষকে। মসজিদে যিনি মাইকিং করেছেন তিনি কি সেই কাজটি করেছিলেন? করেন নি--কেন করেন নি? যার যা মনে হবে তিনি তা যাচাই বাছাই না করেই মসজিদ থেকে এভাবে মাইকে জানাতে থাকলে এই কুসংস্কারাচ্ছন্ন সমাজের মানুষ অকারণেই নিজেদের ভোগান্তি সৃষ্টি করতে থাকবেন। এদেশের মানুষ ধর্মপ্রাণ এবং মসজিদ থেকে কিছু বলা হলে সেটিকে প্রায় সবাই গুরুত্ব দিয়ে থাকেন। দুঃখজনক হলেও সত্য আমাদের দেশের অনেক মসজিদ এখন কুচক্রী জামাতিদের দখলে।
যা হোক! অনেকেই ভাবছেন এটিও পাকিস্তানের পোলিও টিকা বন্ধ করার মতোই কোন বিষয় কিনা? ভারতীয় ক্যাপ্স্যুল বলেই কোন রাজনৈতিক প্রচারণা কিনা? যা দিয়ে রাজনীতিক ভাবে দেশকে অস্থিতিশীল করার কোন দূরভিসন্ধি এতে আছে কি না ----
চিন্তার বিষয় হচ্ছে---এই খবর বা গুজবটির বস্তুনীষ্ঠতা যাচাইয়ের আগেই পুরো দেশ মোটামুটি এখন দুই ভাগে বিভক্ত। জনস্বাস্থের মত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়েও রাজনীতি? হায়রে রাজনীতি! কাফনের কাপড়, কবরের মাটি, আমাদের সৌচাগার—সব খানেই তোর দাপটে আমরা আজ ম্রিয়মান। সরকার সমর্থকদের কাছে এটি নিছক গুজব, বিরোধীদের কাছে এটি একটি চরম সত্যি খবর। যারা এই দুই দলের দলকানাদের মধ্যে নন তারা পড়েছন আরেক বিপদে। কোনটা বিশ্বাস করবেন?
এই দেশের সবচে বড় অসুখ রাজনৈকিত অসুখ, দলীয় অন্ধত্ব মহামারী আকারে ছড়িয়ে পরেছে। সাদা কে সাদা আর কালা কে কালা বলতে হলেও মানুষ এখন দলীয় দৃষ্টিভঙ্গির উপর নির্ভর করেন। আমাদের মনোজগতে এখন ভয়াবহ অসুখ। আমরা শুধু নিজের দলকে বিশ্বাস করি, নিজের চোখেও যা দেখি তা বিশ্বাস করি না।
মসজিদ কিম্বা উপাসনালয় হচ্ছে মানুষের পবিত্র আবেগ আর ভক্তি বিশ্বাসের স্থান। এখানে মানুষ পরম ভক্তি আর মানসিক শান্তি নিয়ে তাঁদের ধর্মাচার পালন করেন। অতি বদ, পৃথিবীর নিকৃষ্টতম মখলুকাত জামাতিরা এই কাজটি করছে সেই সন্দেহ আমরা করতেই পারি। আমরা দেখেছি পোলিও টিকা দান কর্মসূচী নিয়ে পাকিস্তানে কি ভয়াবহ ঘটনা ঘটানো হয়েছিল। শেষে কর্মসূচীটাই বাতিল হয়েছে পাকিস্তানে ফলে সেখানে শিশু স্বাস্থের ঝুঁকি রয়ে গেছে। বুদ্ধিগুলো কি পাকিস্তান থেকে আমদানিকৃত? এমন প্রশ্নও অনেকের মনে উঠতে শুরু করেছে।
সবশেষে বলব---আমাদের সময়টা এখন খুব খারাপ। শুধু আকাশে বাতাসেই নয় সুদূর চাঁদ পর্যন্ত গুজবে জড়িয়ে গেছে। সবাই যে কোন খবর পড়েই সেটিকে যেমন বিশ্বাস করবেন না তেমনি উড়িয়েও দেবার দরকার নেই। নিজের বুদ্ধি বিবেচনা খাটান, যারা ভাল লোক বলে সমাজে পরিচিত তাদের মতামত নিন।
মনে রাখবেন আপনার সমাজ আপনার অংশগ্রহনেই নির্মিত। আপনার একটি ভুল একটি জাতিয়ে শত বছর পিছিয়ে দিত পারে।
©somewhere in net ltd.
১|
১৩ ই মার্চ, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:২১
রাতপাখি বলেছেন: Click This Link