![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
১। শান্তি রক্ষা মিশনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনের কৃতিত্বে জাতিসংঘের সদর দপ্তরে ‘বাংলাদেশ লাউঞ্জ’ স্থাপনের অনুমতি পেয়েছে বংলাদেশ সরকারঃ
শান্তি রক্ষা মিশনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন ও বিভিন্ন কমিটির অংশ গ্রহনে কৃতিত্বের পরিপ্রেক্ষিতে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে ‘বাংলাদেশ লাউঞ্জ’ স্থাপনের অনুমতি মিলেছে। ২২০ কোটি ডলার ব্যয়ে সদর দপ্তর সংস্কারের কাজ জুলাইয়ে শেষ হওয়ার পরপরই ‘বাংলাদেশ লাউঞ্জ’র দায়িত্ব বুঝে নেবেন। সাধারণ অধিবেশন কক্ষে ঢোকার পথের কাছেই ‘বাংলাদেশ লাউঞ্জ’ হয়েছে। শেখ হাসিনাই বাংলাদেশ লাউঞ্জ উদ্বোধন করেছেন। বর্তমানে ইন্দোনেশিয়া, কাতার লাউঞ্জ রয়েছে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে। ইন্দোনেশিয়া লাউঞ্জে অনেক সভা-সেমিনারও হয়। “বাংলাদেশ লাউঞ্জ” এর কার্যক্রম শুরু হলে শান্তি রক্ষা মিশনে কর্ত্যেরত সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের কার্যক্রমে গতি যেমন বাড়বে তেমনি বিশ্বের দরবারে বাংলাদেশের পরিচিতি আরও উচ্চাসীন হবে। বর্তমান সরকারের স্বদিচ্ছা, দক্ষতা, একাগ্রতা, নিষ্ঠা ও বিশ্ব শান্তি উন্নয়নের প্রতীক বহন করে জাতিসংঘের সদর দপ্তরে “বাংলাদেশ লাউঞ্জ” স্থাপনের অনুমতি মিলেছে।
২। শান্তি রক্ষা মিশনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনের পরিপ্রেক্ষিতে জাতিসংঘে তৈরি হচ্ছে ‘একখণ্ড বাংলাদেশ’
জাতিসংঘের শান্তি মিশনে বাংলাদেশের বিশ্বব্যাপী সুনাম রয়েছে। বিশ্বের সংঘাতপূর্ণ ১২টি দেশের শান্তি স্থাপনের জন্য বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীরা জীবন বাজি রেখে কাজ করে যাচ্ছেন। শান্তি রক্ষা মিশনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার কারণে এবার জাতিসংঘের সদর দপ্তরের প্রবেশ পথেই দেখা মিলবে এক খণ্ড বাংলাদেশের। বিভিন্ন কমিটি এবং শান্তি রক্ষা মিশনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনের পরিপ্রেক্ষিতে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে সাধারণ অধিবেশন কক্ষে ঢোকার পথের কাছেই বাংলাদেশ লাউঞ্জ স্থাপন হচ্ছে। ২২০ কোটি ডলার ব্যয়ে সদর দপ্তর সংস্কারের কাজ জুলাইয়ে শেষ হওয়ার পর পরই বাংলাদেশ লাউঞ্জের দায়িত্ব বুঝে নেবেন কর্তব্যরত জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী সদস্যরা। গত ১৭ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘে বাংলাদেশের সদস্যপ্রাপ্তির ৪০ বর্ষপূর্তি উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশ লাউঞ্জ উদ্বোধন করেছেন।
৩। শান্তিরক্ষী হিসেবে নিযুক্ত বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এখন লাইবেরীয় সৈন্যদের প্রশিক্ষকঃ
লাইবেরিয়াতে জাতিসংঘ মিশনে (আনমিল) মোতায়েনরত বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ার কন্টিনজেন্টকে লাইবেরিয়ান সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ার কোম্পানির প্রশিক্ষণের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। গত ৮ বছর ধরে লাইবেরিয়ায় শান্তিরক্ষী হিসেবে নিযুক্ত বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অবদান দেশে-বিদেশে আজ স্বীকৃত। এরই ধারাবাহিকতায় শান্তিরক্ষার পাশাপাশি লাইবেরিয়া সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ার কোম্পানিকে প্রশিক্ষণ দেয়ার দায়িত্ব পেল বাংলাদেশ কন্টিনজেন্ট। বাংলাদেশের ব্যান ইঞ্জিনিয়ার-১৬-এর তত্ত্বাবধানে শুরু হয়েছে লাইবেরিয়ার আর্মি ইঞ্জিনিয়ার কোম্পানির এ প্রশিক্ষণ। এ গৌরব শুধু সেনাবাহিনীর নয়, বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশকে মাথা উচু করে দাঁড় করানোর সোপান।
৪। শান্তি-সংগ্রাম-অর্থনীতিতে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীঃ
শান্তিতে সংগ্রামে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী । কিন্তু বাংলাদেশের প্রেক্ষপটে সশস্ত্র বাহিনী বর্তমানে শান্তি-সংগ্রামের পাশাপাশি অর্থনীতিতে প্রবেশ করেছে। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে দেশপ্রেমিক সশস্ত্র বাহিনী অনন্য অবদান রাখছে। শান্তিরক্ষা মিশন থেকে অর্জিত আয় বাংলাদেশের তৃতীয় আয়ের খাত। বাংলাদেশের গর্ব এই বাহিনী মহাদেশের সীমানা ছাড়িয়ে বিশ্বের বুকে শান্তির কাজে স্থান করে নিয়েছে। শান্তির কাজে বিশ্বের সর্বোচ্চ সংখ্যাক সেনা দিয়ে বিশেষ কৃতিত্ব দেখাচ্ছে। এই কৃতিত্ব শুধু সশস্ত্র বাহিনীর নয় গোটা জাতির ও বটে।
৫। জাতিসংঘ পরিচালিত ৯টি শান্তি মিশনে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর ৭ হাজার ৮৩ জন শান্তিরক্ষী নিয়োজিত রয়েছেনঃ
বর্তমানে বিশ্বের ৯টি দেশে জাতিসংঘ পরিচালিত ৯টি শান্তি মিশনে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর ৭ হাজার ৮৩ জন শান্তিরক্ষী নিয়োজিত রয়েছেন। এ পর্যন্ত সশস্ত্র বাহিনীর ১ লাখ ১৩ হাজার ২৫৮ জন শান্তিরক্ষী জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে অংশগ্রহণ করেছেন। ২০০৯ সালের পর সরকারের সদিচ্ছা ও ঐকান্তিক সহযোগিতায় সশস্ত্র বাহিনীতে উল্লেখযোগ্য পরিমান যুদ্ধাস্ত্র, বিভিন্ন ধরণের জাহাজ, ইউনিট, সেনানিবাস ঘাঁটি ও স্থাপনা সংযোজিত হওয়ায়। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সশস্ত্র বাহিনীর ক্রমবর্ধমান সুনাম অর্জনের প্রেক্ষিতে বিভাগের কার্য-পরিধি সুষ্ঠুভাবে পালন করে আচ্ছে।সামরিক ও বেসামরিক পর্যায়ে সশস্ত্র বাহিনী এবং সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর বিভিন্ন অবকাঠামোগত, পুনর্বাসন ও সেবামূলক কার্যক্রমের অংশগ্রহণ।
৬। শান্তিরক্ষা মিশনে শুধু সেরা নয় বাংলাদেশ, আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও ব্যাপক প্রশংসা
জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে শান্তিরক্ষী পাঠানোর ক্ষেত্রে বেশ কয়েক বছর ধরে সবচেয়ে উঁচু স্থানটি ধরে রেখেছে বাংলাদেশ। জাতিসংঘের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৩ সাল পর্যন্ত বিশ্বের সংকটাপন্ন দেশে মোট আট হাজার ৭৪১ জন বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীর দায়িত্ব পালন করেছেন। শান্তিরক্ষী পাঠানোর ক্ষেত্রে এর পর রয়েছে পাকিস্তান ও ভারত। মিশনে নারী পুলিশের সংখ্যার দিক থেকেও বাংলাদেশ শীর্ষে। এ ক্ষেত্রে ‘রোল মডেল’ হিসেবে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে স্বীকৃত বাংলাদেশ। প্রায় দুই যুগ ধরে বিশ্বের ৫৪টি দেশে শান্তিরক্ষায় অনন্য ভূমিকা রেখে বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীরা দেশের গৌরব বাড়িয়েছেন। একই সঙ্গে বাংলাদেশের অর্থনীতিতেও ব্যাপক অবদান রেখেছেন। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশন থেকে প্রতিবছর গড় আয় প্রায় চার হাজার কোটি টাকা যা বাংলাদেশের অর্থনীতিতে ব্যাপক ভূমিকা রাখছে। ধন্যবাদ সেই সব সদস্যদের, যারা দেশ সেবার মহান দায়িত্ব নিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের সুনাম অক্ষুন্ন রাখছে।
©somewhere in net ltd.