![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বাংলাদেশ বর্তমানে বিশ্বশান্তি সুরক্ষায় সর্বোচ্চ অবস্থানে থেকে দেশের জন্য মর্যাদা ও সুনাম বয়ে নিয়ে চলেছে। শুধু তাই নয়, ২০০৯-২০১০ আর্থিক বছরে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী আয় করছে প্রায় নয়শত কোটি টাকার বৈদেশিক মুদ্রা। তাতে ৫৬০ কোটি টাকার বেতন-ভাতা আর অস্ত্রশস্ত্র, যানবাহন অন্য সরঞ্জামের আয় হয় ৩৪০ কোটি টাকা। সেনা সদস্যদের বেতন-ভাতা ছাড়া মিশন থেকে অর্জিত এসব অর্থ সরকারী কোষাগারে জমা হয়। সেনাবাহিনী ছাড়াও বিমান বাহিনী, নৌ-বাহিনী ও পুলিশ বাহিনীর আয় অর্জিত হয় জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশন থেকে। বাংলাদেশী শান্তিরক্ষীরা সুনাম, মর্যাদা ও আয় অর্জনসহ নানাভাবে দেশকে অগ্রসর করে চলেছে। শান্তিরক্ষী মিশন হতে প্রত্যেক বছর গড়ে ১৪০০ কোটি টাকার বৈদেশিক মুদ্রা আয় হয় বাংলাদেশে। এ দেশের শান্তিরক্ষীরা জাতিসংঘসহ সমস্যা কবলিত দেশগুলোর আস'া ও সুনাম অর্জন করেছে। বাংলাদেশে পার্বত্য চট্টগ্রামের শান্তি ও উন্নয়ন লক্ষ্যে সেনাবাহিনী নিবেদিতপ্রাণ হয় কাজ করছেন। এছাড়া দেশের অভ্যন্তরে রাজনৈতিক সহিংসতা, জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাস মোকাবেলায় সাফল্য লাভ করেছে। সেই সুনাম ও সম্মান ধ্বংস করতে অপপ্রচারে লিপ্ত হয়েছে ‘এসিএইচআর’ শীর্ষক দক্ষিণ এশীয় মানবাধিকার সংগঠন। এর সাথে যুক্ত হয়েছে আমাদের দেশীয় কতিপয় বিতর্কিত ব্যক্তি ও সংস'া। তারা দেশে সংগঠিত নানা ঘটনা ও নেতিবাচক প্রতিবেদন পেশ করে জাতিসংঘে দেশের ভাবমূর্তি বিনষ্ট করতে চায়। তারা চিঠি দিয়ে শান্তিরক্ষী মিশনে এ দেশ থেকে আর কোনো সৈন্য জাতিসংঘে না নেয়ার অনুরোধ জানিয়েছে। বিশ্বশান্তি সুরক্ষায় বাংলাদেশের শীর্ষ পর্যায় ও ইতিবাচক ভাবমূর্তি বিনষ্টে তারা প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। নয়া দিল্লি ভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন ‘এশিয়ান সেন্টার ফর হিউম্যান রাইটস’ এর পরিচালক সুহাস চাকমা অভিযোগ করেছেন: বাংলাদেশ থেকে জাতিসংঘের শান্তি মিশনে ‘মৃত্যুদূত’ পাঠানো হচ্ছে। এ সংগঠনের প্রেরিত রিপোর্টের শিরোনাম ছিল 'BANGLADESH: SENDING DEATH SQUADS TO KEEP THE UN’S PEACE’.এতে উল্লেখ করা হয়েছে দেশের গুম, খুন, ধর্ষণ, মানবাধিকার লঙ্ঘন, সংখ্যালঘু নিপীড়ন ও ভাঙচুরের ঘটনা। বাস্তবে সেনাবাহিনী, পুলিশ, বিজিবি ও র্যা ব আইনশৃঙ্খলা পরিসি'তি ও জননিরাপত্তা রক্ষার্থে তৎপর রয়েছে। হেফাজতে ইসলাম নারী অধিকারের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে সরকারকে ১৩ দফা দাবির বাস্তবায়নে আল্টিমেটাম দিয়েছিল এবং বিএনপি-জামাতের রাজনৈতিক সমর্থনে সরকার পতনের উত্তাল আন্দোলন করেছিল। তারা বিএনপির মতোই মতিঝিলে ৪৮ ঘণ্টা অবরোধ করে জনজীবন বিপর্যস্ত করেছিল। সেনাবাহিনী তাদের সেই ষড়যন্ত্র ও পরিকল্পনা নস্যাৎ করেছিল। তত্ত্বাবধায়ক সরকার হাইকোর্টের রায়ে সংসদ কর্তৃক বাতিল হওয়ার পরও বিএনপি সংসদে না গিয়ে রাজপথে সহিংস আন্দোলন করেছে ধারাবাহিকভাবে। ধ্বংসত্মক হরতাল, হুমকি, অবরোধ, সহিংসতা ও ভাঙচুর করে একযোগে বিএনপির ৩৬ নেতাকর্মী গ্রেপ্তার হয়ে জামিনে মুক্ত হওয়ার পরও সহিংস আন্দোলন ছাড়েনি। ৫ জানুয়ারির নির্বাচন প্রতিহত করার জন্য দেশব্যাপী সহিংসতা, খুন ও অগ্নিসংযোগ চালিয়েছে বিএনপি-জামাত। নির্বাচন কমিশন কর্তৃক জামায়াত নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষিত হওয়ায় ১৯ দলীয় জোটের অংশ হিসেবে জামায়াত নির্বাচন করতে পারবে না বলে বিএনপি নির্বাচনে অংশ নেয়নি। সাংবিধানিক ও গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। জাতিসংঘ, বিভিন্ন রাষ্ট্রদূত সহ অনেকের চেষ্টার পরও সংলাপ সফল হয়নি। নির্বাচনের পরও বিভিন্ন রাষ্ট্রে অপপ্রচার ও চাপ সৃষ্টি করে সরকারকে অবৈধ এবং সংসদকে অকার্যকর রূপে ঘোষণার প্রচেষ্টা চলেছে। তাতে কাজ হয়নি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, চীন, রাশিয়া ও জার্মানি সহ বিভিন্ন প্রভাবশালী রাষ্ট্র নবনির্বাচিত সরকারকে সমর্থন দিয়ে যৌথভাবে কাজ করার অঙ্গীকার করেছেন। দেশ এখন শান্তি ও উন্নয়নের ধারায় অগ্রসরমান। অন্যান্য বারের চেয়ে দ্বিগুণ অর্থ বরাদ্দ রেখে বাজেট পেশ করা হয়েছে। উন্নয়ন কর্মসূচি এগিয়ে চলছে। সুশীল সমাজের সদস্য পরিচয়ধারী কিছু মুখচেনা ও দলীয় লোক ও টিভি চ্যানেল সরকার বিরোধী মিথ্যা প্রচার ও বিভ্রান্তি ছড়াতে সচেষ্ট রয়েছে। গণমাধ্যমের অবাধ স্বাধীনতার সুযোগ নিয়ে তারা অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে। বিএনপি নির্বাচন প্রশ্নে এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে নতুন করে সংলাপ চাচ্ছে এবং সরকার বিরোধী আন্দোলনের হুমকি দিচ্ছে। সংসদের বাইরে থাকা বিএনপি এখন সাংগঠনিকভাবে দুর্বল, রাজনৈতিকভাবে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে মাত্র ৪৭ দিনের মাথায় পরিকল্পিত বিডিআর হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে সেনা সদস্যসহ ৫৭ জনকে হত্যা করা হয়েছে। সরকারকে অসি'তিশীল, গণতন্ত্রকে বিপর্যস্ত করতে এবং সেনাবাহিনীকে উস্কানি দিতে চেষ্টা করেছিল বিএনপি-জামাত। এছাড়া পার্বত্য চট্টগ্রামে বাঙালি ও পাহাড়ির মধ্যে বিভেদ-সংঘর্ষ সৃষ্টির প্রচেষ্টা চলেছিল। বৌদ্ধ বিহার, মন্দির ও মসজিদে আগুন দিয়ে বারবার দেশে সাম্প্রদায়িক বিভেদ ও মৌলবাদী অপশক্তির রাজনীতি বিস্তারের চেষ্টা হয়েছিল। দেশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এসব ঘটনা মোকাবেলা করেছে। সহিংস হরতাল ও অবরোধ থেকে জনজীবনকে রক্ষা করেছে। এছাড়া জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাস দমনে র্যা বের রয়েছে ভূমিকা। নারায়ণগঞ্জের ৭ খুনের ঘটনাসহ কয়েকটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে সমগ্র র্যাববের বিলুপ্তি দাবি করেছেন বিএনপি চেয়ারপার্সন, হিউম্যান রাইটস ওয়াচসহ কিছু বিতর্কিত ব্যক্তি ও সংস্থা। এভাবে বাংলাদেশের ভাবমূর্তিকে কালো চাদরে ঢেকে দেয়ার চেষ্টা চলেছে ধারাবাহিকভাবে। ২০০৪ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত যাবতীয় নেতিবাচক ঘটনাবলী একত্রে তুলে ধরে সেগুলো রিপোর্ট আকারে জাতিসংঘে পেশ করেছেন ‘এসিএইচআর’-এর পরিচালক ও প্রতিষ্ঠাতা সুহাস চাকমা। এ দেশে বিএনপি-জামাতপন'ী সুশীল সমাজ, মিডিয়াবাজ সাংবাদিক ও এনজিওবাজ বুদ্ধিজীবী মিলে সরকারের ইতিবাচক অর্জন ও সাফল্যকে ম্লান করে দিতে চাচ্ছে। এসব অপপ্রচারকারী ও ষড়যন্ত্রকারীদের দেশবিরোধী তৎপরতা সম্পর্কে সরকার ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সতর্ক ও সচেষ্ট হতে হবে। অপপ্রচার ও বিভ্রান্তিমূলক প্রতিবেদনের বিপরীতে প্রকাশ করতে হবে প্রকৃত তথ্য, দেশের ইতিবাচক অর্জন ও সাফল্য। প্রচার মাধ্যম সমূহকে এ ব্যাপারে দেশের স্বার্থ এবং জনকল্যাণকে গুরুত্ব দিতে হবে। জাতিসংঘের শান্তিরক্ষার মিশনে বাংলাদেশ থেকে দক্ষ, যোগ্য ও সাহসী শান্তিরক্ষীদের পাঠানো হয়ে থাকে। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালিয়ে মূলত বাংলাদেশের বিরুদ্ধেই যুদ্ধে লিপ্ত হয়েছে ‘এশিয়ান সেন্টার ফর হিউম্যান রাইটস’ সংগঠনটি এবং এর সহযোগীরা।
©somewhere in net ltd.