![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
তাপ ও দ্রোহে বাঙালীর নতুন শপথ নেয়ার দিন, ১৪২২ বঙ্গাব্দের প্রথম দিন- পহেলা বৈশাখ-নববর্ষ। আশ্চর্য ছুটে চলে সময়। আপন নিয়মে বয়ে যায়। আজ যা নতুন, সময়ের ছুটে চলায় তা পেছনে পড়ে। পুরনো হয়। সেই অমোঘ নিয়মে পুরনো হয়েছে আরও একটি বছর। গত হয়েছে। কবিগুরুর ভাষায়- বৎসরের আবর্জনা দূর হয়ে যাক/যাক পুরাতন স্মৃতি, যাক ভুলে যাওয়া গীতি/অশ্রুবাষ্প সুদূরে মেলাক...। আর তারপর নতুনের আবাহন। কবির ভাষায়- বাজেনি নাকাড়া, নহবৎ ধ্বনি, সানাই অথবা শাঁখ/তবু এসে গেছে নব পল্লবে, নব উৎসবে,/ নব জীবনের নব অনুভবে..., বৈশাখ...। হ্যাঁ, আজ অভূতপূর্ব সাংস্কৃতিক জাগরণের দিন পহেলা বৈশাখ। ১৪২২ বঙ্গাব্দের প্রথম দিন। আজকের প্রার্থনা- মুছে যাক গ্লানি, ঘুচে যাক জরা/অগ্নিস্নানে শুচি হোক ধরা...। শুদ্ধ সুন্দর এ প্রার্থনার মধ্যদিয়ে নতুন করে শুরু করবে বাঙালী। পুরনো দিনের শোক-তাপ-বেদনা-অপ্রাপ্তি-আক্ষেপ ভুলে অপার সম্ভাবনার দিকে এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় ঘোষণা করবে। দুই হাতে অন্ধকার ঠেলে, সকল ভয়কে জয় করার মানসে নতুন করে জেগে উঠবে বাঙালী। ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে দেশের সকল শ্রেণী-পেশার মানুষ আজ একাত্মা হয়ে গাইবে এসো, এসো, এসো হে বৈশাখ...। আনন্দে উৎসবে মাতবে গোটা দেশ। আজ নতুন স্বপ্ন বুনবে বাংলার কৃষক। হালখাতা খুলবে ব্যবসায়ীরা। নববর্ষ বরণে রাজধানীসহ সারাদেশ একযোগে চলবে লোকজ ঐতিহ্যের নানা উৎসব অনুষ্ঠান। বর্ষবরণের দিন সব শহরেই আয়োজন করা হয় বর্ণাঢ্য উৎসব অনুষ্ঠানের। ধর্ম-বর্ণভেদ ভুলে অসাম্প্রদায়িক উৎসবে মাতে বাংলা। যখন উগ্র মৌলবাদী গোষ্ঠী সাপের মতো ফনা তুলছে, যখন বর্বর আক্রমণের শিকার হচ্ছে মুক্তচিন্তা, এই ছুতোয় ওই ছুতোয় যখন অন্য ধর্মের উপাসনালয়ে হামলা করা হচ্ছে, তখন পহেলা বৈশাখ নতুন তাৎপর্য নিয়ে জাতির সামনে হাজির হয়েছে। আজ শুধু উৎসব নয়, সকল অন্যায় অসাম্য সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে জ্বলে ওঠার দিন। আজ ধর্মান্ধতা, মৌলবাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ প্রতিরোধের অগ্নিশিখা ভেতরে জ্বালিয়ে রাখার অনুপ্রেরণা গ্রহণ করবে বাঙালী। দ্রোহের আগুনে শাণিত হবে। বাঙালীর চেতনাবিরোধী অপশক্তি রুখতে নতুন বছরে ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে যাওয়ার শপথ নেবে বাংলাদেশ। অগ্নিস্লানে সুচিত হোক ধরা।
©somewhere in net ltd.