নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
খুব সাধারন একজন বিশেষ কোন গ্রাউন্ড নাই। সময় কাটে ব্লগ ও ফেসবুকে টুকটাক লেখা পড়া করে।...ধন্যবাদ।
রাজনীতি কখনোই স্থির থাকে না; এটি একটি বহমান নদীর মতো, যেখানে কখনো গতি তীব্র হয়, কখনো স্থিরতার আভাস দেখা যায়। বাংলাদেশে রাজনৈতিক ইতিহাসের এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় রচিত হয়েছে সম্প্রতি, যার কেন্দ্রে রয়েছেন শেখ হাসিনা। একসময়ের ক্ষমতাধর এই নেত্রীর পতন এবং তার দেশত্যাগ নিয়ে নানা বিতর্ক, বিশ্লেষণ ও প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে।
একটি ঐতিহাসিক সন্ধিক্ষণ
বাংলাদেশের রাজনৈতিক আকাশে শেখ হাসিনার দীর্ঘ শাসনকাল এক নতুন অধ্যায় তৈরি করেছিল। তবে ইতিহাস বলে, প্রতিটি কর্তৃত্ববাদী শাসনেরই একটি পরিণতি থাকে। শেখ হাসিনার ক্ষেত্রে এটি শুধু ক্ষমতা হারানোর মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকেনি; বরং দেশত্যাগের এক নতুন বাস্তবতার সৃষ্টি করেছে। ইতিহাসে আমরা অনেক স্বৈরশাসকের পতন দেখেছি, কিন্তু সকলেই পালিয়ে যাননি। এরশাদ কারাবরণ করেছিলেন, কিন্তু দেশ ছেড়ে যাননি। অথচ শেখ হাসিনার ক্ষেত্রে তার দেশত্যাগ ও পালিয়ে যাওয়া একটি নতুন মাত্রা যোগ করেছে।
নেতৃত্বের সংকট ও আন্তর্জাতিক প্রভাব
বর্তমানে রাজনৈতিক নেতাদের আন্তর্জাতিক গ্রহণযোগ্যতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। শেখ হাসিনার ক্ষমতা হারানো এবং তার পরে বিদেশে আশ্রয় নেওয়া আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে নতুন এক আলোচনা তৈরি করেছে। ভারত, যা দীর্ঘদিন ধরে তার শাসনকে সমর্থন দিয়ে এসেছে, এখন তার অবস্থান বদলেছে বলে প্রতীয়মান হয়। ভারতের মিডিয়া এবং রাজনৈতিক মহলে শেখ হাসিনার বর্তমান অবস্থান নিয়ে যে নীরবতা, তা বোঝায় যে বাংলাদেশ সরকারের কূটনৈতিক চাপ ইতোমধ্যেই দৃশ্যমান হচ্ছে।
ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক পরিবর্তন
শেখ হাসিনার অনুপস্থিতিতে আওয়ামী লীগের ভবিষ্যৎ কী হবে, তা নিয়ে বিস্তর আলোচনা চলছে। দলীয় পৃষ্ঠপোষকতায় পরিচালিত অনেক ফেসবুক পেজ ও মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম থেকে তার নামের সঙ্গে ‘প্রধানমন্ত্রী’ বা ‘এমপি’ শব্দটি ব্যবহার বন্ধ হয়ে গেছে। এটি প্রমাণ করে যে দলীয় পর্যায়েও বড় পরিবর্তন আসতে যাচ্ছে। ছাত্রলীগ, যা দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগের অন্যতম হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে, সেটিও নিষিদ্ধ ঘোষিত হয়েছে। নিষিদ্ধ সংগঠনের সঙ্গে শেখ হাসিনার সংযোগ অব্যাহত রাখা এক ধরনের রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করছে।
রাজনৈতিক সহিংসতার শঙ্কা
রাজনৈতিক শূন্যতা তৈরি হলে অনেক সময় সহিংসতা বৃদ্ধি পায়। শেখ হাসিনার সমর্থকরা এখনও মাঠে সক্রিয় হওয়ার চেষ্টা করছে, যদিও তা সীমিত মাত্রায়। কিছু স্থানে তারা পোস্টার লাগানোর চেষ্টা করেছে, কিন্তু জনগণের ব্যাপক অংশ এতে সাড়া দিচ্ছে না। এর কারণ দীর্ঘদিনের একদলীয় শাসন, দমন-পীড়ন এবং দুর্নীতির সংস্কৃতি, যা জনগণের মনে গভীর ক্ষত সৃষ্টি করেছে। জনগণের আস্থা হারানো একটি রাজনৈতিক দলের জন্য সবচেয়ে বড় ধাক্কা, যা আওয়ামী লীগের ক্ষেত্রেও ঘটেছে।
বাংলাদেশ সরকারের কূটনৈতিক করণীয়
বাংলাদেশ সরকার ইতোমধ্যেই শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণের জন্য কূটনৈতিক তৎপরতা চালাচ্ছে। ভারতের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে তাকে দেশে ফেরানোর জন্য চাপ বাড়ানো হচ্ছে। অতীতের অভিজ্ঞতা বলে, এমন চাপ দীর্ঘমেয়াদে কার্যকর হতে পারে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে এই বার্তা পৌঁছে দেওয়া জরুরি যে মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত একজন সাবেক রাষ্ট্রনেতাকে আশ্রয় দেওয়া একটি অনৈতিক সিদ্ধান্ত।
পরবর্তী রাজনৈতিক চিত্র
বাংলাদেশের রাজনীতিতে শেখ হাসিনার যুগ শেষ হলেও আওয়ামী লীগের ভবিষ্যৎ এখনো অনিশ্চিত। শেখ পরিবারের প্রভাব ও নেতৃত্ব কতটা টিকে থাকবে, তা সময়ই বলে দেবে। তবে, একক ব্যক্তিনির্ভর রাজনীতি দীর্ঘস্থায়ী হয় না। বাংলাদেশ এখন এক নতুন রাজনৈতিক যুগে প্রবেশ করছে, যেখানে নীতি ও গণতন্ত্রের পুনঃপ্রতিষ্ঠার দাবি প্রবল হয়ে উঠেছে।
উপসংহার
শেখ হাসিনার পতন শুধু একজন ব্যক্তির পতন নয়; এটি বাংলাদেশের রাজনীতির জন্য এক যুগান্তকারী মুহূর্ত। এটি প্রমাণ করে যে ক্ষমতার অপব্যবহার ও স্বৈরশাসন দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে না। জনগণের প্রত্যাশা এখন এক নতুন সূর্যোদয়ের দিকে, যেখানে ন্যায়বিচার, গণতন্ত্র ও সমানাধিকারের ভিত্তিতে একটি শক্তিশালী বাংলাদেশ গড়ে উঠবে।
২| ০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ দুপুর ২:১৫
নীল আকাশ বলেছেন: হাসিনা মারা গেলে আওয়ামী লীগের অস্তিত্ব নিয়ে টানাটানি লেগে যাবে।
©somewhere in net ltd.
১| ০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ দুপুর ১:৫৭
মাহমুদুর রহমান সুজন বলেছেন: সুন্দর একটি দেশ মাথা নাড়া দিয়ে দাঁড়িয়ে উঠুক বিশ্বের বুকে। যে দেশটির ইতিহাস ও ঐতিয্যে রয়েছে সে দেশটি কিছু সংখ্যক মানুষের জন্য তার শ্রী যেনো না হারায়।