![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
প্রিয় ভাই ও বোনেরা চা আমাদের জীবনের একটা বৃহৎ অংশ জুড়ে আছে যেমনটা ঢাকার বুকের সাথে জড়িয়ে আছে যানজট আর দখলকৃত ফুটপাত । জীবনের এক তৃতীয়াংশ সময় কেটে যায় চা চিবিয়ে । তাই বলে চা কে জীবন ভাবা যাবেনা কারণ পানি ব্যতিত আর অন্য কোনকিছুই জীবন হতে পারেনা , যারা আমরা যারা ক্লাস টু পর্যন্ত পড়েছি তারা সকলেই এটা জানি । আজ আমি আপনাদের শেখাব চা কিভাবে রান্না করতে হয় , খুব অবাক হচ্ছেন ভেবে "সৌরভ কিভাবে চা রান্না শেখাবে? "চা রান্না তো অপনাআপনি শিখে নিতে হয় । চা রান্না কি সম্ভব কোন ব্যাপার সেতো সাধারণ কোন চাট্টিখানি কথা নয় ? চা রান্না অত সোজা কোন ব্যাপার না । ভয়ের কারণ নেই ভাইয়েরা আমার দ্বারা সব ই সম্ভব কারণ উপমহাদেশে একমাত্র জ্ঞান সাধক বলে একটা ব্যাপার আছে না ! চা মেইড ইন চায়না । বৈদেশিক খাবার বলতে পারেন , তবে বাঙালীরা সবচে বেশি চা খায় । সুন্দরবনের মাঝি থেকে হোয়াইট হাউসের কালা ওবামা এমনকি খোদ বাঙলার আনানতা জালিল ও চায়ের ভীষণ রকমের ভয়ংকর ভক্ত । কারো বাসায় গেলেই বাড়ির কর্তা চেঁচিয়ে বলেন "ও ছকিনা গেলি কই , মেহমানগো চা দে " আপনারা বসেন আমি চা এর ব্যবস্থা করি " এক কথায় বলা যায় চা এর উপরই নির্ভর করে সম্মান আর মর্যাদাবোধ । সবাই এখন আর খালি চা খেতে চায়না আরো অনেক কিছু খেতে চায় । পরীক্ষার আগে রাত জাগা কিংবা ক্লান্তি দূরীকরণে চা এর ভূমিকা অতুলনীয় । চা রান্নার জন্য সর্বপ্রথম আমাদের প্রয়োজন চা পাতি আর সে চা পাতি আনার জন্য যেতে হবে সিলেটে কারণ আসল চা একমাত্র ওখানেই পাওয়া যায় আর বাকি জায়গা গুলোতে পাওয়া যায় ছাঁ ফাতা । যদিও উৎপত্তিনুসারে চা চীনেই একমাত্র চা পাওয়ার কথা , কিন্তু চা আজ বাংলাদেশেও চাষ হয় এবং হয় রপ্তানি । চা বাগানের টাটকা চা পাতি না হলে চা খেয়ে স্বাদ পাওয়া যায়,বলুন ? ইদানিং লোকমুখে শোনা যায় চা তেও পাওয়া যায় নানারকমের ফরমালিন । এবার প্রস্তুতপ্রণালীতে আসা যাক , দরকার এক বালতি পানি, এখানে পাঠক প্রশ্ন করতে পারেন "সৌরভ ভাই পানি কী এক বালতি পুরোটাই লাগবে ?" জ্বী হ্যাঁ ভাইয়েরা প্লাস বোনেরা এক বালতি পানিই লাগবে তবে পানি অবশ্যই হতে হবে বিশুদ্ধ ও আর্সেনিক মুক্ত । কোনা ডোবা-নালা ,জলাশয় , সাগর নদী ,ফ্রীজের ,মাঠের কিংবা ড্রেনের অথবা বৃষ্টির পানি হলে চলবেনা । মনে রাখতে হবে চা রান্নার প্রধান দুটি পূর্বশর্ত হচ্ছে বিশুদ্ধ চা পাতি ও বিশুদ্ধ পানি । এবার বালতি ভর্তি পানি গরম করুন অর্থাৎ ভালো করে বয়েল করে সেদ্ধ করে নিন, বালতির পানি ঠিকমতো গরম হচ্ছে কিনা সেদিকে খেয়াল রাখা আবশ্যক । পানির তাপমাত্রা বারবার চেক করতে গিয়ে ছ্যাক খাবেন না , প্লীজ সুন্দরী মেয়েদের কাছে আমার অনুরোধ , আর ছেলেরা চাইলে ছ্যাক খাইতে পারো তবে ব্যাপারখানা গোপন রাখলে ভালো । এরপর বালতির পানিতে পরিমাণমতো কৃষক যেমন নেচে গেয়ে তার ক্ষেতে কীটনাশক দেয় আপনিও ঠিক একই মুডে চা পাতি ছড়িয়ে দিন । কী দেখছেন ? হ্যাঁ পানি লালচে হচ্ছে ? অবাক হবার কিছু নেই চা পাতি কালো হলেও চা এর রং হবে লাল । ভালো ছেলেরা কালো ভালো তেমনি কালো চা পাতার স্বাদ ভালো । এবার বালতি লাল রঙের চা এর কাছে নাক অথবা কান নিয়ে যান । দেখেন দেখেন উমমমম অদ্ভুত এক স্বর্গীয় ঘ্রাণ অনুভব করবেন তখনই আপনার কানে বেজে উঠবে উঠবে "ওও ও চা এএ কোননন ঘ্রাআণ লাগলো ওও ও নাকে "।এরপর যে কাজটা হচ্ছে আপনাকে চুলা বন্ধ করে ডিসিশন নিতে হবে আপনি কোন চা খেতে চান ? যারা নৈর্ব্যতিক চুজ করতে পারদর্শী তাদের জন্য এটা খুব সহজ হবে । লাল, নীল ,বেগুনী ,হলুদে , কালো নাকি সবুজ নাকি সুজি ঘন চা না কড়া কোমল তরল চা ? রঙীন চা এর জন্য পরিমাণমত চা তে মিশিয়ে নিন রঙ । সুজি চা এর জন্য আপনাকে মেশাতে হবে সুজি । আরেকটা কথা দুধ চা খাওয়ার জন্য যেকোন দুধ মেশানো যাবে কিন্তু পাঁঠা কিংবা ঘোড়ার কিংবা কোন মুরগির দুধ একদমই মেশানে যাবেনা এতে চা এর গুণমান নষ্ট হয়ে বিষাক্ত হবার ভয়াবহ আশঙ্কা রয়েছে আর মানুষের দুধ!! নাহ থাক পশুরাই পশুর দুধ খায়না আর আপনি মানুষ হয়েই খাবেন মানুষের দুধ ব্যপারটা ঠিক কেমন হয়ে গেলনা? বাদ দেন এবার বালতিতে চিনি মেশাতে পারেন যাদের ডায়েবেটিস তারা লবণ অথবা অন্য কিছু মেশান । যারা টকপ্রিয় তাঁরা তেঁতুল বড়ই ,নিম ,লেবু,জাম,আমড়া যারা মিষ্টিপ্রিয় তারা গুড় ,সন্দেশ,বাতাসা,দই,কাঁঠাল,আম এমনকি পেয়ারার সাথে মেশাতে পারেন । চাপাতি সেদ্ধ পানি ছেঁকে ফেলুন। যা খুশি মিশিয়ে চিবিয়ে চিবিয়ে খেতে থাকুন চা । বালতি চা আপনি পাড়া প্রতিবেশীদের ডেকে অথবা মগ অথবা জগে ভরে খেতে নেমে পড়ুন । অথবা বালতি চা দিয়ে করে ফেলতে পারেন চা স্নান । চা কে জাতীয় খাবার হিসেবে নেওয়ার সময় এখনই ।সকল মহাপুরুষেরা নিয়মিত চা চাবাতেন ।চা চিবানো আবিষ্কার হয়েছে চুইংগাম ধারণা করা হয় ।সম্রাট আকবর এব্যপারে একমত পোষণকারীদের একজন।স্টিভ জবস চা চিবানোর ছলেই বানিয়ে ফেলেন ফেসবুক সেই শোকেই কম্পিউটার বানালেন মার্কারী ।জুকারবার্গে চা খেতে খেতে বানিয়েছিলেন মোবাইল তাই আজও টাঙানো আছে তাজমহলের ছবি । সমাজে চা পানকারীদের দেখা হয় আলাদা নজরে । চা প্রিয় মানুষেরা চা কে নিয়ে আলাদা করে ভাবেন তাদের নানা চিন্তা এই চা কে ঘিরে ই। চা র স্বাদের ভিন্নতার কথার উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে সুপার চা শপ । ভিন্ন ভিন্ন চা সমাজ । চা খেতে খেতে আজ তা রূপ নিয়েছে নেশায় ,চাখোর মানুষেরা নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে চা এর উপর। এককথায় চা ছাড়া অচল তারা অচল তাদের জীবন । চা খেতে খেতেই ডি .এস সৌরভের মাথায় খচ খচ করে নানান অভিনব আইডিয়া । চা খাওয়া আমাদের গর্ব , চা রান্না করে চিবিয়ে চিবিয়ে বালতি বালতি চা গিলে ফেলবেন এই প্রত্যাশায় আজকের চা রান্নার বিশেষ পর্ব এখানে শেষ হলো,আর হ্যাঁ আপনার চা রান্নার চেষ্টা করতে থাকুন আশা করি একদিনে নয় একশ বছর পর হলেও পারবেন সফল ।
স্বত্ব ডি .এস সৌরভ,বিনা অনুমতিতে কোথাও লেখা বা অংশবিশেষ প্রকাশ করা যাবেনা।
©somewhere in net ltd.