নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সত্যের সন্ধানে

দুর্জয় তারুণ্য

যেখানে গভীর শূন্যতা , যেখানে অন্তহীন কোন পথের শুরু সেখানেই আমার অস্তিত্ব। আমি আঁধারের ব্যাক্তিগত অহংকার ।আমি বৈরাগ্যের ভ্রান্তি। অসম্পূর্ণ ছায়ামাত্র! আমি ব্যাথিত , ব্যর্থ নই। আমি রৌদ্রের মতো অভিকর্ষহীন ,অনুভূতিহীন নই।

দুর্জয় তারুণ্য › বিস্তারিত পোস্টঃ

নারী নির্যাতন রোধে আমাদের ভূমিকা

২৩ শে নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১২:২২

আমাদের এই সমাজে নারী নির্যাতন, নিপীড়নকে খুবই স্বাভাবিক চোখে দেখা হয়। পুরুষ শাসিত সমাজে নারী অবজ্ঞা, অবহেলা, যৌন নিপীড়ন এর শিকার হবে অনেক ক্ষেত্রে এটাও হয়ত স্বাভাবিক চোখে দেখা হয়। জন্মের পর পরিবার থেকেই একজন নারী বৈষম্যের শিকার হয়। ১৯৯৫ সালে জাতিসংঘের উদ্যোগে বেইজিং এ চতুর্থ বিশ্ব নারী সম্মেলন অনুষ্টিত হয়, তার মধ্যে একটি অন্যতম দলিল হল প্ল্যাটফর্ম এর এ্যাকশন বা পিএফএ। বেইজিং সম্মেলনে নারী উন্নয়নের পথে বাধা হিসেবে যে ১২ টি বিবেচ্য বিষয়ের কথা বলা হয়েছে এর মধ্যে একটি হল নারী ও গণমাধ্যম। বাংলাদেশের বেশির ভাগ সংবাদপত্রে পুরুষতান্ত্রিত দৃষ্টিভঙ্গিটি প্রতিনিয়ত প্রতিফলিত হয়। অনেক সংবাদে দেখা যায় নারীকে মানুষ হিসেবে নয়, মূলত পন্য হিসেবে উপস্থাপন করা হচ্ছে। কখনও নারীকে অসহায়, দুর্বল ভাবে উপস্থাপন করা হচ্ছে।
আমাদের সমাজে নারী দুর্বল বা অসহায়ের প্রতিক হয়ে দাড়িয়েছে। কিন্তু, আমাদের রাষ্ট্র পরিচালনা করছেন একজন নারী, বিরোধী দলীয় নেতা নারী, জাতীয় সংসদের স্পীকার নারী। রয়েছেন নারী মন্ত্রী, এমপি। কিন্তু রাজনৈতিক রির্পোটে এ গণমাধ্যম কর্মীরা লিখেন “দুই নারীর ঝগড়া বিবাদ”। কিন্তু প্রকৃত পক্ষে তা হচ্ছে রাজনৈতিক দ্বিমত। বাংলাভাষায় “ই” বা “আ” প্রত্যয়যোগে যতটা সহজেই নারী নির্দেশিত হয় ঠিক তত সহজেই কিছু কিছু বহুল ব্যবহৃত শব্দ নারীদের বিশেষণ হিসেবেই উচ্চারিত হয় দ্বিধাহীনভাবে। যেমন নষ্টা, পতিতা, বেলেল্লাপনা, খারাপ, উশৃঙ্খল নর্তকী ইত্যাদি। পত্রিকার পাতা খুললেই অনেক সময় নারীদের ক্ষেত্রে এমন বিশেষনের সন্ধান পাওয়া যায় কিন্তু, এই শব্দগুলির পুং লিঙ্গ আছে ঠিকই কিন্তু বলতে গেলে তা একেবারেই অব্যবহৃত। অথচ এর একটি শব্দও পুরুষের অংশগ্রহন ব্যাতীত অর্থপূর্ণ নয়। ব্যাবহারিক দিক দিয়ে প্রতিটিতেই পুরুষের ভূমিকা রয়েছে। শুধুমাত্র ভূমিকা রয়েছে বললে ভুল হবে বরং বলা উচিৎ পুরুষের ভূমিকাই বেশি। তথাপি নারীদেরকে ঘিরেই এর যত ব্যাবহার? একটি মেয়ে যখন ধর্ষনের মত ঘটনার শিকার হয়, তখন প্রত্রিকায় লেখা হয় [অমুক স্থানে] সুন্দরী তরুনী ধর্ষিত। প্রকৃত পক্ষে সেটি হবে [অমুক স্থানে] তরুনী ধর্ষনের শিকার। প্রতিনয়ত এমন অসংখ্য ভুলের জন্ম হয় আমাদের একটু সুচিন্তার অভাবে। সংবাদ পত্রে অনেক সময় নারী নির্যাতনের শিকার হয়েছেন এমন নারীর ছবি সহ রির্পোট প্রকাশ হয় বা নাম, বাড়ি, পরিচয় প্রকাশ করে রির্পোট করা হয়। এতে নির্যাতনের শিকার নারী আরোও বেশি নির্যাতনের শিকার হয়ে যায়। সমাজ থেকে পরিবার থেকে হতে হয় তাকে বিতাড়িত, অথচ সে কোনো পাপ বা অপরাধের সাথে যুক্ত ছিলনা। আর অপরাধীরা পাড় পেয়ে যায়। বুক ফুলিয়ে হাটে সমাজে। আসলে আমাদের সমাজের এই করুণ নির্মম অবস্থা এক দিনে সৃষ্টি হয়নি। এটা শুধুই কি পুরুষ শাসিত সমাজ ব্যবস্থার ফল? নাকি নারীদের অসচেতনতাও এর জন্য বহুলাংশে দায়ী তা আলোচনার দাবী রাখে। বহুল ব্যাবহ্রিত একটি কথা, পাপকে ঘৃনা কর পাপিকে নয়। কথাটি মুখে সবাই বলি ঠিকই কার্য্যক্ষেত্রে উল্টোটা করি। আমরা পাপ করি আর পাপিকে এড়িয়ে চলি। কখনো তাদের পাশে গিয়ে দাড়ানোর কথা ভাবিইনা। কেউ নারীর সমস্যা নিয়ে কথা বললে তাকে চিহ্নিত করা হয় নারীবাদী বলে মানবতাবাদী হিসেবে। আজ বলা হয় নারী এগিয়ে গেছে। অনেক পরিসংখ্যান তাই বলছে। মেয়েদের স্কুলে যাবার সংখ্যার তাল মিলিয়ে বেড়েছে বখাটে ছেলেদের গলির মোড়ে দাড়িয়ে অশ্লীল মন্তব্য, অশ্রাব্য কথাবার্তা করার ধরণ। কখনও লজ্জা, কখনও ঘৃনা, কখনও বা মৃত্যু নামক যন্ত্রনায় এই পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে অসহায় নারীরা। এই যন্ত্রনা সহ্য করতে না পেরে পৃথিবী থেকে চলে যায় সিমি, রুমি, তৃষার মত কোমলমতি উজ্জল মেয়েরা । প্রতি ২১ মিনিটে একটি মেয়েকে আজ এই জাতীয় লাঞ্চনার শিকার হতে হচ্ছে। এরকম কত দুর্ঘটনাই তো ঘটছে প্রতিদিন। কিন্তু বিচার জোটেনা কারও কপালে। পত্রিকার পাতায় দু একদিন লেখালেখি হলেও পরে তা হারিয়ে যায় কালের অতল গহব্বরে। নারীর সাফল্যের সংবাদ কজন জানে, এর থেকে নারীর দুর্বলতা আর অসহায়ত্ব উঠে আসে অগনিত ভাবে। কিভাবে আমরা নারীর প্রতি সংবেদনশীল হলাম? প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে নিষ্পেষনের স্বীকার হয়ে নারী আজ নিজেদের অজান্তেই পুরুষের ক্রিড়ানকে পরিনত হয়েছে। পালটে গেছে তাদের আতœসম্মানের ব্যাখ্যা। পত্রিকায় খেলার সংবাদে নারী কৃতিত্ব থেকে নারীর সুন্দর্য্য কে কভার করা হয় বড় করে। অনেক সময় অভিনেতা, অভিনেত্রীদের আপত্তিকর ছবি ও পত্রিকায় হরহামেসা দেখা যায়। এখানে নারীর প্রতি অসম্মানই প্ররিস্ফুত হয়। অনেক শ্রেনীর পাঠক আছেন যারা এসব ছবি দেখে চোখের ক্ষুধা নিবারন করেন। এতে পত্রিকাওয়ালাদেই লাভ হয় বেশী পত্রিকা বিক্রি করে। কিন্তু যে নারীর ছবিটা ছাপা হল সে হয়ে যায় পন্যের মত কোনো এক ব্যবহার্য জিনিস। অন্যদিকে কোনো ঘটনা, দুঘটনা, মহামারি, দুর্যোগের নিউজ যখন বিভিন্ন পত্রিকা কাভারেজ করে তখন নারীই হয়ে যায় কষ্ট, দুঃখ, দুর্দশার করুন চিত্র। অমুক দুঘটনায় নারী সহ নিহত ১০, কিন্তু কেন আমরা নারীদেরকে আলাদা চোখে দেখছি। নারী কি শুধুই নারী নাকি সেও তো মানুষ। নারীর অসহায়ত্ব ও দুর্বলতা প্রকাশ কখনই নারী পক্ষপাতি আচরন হতে পারেনা। এসব চিত্র নারীকে পুরুষ থেকে আলাদা করে ফেলছে। আমাদের সামাজিক ব্যবস্থাটাই এমন এক পর্যায়ে এসে দাড়িয়েছে যেখানে ঘুরে ফিরে নারীকেই নিগৃহীত করা হচ্ছে। এসিড সন্ত্রাস থেকে শুরু করে পাচার হয়ে যাওয়া এর সবই নারী কেন্দ্রিক সন্ত্রাস যারা চালাচ্ছে তারা কতিপয় পুরুষ নামের জানোয়ার। প্রতিটি সন্ত্রাসের পেছনে একটি ছোট খাট ইতিহাস থাকে। কিন্তু অনেক সময় গণমাধ্যমে তা প্রকাশ পায়না। আড়ালে থেকে যায় আসল ঘটনাটি। একজন নারী যখন আতœহত্যা করে তখন অনেক সময়ই দেখা যায় কল্পিত, বনোয়াট তথ্য দিয়ে সংবাদ উপস্থাপন করা হয়। কিন্তু আসলে অনেক সময় তা বাস্তবিক ভাবেই সম্পর্ন ভুয়া, বানোয়াট ভাবেই সাজানো তথ্য দিয়ে প্রচার করা হয়। এসব সংবাদ প্রচার ও প্রসারের ফলে অনেক সময় আসল তথ্য চাপা পড়ে যায়। গণমাধ্যম এসব বিষয়ে আরও যতœশীল না হলে এ অবস্থা চলতেই থাকবে। গণমাধ্যম সমাজের দর্পন স্বরুপ কাজ করে। এক্ষেত্রে পাঠককে সত্য, নিরপেক্ষ সংবাদ পরিবেশন করা রির্পোটারের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব। অনেক ক্ষেত্রে সঠিক, নিরপেক্ষ সংবাদ উপস্থাপনই সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টে দিতে পারে।
একজন সাংবাদিককে অবশ্যই তার পেশার প্রতি নিবেদিত হতে হবে। তাকে অবশ্যই সৎ, নিষ্টাবান, প্ররিশ্রমি হতে হয়। সাংবাদিকদের প্রধান দায়িত্ব হচ্ছে জনগনকে অবহিত করা। এক্ষেত্রে নারী সংযুক্ত কেনো রির্পোট পরিবেশন করা আগে কিছু জিনিস অবশ্যই মনে রাখতে হবে, একজন নারী অবশ্যই মানুষ। যেন কোনো সংবাদের কারনে তাকে হেয় প্রতিপন্ন করা, সমাজের চোখে ঘৃনিত করা বা বিতাড়িত করা না হয়। এক্ষেত্রে সংবাদপত্রে নারীকে মানুষ হিসেবে উপস্থাপন করতে হবে। অপ্রাসঙ্গিক বাক্য, শব্দ, ছবি ছাপানো পরিহার করতে হবে। নির্যাতিত নারীদের ক্ষেত্রে ছবি ও পরিচয় প্রকাশ থেকে বিরত থাকতে হবে বরং নির্যাতনকারী বা দোষি ব্যক্তি ছবি ছাপানোর ব্যবস্থা করতে হবে। কোনো নারী নির্যাতন বা বৈষম্যের শিকার হলে ফলোআপ রির্পোট করা বাঞ্চনিয়। অনেক সময় কোনো নারীর রহস্যজনক মারা গেলে সংবাদসূত্র ছাড়া আতœহত্যা হিসেবে সংবাদ প্রকাশ করে। কিন্তু অনেক রহস্যের আড়ালে থাকে পরিকল্পিত হত্যাকান্ড। আদালতে বিচারাধীন মামলায় অভিযুক্ত নারীর ক্ষেত্রে এমন কোনো শব্দ, বাক্য ব্যবহার করা যাবেনা যাতে রায় প্রকাশের পুর্বেই সে অপরাধি হিসেবে চিহ্নিত হয়ে যায়। অনেকের বিরুদ্ধে অভিযোগ হতে পারে তার মানে এই নয় যে সে অপরাধী। রায় পেলে হয়ত সে নির্দোশ প্রমানিত হতে পারে। একজন নারীর গোপনীয়তা ক্ষুন্ন হয় এমন সংবাদ পারিবেশন করা থেকে বিরত থাকতে হবে। ক্রীড়া বিষয়ক সংবাদ বা আইটেমে যৌনতার প্রতীক হিসেবে নারীকে উপস্থাপন পরিহার করতে হবে। নারী সংশ্লিষ্ট অহেতুক উদ্দিপনামূলক উত্তেজক খবর ও ছবি ছাপানো থেকে বিরত থাকতে হবে। সংবাদ, ছবি বা অন্য কোনো আইটেমে নারীর দুর্বল প্রতিকৃতির বদলে নারীর সফল দৃঢ় ও ইতিবাচক ভাবমুর্তি তুলে ধরা প্রয়োজন। সমাজের বৃহত্তর স্বার্থে নারীর সাফল্যের ভাবমুর্তি তুলে ধরা প্রয়োজন। নারী তরুনী হলে তাকে সুন্দরী বা অন্য কোনো দৃষ্টিকটু শব্দে বিশেষায়িত করা যাবেনা। ধর্ষন সর্ম্পকিত কোনো সংবাদ পরিবেশন কালে ঘটনার সম্পূর্ন বর্ননা, এবং শব্দ, বাক্য ব্যবহারে সর্তকতা অবলম্বন করতে হবে। ধর্ষনের শিকার নারীর নাম, ঠিকানা, ও ছবি ছাপানো যাবেনা। অবশ্য এক্ষেত্রে ধর্ষনের করণে মৃত্যু বা খুন করা হলে ভিকটিমের পরিচয় প্রকাশে কোনো বাধা থাকেনা। সর্ব ক্ষেত্রে অপরাধি ব্যাক্তির পরিচয় প্রকাশ করা উচিত। সকল সংবাদে অবশ্যই জেন্ডার ভারসাম্য রক্ষা করা প্রয়োজন। নারীকে কোনো পন্য নয় বরং মানুষ হিসেবে উপস্থাপন করতে হবে।
একটি ভুল তথ্য একজন মানুষকে অনেক কঠিন পর্যায়ের মুখোমুখি করে তুলে, পরিবার, সমাজ থেকে লোকলজ্জায় অনেকেই হারিয়ে যায় অন্ধকারে। একটি সংবাদ প্রকাশের আগে একবার ভাবুন আপনার প্রকাশভঙ্গি কি পুরুষতান্ত্রিক? যে কথা ও ছবি আপনি ব্যবহার করলেন তা কতখানি পক্ষপাতমুখি? আপনার সংবাদ কি নারী ও পুরুষ সম¦ন্ধে গৎবাধা নিয়ম বা ধারনার দিকেই যাচ্ছে? নারী ও পুরুষ সম্বন্ধে লিখতে গিয়ে শুধুই কি তাদের নির্যাতন, কষ্ট, বেদনার কথাই কি বেশী জোর দিচ্ছেন? সংবাদে ভিকটিমকে এমন ভাবে উপস্থাপন করছেন যেটি তার জন্য লজ্জা, বা অবমাননাকর? আসলে অনেক ক্ষেত্রে আমরা এই স্পর্শ কাতর বিষয়গুলো চিন্তা করিনা। আর তার ভুক্তভুগী হন অনেকেই।
একজন সাংবাদিকের ক্ষমতার উৎস তার পাঠক। পাঠক তার লেখা বিশ্বাস করে। তারা মনে করেন সাংবাদিকরা যা লেখেন সেটা তার ভালোর জন্য এবং সেটি সত্য। সাংবাদিক এই ক্ষমতাকে ভালো কাজে লাগাতে পারেন আবার মন্দ কাজেও লাগাতে পারেন। সঠিক খবর ছেপে ভুক্তভুগিকে যেমন সাহায্য করতে পারেন, তেমনি গোপন করে বাড়িয়ে বলে তাকে করুণ পরিনতির দিকে নিয়ে যেতে পারেন। আবার স্বার্থ আদায়ের জন্য ও তিনি সেটাকে কাজে লাগাতে পারেন। যাকে বলা হয় হলুদ সাংবাদিকতা। তাই সাংবাদিকদের এই ক্ষমতা মাত্রা নির্ধারনের জন্য কিছু নিয়মকানুন ও বিধি নিষেধ ও রয়েছে। এই বিধি- নিষেধ বিশ্বের সকল সাংবাদিকদের জন্য প্রযোজ্য। আমাদের দেশে সংবাদপত্র, সংবাদ এজেন্সী ও সাংবাদিকদের জন্য বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিল কিছু আচরন বিধি নির্ধারণ করে। ১৯৯৩ ও ২০০২ সালে সেগুলো সংশোধিত হয়। এর মধ্যে দুটি নারী ও শিশুর জন্য প্রাসঙ্গিক হতে পারে।
১.আচরন বিধি ১৩ অনুচ্ছেদ এ বলা হয়েছে, জনগনের জন্য আকর্ষনিয় হলেও সংবাদপত্রে কাটটির জন্য অশ্লীন, অবমানাকর, বীভৎস সংবাদ বা চিত্র প্রকাশ করা যাবেনা।
২. ২৩ অনুচ্ছেদ এ বলা হয়েছে, সমাজের নৈতিক মুল্যবোধের জন্য হানিকর কেনো কিছু ধটলে তা তুলে ধরতে হবে। তবে নারী/পুরুষ সংক্রান্ত বা নারী সংক্রান্ত সংবাদ বা চিত্র প্রকাশের ক্ষেত্রে কঠোর সতকর্তা অবলম্বন করতে হবে।
নারী ও শিশু নির্যাতন আইন ২০০০-এ সংবাদ মাধ্যমে নির্যাতনের শিকার নারী ও শিশু পরিচয় প্রকাশের ব্যাপারে বাধা-নিষেধ আরোপ করা হয়েছে। আইনের ১৪(১) ধারায় বলা হয়েছে- ‘এই আইনে বর্ণিত নারী ও শিশুর ব্যাপারে সংগঠিত অপরাধ বা তৎসম্পর্কিত আইনগত কার্যধারায় সংবাদ বা তথ্য বা নাম ঠিকানা বা অন্যবিধ তথ্য কোন সংবাদমাধ্যমে এমনভাবে প্রকাশ বা পরিবেশন করা যাইবে যাহাতে উক্ত নারী ও শিশুর পরিচয় প্রকাশ না পায়।
জাতীয় নারী উন্নয়ন নীতি ২০১১ এর দ্বিতীয় ভাগে নারী ও গনমাধ্যম বিষয়ে বলা হয়
১. গণমাধ্যমে নারীর সঠিক ভূমিকা প্রচার করা এবং অংশগ্রহনের বৈষম্য দূর করা, গণমাধ্যমে নারী ও কন্যা শিশুর বিষয়ে ইতিবাচক উদ্যোগ গ্রহন করা।
২. নারীর প্রতি অবমাননাকর, নেতিবাচক, সনাতনী প্রতিফলন এবং নারীর বিরুদ্ধে সহিংসতা বন্ধের লক্ষে প্রচারের ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
৩. বিভিন্ন গণমাধ্যমের ব্যবস্থাপনা ও আনুষ্টানিক প্রশিক্ষনে নারীর জন্য সমান সুযোগ সৃষ্টি করা।
৪. প্রচার মাধ্যম নীতিমালায় নারী পুরুষ অসমতা প্রেক্ষিত সমন্বত করা।
সমাজ সামনে এগিয়েছে আর এই সমাজকে শিক্ষিত করতে নারীর অবদান বহুলাংশে । পৃথিবীর সকল নৈতিক আন্দোলন সংগ্রামে পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও লড়েছে সমানতালে । প্রায় প্রতিটি পদক্ষেপে নারীরাও ছিল অগ্রগামী । কিন্তু সমাজ যেন নারীকে তার প্রাপ্য মর্যাদা দিবে না, দিবে না সভ্য সমাজে নারীর অবদানের মূল্য । তাই তো সভ্যতার আলোর এত পথ পেরোনোর পরেও সমাজ এখনো পুরুষের শাসনে। আজ সমাজ, রাষ্ট্র বা সামাজিক মান মর্যাদার সব কিছুর ধারক ও বাহক যেন পুরুষরা । নারী মুক্তি না আসার পেছনে এই পুরুশশাসিত সমাজ অনেকাংশে দায়ী । আমাদের সমাজে যে নির্যাতনের শিকার তাকেই হেয় হতে হয় । তাকে হেয় করা হয় ছলনাময়ী হিসেবে তাকে নিগৃহীত করা হয় বেহায়াপনা অপবাদের মাধ্যমে । আর পুরুষকে বিবেচনা করা হয় এটা তার পুরুষত্বের পরিচয় হিসেবে । মুলত সমাজে হেয় হওয়া থেকে বাচার জন্যই অনেক ধর্ষণ, এসিড নিক্ষেপ বা যৌন হয়রানির কথা জন্সম্মমুখে আসে না । কারন সমাজ জানতে পারলে তাকে প্রথমে এক ঘরে করবে তারপরে তাকে সামাজিকভাবে বিচ্ছিন্ন করে সকল সামাজিক কাজে থেকে তাকে জোরপূর্বক বিরত রাখবে আর আমাদের সমাজে এখনো সামাজিক মান সম্মানের কথাটা গুরুত্বের সহিত বিবেচনা করা হয়। একবার ও ভাবা হয়না নির্যাতিত মেয়েটির কথা, তার ভবিষ্যতের কথা। তাদের বিচারের বানী নিভৃতেই গোমরে কাদেঁ।
নারী নির্যাতন রোধে সমাজের প্রত্যেক শ্রেনী পেশার মানুষকে সচেতন হতে হবে। এসব পাশবিক অত্যাচার দূর করতে দরকার দোষীদেরকে অল্প সময়ের মাঝেই বিচারের সম্মুখিন করা এবং ভয়ংকর শাস্তি নিশ্চিত করা । অভিযুক্তের পক্ষে যেন কোন ধরনের রাজনৈতিক পরিচয় কাজ না করে এবং মোড়ল রুপী হায়েনারা যেন তাদের পক্ষ হয়ে বিচারে বা সামাজিকভাবে প্রভাব বিস্তার না করতে পারে এসবে খেয়াল রাখাটা খুবই জরুরি । আর তার চাইতে বড় কাজ হবে শিকার হওয়া নারীকে মানসিক ভাবে ভেঙ্গে না পড়তে সহায়তা করা । গনমাধ্যম কে সব সময় সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে নারীদের যাতে কোনো অবস্থায় কোনো বৈষমের শিকার হতে না হয় । আর তার সাথে গনমাধ্যমের যে কাজটি অন্যতম তা হচ্ছে নারী নির্যাতন, নারী ধর্ষনকারী বা নারী হত্যাকারী নর পশুকে সামাজিক ভাবে বয়কট করা। যেন সবাই তাকে একজন নরপশু হিসেবে চিহ্নিত করে, সবাই যেন মনে করে সে মানুষ রুপী হায়েনা ।
আসল কথাটা হচ্ছে এদের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক আন্দোলন হওয়া দরকার , তাহলে দেখা মিলতে পারে নারী মুক্তির । হয়তোবা আর কোন দিন ই কোন খবরের কাগজের শিরোনাম সিমি, রুমি বা তৃষাদের নিয়ে হবে না । শিরোনাম হবে বিশ্বজয় করা সাবিনা, এভারেষ্ট জয় করা নারী নিশাত মজুমদার, নাজনীনদের কে নিয়ে। এমন দিনের প্রত্যাশায় আসুন নারি নির্যাতন রোধ করি ঘরে, বাইরে ও কর্মক্ষেত্রে।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.