নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মেইল ঠিকানা: [email protected]

ইমানের পরীক্ষা হয় সংকট কালে। ইমানের পরীক্ষা দিতে প্রস্তুত থাকুন।

দুরন্ত ইসলাম

আমি দিদারুল ইসলাম দুরন্ত। অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে চাই। অন্যায়ের প্রতিবাদ করুন। সাহস না পেলে আমাকে মেইল করুন। আমি প্রতিবাদ করব, ব্লগে, পত্রিকায়, রাজপথে। আমার মেইল ঠিকানা: [email protected]

দুরন্ত ইসলাম › বিস্তারিত পোস্টঃ

জিষ্ণু রায় প্রিয়তোষ অজিত পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় চালাচ্ছেন

১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৩:১৮





অ্যাডমিন ক্যাডারের জিষ্ণু রায় চৌধুরী, প্রিয়তোষ সাহা, অজিত ঘোষেরা এখন চালাচ্ছেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ফরেন সার্ভিসের পেশাদার কূটনীতিকদের বাদ দিয়ে অতিরিক্ত সচিব (অ্যাডমিন, জেনারেল সার্ভিস, লিগ্যাল অ্যাফেয়ার্স) পদে জিষ্ণু রায় চৌধুরী, মহাপরিচালক (লিগ্যাল অ্যাফেয়ার্স) ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর পিএস বা একান্ত সচিব পদে প্রিয়তোষ সাহা এবং ফাইন্যান্স ও জেনারেল সার্ভিস শাখার পরিচালক পদে অজিত ঘোষকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসন বিভাগের দায়িত্ব বাইরের কাউকে দেয়ার ঘটনা নজিরবিহীন। সরকারের এ সিদ্ধান্তে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের মাঝে ব্যাপক ক্ষোভ এবং হতাশা তৈরি হয়েছে। সাবেক কূটনীতিক ও কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এ নিয়োগের সিদ্ধান্ত খুবই নেতিবাচক। বিশৃঙ্খলা তৈরি হবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে। কি উদ্দেশ্যে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে তা বোধগম্য নয়। সরকারের এ ধরনের সিদ্ধান্ত পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে একটি অকার্যকর প্রতিষ্ঠানে পরিণত করবে। এদিকে সরকারের এ সিদ্ধান্তের ব্যাপারে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে বারবার বক্তব্য চেয়েও তার কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। বিষয়টি তিনি এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছেন।

উল্লেখ্য, বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর ভারত, ব্রিটেন, যুক্তরাষ্ট্র, জাতিসংঘসহ গুরুত্বপূর্ণ ১২টি মিশনে দলীয় লোকদের রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিয়োগ দেয়। এছাড়া প্রায় ১৫টি মধ্যম সারির কূটনৈতিক পদে ছাত্রলীগের সাবেক নেতা এবং তাদের স্ত্রীদের নিয়োগ দেয়া হয়। কূটনৈতিক পদে এ ধরনের দলীয় নিয়োগের ঘটনা অতীতে কখনও ঘটেনি।

২০০৯ সালে ডা. দীপু মনি পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পর জিষ্ণু রায় চৌধুরীকে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর পিএস (একান্ত সচিব) হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়। এ সময় তিনি ছিলেন একজন ডেপুটি সেক্রেটারি। পরে তাকে জয়েন্ট সেক্রেটারি হিসেবে পদোন্নতি দেয়া হয়। পদোন্নতির পরও পররাষ্ট্রমন্ত্রী তাকে পিএস হিসেবে রেখে দেন। ২০১২ সালে জিষ্ণু রায় চৌধুরী অ্যাডিশনাল সেক্রেটারি হিসেবে পদোন্নতি পান। এই অল্প সময়ের মধ্যে তিনি দু’বার পদোন্নতি পান। গত ৮ জানুয়ারি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের

এক আদেশে বলা হয়, জিষ্ণু রায় চৌধুরী অতিরিক্ত সচিব হিসেবে প্রশাসন, সাধারণ সেবা এবং লিগ্যাল অ্যাফেয়ার্স অনুবিভাগগুলোর দায়িত্ব পালন করবেন। প্রিয়তোষ সাহা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আসার আগে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনির নিজ জেলা চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক ছিলেন। সেখান থেকে তাকে গত বছর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক

হিসেবে আনা হয়। গত ২৯ অক্টোবর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে মহাপরিচালকের পাশাপাশি অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর পিএস বা একান্ত সচিবের দায়িত্ব দেয়া হয়। পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আগ্রহেই তাকে এ দায়িত্ব দেয়া হয়েছে বলে প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত মাননীয় মন্ত্রী ডা. দীপু মনির অভিপ্রায় অনুযায়ী প্রিয়তোষ সাহাকে মহাপরিচালক, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তার একান্ত সচিবের অতিরিক্ত দায়িত্ব প্রদান করা হলো। মাননীয় মন্ত্রী যতদিন এ পদ অলংকৃত করবেন অথবা তিনি প্রিয়তোষ সাহাকে ওই পদে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালনে অভিপ্রায় পোষণ করবেন ততদিন এ আদেশ কার্যকর থাকবে।

এদিকে অ্যাডমিন ক্যাডারের অজিত কুমার ঘোষকে সম্প্রতি ফাইন্যান্স বিভাগের পরিচালকের দায়িত্বের পাশাপাশি অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে জেনারেল সার্ভিস বিভাগের পরিচালকের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানিয়েছে, লন্ডনে বাংলাদেশ হাইকমিশনে কাউন্সিলর পদে অজিত ঘোষের পোস্টিংয়ের বিষয়টি চূড়ান্ত হয়েছে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের গুরুত্বপূর্ণ এসব পদে পেশাদার কূটনীতিকদের বাদ দিয়ে প্রশাসন ক্যাডারের এসব কর্মকর্তাকে নিয়োগ দেয়ায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের মাঝে ব্যাপক ক্ষোভ এবং হতাশা তৈরি হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের একাধিক পদস্থ কর্মকর্তা তাদের ক্ষোভ এবং হতাশার কথা জানিয়ে আমার দেশ-কে বলেন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে একটি অকার্যকর প্রতিষ্ঠানে পরিণত করার জন্য এটা করা হয়েছে। কার পরামর্শে মন্ত্রী এটা করেছেন আমরা জানি না। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কেন্দ্রবিন্দু হচ্ছে প্রশাসন বিভাগ। মিশনগুলো কীভাবে চলবে, কে কোথায় পোস্টিং পাবে, কাকে কোন দায়িত্ব দেয়া হবে, কার পদোন্নতি হবে—সবকিছুর সিদ্ধান্ত হবে প্রশাসন বিভাগ থেকে। আর সেই দায়িত্বে দেয়া হয়েছে এমন একজনকে যার কূটনীতিতে কোনো অভিজ্ঞতাই নেই। ওই কর্মকর্তারা বলেন, গত ৪০ বছরে মাত্র একবার এরশাদ সরকারের আমলে প্রশাসনের দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল বাইরের একজনকে এনে। এরশাদ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের বিশ্বাস করতেন না বলেই ওই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। বর্তমান পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমাদের ওপর আস্থা রাখেন কিনা সেটাই এখন বড় প্রশ্ন।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অন্য এক কর্মকর্তা জানান, প্রিয়তোষ সাহা পররাষ্ট্রমন্ত্রীর পিএস। কিন্তু প্রশাসন বিভাগের বিভিন্ন কর্মকাণ্ড পরিচালনায় তিনি তার মতামত দিয়েছেন। ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এখন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পেতে হলে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আস্থা অর্জনের পাশাপাশি বৃহত্ প্রতিবেশী দেশের হাইকমিশনের আস্থাভাজন হওয়া আরও বেশি জরুরি।

সাবেক কূটনীতিকরা বলছেন, নিয়ম ভেঙে সরকার এ নিয়োগ দিয়েছে। এটা খুবই নেতিবাচক সিদ্ধান্ত। এ ধরনের পদক্ষেপ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে একটি অকার্যকর প্রতিষ্ঠানে পরিণত করবে। সাবেক রাষ্ট্রদূত এম সিরাজুল ইসলাম এ প্রসঙ্গে আমার দেশ-কে বলেন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের গুরুত্বপূর্ণ পদে, বিশেষ করে প্রশাসনের দায়িত্বে অন্য ক্যাডারের লোকজনকে এনে বসানো খুবই নেতিবাচক সিদ্ধান্ত। প্রশাসন বিভাগ হলো ফরেন অফিসের হার্ট। এখানে পেশাদার কূটনীতিক ছাড়া অন্য কাউকে দায়িত্ব দেয়া যায় না। যা করা হয়েছে তা নিয়মের বাইরে গিয়ে করা হয়েছে। সরকারের এ সিদ্ধান্তের ফলে ফরেন সার্ভিস কর্মকর্তাদের মাঝে হতাশা তৈরি হবে।

সাবেক অন্য এক রাষ্ট্রদূত নাম প্রকাশ না করার শর্তে আমার দেশ-কে এ প্রসঙ্গে বলেন, ১৯৮৫ সালে সামরিক স্বৈরশাসক এরশাদ আবদুল হান্নান নামের অ্যাডমিন ক্যাডারের এক কর্মকর্তাকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে মহাপরিচালক (প্রশাসন) পদে বসিয়েছিলেন। এরশাদ ফরেন সার্ভিসের লোকজনদের বিশ্বাস করতেন না। বর্তমান সরকার কেন এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা সরকারই ভালো জানে। তবে আমরা লক্ষ্য করেছি, বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রদূত পদে দলীয় নিয়োগ দিয়েছে। তিনি বলেন, আমাদের মনে রাখতে হবে পররাষ্ট্র এবং আইন মন্ত্রণালয় অন্যান্য মন্ত্রণালয় থেকে আলাদা। কূটনীতিকরাই চালাবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এখন সরকার যদি প্রশাসন ক্যাডার থেকে তাদের পছন্দের লোক এনে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় চালাতে চায় তাহলে এর পেছনে অন্য কোনো উদ্দেশ্য আছে বলে ধরে নিতে হবে।

সাবেক রাষ্ট্রদূত আশফাকুর রহমান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এই গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে ফরেন সার্ভিসের বাইরের লোকদের নিয়োগের কড়া সমালোচনা করে বলেন, বাংলাদেশের ফরেন অফিসে সম্প্রতি যা ঘটেছে তার কেউ প্রতিবাদ করছে না। এটা অবাক করার মতো। ফরেন অফিসের প্রশাসনিক প্রধানের পদে সরকার একজন অ্যাডমিন ক্যাডারের লোককে এনে নিয়োগ দিয়েছে। এর ফলে বিশৃঙ্খলা তৈরি হবে। ফরেন অফিসে এই স্পর্শকাতর পদে কোনোভাবেই অ্যাডমিন ক্যাডারের কেউ নিয়োগ পেতে পারেন না। ফরেন অফিসে অ্যাডমিন ক্যাডারের লোকজনের কোনো কাজ নেই। কূটনৈতিক মিশনগুলো কিভাবে পরিচালিত হয় সেই অভিজ্ঞতা থাকতে হবে ফরেন অফিসের প্রশাসন চালাতে। তিনি বলেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী কি চিন্তা করে এই নিয়োগ অনুমোদন করলেন তা ভেবে অবাক হতে হয়।

এদিকে বিতর্কিত এই নিয়োগ এবং বিভিন্ন মহলের সমালোচনা সম্পর্কে বারবার চেষ্টা করেও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। প্রথমে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তার মাধ্যমে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্য চাওয়া হয়। পররাষ্ট্রমন্ত্রী কোনো বক্তব্য না দিয়ে লিখিত প্রশ্ন চান। গত ৩০ জানুয়ারী বুধবার আমার দেশের পক্ষ থেকে লিখিত প্রশ্ন দেয়া হয়। লিখিত প্রশ্নটি ছিল ‘পেশাদার কূটনীতিকদের বাদ দিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রশাসন, সাধারণ সেবা লিগ্যাল অ্যাফেয়ার্স অনুবিভাগ এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রীর পিএসসহ গুরুত্বপূর্ণ পদে প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের নিয়োগ নিয়ে বিভিন্ন মহলে ব্যাপক সমালোচনা হচ্ছে। এ ব্যাপারে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বক্তব্য কি?’

এই লিখিত প্রশ্ন দেয়ার পর বারবার যোগাযোগ করেও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।



এখানে মূল খবরঃhttp://www.amardeshonline.com/pages/details/2013/02/08/186848#.URoE2_JotdY

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.