নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কিছুই বলার নেই...

এবং সাইদি

স্বপ্ন দেখতে ভালো লাগে, দেখাতেও!

এবং সাইদি › বিস্তারিত পোস্টঃ

এবারের জন্মদিনটা আমার কাছে একটু অন্যরকম

১৬ ই অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৫:৪৩


আজকে আমার জন্মদিন! আরো একটি বছর বেঁচে থাকলাম পৃথিবীতে। এই সুজলা সুফলা সুন্দর পৃথিবী আমাকে আরো একটি বছর উপভোগ করার সুযোগ দিল। আমি তাকে কি দিলাম সে কথা নিতান্তই অবান্তর।আজকে আমার জন্মদিন।এই দিনে বৃষ্টিস্নাত কোন এক রাতে আকাশ ফাটানো চিৎকার করে বলা নেই কওয়া নেই, অনেকটা হুট করেই জন্ম নিয়ে দুনিয়াতে এসেছিলাম।
আমার আব্বু-আম্মু যেই খুশি হইছিল।কারন তাদের পরিবারে প্রথম এবং বড় পুত্র ছেলের জন্ম।রাতের বেলা ‌‘ওয়া ওয়া’ কান্নার আওয়াজ শুনে আশে-পাশের প্রতিবেশীরা আমাকে দেখতে এসছিলো আমাদের বাড়িতে, বাড়িতে আনন্দের খই ফুটছিলো সেদিন। বাড়ির প্রথম ছেলেসন্তান জন্মের খবর পেয়ে আমার মা নাকি খুশিতে আত্মহারা হয়েগেছিলেন।

আমার জন্মের সময় বাব ঢাকায় ছিলেন।জন্মের ২ দিন পর নিজ সন্তানের জন্মের খবর পেয়ে আমার বাবা ভীষণ খুশি হয়েছিলেন। তারপর এক এক করে কেটে গেছে অনেকটি বছর। জীবনের এতটি বছর যে হেলায় খেলায় কাটিয়ে দিতে পারলাম, এ জন্য আমি মহা খুশি। জন্মের পরপর যদি মরে যেতাম? অথবা মায়ের পেট থেকেই মরা হয়ে বের হতাম? তখন এত্ত সুন্দর পৃথিবীটা দেখা হতোনা। রাতের জোনাকীদের সাথে চোখাচোখি হতোনা। চাঁদের সাথে লুকোচুরি খেলতে গিয়ে, দেবদারু গাছের আড়ালে লুকানো হতোনা। জানতেই পারতাম না, পৃথিবী নামের আজব একটা জায়গা আছে। যেখানে মানুষেরা কাঁদে আর হাসে। যেখানে ভালোবাসাদের জয়জয়কার।হয়তোবা, আগামী বছরের এই দিনে আমি আর আমার জন্মদিন সম্পর্কে কিছু বলতে পারবো না। যদি মরে যাই? তখন তো কেও একবার মনে করেও দেখবেনা, আজকের এই দিনে কোনো এক হতভাগার জন্ম হয়েছিলো, আমাদের এই পৃথিবীতে।মহান আল্লাহকে অশেষ শুকরিয়া।

আমার বাসায় কারো মনেই নেই, আজকে যে আমার জন্মদিন। কোনো দিনই ছিলোনা।এমনকি আম্মু পর্যন্ত বেমালুম ভুলে যায় যে,তার অলক্ষ্মী ছেলেটার আজ জন্ম দিবস। মাকে যখন মনে করিয়ে দিই তখন লজ্জা পেয়ে কেলিয়ে কেলিয়ে হাসে।তারপর আব্বুকে বলে “আজ একটা দেশী মুরগী আনিয়ো তোহ, সাথে দই-মিষ্টি। আব্বু আর কি বলবে তিনি তোহ কিছুই মনে রাখেন নাহ।কোন সময়ে তা আনা হয়েছে আবার কোন সময় আনেন নি।তাতেও আক্ষেপ কোন আক্ষেপ নেই আমার।খুশিই হই।ছোট বোন আর চাচাতো ভাই আমার জন্মদিন তারিখ কখনই ভুলে নাহ।যদিও এরা আমাকে কোন গিফট দেয়না।”

“আমার পরিবার কখনই আমাদের কোন ভাইবোনের জন্মদিন পালন করেনি।কারন আব্বুর কড়া টাইপের নিষেধ আছে,বাসাই কখনই কারো জন্মদিন পালন হবেনা।কি আর করার,আম্মু সেই নিষেধ সারাজীবন বাধ্য হয়ে বউ এর মত পালন করে গেল।তাই ছোটবেলার বার্থডে পিক আমাদের কোন ভাইবোনের নেই।”
আব্বুর কাছে জন্মদিন পালন না করার কারন জানতে চাইলে বলে, ইসলামের দৃষ্টিতে জন্মদিন পালন/সেলিব্রেশন মুসলিমদের কালচার নয়। এটি এসেছে অমুসলিমদের কাছ থেকে যা মুসলিমদের উপর গভীরভাবে প্রভাব ফেলেছে। যার জন্য আমরা বুঝে কিংবা না বুঝে এই কালচারের দ্বারা প্রভাবিত।

বসার কারো জন্মদিন পালন করা হয়না বলে, তাই জন্মদিন নিয়ে কেউ তেমন একটা মাথাও ঘামায় না। তাই আমি কোনো দিনই জন্মদিনের কেক কাটিনি, কোনো কোলাহলপূর্ণ জন্মদিনের অনুষ্ঠানে। আমি ফুঁৎকারে মোমবাতি নিভাইনি কোনোদিন। আমার মোমের আলো নিভে যাওয়ার সাথে সাথে করতালির বন্যা বয়নি কোনোদিন। কেউ জন্মদিনের গিফট দেয়নি। রাত বারোটায় কেউ ফোন করে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানায়নি। জন্মদিন উপলক্ষে, লাল-নীল মেসেজ আসেনি মোবাইলে।কোনোদিনই না।

তবে ফেসবুক ফ্রেন্ডদের কথা না বললেই নয়।এইখানে বার্থ ডে ডেট আসলেই হইল উইশ আর উইশ।কেউ ভুলে নাহ।কাছের হোক, দূরের হোক জুকার মামুর কল্যানে সবাই এত্ত এত্ত উইশ করে।আর তাতেই অনেকে আমার মত খুশি হয়।হোক নাহ ভার্চুয়াল দুনিয়া,কিন্তু কিছু অল্প জিনিসে যদি মুখে হাসি আসে,সেটাই বা কম কি। সবাইকে ধন্যবাদ আমার জন্মদিনে উইশ করার জন্য।

এমন বছরও আমার জন্মদিন গেছে, যখন জন্মদিন পার হয়ে যাবার দু’দিন পর মনে পরতো, গতপরশু না আমার জন্মদিন ছিল! নিজের জন্মদিন নিয়ে নিজেই যখন মাথা ঘামাই না, তখন অন্যেরা মাথা ঘামাবে কি ছাই?

তবে যাই হোক, এবারের জন্মদিনটা আমার কাছে একটু অন্যরকম। যেমন, ফেসবুকে জন্মদিন সম্পর্কে একটা পোষ্ট দিলাম। অনলাইন অথবা ভার্চুয়াল বন্ধুদের সাথেই না হয় এবারের জন্মদিনটা উপভোগ করলাম।
আর হ্যা। আমি একটা প্ল্যান করেছি, আজকে একটা ছোট্ট জন্মদিনের কেক কিনবো। আর কয়েকটা ছোট্ট ছোট্ট রঙ-বেরংয়ের মোমবাতি কিনবো।

তারপর।রাতের বেলা আমার ঘরের দরজা বন্ধ করবো। পড়ার টেবিলটার ওপর আস্তে করে কেকটা রাখবো। খেয়াল রাখতে হবে, বাসার সাদা ধবধবে বিড়ালটাও যেন আমার ঘরে আসতে না পারে।তারপর।আলতো করে মোমগুলো জ্বালিয়ে দেব। কিছুক্ষণ হাসি হাসি মুখে এদিক-সেদিক তাকাবো।তারপর।যখন ফুঁ দিয়ে মোমগুলো নিভিয়ে দেব, তখন মোমের আলোতে আমার চোখ দু’টো চকচক করবে। তারপর। কেকটা কেটে-কুটে নিজেই সবটা সাবার করে দেব।তারপর।কল্পনা করতে থাকবো, মশা-মাছিরা ভন ভন আওয়াজ না করে আজকে আমাকে বলছে, “হ্যাপি বার্থ ডে সাজ্জাদ ! হ্যাপ্পি বার্থ ডে টু ইউ...!!”

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ১৬ ই অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৫:৫৯

প্রামানিক বলেছেন: জন্মদিনের শুভেচ্ছা।

১৬ ই অক্টোবর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৫০

এবং সাইদি বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে

২| ১৬ ই অক্টোবর, ২০১৫ রাত ৮:১১

নিষ্‌কর্মা বলেছেন:
এই সুজলা সুফলা সুন্দর পৃথিবী আমাকে আরো একটি বছর উপভোগ করার সুযোগ দিল।


<<<< আর ইয়ু শিয়োর যে আরো এক বছর আয়ু আছে আপনার?

২৪ শে অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৩:৪১

এবং সাইদি বলেছেন: পুরো একটি বছর কিনা বলেতে পারবো না।

৩| ১৭ ই অক্টোবর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৪৮

সুমন কর বলেছেন: হাহাহা.....লেখায় মজা আবার বেদনা লুকিয়ে আছে। পড়ে ভালো লাগল।

আপনি যখন কোথাও বেড়াতে যাবেন আর তখন যদি আপনার জন্মদিন চলে আসে, খুব ঘটা করে একটা পার্টি দিয়েন।

বিলম্ব জন্মদিনের শুভেচ্ছা এবং শুভকামনা রইলো। !:#P

পোস্টে ভালো লাগা।

২৪ শে অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৩:৪২

এবং সাইদি বলেছেন: আচ্ছা ভাই

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.