![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ময়মনসিংহের ত্রিশালে এক মধ্যবিত্ত কৃষকপরিবারে জন্ম। ইতিহাসে স্নাতক সম্মানসহ স্নাতকোত্তর করেছি আনন্দমোহন কলেজ থেকে। রাজনৈতিক দলের সাথে কাজ করার সুযোগ না হলেও সামাজিক সংগঠন করার সুযোগ হয়েছে। ২০১৪ সালে ফেসবুক মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত ঈদগাহ বন্ধু সমাজ(ইবিএস) নামে সমাজ উন্নয়নকামী সংগঠনের চীফ কোঅরডিনেটর হিসেবে আমাদের গ্রামকে আদর্শগ্রামে উন্নীত করতে কাজ করছি। চাকুরী করছি একটি পোশাক কারখানায় মানবসম্পদ বিভাগে সহকারী ব্যবস্থাপক হিসেবে। ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে আমি কথা বলি। চার ভাই চার বোনের মধ্যে ৩য় এবং বড় ছেলে।
প্রশিক্ষণ ও উন্নয়ন কার্যক্রম
বিগত আদর্শ গ্রাম সিরিজের পর্ব গুলোতে আমরা কল্পনাপুর আদর্শগ্রাম পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন এবং সাধারণ মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ লক্ষ্য করেছি। এই পর্বে কল্পনাপুর আদর্শগ্রামের অভ্যন্তরীণ মানব সম্পদ উন্নয়ন ও প্রশিক্ষণ কার্যক্রম সম্পর্কে জানব।
১। আদর্শগ্রাম কম্পিউটার ট্রেনিং সেন্টার - কল্পনাপুর আদর্শগ্রামের উদ্যোক্তাগণ মানব সম্পদ উন্নয়নের পরিকল্পনার অংশ হিসেবে কেন্দ্রীয় মিলন স্থলে একটি কম্পিউটার ট্রেনিং সেন্টার খুলেন। এতে প্রথমে ১০ জন শিক্ষার্থী অংশ নেয়। পরবর্তীতে ট্রেনিং সেন্টার বৃদ্ধি করা হয়। শিক্ষার্থীর সংখ্যা অনেক হয়ে যায়। পার্শ্ববর্তী এলাকা এমনকি উপজেলার বিভিন্ন অংশ থেকেও শিক্ষার্থীরা কম্পিউটার শেখার জন্য এখানে আসতে থাকে।তরুণ প্রজন্মের নিকট কম্পিউটার চালনার আগ্রহ উদ্যোক্তাগণ ফ্রিলেন্সার এর উপর একটি কর্মশালার ও ব্যাবস্থা করেন। এর ফলে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে বাড়তি আয় ও করা যায় তা তরুণরা জানতে পারে। এতদিন শহরের লোকেরাই শুধু এগুলো জানত। এখন তা কল্পনাপুরে ছড়িয়ে পড়েছে। আর চাকরী ক্ষেত্রে তো কম্পিউটারের চাহিদা এখন ব্যাপক। সব মিলিয়ে কারিগরি দক্ষতাও অর্জন করতে পারল কল্পনাপুরের উঠতি তরুণরা।
২। দর্জি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রঃ- আদর্শ গ্রাম উদ্যোক্তাগণ নারীদের কর্মমুখী করার জন্য দর্জি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন করেন। এতে কল্পনাপুরের উঠতি নারীদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়। অত্যন্ত উদ্দমের সাথে নারীরা উক্ত প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে আগমণ করেন। প্রথমে ১০ জন নারী সদস্য নিয়ে একটি কর্মশালা শুরু হয়। পরবর্তীতে দিনে ২টি করে ব্যাচ শুরু করা হয়। এভাবে অনেক নারীরা দর্জি কাজের প্রশিক্ষণ নেয়। ফলে তারা বাড়ীতে বসে আয় করার সুযোগ পায়। কেউ আবার পোশাক কারখানায় চাকরী নেয়। এক সময় উদ্যোক্তাগণ একটি পোশাক কারখানা স্থাপনেরও উদ্যোগ নেন। এভাবে কর্মসংস্থানের দ্বার উন্মুচিত হয়।
৩। কৃষি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রঃ কল্পনাপুরের কৃষকরা সৃজনশীল পদ্ধতির মাধ্যমে এবং আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি ব্যবহার করে অধিক ফলন করতে পারে সে জন্য আদর্শ গ্রাম উদ্যোক্তারা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সাথে সমন্বয় করে কৃষকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেন। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর পরবর্তীতে স্থায়ীভাবে কৃষকদের প্রশিক্ষণের জন্য কৃষক মাঠ স্কুল স্থাপন করেন এবং একটি কৃষক ক্লাব প্রতিষ্ঠা করেন। এতে কৃষি কাজের ব্যাপক অগ্রগতি সাধন হয়।
৪। উদ্যোক্তা প্রশিক্ষণ ও পরামর্শ কেন্দ্রঃ আদর্শ গ্রাম কর্তৃপক্ষ সামাজিক অর্থনৈতিক উন্নতি এবং ব্যবসায় অগ্রগতির জন্য উদ্যোক্তা প্রশিক্ষণ ও পরামর্শ কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করেন। বিভিন্ন সরকারী প্রতিষ্ঠান যেমন যুব উন্নয়ন ও সমবায় অধিদপ্তর, ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প অধিদপ্তর এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে উদ্যোক্তা সৃষ্টির জন্য নানা ধরণের প্রশিক্ষণ ক্যাম্পের আয়োজন করেন। এতে আত্ন-কর্ম সংস্থানের সৃষ্টি হয়। নতুন নতুন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠে। ফলে বেকারত্ব দুরভিত হয়।
৫। প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা ও তথ্য কেন্দ্রঃ আদর্শ গ্রাম কর্তৃপক্ষ জনপদের নর-নারীদের স্বাস্থ্য সেবাদানের জন্য কতিপয় স্বেচ্ছাসেবীদের প্রাথমিক চিকিৎসায় প্রশিক্ষিত করার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রের সহায়তায় সাপ্তাহিক প্রশিক্ষণ কর্মশালার ব্যবস্থা করেন। অন্ততঃ ২০ জনের একটি দল প্রতিদিন পালাক্রমে বাড়ী বাড়ী গিয়ে খুঁজ খবর নেন ও স্বাস্থ্য সেবা দিয়ে থাকেন এবং স্বাস্থ্য সচেতনার নানা কৌশল প্রচার করেন। আদর্শ গ্রামের কেন্দ্রে একটি মিনি হাসপাতাল স্থাপন করেন, যেখানে ন্যুনতম খরচে চিকিৎসা দিয়ে থাকেন। জরুরী স্বাস্থ্য সেবার জন্য বিভিন্ন হাসপাতাল ক্লিনিকের ঠিকানা ও তথ্য সংরক্ষণ করে রুগীদের তথ্য সেবা দিয়ে সহযোগিতা করা হয়। এতে নাগরিকগণ সহজেই ভাল চিকিৎসা পাওয়া পায়। সরকারী স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর, এনজিও স্বাস্থ্য সেবা কার্যক্রমকেও উক্ত স্বেচ্ছাসেবীরা সহযোগিতা করে থাকেন। যেমন- শিশুদের টিকা খাওয়ানো প্রভৃতি কাজে স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে অংশ নিয়ে থাকেন।
--------0---------
-মোঃ খাইরুল ইসলাম
©somewhere in net ltd.