নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ময়মনসিংহের ত্রিশালে এক মধ্যবিত্ত কৃষকপরিবারে জন্ম। ইতিহাসে স্নাতক সম্মানসহ স্নাতকোত্তর করেছি আনন্দমোহন কলেজ থেকে।

ইবিএস খাইরুল

ময়মনসিংহের ত্রিশালে এক মধ্যবিত্ত কৃষকপরিবারে জন্ম। ইতিহাসে স্নাতক সম্মানসহ স্নাতকোত্তর করেছি আনন্দমোহন কলেজ থেকে। রাজনৈতিক দলের সাথে কাজ করার সুযোগ না হলেও সামাজিক সংগঠন করার সুযোগ হয়েছে। ২০১৪ সালে ফেসবুক মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত ঈদগাহ বন্ধু সমাজ(ইবিএস) নামে সমাজ উন্নয়নকামী সংগঠনের চীফ কোঅরডিনেটর হিসেবে আমাদের গ্রামকে আদর্শগ্রামে উন্নীত করতে কাজ করছি। চাকুরী করছি একটি পোশাক কারখানায় মানবসম্পদ বিভাগে সহকারী ব্যবস্থাপক হিসেবে। ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে আমি কথা বলি। চার ভাই চার বোনের মধ্যে ৩য় এবং বড় ছেলে।

ইবিএস খাইরুল › বিস্তারিত পোস্টঃ

আদর্শগ্রাম সিরিজ, পর্ব-০৬

১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৩:০৩

“সামাজিক সংগঠন”

আদর্শগ্রাম সিরিজ-০৬ এ আপনাদেরকে শুভেচ্ছা। এই সিরিজটিতে আমরা আলোচনা করব কল্পনাপুর আদর্শগ্রাম যে সমস্ত সামাজিক কর্মকান্ড তথা সামাজিক সংগঠনের মাধ্যমে জন সচেতনতা, পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন, বিভিন্ন সামাজিক আচার অনুষ্ঠান ও সাংস্কৃতিক কার্যক্রম পরিচালনা করে কিভাবে একটি আদর্শগ্রাম গঠনের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করেছেন তা দেখব।
১। শিক্ষা কমিটিঃ কল্পনাপুরের শিক্ষা কার্যক্রম সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে যাতে পরিচালিত হয় এবং জবাবদিহিতা নিশ্চিত হয় সেজন্য ৫১ সদস্য বিশিষ্ট একটি শিক্ষা কমিটি গঠন করা হয়। এর লক্ষ্য ও উদ্দ্যেশ্য হল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোকে সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য সহায়তা করা্‌, ভাল ফলাফল অর্জনে প্রতিষ্ঠানের করণীয় নির্ধারণে সহায়তা করা, দরিদ্র শিক্ষার্থীর শিক্ষা নিশ্চিত করা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ প্রক্রিয়া যাতে দুর্নীতি গ্রস্থ না হয় তথা যোগ্য ব্যক্তির চাকরী লাভ সহজ করা। এক কথায় সুন্দর শিক্ষার পরিবেশের সুযোগ তৈরী করাই শিক্ষা কমিটির লক্ষ্য।
২। কমিউনিটি পুলিশ বা গ্রাম প্রতিরক্ষা কমিটিঃ কল্পনাপুর আদর্শগ্রাম কর্তৃপক্ষ মানুষের যান মালের নিরাপত্ত্বা বিধান ও সুশৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য পাড়ায় পাড়ায় বা মহল্লায় গ্রাম প্রতিরক্ষা কমিটি গঠন করেন। এর কর্মীরা স্বেচ্ছাসেবকের ভূমিকা পালন করে থাকেন। এই কমিটিতে প্রায় ১৫০ জন সদস্য রয়েছেন। রয়েছে নিজস্ব গঠনতন্ত্র বা গাইডলাইন। একজন কমান্ডারের অধীনে এই সংস্থা পরিচালিত হয়। এতে এই গ্রামের মানুষ নিরাপদে জীবন যাপন করতে পারেন।
৩। আদর্শগ্রাম সালিশি কেন্দ্রঃ কল্পনাপুর আদর্শগ্রাম কর্তৃপক্ষ জনসাধারণের ছোট খাট অপরাধ, অভিযোগের সমাধান কল্পে একটি সালিশি কেন্দ্র স্থাপন করেন। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, সদস্য ও জনপদের মান্যবর ব্যক্তিগণকে নিয়ে এই বিচারালয় পরিচালিত হয়। সপ্তাহে একদিন করে সারাদিন ব্যাপী চলে নানা ধরণের বিচার কার্যক্রম। মূলতঃ স্থানীয় আইন সংস্থাকে সহায়তা করার জন্যই এই ব্যবস্থা। সাধারণ বিচার-সালিশ গুলো এখানে পরিচালিত হয়, যে গুলো সমাধান যোগ্য নয়, সে গুলো আইন প্রতিষ্ঠানের নিকট পাঠিয়ে দেয়া হয়। এতে সাধারণ মানুষ তাদের সমস্যা সহজেই সমাধান পান।
৪। নারী-শিশু নির্যাতন ও বাল্য বিবাহ প্রতিরোধ কমিটিঃ আদর্শগ্রাম কর্তৃপক্ষ সমাজের নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধ কল্পে একটি কেন্দ্রীয় প্রতিরোধ কমিটি গঠন করেন। প্রতি মহল্লা থেকে একজন করে সদস্য নিয়ে ৩১ সদস্য বিশিষ্ট এই কমিটি তাদের কাজ চালিয়ে যান। এই কমিটি বাল্য বিবাহ রোধেও ব্যপক ভূমিকা পালন করে থাকেন। পরিবার গুলোকে একটি সামাজিক বন্ধনে আবদ্ধ করে সম্মিলিত ভাবে তাদের স্বেচ্ছা কার্যক্রম সফল ভাবে চালিয়ে যান।
৫। কৃষক কল্যাণ সমিতিঃ আদর্শগ্রাম প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পূর্বেই কল্পনাপুরে কৃষক কল্যাণ সমিতি প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রতিষ্ঠা কালে এর লক্ষ্য ও উদ্দ্যেশ্য ছিল কৃষকদের কল্যাণ সাধন ও ঐক্য প্রতিষ্ঠা করা। একজন চাকরিজীবীর অবসর হয় কিন্তু কৃষকের কোন অবসর নাই, আমৃত্যু সে কৃষক। তাই বলে নিজেদের কে তারা ছোট ভাবতে নারাজ, তাই তারা কৃষক কল্যাণ সমিতি গঠন করেন। সংঠন পরিচিতি পর্বে ব্যাপক পরিসরে তা আলোচনার জন্য রইল। প্রথমে ৩৭ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন হলেও বর্তমানে এর ব্যপক কার্যক্রম রয়েছে। মূলতঃ এই সংঠনের হাত ধরেই কল্পনাপুর আদর্শ গ্রাম প্রতিষ্ঠার আন্দোলন শুরু হয়। বর্তমানে এর সদস্য সংখ্যা প্রায় ২৫০ জন।
৬। পরিবেশ রক্ষা কমিটিঃ এই কমিটি রাস্তার পাশে বেড়ে উঠা একটি গাছ কাঁটাকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠে। শত বর্ষী গাছটি একটি কুচক্রী মহল কেটে ফেলার জন্য উঠে পড়ে লাগে, ফলে স্থানীয় জনগণ পরিবেশ রক্ষা আন্দোলন গড়ে তুলতে পরিবেশ রক্ষা কমিটি গঠন করে। এখন এর কার্যক্রম অনেক ব্যপ্তি লাভ করেছে। বৃক্ষ রোপণ অভিযান সহ নানা কর্ম সূচী এরা পালন করে থাকে। এই কমিটিতে প্রায় ৮০ জন সদস্য রয়েছে।
৭। মাদক ও অসামাজিক কর্মকাণ্ড প্রতিরোধ কমিটিঃ সমাজে মাদক দ্রব্য গ্রহণ করে অনেক উঠতি তরুণ ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে পড়ছে, হারিয়ে যাচ্ছে অন্ধকারে। তাই আদর্শ গ্রাম কর্তৃপক্ষ সামাজিক নিরাপত্তা ও অবক্ষয় রোধ করতে একটি মাদক ও অসামজিক কর্মকাণ্ড প্রতিরোধ কমিটি গঠন করেন। এতে সমাজের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি বর্গ অংশ গ্রহণ করেন। অল্প কিছু দিনের মধ্যেই সমাজ থেকে মাদকের প্রাদুর্ভাব কমে যায়। অভিভাবকগনের তাদের সন্তানদের নিয়ে আর দুশ্চিন্তায় থাকেন না।
------০------
মোঃ খাইরুল ইসলাম

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.