নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ময়মনসিংহের ত্রিশালে এক মধ্যবিত্ত কৃষকপরিবারে জন্ম। ইতিহাসে স্নাতক সম্মানসহ স্নাতকোত্তর করেছি আনন্দমোহন কলেজ থেকে।

ইবিএস খাইরুল

ময়মনসিংহের ত্রিশালে এক মধ্যবিত্ত কৃষকপরিবারে জন্ম। ইতিহাসে স্নাতক সম্মানসহ স্নাতকোত্তর করেছি আনন্দমোহন কলেজ থেকে। রাজনৈতিক দলের সাথে কাজ করার সুযোগ না হলেও সামাজিক সংগঠন করার সুযোগ হয়েছে। ২০১৪ সালে ফেসবুক মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত ঈদগাহ বন্ধু সমাজ(ইবিএস) নামে সমাজ উন্নয়নকামী সংগঠনের চীফ কোঅরডিনেটর হিসেবে আমাদের গ্রামকে আদর্শগ্রামে উন্নীত করতে কাজ করছি। চাকুরী করছি একটি পোশাক কারখানায় মানবসম্পদ বিভাগে সহকারী ব্যবস্থাপক হিসেবে। ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে আমি কথা বলি। চার ভাই চার বোনের মধ্যে ৩য় এবং বড় ছেলে।

ইবিএস খাইরুল › বিস্তারিত পোস্টঃ

চতুর্থ ইবিএস কৃষি দিবস উদযাপন ২০১৮ এর মুল প্রবন্ধে যা ছিল

২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৪:৩৯

চতুর্থ ইবিএস কৃষি দিবস উদযাপন ২০১৮
মূল প্রবন্ধ
তারিখ: ২২ফেব্রুয়ারী ২০১৮খ্রি.


সুধী,
আজকের এই অনুষ্ঠানটি আমাদের নিকট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আপনারা যারা উপস্থিত আছেন কৃষাণ-কৃষাণী ও কৃষকদের সেবায় নিয়োজিত উর্ধ্বতন সরকারী কর্মকর্তা, গবেষক এবং বিভিন্ন মিডিয়ার সম্মানিত ব্যক্তিবর্গ। আপনাদের উপস্থিতিতে ঈদগাহ বন্ধু সমাজ-ইবিএস অত্যন্ত আনন্দিত। এবারের ৪র্থ ইবিএস কৃষি দিবসের যে প্রতিপাদ্য বিষয় তথা "কৃষিই শক্তি..." আমরা নির্ধারণ করেছি তা আমাদের স্বার্থক করে তোলার সুযোগ রয়েছে। আমরা বিশ্বাস করি প্রান্তিক কৃষি ব্যবস্থা বাংলাদেশের অর্থনীতিকে ব্যাপকভাবে নেতৃত্ব দিচ্ছে। কেননা, দেশের বৃহৎ জনগোষ্ঠী কোন না কোন ভাবে কৃষি কাজের সাথে নিবিড়ভাবে জড়িত।

বাংলাদেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা বজায় রাখতে হলে প্রান্তিক কৃষি ও কৃষকদের উন্নয়নের বিকল্প নেই।

প্রযুক্তি নির্ভর বিশ্ব কৃষিতে আধুনিক যন্ত্রপাতি আবিষ্কার ও ব্যবহার করে অধিক ও দ্রুত ফলন করে খাদ্যে স্বয়ং সম্পূর্ণতা অর্জন করে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে রপ্তানী করে থাকে। যদিও আধুনিক প্রযু্িক্ত বা যন্ত্রপাতির ব্যবহার আমাদের দেশে পুরোপুরি শুরু হয়নি বা সহজলভ্য হয়ে উঠেনি। আমরা আশাকরি বাংলাদেশ সরকার আমদানী করে অথবা নতুন নতুন যন্ত্রপাতি আবিষ্কারে পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে উৎসাহিত করবেন।

ঈদগাহ বন্ধু সমাজ-ইবিএস একটি অলাভজনক ও অরাজনৈতিক সমাজ উন্নয়নকামী সংগঠন গত ২৮ জুলাই ২০১৪খ্রি. থেকে এক ইফতার পার্টি আয়োজনের মাধ্যমে আমাদের ঈদগাহ মাঠ কেন্দ্রীক বন্ধুত্বের ধারণায় উজ্জীবিত হয়ে ফেইসবুক প্রচারণাকে কাজে লাগিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। ঈদগাহ বা ইবিএস অঞ্চলটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি ভৌগলিক অবস্থানে রয়েছে। যা দক্ষিণ ত্রিশালের তিনটি ইউনিয়নের কেন্দ্রস্থলে। তথা ১০নং মঠবাড়ী, ১১নং মোক্ষপুর ও ১২নং আমিরাবাড়ী ইউনিয়ন নিয়ে এর ব্যাপ্তি।

ঈদগাহ বন্ধু সমাজ-ইবিএস আশা পোষণ করে যে, এই তিনটি ইউনিয়নের মধ্যে খাগাটী, জামতলী, বামনাখালী, মোক্ষপুর(পূর্ব), গুজিয়াম ও নারায়ণপুর-কাঠালীবন্দ প্রভৃতি গ্রামের কৃষি ব্যবস্থার অভূতপূর্ব উন্নতি সাধন হবে। কৃষকগণ কৃষিকাজের প্রয়োজনে সংগঠিত হবেন এবং তাদের জীবনমানের উন্নয়নের নিমিত্তে নিজেরাই কাজ করবেন এবং দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখবেন।

আজকের অনুষ্ঠানে হয়ত আমার বক্তব্যটি গুরুত্বপূর্ণ নাও মনে হতে পারে বা অসাধ্য সাধন মনে হতে পারে। কিন্তু আমরা প্রান্তিক কৃষি ও কৃষকের উন্নয়নের জন্য অঙ্গিকারাবদ্ধ। তাই প্রতিবছর আমরা আমাদের অঞ্চলের কৃষকদের জন্য একটি দিন উৎসর্গ করে কৃষি দিবস হিসেবে উদযাপনের ঘোষণা দিয়েছি ও পালন করে যাচ্ছি। প্রতিবছর ২২শে ফেব্রুয়ারী ইবিএস কৃষি দিবস উদযাপিত হবে, যা এবার ৪র্থ বারের মত হলো।

আমরা ইতিমধ্যে ২০১৫ সালের ২২ জুন থেকে "ইবিএস-আইপিএম কৃষি ক্লাব" নামে একটি কৃষক সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেছি।

আমরা চাই গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার কৃষকদের উন্নয়নের জন্য যে সব কর্মসূচী হাতে নেবে তার প্রত্যেকটি আমাদের এই ইবিএস অঞ্চলের কৃষকদের নিকট পৌঁছবে এবং আমরা তা বাস্তবায়ন করতে সহযোগীতা করব। আমরা বাংলাদেশ সরকারের কৃষি উন্নয়ন কর্মসূচীর সহযোগী অংশীদার বা সহযোগীতাকারী হিসেবে অর্থাৎ প্রান্তিক কৃষক ও সরকার উভয়ের মধ্যস্থতাকারী রূপে ঈদগাহ বন্ধু সমাজ-ইবিএস কাজ করতে চায়। যার প্রমাণ ইতিমধ্যে আমরা রেখেছি। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের বেশ কটি মাঠ স্কুল ও প্রশিক্ষণ বাস্তবায়নে একিভূত হয়ে কাজ করেছি।

আমরা মনে করি এরকম সহযোগীতা অব্যাহত রাখতে পারলে দুটি কাজ হবে, ১. কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথা সরকারী কার্যক্রমে গতি পাবে ও ২. কৃষকগণ দ্রুত লাভবান হবে ও তাদের উন্নতির অধিকার নিশ্চিত হবে। ফলে অর্থনৈতিক ভিত্তি মজবুত হবে।

আমাদের অঞ্চলে কৃষি আবাদে কিছু বৈপ্লবিক পরিবর্তন আমরা আনতে চাই। যেমন: আমাদের কৃষকগণ ধান চাষের উপর নির্ভরশীল। এ অঞ্চলের কৃষকগণ নগদ অর্থ আসে এমন চাষাবাদে অভ্যস্ত নয়। ফলে তাদের আর্থিক অনটন সহজে দূর হয়না। এখান থেকে বের করে লাভজনক ফসল উৎপাদনমূখী করতে উৎসাহিত করে কৃষকদের লাভবান করতে চাই।

আমাদের প্রতিটি গ্রাম ও কৃষি আবাদী জমিকে এবং বসতভিটার পতিত জমিকে সুষ্ঠু ব্যবহারের আওতায় আনতে পারলে আমাদের গ্রামকে কারখানা বা Village Industry/Industrial Village বা গ্রামকে একটি কারখানায় রূপান্তরের প্রাথমিক পরিকল্পনার দীর্ঘ মেয়াদী চিন্তা আমরা করছি তা বাস্তবায়ন করা যাবে। হাস্যকর মনে হলেও আমাদের গ্রামকে ইন্ডাষ্ট্রিতে পরিণত করার পরিকল্পনা আমাদের হাত দিয়েই বাস্তবায়িত হবে।

আমাদের অঞ্চলটি একটি নদী বিধৌত এলাকা। কিন্তু খড়া মৌসুমে নদীতে পানি থাকেনা। ফলে কৃষকরা এর সদ্ব্যবহার করতে পারেন না। নদীর পানি ব্যবহার করতে পারলে আমাদের কৃষি উন্নয়নে ব্যাপক ভূমিকা রাখবে এমনটি ধারণা আমরা পোষণ করছি। এবিষয়ে আমাদের একটি পরিকল্পনা রয়েছে। সময় সুযোগমত তা কৃষক ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সাথে মতবিনিময় করে কর্মসূচী হাতে নেওয়া হবে।

আমাদের পরিকল্পনার মধ্যে বাজার ব্যবস্থাপনাও রয়েছে। যদি লাভজনক চাষে কৃষকরা এগিয়ে আসেন তাহলে সহজে কৃষিপণ্য বাজারজাত ও বিক্রয়ের জন্য বাজার সৃষ্টি করা হবে।

ঈদগাহ বন্ধু সমাজ-ইবিএস আমাদের অঞ্চলের শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়নেও কাজ করছে। প্রতিবছর মেধাবীদের স্কলারশিপও প্রদান করছে। এছাড়াও খেলাধুলার উন্নতির জন্য কাজ করে যাচ্ছে। প্রতিবছর আমরা ২৯শে রমজান বার্ষিক ঈদগাহ সম্মেলন ও ইফতার পার্টি আয়োজন করে অত্র এলাকার সুশিক্ষিত বন্ধুদের নিয়ে মতবিনিময় করে থাকি। ঈদগাহ বন্ধু সমাজ-ইবিএস এর বিভিন্ন বিভাগ রয়েছে যার মধ্যে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ হলো খাদ্য ও কৃষি বিভাগ। আজকের এই অনুষ্ঠান মূলত: ইবিএস খাদ্য ও কৃষি বিভাগের কাজের প্রতিফলন। এছাড়া শিক্ষা ও গবেষণা বিভাগ, মানবসম্পদ ও উন্নয়ন বিভাগ, স্বাস্থ্য ও পরিবেশ বিভাগসহ বিভিন্ন বিভাগ কাজ করছে।

আমরা সকলেই উপলব্ধি করছি যে, খুব দ্রুতই আমাদের এলাকাটি শিল্প অঞ্চলে পরিণত হচ্ছে। ফলে কৃষি ও কৃষি চাষাবাদ অত্যন্ত ঝুঁকিতে পড়বে ও পড়ছে। যার মোকাবিলায় আমাদের প্রস্তুতি কি আছে? তা নেই। ফলে ইবিএস চেষ্টা করছে কিভাবে কৃষকদের আধুনিক চাষাবাদে উদ্বোধ্য করে সেই আর্থিক ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারেন কৃষকগণ।

সর্ব্বোপরি আমরা একটি সমন্বিত পরিকল্পনা রূপায়নের চেষ্টা করছি যার চূড়ান্ত লক্ষ্য হলো আমাদের গ্রামগুলোকে এক একটি "আদর্শগ্রাম" বাস্তবায়ন বা প্রতিষ্ঠা করা। ইতিমধ্যে সোশ্যাল মিডিয়া তথা ফেইসবুক মিডিয়াতে আদর্শগ্রাম নামে আমার লিখিত একটি সিরিজ প্রকাশিত হয়েছে। যাতে কোন্ কোন্ জায়গায় আমাদের উন্নতি করতে হবে তার একটি কাল্পনিক রূপরেখা রূপায়নের চেষ্টা আমি করেছি।

আজকের ৪র্থ ইবিএস কৃষি দিবস উদযাপন ২০১৮ এর প্রতিপাদ্য "কৃষিই শক্তি..." কথাটি পরিপূর্ণতা পাবে এবং আমাদের অঞ্চলের কৃষকদের উত্তরোত্তর উন্নতি হবে কৃষির মাধ্যমেই এই অঙ্গিকার ও আশা ব্যক্ত করছি। হাসি ফুটুক আমাদের সকল কৃষাণ-কৃষাণীর মুখে। বাংলাদেশ থাকুক সব সময় খাদ্যে স্বয়ং সম্পূর্ণ।

মোঃ খাইরুল ইসলাম,
চীফ কো-অর্ডিনেটর,
ঈদ্গাহ বন্ধু সমাজ-ইবিএস
ঈদগাহ, খাগাটী, ত্রিশাল, ময়মনসিংহ।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.