![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
জানবে আমি শুধু আমি নই, আমি মানে অন্য কেউ কিংবা প্রতিবিম্ভ তোমাতে মিলিয়ে আমার সব সুখ।
সন্ধ্যা নামলো কিছুক্ষণ হলো। চরিদিকে এক সাথে অনেকগুলো ঝিঁঝিপোকা ডেকে উঠেছে। কিছু জোনাকির ঝাঁক দেখা যাচ্ছে। এক সাথে মিট-মিট করে জ্বলছে আর নীভছে। দেখতে চমৎকার লাগছে। কার্তিক মাস। হালকা কুয়াশা পড়া শুরু করেছে। শীত এখনো ততটা তীব্র হয়নি। তবুও গায়ে চাদর মুড়িয়ে পুরনো মন্দিরের নদী লাগোয়া বিশাল মাঠটাতে একা একা বসে আছে জহির।
কিছুক্ষণ আগেও নীতু এখানেই ছিলো। চলে গেছে বেশীক্ষণ হয়নি। জহিরের যেতে ইচ্ছে করছে না। এমনিতেই এই জায়গাটা তার অনেক পছন্দের। বিশাল মাঠ। তার পাশে কয়েক শত বছরের পুরনো মন্দির। তার পাশেই একটা পুরনো শশ্মান। শশ্মানের পাশেই বিশাল একটা বট গাছ মাথা তুলে দাঁড়িয়ে আছে অনেক বছর ধরেই। শশ্মানটায় এখন আর কোন মরা পুড়ানো হয় না। সে কবেই মরা পুড়ানো বন্ধ হয়ে গেছে।
মন্দিরের শেষ মাথায় প্রাচীন নদীর ঘাট। এখানে বসলেই উত্তরের হাওয়াটা পুরু পাওয়া যায়। নদীর পানি দেখতেও অনেক ভালো লাগে। নীতুরও এই জায়গাটা বেশ ভালো লাগে। সময় পেলেই জহির আর নীতু এখানে চলে আসে। জহির চোখ থেকে মোটা ফ্রেমের চশমাটা খুলে চাদর দিয়ে পরিস্কার করতে লাগলো। নীতু কিছুক্ষণ আগে রাগ করে চলে গেছে। রাগ করার অনেক কারণ অবশ্য আছে। নীতুর সাথে
জহিরের সম্পর্ক প্রায় ছয় বছরের। এই ছ'বছরে নীতুর নানা জায়গা থেকে অনেক বিয়ের সম্বন্ধ এসেছে। নীতু নানা অজুহাতে সব এড়িয়ে গিয়েছে। তখনকার অবস্থা অবশ্য ভিন্ন ছিল। এখন আর নীতু ইচ্ছে করলেই এই সব করতে পারবে না। এদিকে জহিরেরও কোন গতি হচ্ছে না যে, সে নীতুকে হুট করে বিয়ে করে ফেলবে। সে নিজেই চাল-চুলোহীন একজন মানুষ। টিউশনি করে সে কোনভাবে চলে। বিয়ে করে সংসার
করার মত সমর্থ এখনো তার হয়নি। অদূর ভবিষ্যৎ-এ যে হবে তাও মনে হচ্ছে না। নীতু যখন জহিরকে বলে বিয়ের কথা, তখন জহির হাসি ঠাট্টা করে উড়িয়ে দেয়। নীতু আসলে সবই বুঝতে পারে। সে জানে জহিরের তাকে চালানোর সমর্থ নেই। তবুও সে এই অবস্থাতেই এই মানুষটির কাছে থাকতে চায়।
-শুন ! আমাকে পরশু দেখতে আসবে। আমি কি করবো কিছুই বুঝতে পারছি না।
-তোমাকে কিছুই করতে হবে না। তুমি সুন্দর করে ঘোমটা দিয়ে চা হাতে করে ঢুকবে, আর সবাইকে সালাম করবে। ব্যাস হয়ে গেল।
-তুমি আমার সাথে ফাজলামি করছো?
-না ! না ! ফাজলামি করলাম কোথায়? এছাড়া আমি আর তোমাকে কি পরামর্শ দিতে পারি ?
-তোমার কি করার কিছুই নেই?
-না।
-আচ্ছা আমিত বললাম তুমি যেমন আমি ঠিক তেমন অবস্থাতেই তোমার কাছে যেতে চাই।
- ছেলেদের এই ভাঙ্গা মেসে?
-হুম ! আমিত অসুবিধার কিছুই দেখছি না। তুমি ঐখানে থাকছ না? আমিও থাকবো।
-তুমি চাইলেইত হবে না। তুমি বরং আমার আশা বাদ দাও। তুমি তোমার পরিবারের পছন্দকেই প্রাধান্য দাও। আমি যে তোমাকে আগামী পাঁচ-সাত বছরেরও বিয়ে করতে পারবো তাও মনে হচ্ছে না। আমার অবস্থাত তুমি জান। আমি নিজেই কোনভাবে চলি। অনেক কষ্ট হয়। এই কষ্টের মাঝে আমি তোমাকে কখনো নিতে চাই না। আমি জানি তোমার কথা গুলো শুনতে মোটেও ভালো লাগছে না। বাসায় যাও আর ঠান্ডা মাথায় একটু চিন্তা কর, প্রেম-ভালোবাসা এক জিনিস আর সংসার করা ভিন্ন জিনিস।
হ্যাঁ কষ্ট যে আমার হবে না তা না, একটু কষ্ট আমারও হবে। তবে আমি আমার এই ভাসমান জীবনের সাথে তোমাকে জড়াতে চাই না।
-(নীতু উঠতে উঠতে) শুন তুমি যদি আমাকে বিন্দু মাত্র ভালোবেসে থাক তাহলে তুমি আমাকে কালকে রাতে নিতে আসবে। আমি তোমার জন্য অপেক্ষা করবো। আর যদি না আস, তাহলে আমি তোমার প্রতি মোটেও রাগ করবো না। তুমি যেটা বললে আমি সেটাই করবো। আমি মোটেও কষ্ট পাব না। ধরে নেব এটাই হয়তো আমার নিয়তি ছিল। আমি আসি।
নীতু চলে গেছে অনেক্ষণ হল। জহির এখনো এখানে বসে আছে। তার হাতের জ্বলন্ত সিগারেটের শিখা উঠছে আর নামছে। উত্তরের বাতাস কিছুটা বইছে। নদীর পানি জোছনার আলোতে চক-চক করছে। জহিরের গায়ে জ্বর এসেছে মনে হচ্ছে। তার ভীষণ ঠান্ডা লাগছে। জহির আস্তে-আস্তে উঠে দাঁড়ালো।
(২) জহির নীতুর বাসার নিচে দাঁড়িয়ে আছে। রাত ১২টা বাজে। জহির একটা মাইক্রো বাসে করে এসেছে। সাথে তার কিছু বন্ধু এসেছে। সবাই অপেক্ষা করছে নীতুর জন্য। এতক্ষণে নীতু চলে আসার কথা। এখনো আসছে না কেন জহির বুঝতে পারছে না। বাসায় কোন সমস্যা হল নাত? নীতুর প্রায় বিষয়েই কিছু না কিছু পাগলামি আছে। সে ইচ্ছা করলে দিনেই জহিরের সাথে আসতে পারতো। অথচ সে নাকি রাত ১২টায়ই ঘর থেকে বের হবে। আজ নাকি জোছনা রাত। সফিক এগিয়ে এসে জহিরকে বললো-কিরে এত দেরি করছে কেন? ভিতরে গিয়ে দেখবো নাকি।
জহির বলল- না না ভিতরে যেতে হবে না। সব কিছু গোছাতে বোধহয় সময় নিচ্ছে। এমন সময় বাড়ীর ভিতর থেকে কেউ একজন গেইট খুলে আসছে। জহির এগিয়ে গেল, না এটা নীতু না। অন্য কেউ। মেয়েটা জহিরের সামনে এসে দাঁড়ালো। পনের-ষোল বছরের একটা মেয়ে। হাতে একটা চিরকুট। জহিরকে সে হাতের চিরকুটটা দিয়ে বলল-নীতু আফামণি আফনেরে দিতে কইছে। মেয়েটা চিরকুটটা হাতে দিয়ে দেরি করলো না। সে দ্রুত চলে গেল।
জহির তার হাতের চিরকুটটা খুললো।
জহির
আমি অনেক ঠান্ডা মাথায় চিন্তা করে দেখলাম আসলে আমার সীদ্ধান্তটা ভুল ছিল। আমার এভাবে বাসা থেকে পালিয়ে যাওয়াটা মোটেই ঠিক হবে না। আমার সাথে আমার পরিবারের মান-সম্মান জড়িত। তাছাড়া তুমিত জান বাবা অনেক অসুস্থ। আমি চাই না আমার কারণে আমার পরিবারের মান-সম্মান নষ্ট হোক। আমি এখন তোমার সাথে গেলে তোমাকেও অনেক বিপদে ফেলে দেব মনে হচ্ছে। আমি তোমাকেও ঝামেলায় ফেলতে চাই না।
আমি জানি তুমি আমার মন রক্ষা করতেই আজকে আমাকে নিতে এসেছে। আমি সত্যি অনেক খুশি হয়েছি তুমি আমাকে নিতে আসাতে। তবে আমি দু:খিত আমি এখন তোমার সাথে যেতে পারছি না বলে। দয়া করে আমাকে ভুল বুঝনা। পারলে আমাকে মাফ করে দিও।
তোমার নীতু
চিরকুটটা জহির ভাজ করে হাতের মুঠোয় রাখলো। সফিক বললো- কিরে কি হয়েছে।
-কিছু হয়নি। নীতু আসবে না।
- আসবে না মানি?
-নীতু আসতে পারবে না।
-আসতে পারবে না বললেই হল। আমরা গিয়ে নিয়ে আসি?
-নিয়ে আসতে হবে না। শোন তুই সবাইকে নিয়ে গাড়ীতে করে চলে যা। আমি আসছি।
-আমিত তোর কথা কিছুই বুঝতে পারছি না।
-তোকে কিছুই বুঝতে হবে না। তুই চলে যা।
-সফিক কিছুটা বিস্ময় নিয়ে অন্যদেরকে নিয়ে গাড়ীতে উঠে পড়লো।
রাত ততক্ষণে অনেক বেড়ে গেছে। আজ পূর্ণীমা। শহরের এই গলিতে জোছনা ছড়িয়ে পড়েছে। দেখতে অপূর্ব লাগছে। তবে বিদ্যুৎ না থাকলে আরো ভালো হত। জহিরের প্রচন্ড জ্বর শরীরে। সে জ্বরকে পাত্তা দিতে চাইছে না। তবে পাত্তা না দিয়েও মনে হচ্ছে না বেশিক্ষণ থাকা যাবে। জহির হাটা ধরলো। তার গায়ে চাদর মোড়ানো। তার মোটা ফ্রেমের চশমাটা চাদরে মুছে নিল একবার। একপা-দুইপা করে গলি ছেড়ে বের হচ্ছে। তার গন্তব্য কোথায় সে জানে না। হঠাৎ মাথা ব্যথাটা মনে হচ্ছে বহুগুণে বেড়ে গেছে। পাত্তা না দিয়েও উপায় নেই। জহির হাটতে হাটতে একটা গলির মাথায় এসে পড়লো। মনে হচ্ছে সে তার রাস্তা হারিয়ে ফেলেছে। অথচ এই গলি তার অনেক দিন ধরেই চেনা। খুব ভালো করেই চেনা।
তার বমি আসছে। সে গলির ঠিক মাঝখানটায় এসে পড়ে গেল। পরার সাথে সাথে কোন এক গলিতে একসাথে ডেকে উঠা কিছু কুকুরের ডাক শুনলে। কিছুক্ষণ পরে তার আর কিছুই মনে নেই। সে ঘুমে তলিয়ে গেল।
(৩) কয়েক বছর পর। রাত প্রায় ১টা বাজে। পূর্নীমার রাত। সমস্ত শহর জুড়ে জোছনা ছড়িয়ে পড়েছে। এক সুখি দম্পতি কোন এক গলির মধ্যে পাশাপাশি হাটছে। তাদের মাঝখানে তাদের একমাত্র সন্তান তন্ময়। সবাই মোটামুটি চুপ করে আছে। শুধু তন্ময় একটু পরে পরে তার বাবাকে বলছে বাবা আমরা কোথায় যাচ্ছি? তার বাবা বলে বাবা আমরা কোথাও যাচ্ছি না। আমরা হাটতে বেরিয়েছি। তারা হাটতে হাটতে একটা গলির একেবারে মাথায় চলে আসলো। চারিদিক জন-মানবহীন। শুধু একটা বাচ্চা তার বাবা-মায়ের আঙ্গুল ধরে দাঁড়িয়ে আছে। সে এর আগেও এখানে দু-তিন বার এসেছে। তারা দাঁড়িয়ে আছে চুপ করে। তন্ময় আবার তার বাবাকে জিজ্ঞেস করলো-বাবা আমরা এখানে দাঁড়িয়ে আছি কেন? তার বাবা বলল- বাবা আমার আর তোমার আম্মুর এই জায়গাটা অনেক পছন্দের। কেন বাবা? করেক বছর আগে এখানে ঠিক এই দিনটাতে একটা ছেলে প্রচন্ড জ্বরে অজ্ঞান হয়ে গিয়েছিলো। তারপর কি হয়েছিলো বাবা? তারপর সুন্দর একটা তরুণী এসে ঐ তরুণকে উদ্ধার করে কোন একটা হাসপাতালে নিয়ে যায়।
ছেলেটার জ্ঞান ফিরে প্রায় ৪৮ ঘন্টা পরে। সে জেগে দেখে তার সবচাইতে প্রীয় একটা মানুষ তার পাশে তার হাত ধরে বসে আছে। তার চোখ জলে ভরে আছে। চোখে কান্নার কারণে কাজল লেপ্টে আছে। এক সাথে সে কাঁদছে আবার এক সাথে সে হাসছে। কি অপূর্ব দৃশ্য। মেয়েরা এই জিনিসটা খুব ভালো পারে। ছেলেটা মেয়ের দিকে তাকিয়ে আছে।
-তুমি কখন আসলে?
-দু'দিন আগে।
-তোমার ত এখানে থাকার কথা না !
-হুম ! অবশ্যই এখানে থাকার কথা না। তোমার বাসায় থাকার কথা।
-মানে?
-অহ্ ! আমার তোমার বাসার থাকার কথা না? তোমার বউ হয়ে।
-তুমি না আমাকে চিঠি দিয়ে না করে দিলে !
-হুম করেছিলাম। তুমি ত আমার আমাকে অনেক বার যন্ত্রণা দিয়েছিলে। আমিও একটু তোমাকে যন্ত্রনা দিতে চাইলাম। দেখছিলাম তুমি সহ্য করতে পার কিনা?
-কি দেখলে?
- তুমি যথেষ্ট শক্ত মানুষ।
-হা ! হা ! হা!
-হাসছো কেন? তবে এখন পর্যন্ত বিয়ে না হয়ে বড় বাঁচা বেঁচে গেছি।
-কি রকম?
-আমি কোন রোগী বিয়ে করতে পারবো না। রোগী আমার একদম পছন্দ না। তার উপর যে রোগী হাসপাতালের বেডে শুয়ে থাকে। হাসপাতালে স্যাভলন আর ফিনাইলের গন্ধ আমার মাথা ধরে যায়।
-ত গত দু'দিন এখানে কেন থাকলে?
-একজন মানুষ হিসেবে একজন মানুষের পাশে দাঁড়ানো আমার কর্তব্য। কথাটা বলেই তরুণী হেসে ফেললো।
তরুণ তাকিয়ে আছে তরুণীর দিকে। সেই পরিচিত প্রীয় মুখ। এই দু'দিন ভালোই কান্না-কাটি করেছে বুঝা যাচ্ছে। নিশ্চয় ঘুমাতে পারেনি, চোখের নিচে হালকা কালি পরে গেছে। অবশ্য তাতে দেখতে আরো বেশী মায়া লাগছে। মেয়েটা উঠে যেতে লাগলো, ছেলেটা তাকে থামিয়ে দিয়ে বলল- কোথায় যাচ্ছ? ঔষধ আনতে। যেতে হবে না। তুমি আমার হাত ধরে বসে থাক কিছুক্ষণ। এমনিতেই আমি সুস্থ হয়ে যাব। মেয়েটা ছেলেটার হাত ধরে বসে আছে। মেয়েটার এখন আর ফিনাইলের গন্ধ নাকে আসছে না। মনে হচ্ছে কোথাও থেকে বেলী ফুলের গন্ধ আসছে। কিন্তু আশ্চর্য্যের বিষয় আশে-পাশে কোন বেলী ফুল গাছ নেই। আর হাসপাতালে কেউ নিশ্চয় বেলী ফুল নিয়ে ঢুকে না? আচ্ছা এমন হচ্ছে কেন? তরুণ বিস্ময় নিয়ে তরুণীর দিকে তাকিয়েই আছে ।
-কি এভাবে তাকিয়ে আছ কেন?
-তোমাকে দেখছি।
-তোমার চোখে ত চশমা নেই। কিভাবে আমাকে দেখছো। তুমি ত চশমা ছাড়া কিছুই দেখ না। অন্ধ বাবা কোথাকার। (হাসছে)।
-চশমা ছাড়া আমি কিছু দেখি না তা ঠিক, তবে শুধু তোমাকে দেখতে আমার চশমা লাগে না। এমনিতেই দেখতে পাই।
-হয়েছে অনেক। আর কবি সাজতে হবে না।
-এই নাও তোমার চশমা।
- এটাত নতুন মনে হচ্ছে।
-নতুন মনে হচ্ছে না, এটা নতুনই। ঐদিন রাতে তোমার চশমা ভেঙ্গে গেছে। অনেক কষ্টে এই বুড়ো টাইপ চশমা তোমার জন্য যোগাড় করেছি। মোটা ফ্রেমের মোটা কাঁচের চশমা কোথাও পাওয়া যাচ্ছিলো না।
-যে কোন একটা নিয়ে আসলেই পারতে।
-যে কোন একটা নিয়ে আসলে, তোমার ঐ চাদরে চশমার মোটা কাঁচ ঘষে-ঘষে পরিস্কার করা কিভাবে দেখতাম?
তন্ময়ের বাবা এই গল্পটা এর আগেও তন্ময়ের কাছে অনেক বার করেছে। তখন অবশ্য তন্ময় কিছুই বুঝত না। এখন সে কথাও বলতে পারে আবার কিছু কিছু বুঝতেও পারে। তন্ময়ের বাবার এই গল্পটা করতে অনেক ভালো লাগে। যত বার করে ততবারই। তন্ময় তার বাবাকে জিজ্ঞেস করলো-বাবা তুমি কি ঐ ছেলাটাকে আর মেয়েটাকে চেন? হ্যাঁ চিনি। তন্ময় তার মাকে জিজ্ঞেস করলো- আচ্ছা মা তুমিও কি চেন? তন্ময়ের মা হেসে বলল- হ্যাঁ বাবা আমিও চিনি।
তারা আবার রাস্তা ধরে হাটা শুরু করলো। চারিদিকে জোছনা আরো উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে। সব কিছুর গায়ে জোছনার একটা আভা পরে আছে। চারপাশে বিদ্যুৎ না থাকায় জোছনাটা আজকে আরো ভালো লাগছে। তারা হেটে যাচ্ছে। তন্ময় আবার তাদের মাঝখানে বাবা-মায়ের আঙ্গুল ধরে হাটছে। দূরের কোন এক গলি থেকে কুকুরের ডাক শোনা যাচ্ছে।অনেক দিনের চেনা সেই ডাক নগরীর এই জোছনা রাতে।
©somewhere in net ltd.