![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ফাল্গুন প্রাতের উতলা গো, চৈত্র রাতের উদাসী
বছর দেড়েক আগের কথা। আমার এক সহকর্মীর বিসিএস পুলিশ ক্যাডারে চাকুরী হয়েছে। কিন্তু তিনি ঠিক বুঝে উঠতে পারছেন না কি করবেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে মাস্টারি করবেন না পুলিশের বড়বাবু (অবজ্ঞার্থে নয়) হবেন। অবশেষে তিনি অর্থ বিত্ত ও ক্ষমতার হাতছানিতে কাত হলেন। এ শুনে আমার আরেক সহকর্মী বলছেন, “এত আরামের চাকুরী ছেড়ে পুলিশে যাবে? আমারও সুযোগ ছিল কিন্তু রিলাক্সের কথা চিন্তা করে যাইনি।”
আমি আবাক হলাম। এরা এত আরাম, এত রিলাক্স পায় কোথায়। না অর্থ, না বিত্ত, না ক্ষমতা। আমি মনকলা ছাড়া কিছুইতো দেখিনা। তবে সুখ পাই, যখন ছাত্র-ছাত্রীদের মাঝে থাকি, যখন ক্লাসে থাকি। এ সবে যদি আরাম হয় শিক্ষকতা আরামের। আর এ আরামের জন্য ঘুম হারাম করতে হয়।
আমার মনে হয় শিক্ষকতা ও রাজনীতি এ দু’টি খুব কঠিন কাজ। এখন শুনি বাংলাদেশে এ দু’টি খুব সহজ কাজ। ছাত্র-ছাত্রী ক্লাস থেকে বেরিয়ে গেলেও আপনি শিক্ষক। আপনি পড়াতে পারেন আর না পারেন আপনি শিক্ষক। গবেষণা করেন আর না করেন আপনি শিক্ষক। আবার জনগণ জুতা মারলেও আপনি রাজনীতিক। দেশ রসাতলে গেলেও আপনি রাজনীতিক। রাজনীতি ও শিক্ষকতা পেশা, নেশা আরো অনেক কিছু। বাংলাদেশে পেশাদার শিক্ষক ও রাজনীতিক হাতেগোনা।
এ দু’টি পেশার প্রধান চ্যালেঞ্জ হল সবাইকে খুশি রাখা। লিঙ্কনের কথায়, “You can please some of the people some of the time all of the people some of the time some of the people all of the time but you can never please all of the people all of the time.” কিন্তু উপরোক্ত দু’টি পেশায় অসাধ্যের সাধণা করতে হয়। লেকচার থিয়েটারের ডায়াসে একজন শিক্ষকঃ শিক্ষক,মোটিভেটর, কাউন্সিলর, ফিলোসফার, বক্তা, অভিনেতা, এমনকি সার্কাসের ক্লাউন। এক অঙ্গে অনেক রূপ। বহুরুপী। এ বড় কঠিন কাজ। ক্লাসে ১০০ ছাত্র-ছাত্রীর হরেক রকমের রুচি,হরেক রকমের ব্যাকগ্রাউন্ড, হরেক রকমের চিন্তা চেতনা ও হরেক রকমের পারিবারিক টানাপোড়েন। শিক্ষক সবারই শিক্ষক। ক্লাসে যে প্রথম হবে তার, যে শেষতম হবে তারও। রাজনীতিও তেমনি, ফুটপাতের চেরাগ আলী থেকে সচিবালয়ের মিস্টার রবার্ট(রবি) সবাই রাজনীতিকের দৃষ্টি সীমায়।
ছাত্র-ছাত্রীরা কাস্টমার বা কনজ্যুমার কোনটাই নয়। তারা র-মেটারিয়াল। র-মেটারিয়াল থেকে দেশ ও বিদেশের যুতসই প্রোডাক্ট তৈরীর চেষ্টা করবেন একজন শিক্ষক। দেশ কাস্টমার, প্রোডাক্ট কিনবে। জনগণ কনজ্যুমার, তারা প্রোডাক্ট ভোগ করবে। গ্লোবাল ভিলেজে সে প্রোডাক্ট চলবে যেটা আন্তর্জাতিক মানের। বিএসটিআই এর অনুমোদনে চলবে না, আইএসএসও এর সনদ লাগবে। এর পরও কী রিলাক্স থাকে? আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় গুলো কী সময়ের দাবি মেটাতে পারছে?
©somewhere in net ltd.