নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মডারেশনের সকল অস্বচ্ছ সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানাই

জীবন চলে যাচ্ছে, এইতো

একলা একজন

মডারেশনের সকল অস্বচ্ছ সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানাই

একলা একজন › বিস্তারিত পোস্টঃ

(১৮+) রক্ষিবাহিনীর কিছু স্মৃতিঃ কম্যুনিষ্ট নেতা শান্তি সেনের স্ত্রী শ্রীমতি অরুণা সেন

০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১০ ভোর ৪:১৫

দুর্বল মনের লোক হলে পোষ্টটি পড়বেন না





১৯৭৩ সালের বাংলা আশ্বিন মাস। বিপ্লবী কম্যুনিষ্ট আন্দোলনের সাথে জড়িত অরুনা সেন, রানী সিংহ ও হনুফা বেগমকে ফরিদপুর জেলার মাদারীপুর মহকুমার রামভদ্রপুর গ্রাম থেকে রক্ষীবাহিনী ধরে নিয়ে যায়। কিন্তু সরকার তাদের বিরুদ্ধে কোন মামলা দায়ের করেনি। তাদেরকে কোন আদালতেও হাজির করেননি। ঢাকার বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় এ নিয়ে অনেক লেখালেখি হয় এবং পরে সুপ্রীম কোর্টে তাদের পক্ষে রীট আবেদন করার পর কোর্টের নির্দেশে তাদেরকে আদালতে হাজির করা হয়। মামলার শুনানির সময় সরকার তাদের বিরুদ্ধে কোন প্রমাণযোগ্য অভিযোগ আনতে অক্ষম হওয়ায় সুপ্রীম কোর্ট অবিলম্বে তাদের তিনজনকেই বিনা শর্তে মুক্তিদানের নির্দেশ দেন। অরুণা সেন ও অন্যান্যদের পক্ষে এই মামলা পরিচালনা করেছিলেন ব্যারিষ্টার মওদুদ আহমদ ও ব্যারিষ্টার জমিরুদ্দিন সরকার।



মুক্তি পাবার পর আওয়ামী লীগ সরকারের অন্যায়-নির্যাতনের স্বরূপ প্রকাশের জন্য শ্রীমতি অরুণা সেনের সংবাদপত্রে একটি বিবৃতি দেন। তিনি বলেন, “গত ১৭ই আশ্বিন রক্ষীবাহিনীর লোকেরা আমাদের গ্রামের ওপর হামলা করে। ঐদিন ছিল দূর্গাপূজার দ্বিতীয় দিন। খুব ভোরে আমাকে গ্রেফতার করে। গ্রামের অনেক যুবককে ধরে বেদম মারপিট করে। লক্ষণ নামের একটি কলেজের ছাত্র ও আমাকে ধরে তারা নড়িয়া রক্ষীবাহিনীর ক্যাম্পে নিয়ে যায়। সেখানে আমাকে জিজ্ঞাসা করে আমার স্বামী শান্তি সেন ও পুত্র চঞ্চল সেন কোথায়? বলে তারা রাষ্ট্রদ্রোহী, তাদের ধরিয়ে দিন। আরো জিজ্ঞাসাবাদের পর সন্ধ্যার দিকে তারা আমাকে ছেড়ে দেয়। লক্ষণকে সেদিন রেখে পরদিন ছেড়ে দেয়। সে যখন বাড়ি ফেরে, দেখি বেদম মারের ফলে সে গুরুতররূপে আহত ও অসুস্থ হয়ে পড়েছে। চার/পাঁচ দিন পর আবার তারা আমাদের গ্রামের উপর হামলা চালায়। অনেক বাড়ি তল্লাশী করে। অনেককে মারধর করে। কৃষ্ণ ও ফজলু নামের দু’জন যুবককে তারা মারতে মারতে নিয়ে যায়। আজও তারা বাড়ি ফিরে আসেনি। তাদের আত্মীয়রা ক্যাম্পে গিয়ে তাদের খোঁজ করলে বলে দেওয়া হয় তারা সেখানে নেই। তাদেরকে খুন করে গুম করে ফেলা হয়েছে বলেই মনে হয়। এরপর মাঝে মাঝেই তারা গ্রামে এসে যুবক ছেলেদের খোঁজ করত।



গত ৩রা ফেব্রুয়ারী ১৯৭৪ রাতে রক্ষীবাহিনী এসে সম্পূর্ণ গ্রামটিকে ঘিরে ফেলে। ভোরে আমাকে ধরে নদীর ধারে নিয়ে গেল। সেখানে দেখলাম, গ্রামের উপস্থিত প্রায় অধিকাংশ সক্ষম দেহী পুরুষ এমনকি বালকদের পর্যন্ত এনে হাজির করা হয়েছে। আওয়ামী লীগের থানা সম্পাদক হোসেন খাঁ সবকিছুর তদারকি করছে। আমার সামনে রক্ষীবাহিনী উপস্থিত সকলকে বেদম মারপিট শুরু করে। শুনলাম এদের ধরতে গিয়ে বাড়ির মেয়ে-ছেলেদেরও তারা মারধর করে এবং অনেকক্ষেত্রে অশালীন আচরণ করেছে। এরপর আমাকে রক্ষীবাহিনীর কমান্ডার হুকুম করল পানিতে নেমে দাড়াতে। সেখানে নাকি আমাকে গুলি করা হবে। আমি নিজেই পানির দিকে নেমে গেলাম। ওরা রাইফেল উচিঁয়ে তাক করল গুলি করবে বলে। কিন্তু পরষ্পর কী সব বলাবলি করে রাইফেল নামিয়ে নিল। আমি কাদাঁ-পানিতে দাড়িয়েই থাকলাম। কমান্ডার গ্রেফতার করা সবাইকে হিন্দু মুসলমান দুই কাতারে ভাগ করে দাড় করালো। মুসলমানদের উদ্দেশ্যে বক্তৃতা দিয়ে বলল, ‘মালাউনরা আমাদের দুশমন। তাদের ক্ষমা করা হবে না। তোমরা মুসলমানরা মালাউনদের সাথে থেকো না। তোমাদের এবারের মত মাফ করে দেয়া হল।’ এই বলে কলিমুদ্দিন ও মোস্তাফা নামের দু’জন মুসলমান যুবককে রেখে বাকি সবাইকে এক একটা বেতের বাড়ি দিয়ে বলল, ‘ছুটে পালাও’। তারা ছুটে পালিয়ে গেল। আমার পাক বাহিনীর কথা মনে পড়ল। তারাও বিক্ষুব্ধ জনতাকে বিভক্ত করতে এমনিভাবে সাম্প্রদায়ীকতার আশ্রয় নিয়েছিল। পার্থক্য শুধু তারা ধর্মের নামে সাম্প্রদায়ীকতার আশ্রয় নিত আর এই ধর্মনিরপেক্ষতার ধব্জাধারীরা ভন্ডামীর আশ্রয় নিচ্ছে। আমাকে ছেড়ে দিয়ে ওরা কলিমুদ্দিন ও মোস্তাফাসহ ২০জন হিন্দু যুবককে নিয়ে রক্ষীবাহিনীর ক্যাম্পের দিকে রওনা হল। তিনজন ছাড়া এরা সবাই পেশায় জেলে। মাছ ধরে কোনরকমে তারা জীবিকা নির্বাহ করে। তাদের আত্মীয়-স্বজনরা সব আকুল হয়ে কান্নাকাটি করতে থাকল। সে এক হৃদয় বিদারক দৃশ্য! সন্ধ্যার সময় কলিমুদ্দিন, মোস্তাফা, গোবিন্দনাগ ও হরিপদ ঘোষ ছাড়া বাকি সবাই গ্রামে ফিরে এল। আমি গেলাম তাদের দেখতে। দেখলাম তারা সবাই চলতে অক্ষম। সর্বাঙ্গ ফুলে গেছে তাদের। বেত ও বন্দুকের দাগ শরীর কেটে বসে গেছে। চোখ-মুখ ফোলা। হাতপায়ের গিরোতে রক্ত জমে আছে। তাদের কাছে শুনলাম, সারাদিন দফায় দফায় তাদের চাবুক মেরেছে। গলা ও পায়ের সঙ্গে দড়ি বেধে পানিতে বার বার ছুড়ে ফেলে ডুবিয়েছে। পিঠের নিচে ও বুকের উপর পা দিয়ে দু’দিক থেকে দু’জন লোক তাদের উপর উঠে দাড়িয়েছে। মই দিয়ে ডলেছে। এদের অনেককেই আত্মীয়রা বয়ে এনেছে। এদের অবস্থা দেখে মনটা খুবই খারাপ হয়ে গেল। ভাবলাম, যারা দিনরাত্রি পরিশ্রম করেও একবেলা পেটপুরে খেতে পায়না, অনাহার, দুঃখ-দারিদ্রের জ্বালায় আজ অর্ধমৃত তাদের ‘মরার উপর খাড়ার ঘাঁ’র অবসান কবে হবে? যে শাসকরা মানুষের সামান্য প্রয়োজন ভাত-কাপড়ের ব্যবস্থা করতে পারছে না, চুরি, ডাকাতি, রাহাজানী, শোষণ, নির্যাতন যারা বন্ধ করতে পারছে না, তারা কোন অধিকারে আজ নিঃস্ব মানুষের উপর চালাচ্ছে এই বর্বর নির্যাতন? অবশেষে চরম নির্যাতন আমার উপরও নেমে এল। ৬ই ফেব্রুয়ারীর রাতে ভোর না হতেই রক্ষীবাহিনী ঘুম থেকে আমাকে তুলল। আমাকে বাড়ির বাইরে নিয়ে এলে দেখলাম রানীও রয়েছে। আমাদের নিয়ে তারা দুই মাইল দূরে ভেদরগঞ্জ রক্ষীবাহিনীর ক্যাম্পের দিকে রওনা হল। রাস্তায় তারা রানীর প্রতি নানারকমের অশ্লীল উক্তি করেছিল। ক্যাম্পে পৌঁছে দেখলাম সেখানে কলিমুদ্দিন, মোস্তাফা, গোবিন্দনাগ এবং হরিপদও রয়েছে। বুঝতে পারলাম তাদের উপর চরম দৈহিক নির্যাতন করা হয়েছে। বিশেষ করে কলিমুদ্দিন ও মোস্তাফাকেই বেশি অসুস্থ দেখলাম। কলিমুদ্দিন ও মোস্তাফা দুই ভাই। এদের সংসারে আর কোন সক্ষম ব্যক্তি নেই। অপরের জমিতে চাষ করে ওরা কোনরকমে জীবিকা নির্বাহ করে। এরা বিবাহিত ও ছোট ছোট ছেলেমেয়ের জনক। আমরা ক্যাম্পে আসতেই অনেক রক্ষীবাহিনী এসে আমাদের ঘিরে দাড়াল। কেউ অশ্লীল মন্তব্য করে, কেউ চুল ধরে টানে, কেউ চড় মারে, কেউ খোঁচা দেয়। এমন সব বর্বরতা। কিছুক্ষণ পর আমাদের রোদের মধ্যে বসিয়ে রেখে তারা চলে গেল। সন্ধ্যায় আমাকে উপরে দোতালায় নিয়ে গেল। কিছুক্ষণ পরেই শুনলাম রানীর হৃদয়বিদারী চিৎকার। প্রায় আধঘন্টা পর আর্তনাদ স্তিমিত হয়ে থেমে গেল। নিঃস্তব্ধ রাতের অন্ধকার ভেদ করে ভেসে আসছিল বেতের সপাং সপাং শব্দ আর পাশবিক গর্জন। রানীকে যখন এনে তারা কামরার মধ্যে ফেলল, রাত্রি তখন কত জানিনা। রানীর অচৈতন্য দেহ তখন বেতের ঘায়ে ক্ষতবিক্ষত। রক্ত ঝড়ছে। জ্ঞান ফিরলে রানী পানি চাইলো, আমি তাকে পানি খাওয়ালাম। রানী আস্তে আস্তে কথা বলতে পারল। রাত্রি তখন ভোর হয়ে এসেছে। রানীর মুখে শুনলাম উপরে ভেদরগঞ্জ ও ডামুড্যার আওয়ামী লীগ সম্পাদকরা এবং ঐ দুই স্থানের ক্যাম্প কমান্ডাররা উপস্থিত ছিল। তারা শান্তি সেন ও চঞ্চলকে ধরিয়ে দিতে বলে এবং অস্ত্র কোথায় আছে জিজ্ঞাসা করে। রানী কিছুই জানে না বলায় তাকে এমন সব অশ্লীল কথা বলে যা কোন সভ্য মানুষের পক্ষে বলা তো দূরের কথা কল্পনা করাও সম্ভব নয়। কিছুক্ষণ জিজ্ঞাসাবাদ ও গালি বর্ষণের পর ভেদরগঞ্জ ক্যাম্প কমান্ডার বেত নিয়ে তার উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে এলোপাতাড়ি এমন পেটাতে থাকে যে তিনখানা বেত ভেঙ্গে যায়। আবার জিজ্ঞাসা করে, শান্তি ও চঞ্চল কোথায়? রানীর একই উত্তর। ক্ষীপ্ত হয়ে রানীকে তারা সিলিং এর সাথে ঝুলিয়ে দেয় এবং দু্‌ই কমান্ডার এবার একই সাথে চাবুক দিয়ে পেটাতে শুরু করে। মারার সময় অসহ্য যন্ত্রণায় রানী বলেছিল, ‘আমাকে এভাবে না মেরে গুলি করে মেরে ফেলুন।’ জবাবে একজন বলে, ‘সরকারের একটা গুলির দাম আছে। তোকে সাতদিন ধরে পিটিয়ে মেরে ফেলব। এখন পর্যন্ত মারার দেখেছোটা কি?’ অল্পক্ষণ পরেই রানী অচেতন হয়ে পড়ে। কিন্তু তাদের চাবুক চালানো বন্ধ হয়নি। যখন জ্ঞান ফেরে রানী দেখে সে মেঝেতে পরে আছে। পানি চাইলে তারা তাকে পানি দেয় নাই। ৮ই ফেব্রুয়ারী প্রথমে আমাকে ও পরে রানীকে দোতালায় নেয়া হয়। সেখানে উপস্থিত ছিলেন ডামুড্যার আওয়ামী লীগ সেক্রেটারী ফজলু মিঞা ও ভেদরগঞ্জের সেক্রেটারী হোসেন খাঁ। তারা চেয়ারে বসে আছেন। আমাকে বলল, তোমার স্বামী ও ছেলেকে ধরিয়ে দাও। অস্ত্র কোথায় আছে বলে দাও। তারা ডাকাত, অস্ত্র দিয়ে ডাকাতি করে। আমি বললাম, তারা ডাকাত নয়। তারা সৎ দেশপ্রেমিক, আমার স্বামী রাজনীতি করেন এ কথা কে না জানে। দেশের সাধারণ লোকের অতি প্রিয় ও শ্রদ্ধেয় তিনি। রানীকে তারা একই প্রশ্ন করেন। রানী কিছুই জানে না বলায় তারা ক্ষীপ্ত হয়ে উঠে। ডামুড্যা ক্যাম্পের কমান্ডার করম আলী এবং ভেদরগঞ্জ ক্যাম্প কমান্ডার ফজলুর রহমান আমাদের অশ্লীল গালাগাল দিতে শুরু করে এবং আমাকে ও রানীকে একসঙ্গে ঝুলিয়ে দিয়ে রানীর বস্ত্র খুলে নেয়। তারপর আমাদের দু’জনকে দু’দিক থেকে চাবুক মারতে থাকে। জ্ঞান হারিয়ে ফেলি। জ্ঞান হলে দেখি দু’জনেই মেঝেতে পরে আছি। রানীর সর্বাঙ্গ দিয়ে রক্ত ঝরছে। আমার গায়ে কাপড় থাকায় অপেক্ষাকৃত কম আহত হয়েছি। তবুও এই রুগ্ন বৃদ্ধ দেহে এই আঘাতই মর্মান্তিক। সর্বাঙ্গ ব্যাথায় জর্জরিত। তৃষ্ণায় বুক শুকিয়ে যাচ্ছে। নড়বার ক্ষমতা নেই। ওরা আমাদের দিকে তাকিয়ে নারকীয় হাসি হাসছে। এদের হুকুমে দু’জন সিপাই আমাকে টেনে তুলল। আমি অতিকষ্টে দাড়াতে পারলাম। রানী পারল না। দু’জন রক্ষী তার দুই বগলের নিচে হাত দিয়ে তাকে টেনে তুলল ও তার গায়ে কাপড় জড়িয়ে দিল। তারপর টানতে টানতে নিচে নামিয়ে নিয়ে এল। কমান্ডার পেছন থেকে নির্দেশ দেয় ওকে ভালো করে হাটা নয়তো মরে যাবে। সকালে কমান্ডার কয়জন রক্ষীসহ রানীকে নিয়ে গ্রামের দিকে রওনা হল। বলল, ‘বাচঁবিতো না, চল তোর মাকে দেখিয়ে আনি।’ রানীর সর্বাঙ্গ ফুলে কালো হয়ে গিয়েছে। পা ফেলবার ক্ষমতা নেই। সে অবস্থায় তাকে হেচঁড়াতে হেচঁড়াতে দু’মাইল পথ টেনে নিয়ে যাওয়া হল। রানীর মা রানীকে দেখেই অজ্ঞান হয়ে যান। কমান্ডার রানীকে তার মার মাথায় পানি দিতে বলে। রানীর মার জ্ঞান এলে রানীর চেহারা এমন কেন জিজ্ঞেস করায় কমান্ডার বলে পুকুর ঘাটে পড়ে গিয়ে আঘাত পেয়েছে। রানীকে ছেড়ে দেবার অনুরোধ জানালে কমান্ডার বলে ‘খাসী খাওয়ালে ফিরিয়ে দিয়ে যাব।’ এরপর আবার দু’মাইল রাস্তা হেচঁড়াতে হেচঁড়াতে তাকে ক্যাম্পে ফিরিয়ে আনা হল। ঐ দিন ছিল ৯ই ফেব্রুয়ারী ১৯৭৪। হনুফাকেও তারা ধরে নিয়ে এল ঐদিন। করিম নামের আর একটি কৃষক যুবককেও ওরা ধরে এনেছে দেখলাম রামভদ্রপুর থেকে। তাকে এত মারা হয়েছে যে তার অবস্থা অত্যন্ত সঙ্গীন। নড়িয়া থানার পন্ডিতসার থেকেও একজন স্কুল শিক্ষক ও দু’জন যুবককে এনেছে দেখলাম। বিপ্লব নামের একটি ছেলে নাকি মারের চোটে পথেই মারা যায়। রক্ষীবাহিনীর সিপাইরা বলাবলি করছিল। একজন জল্লাদ গর্জন করে বলছিল, ‘দেখ এখনও হাতে রক্ত লেগে আছে!’ শুনেছি মতি নামের আর একটি যুবককেও তারা পিটিয়ে মেরেছে। আর আমাদের ধরে আনার দু’দিন আগে কৃষি ব্যাংকের পিয়ন আলতাফকে পিটাবার পর হাত-পা বেধে দোতালার ছাদ থেকে ফেলে মেরে ফেলেছে। ৯ তারিখ দুপুরের অল্প পরে তারা হনুফা, রানী ও আমাকে নিয়ে গেল পুকুরের ধারে। সেখানে আমাদের একদফা বেত দিয়ে পিটিয়ে চুবানোর জন্য পানিতে নামাল। প্রথমে ওরা আমাদের সাতঁরাতে বাধ্য করল। আমরা ক্লান্ত হয়ে কিনারায় উঠতে চেষ্টা করি, ওরা আমাদের বাঁশ দিয়ে ঠেলে দূরে সরিয়ে দেয়। পরিশ্রান্ত হয়ে যখন আমরা আর সাঁতরাতে পারছিলাম না তখন পানি থেকে তুলে আবার বেত মারতে থাকে। শেষের দিকে আমরা যখন আর সাতঁরাতে পারছিলাম না, তখন আমাদের পানিতে ডুবিয়ে দেহের উপর দু’পা দিয়ে দাড়িয়ে থাকত।



এভাবে আমাদের তিন দফা পেটানো ও চুবানো হয়। কিছুক্ষণ আগেই করিম মারের চোটে মরে গিয়েছে। আমাদের সঙ্গে আর একটি অল্প বয়সী যুবককে চুবিয়ে অচেতন করে ফেলেছিল। তাকে ঘাটলার উপর ফেলে রাখে। আমার আঁচল দিয়ে গা মোছানোর সময় হঠাৎ ছেলেটি চোখ খুলে তাকায়। আমি চোখের জল রাখতে পারলাম না। রক্ষীরা তাকে সরিয়ে নিয়ে যায়। পরে শুনেছি ছেলেটাকে নাকি মেরে ফেলেছে। সন্ধ্যার অল্প আগে আমাদের পানি থেকে তুলে ভিজা কাপড়েই থাকতে বাধ্য করল। দারুন শীতে আমরা কাঁপছি। প্রচন্ড জ্বর এসে গেছে সকলের। এমনি করেই রাতভর ছালার চটের উপর পরে থাকলাম। পরদিন রাতে রানীকে আবার নিয়ে গেল দোতালায়। সেখানে আবার তাকে ঝুলিয়ে বেত মারল। ১১ তারিখে আবার রানীর ওপর চলল একই অত্যাচার। রানী জ্ঞান হারাল। রক্ষী সিপাইদের বলাবলি করতে শুনলাম ‘রানী মরে গিয়েছে’। রানীর কাছে শুনলাম তার যখন জ্ঞান হল তখন সে দেখে তার পাশে ডাক্তার বসা। রানী জিজ্ঞেস করে, ‘আপনি কে,আমি কোথায়?’ ডাক্তার জবাব দেয়, ‘আমি ডাক্তার, তুমি কথা বলো না।’ কিছুক্ষণ পর ডাক্তার চলে গেলে রানীকে তারা ধরাধরি করে নিচে আমাদের কাছে নিয়ে এল।



একজন সিপাই রানী ও হনুফাকে বলল, ‘তোরাতো মরেই যাবি। তার আগে আমরা প্রতি রাতে পাঁচজন করে তোদের ভোগ করব। তারা অবশ্য ‘ভোগ’ শব্দটি বলে নাই, বলেছিল অতি অশ্লীল কথা। একদিন রাতে দু’জন রক্ষী সিপাই ঘরে ঢুকে আলো নিভিয়ে দেয় এবং রানী ও হনুফার মুখ চেপে ধরে। ধস্তাধস্তি করে তারা ছুটে গিয়ে চিৎকার করে। চিৎকার শুনে ক্যাম্পের অন্য রক্ষীরা ছুটে আসে। কমান্ডারও আসে। ওরা তাকে সব বললে সে বলে, ‘খবরদার এ কথা প্রকাশ করবি না। তাহলে মেরে ফেলব।’



রক্ষী সিপাইদের কারও কারও মাঝে মানবতাবোধের লক্ষণ পাচ্ছিলাম। তাদেরই একজন সিপাইকে জিজ্ঞেস করলাম, ‘তুমি কি পর্যন্ত লেখাপড়া করেছ?’ প্রশ্ন শুনে সে চমকে উঠল। বলল, ‘বাংলাদেশে লেখাপড়া দিয়ে কি করব? আমরা জল্লাদ, জল্লাদের আবার লেখাপড়ার দরকার কি?’ এই বলে সে দে ছুট্‌। মনে হয় যেন চাবুক খেয়ে একটি ছাগল ছুটে পালাল। রক্ষী সিপাইদের কানাঘুষায় শুনছিলাম, আমাকে আর হনুফাকে অন্যত্র কোথাও পাঠিয়ে দেবে আর রানী ও অন্যান্য পুরুষ বন্দীকে মেরে ফেলা হবে। ১২ই ফেব্রুয়ারী আমাকে ও হনুফাকে নিয়ে রক্ষীরা রওনা দিল। আমরা রানীকে ফেলে যেতে আপত্তি জানালাম। রানীও আমাদের সাথে যেতে খুব কান্নাকাটি করছিল। কমান্ডারের কাছে অনুনয়-বিনয় করছিল। কমান্ডার তার সহকর্মীদের সাথে কি যেন আলাপ করে সেদিন আমাদের পাঠানো স্থগিত রাখল। ১২তারিখ রাতেও ওরা আবার রানীকে ঝুলিয়ে হান্টার দিয়ে পেটায়। ১৩ তারিখে তারা রানীকে মারে না, কিন্তু নির্যাতনের নতুন কৌশল নেয়। দম বন্ধ করে রাখে। জোর করে চেপে ধরে রাখে নাক-মুখ-চোখ। এমনি করে জ্ঞান হারালে ওরা তাকে ছেড়ে দেয়।



১৯শে ফেব্রুয়ারী গভীর রাতে ওরা আমাদের তিনজনকে নিয়েই রওনা দিল প্রায় চার মাইল দূরে ডামুড্যা রক্ষীবাহিনী ক্যাম্পের দিকে। কলিমুদ্দিন, মোস্তাফা, গোবিন্দ ও হরিপদ থেকে গেল। রক্ষীরা বলাবলি করছিল তাদের মেরে ফেলা হবে। আমরা কিছুদূর এলে ক্যাম্পের দিক থেকে চারবার গুলির আওয়াজ পেলাম। ভাবলাম ওদের বুজি মেরে ফেলল। মনটা খুবই খারাপ হয়ে গেল। আমাদের শরীরের অবস্থা এমন ছিল যে, হাটতে খুবই কষ্ট হচ্ছিল। তবু আমরা বাধ্য হচ্ছিলাম হাটতে। বোধ হয় আমাদের অন্যত্র পাঠিয়ে দিচ্ছে। বোধ হয় বেঁচে যাব। এ চিন্তাই আমাদের হাটতে শক্তি যোগাচ্ছিল। অনেক রাতে ডামুড্যা রক্ষীবাহিনীর ক্যাম্পে পৌঁছলাম। সেখানে কিছুক্ষণ রেখে স্পীডবোট করে আমাদের নিয়ে যাওয়া হল। সর্বক্ষণ আমাদের কম্বল চাপা দিয়ে মুর্দার মত ঢেকে রাখা হল। বেদনা জর্জরিত ক্ষত-বিক্ষত শরীর। তার উপর কম্বল চাপা থাকায় শ্বাসরুদ্ধ হবার উপক্রম। যেন জ্যান্ত কবর! সমস্ত দিন আমাদের ওভাবেই রাখল। খেতে দিল না। শেষরাতে আবার কম্বল চাপা দিয়ে জিপে করে ঢাকার দিকে রওনা দিল। আবার সেই সুদীর্ঘ পথ জ্যান্ত কবরের যন্ত্রণা। ঢাকায় আমাদের প্রথমে রক্ষীবাহিনীর ডাইরেক্টরের কাছে নিয়ে গেল। সে আমাদের খুব ধমকাল। সেখান থেকে নিয়ে গেল তেজগাঁ থানায়, তারপর লালবাগ থানায়। রাতে সেখানে থাকলাম। পরদিন পাঠাল সেন্ট্রাল জেলে। সেখানে পাঁচদিন রাখার পর আমাদের নিয়ে এল তেজগাঁ গোয়েন্দা বিভাগের অফিসে। জেলে আমাদের তৃতীয় শ্রেণীর কয়েদীদের মত রাখা হত। দিনরাত সেলে বন্দী। একই আহার্য দেয়া হত। সেখানে রাজনৈতিক অভিযোগে আরোও বন্দিনী আছেন। তার মধ্যে ১৭ই মার্চে গ্রেফতারকৃত জাসদ নেত্রী মোমতাজ বেগম আছেন। অস্ত্র আইনে সাজাপ্রাপ্ত পারভীন। আরও একজন আছেন নাম রুমা। সবাইকেই তৃতীয় শ্রেণীর কয়েদী করে রাখা হয়েছে। সাধারণ কয়েদীদের মত খাটানো হচ্ছে। এর উপর জমাদারনীরা (মেয়ে সিপাই জমাদার) তাদের নিজেদের জামা-কাপড় সেলাই, কাথাঁ সেলাই, কাপড়-চোপড় ধোয়ানো সবকিছুই মেয়ে কয়েদীদের দিয়ে করিয়ে নিচ্ছে। রাজনৈতিক বন্দীরাও রেহাই পাচ্ছেন না।”

=============

পাবনার বাজিতপুরের কোরাটিয়া গ্রামের আর একটি ঘটনা। কৃষক আব্দুল আলীর ছেলে রশীদকে কিভাবে খুন করা হয় সেটা আবদুল আলীর মুখ থেকেই শুনুনঃ



“আমার সামনে ছেলেকে গুলি করে হত্যা করল। আমার হাতে কুঠার দিয়ে বলল, ‘মাথা কেটে দে, ফুটবল খেলবো।’ আমি কি তা পারি! আমি যে বাপ। কিন্তু অকথ্য নির্যাতন কতক্ষণ আর সহ্য করা যায়। অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে শেষ পর্যন্ত নিজের হাতে ছেলের মাথা কেটে দিয়েছি। রশীদ নাকি রাজনীতি করত আমি জানতাম না। একদিন মাতু আর শাহজাহান এসে ধরে নিয়ে গেল। আওয়ামী লীগ অফিসে সারারাত ওরা ওকে বেদম মার মারল। সকালে বলল এক হাজার টাকা দিলে ছেড়ে দেবে। রশীদ স্বীকার করে এল এক হাজার টাকা দেবার। আমার কাছে টাকা চাইল। কিন্তু আমি দিন আনি দিন খাই, মজুর মানুষ। হঠাৎ তিন দিনের মধ্যে এক হাজার টাকা কোত্থেকে দেব? বললাম, তুই বরং পালিয়ে সিলেট চলে যা। রশীদ সিলেট চলে গেল। কিন্তু ১০-১২ দিন পর ফিরে এসে বলল, ‘বাবা মন মানেনা তোমাদের ফেলে থাকতে।’ সিলেট থেকে ফেরার পরই কঠিন অসুখে পড়ল। টাইফয়েড। অসুখ সারার পর একদিন তার মাকে বলল, ‘মা আজ ভাত খাব।’ তার মা শৈলমাছ দিয়ে তরকারী রানল। এমন সময় আওয়ামী লীগের পান্ডারা রক্ষীবাহিনীসহ বাড়ি ঘেরাও করল। অসুস্থ মানুষ। কোন রকমে বাড়ি থেকে বের হয়ে মাঠের দিকে দৌড় দিল। বাবা আমার জানত না সেখানেও ঘাপটি মেরে বসে আছে আজরাইল। পাষন্ডরা দৌড়ে এসে ধরল তাকে। রশীদ সিরাজের পা ধরে বলল, ‘সিরাজ ভাই, বিমারী মানুষ আমায় ছেড়ে দেন।’ ছাড়ল না। তারপর বাপ-বেটা দু’জনকেই বেধে মার শুরু করল। কত হাতে পায়ে ধরলাম। এরপর মাতু গুলি করল রশীদকে। ঢলে পড়ল রশীদ। আমি নির্বাক তাকিয়ে রইলাম। মরার পর একজন বলল, ‘চল ওর কল্লাটা নিয়ে যাই ফুটবল খেলব।’ মাতু বলল, ‘হ্যাঁ। তাই নেব। তবে ওর কল্লা আমরা কাটব না। তার বাবা কেটে দেবে।’ বলেই আমার হাতে কুঠার দিয়ে বলল কেটে দিতে। আমার মুখে রা নেই। বলে কি পাষন্ডগুলো? চুপ করে আছি দেখে বেদম পেটাতে শুরু করল। বুড়ো মানুষ কতক্ষণ আর সহ্য হয়। সিরাজ এসে বুকে বন্দুক ঠেকিয়ে বলল, ‘এক্ষুনি কাট, নইলে তোকেও গুলি করব।’ ইতিমধ্যে দেড় ঘন্টার মত সময় পার হয়ে গেছে। বুঝতে পারলাম না কাটলে ওরা সত্যি আমাকেও মেরে ফেলবে কিনা? শেষে কুঠার দিয়ে কেটে দিলাম মাথা। নিয়ে সউল্লাসে চলে গেল তারা। আল্লায় কি সহ্য করব?”

মন্তব্য ৪৪ টি রেটিং +৬২/-৪

মন্তব্য (৪৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১০ ভোর ৪:২০

লুৎফুল কাদের বলেছেন: আগেই পড়েছি, এটাই ক্ষমতা লোভী মুজিবের আসল চেহারা.

২| ০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১০ ভোর ৪:২০

বোবা ছেলে বলেছেন:
-

র‌্যাব ও র‌্যাবের সাথে মিলে ছাত্রলীগ ঠিক একই কাজ করে চলেছে|

৩| ০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১০ ভোর ৪:২১

বাংলাদেশের কৃতি সন্তান আমি বলেছেন: র‌্যাব ও র‌্যাবের সাথে মিলে ছাত্রলীগ ঠিক একই কাজ করে চলেছে|

৪| ০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১০ ভোর ৪:২৪

বাঘ মামা বলেছেন: কিছু বলার ভাষা নেই

শুধু বলি এরা কোন মা'এর সন্তান,?

৫| ০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১০ ভোর ৪:৩২

আইলা বলেছেন: খুবই খারাপ কাজ করছে। জুতা মারা দরকার ধরে সবটিরে ..

৬| ০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১০ ভোর ৪:৩৩

একজন আমি বলেছেন: রক্ষীবাহিনী কে নিয়ে লেখায় এখনি মুজিবের বীজে জন্মগ্রহনকারী সোনার পুতেরা এখনি আপনার উপর ঝাপাইয়া পড়বে। কুকুরলীগরা এখন এক সাথে বসে সেহরি খাচ্ছে। খাওয়া শেষ হলেই দলবেধে ঘেউ ঘেউ করতে করতে ছুটে আসবে.......

৭| ০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১০ ভোর ৪:৩৯

বিজ্ঞান বলেছেন: "বোবা ছেলে বলেছেন:
-

র‌্যাব ও র‌্যাবের সাথে মিলে ছাত্রলীগ ঠিক একই কাজ করে চলেছে"

৮| ০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১০ ভোর ৪:৪০

আইলা বলেছেন: আপনার বর্ণণাঅনুযায়ী রক্ষীবাহিনীর সাথে এখনকার ভারতীয় BSF এর আচরণের তফাৎ দেখি না। এরা কি একই ফরমেটে গড়া ????????

৯| ০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১০ ভোর ৪:৪২

হাসান খা বলেছেন: অরুনা সেন কি এখনো বেচে আছেন? কি বিভৎস!!!!

১০| ০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১০ ভোর ৪:৪২

াঢারে ালো বলেছেন: হায়রে মানবতা !!!!!!!!!!!!!ধিক এইসব মানুষ নামধারী পশুদের

১১| ০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১০ ভোর ৪:৪৩

হতাস৮৮ বলেছেন: শুধুই কান্না.....................

১২| ০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১০ ভোর ৪:৫৯

আধাঁর রাত বলেছেন: মুজিবের পতনের মুল কারন এটাই।

০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১০ ভোর ৫:১২

একলা একজন বলেছেন: এদের দূষিত রক্ত কিন্তু এখনও ছাত্রলীগ, আওয়ামীলীগ বয়ে চলেছে।

১৩| ০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১০ ভোর ৫:০৪

নষ্ট ছেলে বলেছেন: এদেরকে পশুর সাথে তুলনা করা হলে পশুকেও অপমান করা হবে।

১৪| ০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১০ ভোর ৫:১১

অপেক্ষমান বলেছেন: তাহলে কি ধরে নেব দেশ স্বাধীনের ডাকাডাকি এইজন্যেই করেছিল??

১৫| ০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১০ ভোর ৫:১৩

রুদ্রপ্রতাপ বলেছেন: আরেক জায়গা থেকে কপি করলে যে সোর্স উল্লেখ করতে হয়, সেই ভদ্রতা টুকু কি জানা নেই?

০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১০ ভোর ৫:৩৩

একলা একজন বলেছেন: না। বাকশাল এবং আর জারজদের জন্য আমার কোনই ভদ্রতা নাই।

মাইনাচের জন্য ধন্যবাদ। আওয়ামী লীগ করলে এটা জানান দিতে লজ্জার কিছু নাই।

১৬| ০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১০ ভোর ৫:৩০

জাতি জানতে চায় বলেছেন: পইড়াতো পাকি হানাদারের কাহিনী পড়ছি বইলা মনে হয়! তারপরও বাকশাল-রক্ষীবাহিনীর জন্য আওয়ামীলীগ-বাম গুলার উথলে উঠা দরদ দেইখা বিস্মিত হইতে হয়!

০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১০ রাত ১১:১৮

একলা একজন বলেছেন: নিজেদের পরিবারই তো!

১৭| ০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১০ ভোর ৫:৩০

সাজিদ বলেছেন: প্রিয়তে নিলাম। একটা মেইল দিয়েন।

১৮| ০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১০ ভোর ৫:৩৯

রুদ্রপ্রতাপ বলেছেন: আওয়ামী লীগ করলে এটা জানান দিতে লজ্জার কিছু নাই। =p~ =p~ =p~ =p~ =p~ =p~ =p~ =p~ =p~ =p~ =p~

আমি কি জন্য মাইনাস দিয়েছি সেটা আপনি ভালো করেই জানেন! না জানার ভান করছেন কেনো জনাব বিকার গ্রস্থ?

১৯| ০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১০ ভোর ৫:৫০

দ্য বেঙ্গলি টাইমস ডটকম বলেছেন: চমৎকার পোষ্ট। সত্য কে সত্য আর সাদাকে সাদা বলা উচিত। কালোকে অবশ্যই কালো। বাংলাদেশের বাম রাজনীতির ইতিহাসের ধারাটাই এরকম। ত্যাগ আর নির্যাতন পুরোটাই তাদের, হালুয়া রুটির ষোলআনাই অন্যদের।

www.thebengalitimes.com

২০| ০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১০ ভোর ৬:২৪

শাকিউল রানা বলেছেন: আমি জানিনা ঠিক কী কারনে এই ইতিহাস, এই বর্বরতা নিয়ে কেউ কথা বলেনা। রক্ষীবাহিনীর নির্মমতার কথা তুলে ধরতে মানুষ কি ভয় পায়?

০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১০ রাত ১১:১২

একলা একজন বলেছেন: আওয়ামী লীগের একটা ক্রেডিট একটি হলো মিডিয়া সাপোর্ট পাওয়া, যেটা ভারতীয় স্পন্সরে চলে। এই যে এতগুলো পত্রিকা বাংলাদেশে, জানেনকি এদের বেশিরভাগের বেতন চলে ভারতীয় টাকায়? এরা আওয়ামী তোষণ না করলে এদের বেতন বন্ধ হয়ে যাবে। মিডিয়াতে লিখবে কে? এন্টি-আওয়ামী মিডিয়া সেই '৭৩ এ বন্ধ হয়েছিল এখনও সেই ধারাতেই চলছে

২১| ০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১০ সকাল ৭:০৯

মোহাম্মাদ রাকিবুল হাসান বলেছেন: :( আমার ছেলের বয়স দুই বছর..তার একবার খুব বেশী জ্বরের কারনে খিচুনি উঠে যায়... আমি এত জোরে চিৎকার দিয়েছিলাম যে তক্ষনি আমার গলা বসেযায়। আমার দুই বছরের ছেলে আমার কতখানি আমি সেদিন বুঝতে পেরেছিলাম...

আর এক যুবক ছেলের .......................... আহ্ !! ওই বৃদ্ধ বাবার অনুভুতি আমাদের কাউকে যেন অনুভব না করতে হয়...

০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১০ রাত ১১:১০

একলা একজন বলেছেন: এইসব পৈশাচিকতার বহু কাহিনী গ্রাম-বাংলায় ছড়িয়ে আছে এখনও।

২২| ০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১০ সকাল ৮:০৫

লাবিব ইত্তিহাদুল বলেছেন: অল্পক্ষণ পরেই রানী অচেতন হয়ে পড়ে। কিন্তু তাদের চাবুক চালানো বন্ধ হয়নি। যখন জ্ঞান ফেরে রানী দেখে সে মেঝেতে পরে আছে। পানি চাইলে তারা তাকে পানি দেয় নাই।

উফ ...

২৩| ০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১০ সকাল ৮:৫৪

মনে নাই বলেছেন: ভয়াবহ অবস্থা, ঠিক ছাত্রলীগের মতো।

০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১০ রাত ১১:০৯

একলা একজন বলেছেন: ছাত্রলীগ তো এদেরই অবৈধ জারজ সন্তান

২৪| ০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১০ দুপুর ২:৫৩

""ফয়সল অভি "" বলেছেন: স্বাধীনতার পরবর্তী রাজনৈতিক অঙ্গনে যে পরিবর্তন শুরু হয়েছিল তারপর ক্রমশঃ বিভক্তি, গুপ্তহত্যা কিংবা ক্রসফায়ার । এই ক্রসফায়ার তখন থেকেই সৃষ্টি । অনেকের আগ্রহ, তরুণ প্রজন্মের মনে হাজারও প্রশ্ন কি ঘটেছিল ৭১ পরবর্তী ৭৫ পর্যন্ত??? কেন বাকশাল এসেছিল??? কত জাসদ কর্মী হত্যা করেছিল?? ৭৫এ জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে কেন হত্যা করা হয়েছিল?? এর পেছনের কারণ কি??? ইত্যাদি জানা-অজানা তথ্য নিয়ে............
ইতিহাসের কালো অধ্যায়-সানাউল্লাহ লেখাটা পড়ুন

২৫| ০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১০ সন্ধ্যা ৬:৫৮

হাসান খা বলেছেন: আমি বুঝি না আমদের তরুন সমাজের হইলটা কি। এরা কার পা চাটা গোলাম। এত নিষ্ঠুর, নির্লজ্জ আর করুন একটা পোষ্ট তাতেও মাইনাচ। আমি এই দেশের সন্তান। আমি উপার্জন করি নিজের পরিশ্রম দিয়ে ১০০ ভাগ সৎ উপার্জন দিয়ে। আমি কোন রাজনৈতিক দলের পা চাটা গোলাম নই। আমি আওয়ামীলীগে ভোট দেই শুধু এই জন্য যে আওয়ামীলীগ ছাড়া অন্য কোন দল ক্ষমতায় গেলে আমার এলাকার উন্নয়ন হবে না। তাই বলে কি আওয়ামীলীগের মন্দ কাজগুলোকে মন্দ বলব না। যে তিন জন মাইনাচ দিয়েছেন তার কি করতেন যদি তাদের মায়ের বা বোনের অথবা কোন আত্মিয়ের ক্ষেত্রে এমনটা ঘটত। এসব দেখলে ঘেন্না লাগে তরুন সমাজের প্রতি। কেন আমাদের পা চাটা গোলাম হয়ে থাকতে হবে? কেন?

০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১০ রাত ১১:০৯

একলা একজন বলেছেন: সংখ্যাটি এখন ৪ জন। এইসব জারজ সন্তান জন্ম দেবার জন্য আওয়ামী লীগ গর্ব করতে পারে। এরা নিজের লাভের জন্য মা'কেও বিক্রি করতে পারবে

২৬| ০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১০ সকাল ৯:৩৭

ফিরোজ-২ বলেছেন: কিছু বলার ভাষা নেই

২৭| ০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১০ সকাল ৮:০৩

লালু কসাই বলেছেন: ডিমের দাম কি বাইড়া গেছে নাকি? নাকি শর্ট পড়ছে ডিমের? কামে লাগান ভাই কামে লাগান..............................

২৮| ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১০ বিকাল ৪:২৮

পৃথিবীর আমি বলেছেন: সোর্স দেন???

২৯| ০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০১০ সকাল ১১:০২

বালক বন্ধু বলেছেন: পড়তে পড়তে হারিয়ে যাচ্ছিলাম। বোঝা কঠিন এগুলো বাংলাদেশের স্বাধীনতার পরের ইতিহাস। বিশ্বাস করা আরো কঠিন। আমরা যারা মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী প্রজন্ম তাদের কাজে এই ইতিহাসগুলো একেবারেই অন্ধকারে আছে।

অনেক কিছুই বলতে মন চাচ্ছে। কিন্তু নিজেকে সামলেনিলাম। শুধু অপেক্ষা আর নতুন সূর্যের পথ চেয়ে থাকা!

৩০| ১৫ ই অক্টোবর, ২০১০ বিকাল ৫:২৯

সোহেল সি এস ই বলেছেন: +++++

৩১| ২৫ শে অক্টোবর, ২০১০ রাত ১১:৫০

চে গুয়েভারা ২ বলেছেন: মুজিবরে ত আর এমনে এমনে মারে নাই আকাম করছে তাই মরছে!!
শুধু এইটাই বলার আছে হায়রে বাংলাদেশ তুই কবে বদলাবি রে মা!! আর কত রক্ত চাইস তুই মা ......
আমার নির্‍্যাতিত বাংলা মা

৩২| ২৫ শে অক্টোবর, ২০১০ রাত ১১:৫২

পুন্ডরীকাক্ষ পুরোকায়স্থ বলেছেন: এটা অনেকদিন আগে পড়েছিলাম।

৩৩| ১৬ ই নভেম্বর, ২০১০ রাত ১:৪৭

চুরি যাওয়া আগুন... বলেছেন: বিশ্বাস করা কঠিন যে এটা স্বাধীনতার পরের ছবি। তাহলে স্বাধীনতার সেই সোনার পাথরবাটিতে কি স্বাদ পেলাম আমরা???

৩৪| ২৮ শে এপ্রিল, ২০১১ রাত ১১:৩২

রাশেদ_০৭৯ বলেছেন: আগেও কিছু শুনেছিলাম,এখন আরো জানলাম আপনার পোস্ট পড়ে।এরা মানুষ ছিলনা।আমার ভাগ্যটা ভালো আমি তখন জন্মাইনি।আমি জানতাম যে মুজ়িব কে এমনিতেই মারবে কেনো,নিশ্ছয় কারন আছে,এইসব ঘটনা থেকে শিক্ষা নেয়া উচিত,নাহলে আরেকটি ১৫ই আগস্ট দেখতে হবে ওদেরকে......

৩৫| ২৯ শে এপ্রিল, ২০১১ রাত ১:০৪

কলম.বিডি বলেছেন: একটা বই পড়লাম।ব্যরিষ্টার মইনুল হোসেন, এস আর মির্জা আর একজনের নাম মনে নাই... এই তিনজনের কথোপকথন। ২০১০ এর বইমেলায় বের হয়ে আবার ব্যান এর পাল্লায় পড়ে আউট অফ প্রিন্ট।কিন্তু বাংলাবাজারে পেতে পারেন। যা হোক,ওখানেই পেলাম,১৯৭১ এর মার্চে তাজউদ্দীন শেখ মুজিব কে বারবার বলছিলেন অন্তত একটা লিখিত স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে যেতে।কারণ তিনি আত্নগোপনে রাজী হচ্ছিলেন না।একদিন তাজউদ্দীন রেগে শেখ মুজিবের অফিস থেকে বের হওয়ার পথে মইনুল হোসেন তাঁকে আটকান।-কি হয়েছে? -স্বাধীনতার ঘোষণা লিখিতভাবে দিতে শেখ মুজিব সরাসরি নিষেধ করেছেন।কারণ পাকিস্তান সরকার এজন্য তাঁকে রাষ্ট্রদ্রোহী সাব্যস্ত করতে পারে!!!!
আর এই পা-চাটা মানুষটা আমাদের নাকি পিতা? স্বাধীনতার ঘোষক??
আমার কথা বিশ্বাস না হয় বইটা যোগাড় করেন।অনেক তথ্য আছে, যেগুলা আমরা ঠিক বিপরীতটা জানি

৩৬| ০৯ ই আগস্ট, ২০১১ দুপুর ২:২৫

বিভ্রান্ত_পথিক বলেছেন: লেখার ভাষা হারিয়ে ফেলেছি...............

আপনারে ++++++++++++

৩৭| ০৯ ই আগস্ট, ২০১১ দুপুর ২:৪৭

ব্যাপারনা বলেছেন: এরপরও অমি পিয়ালরা বাকশালের জয়গান গেয়ে বেড়ান।শেখ সেলিমরা বলেন এটা ছিল জনগনের দাবী......আমি হাসতে হাসতে মরি । ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.