নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বল বীর চির উন্নত মম শির !

শাহারিয়ার ইমন

শাহারিয়ার ইমন › বিস্তারিত পোস্টঃ

ইলুমিনাতি রহস্যজাল

০৭ ই মে, ২০১৮ বিকাল ৪:০৯



ইলুমিনাতির শুরুর গল্প ;
ইতিহাসের শুরু থেকেই বিজ্ঞান আর ধর্মের মধ্যে গভীর রেষারেষি ছিল। সায়েন্টিফিক ট্রুথ উদ্ধারের দায়ে চার্চের কোপানলে পড়েছিলেন ইতিহাসের বিখ্যাত বিজ্ঞানীরা।১৬০০ সালের গোড়ার দিকে, একজন ইতালীয় জ্যোতির্বিজ্ঞানী কোপার্নিকান থিওরি মানে পৃথিবী সূর্যের চারদিকে ঘুরছে তা সমর্থন করে ক্যাথলিক চার্চের সঙ্গে দ্বন্দ্বে চলে আসেন । পরে তাঁকে আগুনে পুড়িয়ে মারা হয় ।

গ্যালিলিও একজন ক্যাথলিক ছিলেন, এবং শুধুমাত্র তাঁর মতবাদ বাইবেলের বিরুদ্ধে যাওয়ায় চার্চ ব্লাসফেমী আক্ষা দিয়ে ১৬৩৩ সালে রোমান হলি ইনকুইজিশনের নামে তাঁকে ফোর্স করে দিনের পর দিন গৃহবন্দী করে অত্যাচার চালায় চার্চ। এভাবে চার্চের রোষানলে পড়েছেন একে একে কোপার্নিকাস,দা ভিঞ্চি, এবং হাইপেশিয়া । হাইপেশিয়া যিনি একজন নারী হয়েও বাঁচতে পারেননি তাদের অপঘাত আর মরণ কোপের হাত থেকে।১৬০০ শতকে এসে একদল বিজ্ঞানী চার্চের বিরুদ্ধে খড়গহস্ত হয়।

ইউরোপের সবচেয়ে আলোকিত মানুষঃ পদার্থবিজ্ঞানী,গণিতবিদ, এস্ট্রোনমার, চিত্রকর,বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অর্থাৎ একদম চূড়ান্ত পর্যায়ের যারা বুদ্ধিজীবী, তাঁরা সবাই গোপনে মিলিত হন এবং একটি সিদ্ধান্ত আসেন। বিজ্ঞান চর্চার জন্য তৈরি করেন একটি অতি গোপন সংঘ।
"দ্যা ইলুমিনাতি - জ্ঞানের দীপমালায় উদ্ভাসন"জার্মানির ব্যাভারিয়াতে ইঙ্গলস্ট্যাড ইউনিভার্সিটির খ্রিস্টীয় আইন ও ব্যবহারিক দর্শনবিদ্যার প্রফেসর ছিলেন অ্যাডাম ওয়েইশপ্ট [Adam Weishaupt] (1748–1830)। ইউনিভার্সিটি তখন সম্পূর্ণই খ্রিস্টীয় আইনকানুন মেনে চলে। যে কেউ যার কিনা খ্রিস্টধর্মের প্রতি আনুগত্য কিছুটা কম তাকেই পোহাতে হত নানা সমস্যা।

অ্যাডাম তখন চিন্তা করলেন এমন এক গুপ্ত সংঘের যার মাধ্যমে তিনি “আলোকায়ন” (এনলাইটেনমেন্ট) করতে পারবেন। আর এ গুপ্ত সংঘের সদস্য হবেন একদম চূড়ান্ত পর্যায়ের বুদ্ধিজীবীরা।

মে মাসের ১ তারিখ। সালটা ১৭৭৬। সেদিন অ্যাডাম আর তার চার ছাত্র মিলে এই সংঘ শুরু করলেন। আর সংঘের প্রতীক হলো গ্রিক জ্ঞানদেবী মিনারভার পেঁচা। অ্যাডাম সদস্যদের জন্য ছদ্মনামের ব্যবস্থা করলেন। অ্যাডামের নিজের নাম হলো স্পার্টাকাস। তার ছাত্র Massenhausen এর নাম হলো অ্যাজাক্স, Merz এর নাম হলো অ্যাগাথন আর Sutor এর নাম হলো ইরাসমাস রোটারোডেইমাস। কিন্তু Sutor-কে তিনি পরে বহিষ্কার করে দেন, কারণ সে ছিল অলস।

১৭৭৮ সালের এপ্রিল মাসে সংঘের নাম হলো ইলুমিনাতি। যার অর্থ “যারা কোনো বিষয়ে বিশেষ ভাবে আলোকিত বা জ্ঞানার্জনের দাবী করে" অথবা "বিজ্ঞান বিষয়ে বিশেষ জ্ঞান সম্পন্ন কোনো দল"।


ইলুমিনাতি সংগঠনের ব্যবস্থাপনা ;


সচ্চরিত্র খ্রিস্টান ছিল তাদের কাম্য এবং সকল প্রকার ইহুদী আর মূর্তিপূজক ছিল নিষিদ্ধ এই সংঘে। এমনকি নারী, ধর্মগুরু এবং অন্য সিক্রেট সোসাইটির সদস্যরাও নিষিদ্ধ ছিল। স্বাগত জানানো হত ধনী, শিক্ষানবিশ আর ১৮-৩০ বছরের তরুণদের।

১৭৮২ সালের দিকে ইলুমিনাতি-তে তিনটি শ্রেণীর সূচনা করা হয়। ক্লাস-১ হলো যারা সদ্য যোগ দিয়েছে। ক্লাস-২ হলো একটু উচ্চ পর্যায়ের যারা। আর ক্লাস-৩ হলো সবচেয়ে গোপনীয় জ্ঞানের অধিকারী যারা।

১৭৮৪ সালের শেষে, মোট সদস্য হয়ে যায় ৬৫০! যদিও অ্যাডাম দাবি করেন সংখ্যাটা আড়াই হাজার। তবে অ্যাডাম চেয়েছিলেন ইলুমিনাতি সিক্রেট সোসাইটির কথা খুবই গোপন রাখতে যেন ঘুণাক্ষরেও রসিক্রুসিয়ানরা না জানে। রসিক্রুসিয়ান হলো আরেক গুপ্তসঙ্ঘ এবং ইলুমিনাতির পুরোই বিপরীত। কারণ ইলুমিনাতি বিশ্বাস করত সেকুলারিজমে, আর রসিক্রুসিয়ানদের বিশ্বাস আর কর্ম ছিল জাদুবিদ্যা নিয়ে, অন্তত তৎকালীন ইলুমিনাতি সেটাই বিশ্বাস করত।

ইলুমিনাতি থেকে তাহলে কিভাবে সদস্য রিক্রুট করা চলত? সেটা হত একদম নীরবে আর গোপনে। ব্যক্তিগতভাবে যোগাযোগের মাধ্যমে। কিন্তু তারপরেও রসিক্রুসিয়ানরা জেনে গেলো। তা-ও এমন একজনের কল্যাণে যে কিনা ছিল দুই সঙ্ঘেরই সদস্য। ফলাফল দাঁড়াল- ইলুমিনাতি যে একটি নাস্তিক সংঘ, সেটা রটে গেল ইউরোপে। ধর্মহীন ইলুমিনাতির বিরুদ্ধে জোর গণমত গড়ে উঠল।

ইলুমিনাতিকে নিষিদ্ধ করণঃ
ইলুমিনাতির সত্য জানবার পর ব্যাভারিয়ার শাসক চার্লস থিওডোর ভয় পেয়ে গেলেন। তার সরকার সকল গুপ্ত সংঘ নিষিদ্ধ ঘোষণা করল। এই ব্যান আসলো ১৭৮৫ সালের ২ মার্চ। অ্যাডাম পালিয়ে গেলেন আর ইলুমিনাতির প্রচুর নথিপত্র সরকারের হাতে এসে গেল, এবং দু’বছর বাদে সরকার সেটা প্রকাশও করে দিল।
আমেরিকায় তাদের আর কোন খবর পাওয়া যায়নি। অথবা, ইতিহাসে তাদের কোন খবর পাওয়া যায় না।

এদিকে ইউরোপেরর ইলুমিনাতির সদস্যের মধ্যে কোন এক ভূল হয়ে যায়। চার্চ তাদের সম্পর্কে জানতে পারেন। ধরে আনা হয় ইলুমিনাটি বিজ্ঞানীদেরকে এবং জঘন্য অত্যাচার করে মেরে ফেলা হয় তাদের শয়তানের উপাসনা কারী বলে।

তাদের মৃত দেহ ঝুলিয়ে রাখা হত রোমের বিভিন্ন রাস্তায়। যারা ইলুমিনাটিতে যোগ দিতে চায় তাদের বিভিন্ন হুমকি দেওয়া হত। চার্চের ক্রমাগত চাপের মুখে ইতালি থেকেও লুপ্ত হয়ে যায় ইলুমিনাটি।

ইলুমিনাতি চলে যায় আন্ডারগ্রাউন্ড এ। ক্যাথলিকদের হাতে হেনস্থা অন্য গ্রুপ গুলোর সাথে তাদের মিশে যাওয়া শুরু তখন থেকেই। এই সময় ইলুমিনাটিতে যোগ দেয়, ইহুদী, মুসলিম, অকাল্টিস্ট, মিস্টিক, এলকেমিস্ট ইত্যাদি দল। শুরু হয় অন্য হিংস্র ইলুমিনাটির।

তারা একতাবদ্ধ হতে থাকে, শক্তি সংগ্রহ করতে থাকে প্রতিশোধ নেবার জন্য।
তাদের যুদ্ধ ধর্মের বিরুদ্ধে শুরু হয়। তারা ধর্ম নিরপেক্ষ একটি বিজ্ঞানসম্মত আধুনিক বিশ্ব তৈরির জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করতে শুরু করে। যার নাম দেয় NWO- New world order. eএই সব তারা এত গোপনীয়তায় করেছে যে পৃথিবীর কেউ জানতে পারেনি। বিশ্ব জানতো ইলুমিনাতি বিলুপ্ত হয়ে গেছে।


NWO- New world order ;


১৯৯২ সালে “নিউ ওয়ার্ল্ড অর্ডার” নামে একটি নতুন সিস্টেম পৃথিবীবাসীর সামনে প্রণয়ন করা হয়। বস্তুত এটি আসলে একটি নতুন নিয়ম যার মূলভিত্তিই হলো মনোবৃত্তি আর ধর্মনিরপেক্ষতা।

আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো নতুন এই নিয়ম প্রচার করার জন্য তৎপর হয়ে উঠে। এই সিস্টেমটি যদিও পৃথিবীর অর্থনৈতিক পরিস্থিতির সাথে সম্পৃক্ত, কিন্তু একে একটি সম্পূর্ণ জীবনবিধানাকারে রূপ দেওয়া হয়েছে।

মানুষের দৈনন্দিন জীবনকে সম্পূর্ণরূপে এ নতুন সিস্টেমের আওতাভুক্ত করাই ছিল আন্তর্জাতিক সংগঠনগুলোর প্রধান উদ্দেশ্য। পৃথিবীর সবকটি রাষ্ট্রকে আয়ত্তে এনে নতুন এই সিস্টেমকে প্রতিষ্ঠা করার লক্ষ্যে “জাতিসংঘ” সুপরিকল্পিতভাবে কাজ করে যাচ্ছে। অতঃপর একে রক্ষার জন্য সারা বিশ্বের বিভিন্ন দেশের অনুগত সেনাবাহিনীকে ওখানে নিযুক্ত করা হয়েছে।

পৃথিবীর সকল রাষ্ট্রকেই নতুন এই সিস্টেমের উপর আমল করতে হবে। তা না হলে সেই রাষ্ট্রকে “মৌলবাদী বা সন্ত্রাসী রাষ্ট্র” সাব্যস্ত করে পাথরের যুগে পৌঁছে দেওয়া হবে। সেটিকে আক্রমণ করা হবে, তারপর নিজেদের পছন্দমত শাসক বসানো হবে। অতঃপর প্রয়োজন হলে শান্তিরক্ষা মিশন নামক বিশ্বের বিভিন্ন দেশের অনুগত সেনাবাহিনীর একটি অংশকে পাঠানো হবে।

নতুন এ সিস্টেমের ব্যাখ্যা ডক্টর জন কোলেমান তার কন্সপিরেটরস হাইরারকি: ‘দ্য কিমিটি অব থ্রি হান্ড্রেড’ গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন। আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো বিভিন্ন ভাবে, বিভিন্ন নাম ব্যবহার করে বিভিন্ন সংগঠনের মাধ্যমে এই নতুন সিস্টেম মানুষের মাঝে প্রবেশ করাচ্ছে। ডক্টর জন কোলেমানের মতে, “নিউ ওয়ার্ল্ড অর্ডার” শুধুমাত্র অর্থনৈতিক আধুনিক পদ্ধতি নয়, বরং তা পূর্ণ একটি জীবনব্যবস্থা এবং নতুন একটি ধর্ম।

তিনি তার গ্রন্থে লিখেন, “এটি এমন একটি আন্তর্জাতিক শাসনব্যবস্থা, যাকে একটি মাত্র আন্তর্জাতিক সরকার শাসন করছে। এটি অনির্বাচিত স্বয়ংসম্পূর্ণ কিছু ব্যক্তিদের আয়ত্তে রয়েছে। সম্ভবত মধ্যযুগীয় জীবনব্যবস্থার আকারে নিজের চাহিদামত বিষয়গুলো নির্বাচন করছে। নতুন এ আন্তর্জাতিক সিস্টেমে পৃথিবী জুড়ে বসবাসকারীদের সংখ্যা সীমিত থাকবে এবং প্রত্যেক বংশেই সন্তান সংখ্যার ব্যাপারে সীমাবদ্ধতা আরোপ করা হবে। কোন অঞ্চলে বেশি থাকলে যুদ্ধ এবং মহামারী ছড়িয়ে সেখানকার জনসংখ্যা কন্ট্রোল করা হবে। শুধুমাত্র ঐ পরিমাণ বাকি থাকবে, যে পরিমাণ থাকলে ওখানকার সরকার তাদেরকে সম্পূর্ণরূপে কন্ট্রোল করতে সক্ষম হয়।”


মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১২ ই মে, ২০১৮ বিকাল ৫:০৯

মোঃ ফখরুল ইসলাম ফখরুল বলেছেন: |-) পড়ছি । । ।

১২ ই মে, ২০১৮ রাত ১০:৪৬

শাহারিয়ার ইমন বলেছেন: এই মনে হয় প্রথম কেউ পড়ল

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.