নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ইমরান বিন বদরী

ইমরান বিন বদরী › বিস্তারিত পোস্টঃ

হজ্বের সংক্ষিপ্ত পরিচয়।

১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:১১


▧▩▧▩▧ ✏ ইমরান বিন বদরী ≪
নাহমাদুহু ওয়া নুসল্লি আলা রাসূলিহিল কারীম আম্মা বা’দ।সমস্ত প্রশংসা পরম করুণাময় রাব্বুল আলামীন আল্লাহ তায়ালার জন্য; আর সালাত (দুরূদ) ও সালাম আমাদের নবী সায়্যাদুল মুরসালীন প্রিয় মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতি।

"লাব্বায়িকা আল্লাহুম্মা লাব্বায়িক"
════════ ═══════
হজ্ব শব্দের আভিধানিক অর্থ "ইচ্ছা" বা "সঙ্কল্প" করা, আরবিতে: حج । ইসলামী শরীয়তের পরিভাষায় কাবা শরীফ যিয়ারত করার উদ্দেশ্যে ভ্রমণের ইচ্ছা বা সংকল্প করা।এটি মুসলমানদের জন্য একটি আবশ্যকীয় ইবাদত।শারীরিক ও আর্থিকভাবে সক্ষম প্রত্যেক মুসলমান নর-নারীর জন্য জীবনে একবার হজ্ব সম্পাদন করা ফরয‌ বা আবশ্যিক। আরবি জ্বিলহজ্জ মাসের ৮ থেকে ১২ তারিখ হজ্বের জন্য নির্ধরিত সময়। হজ্জ পালনের জন্য বর্তমান সৌদী আরবের মক্কা নগরীতে ক্বাবা শরীফের তাওয়াফ এবং সন্নিহিত মিনা, আরাফাত, মুযদালফা, পশু কোরবানী, কংকর নিক্ষেপ,সাফা-মারওয়া টিলাদ্বয়ের মধ্যে হাঁটা। প্রভৃতি স্থানে গমন এবং অবস্থান আবশ্যক। হজ্ব মুসলিম উম্মাহর সর্ববৃহৎ মিলন উৎসব।
এটি ইসলামের ৫টি মূল ফরজ বিষয়ের অন্যতম।আজ থেকে প্রায় ৫০০০ বছর পূর্বে বাক্কা তথা বর্তমান মক্কা নগরীতে আবুল আম্বিয়া একত্ববাদের নবী হজরত ইব্রাহীম আলাইহে ওয়াছাল্লাম নির্মান করেছিলেন পবিত্র কাবা ঘর।পরে সেই ঘরের জিয়ারতের জন্য সমগ্র মানবজাতিকে আহবান করেছিলেন আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের নির্দেশে।
➲ মহান রাব্বুল আলামীন ইরশাদ করেন- وَلِلَّهِ عَلَى النَّاسِ حِجُّ الْبَيْتِ مَنِ اسْتَطَاعَ إِلَيْهِ سَبِيلًا
মানুষের মধ্যে যারা কাবা শরীফ পৌঁছুতে সক্ষম তাদের ওপর আল্লাহর ঘর জিয়ারত করা ফরজ (সূরা আলে ইমরান ৯৭)
#আল্লাহ পাক রাব্বুল আলামীন আরো বলেন- وَإِذْ بَوَّأْنَا لِإِبْرَاهِيمَ مَكَانَ الْبَيْتِ أَن لَّا تُشْرِكْ بِي شَيْئًا وَطَهِّرْ بَيْتِيَ لِلطَّائِفِينَ وَالْقَائِمِينَ وَالرُّكَّعِ السُّجُودِ যখন আমি ইব্রাহীমকে বায়তুল্লাহর স্থান ঠিক করে দিয়েছিলাম যে, আমার সাথে কাউকে শরীক করো না এবং আমার গৃহকে পবিত্র রাখ তাওয়াফকারীদের জন্যে, নামাযে দন্ডায়মানদের জন্যে এবং রকু সেজদাকারীদের জন্যে। (সূরা হাজ্জ্ব আয়াত ২৬)
وَأَذِّن فِي النَّاسِ بِالْحَجِّ يَأْتُوكَ رِجَالًا وَعَلَى كُلِّ ضَامِرٍ يَأْتِينَ مِن كُلِّ فَجٍّ عَمِيقٍ
এবং মানুষের মধ্যে হজ্বের জন্যে ঘোষণা প্রচার কর। তারা তোমার কাছে আসবে পায়ে হেঁটে এবং সর্বপ্রকার কৃশকায় উটের পিঠে সওয়ার হয়ে দূর-দূরান্ত থেকে। (সূরা হাজ্জ্ব আয়াত ২৭)
#আরো বলেন- ثُمَّ لْيَقْضُوا تَفَثَهُمْ وَلْيُوفُوا نُذُورَهُمْ وَلْيَطَّوَّفُوا بِالْبَيْتِ الْعَتِيقِ এরপর তারা যেন দৈহিক ময়লা দূর করে দেয়, তাদের মানত পূর্ণ করে এবং এই সুসংরক্ষিত গৃহের তাওয়াফ করে।(সূরা হাজ্জ্ব আয়াত ২৯)
#আল্লাহ পাক রাব্বুল আলামীন আরো বলেন-إِنَّ أَوَّلَ بَيْتٍ وُضِعَ لِلنَّاسِ لَلَّذِي بِبَكَّةَ مُبَارَكًا وَهُدًى لِّلْعَالَمِينَ নিঃসন্দেহে সর্বপ্রথম ঘর যা মানুষের জন্যে নির্ধারিত হয়েছে, সেটাই হচ্ছে এ ঘর, যা মক্কায় অবস্থিত এবং সারা জাহানের মানুষের জন্য হেদায়েত ও বরকতময়।(সূরা আল ইমরান ৯৬)
#মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন; পাঁচটি স্তম্ভের উপর ইসলামের ভিত্তি স্থাপন করা হয়েছে। তন্মধ্যে একটি وَالْحَجِّ এবং আল্লাহর ঘরের হজ্জ করা। (মুত্তাফাক আলাইহি)
➲ হজরত আবূ সা‘ঈদ খুদরী রাদিয়াল্লাহু তালা আনহু সূত্রে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ইয়াজূজ ও মাজূজ বের হওয়ার পরও বায়তুল্লাহর হাজ্জ (হজ্জ)ও ‘উমরা পালিত হবে।(সহীহ বুখারি)
➲ হজরত আলী রাদিয়াল্লাহু তালা আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন যে ব্যক্তি আল্লাহর ঘরে পৌঁছুতে সম্পদ ও সওয়ারির মালিক হলো,তা সত্ত্বেও সে হজ করল না, সে ইহুদি বা খ্রিষ্টান হয়ে মরুক তাতে কিছু যায় আসে না(তিরমিজি)।

❖ হজ্বের ঐতিহাসিক পটভূমি ❖
═══════════════
হিজরি সনের ১২তম মাস হলো জিলহজ্জ মাস। এই মাস হজরত ইব্রাহিম (আঃ) এর স্মৃতিবিজরিত এক অনন্য মাস। যখন হজরত ইব্রাহিম (আঃ) কে হজ্জ ফরজ হওয়ার কথা ঘোষণ করার আদেশ দেয়া হয়, তখন তিনি আল্লাহর কাছে আরজ করলেন, এখানে তো জনমানবহীন বন্য প্রান্তর; ঘোষণা শোনার মতো কেউ নেই। যেখানে জনবসতি আছে সেখানে আমার আওয়াজ কীভাবে পৌঁছবে? আল্লাহতায়ালা বললেন, তোমার দায়িত্ব শুধু ঘোষনা করা।বিশ্বের কাছে তা পৌঁছানোর দায়িত্ব আমার।আজ সেই আহবানের সাড়া দিতে গিয়ে বিশ্বের ২০ লক্ষাধিকেরও বেশি আল্লাহ ওয়ালা মানুষ পবিত্র হজ্জ পালনে সমেবেত হচ্ছেন।
#আল্লাহ পাক রাব্বুল আলামীন বলেন-
وَأَتِمُّواْ الْحَجَّ وَالْعُمْرَةَ لِلّهِ فَإِنْ أُحْصِرْتُمْ فَمَا اسْتَيْسَرَ مِنَ الْهَدْيِ وَلاَ تَحْلِقُواْ رُؤُوسَكُمْ حَتَّى يَبْلُغَ الْهَدْيُ مَحِلَّهُ فَمَن كَانَ مِنكُم مَّرِيضاً أَوْ بِهِ أَذًى مِّن رَّأْسِهِ فَفِدْيَةٌ مِّن صِيَامٍ أَوْ صَدَقَةٍ أَوْ نُسُكٍ فَإِذَا أَمِنتُمْ فَمَن تَمَتَّعَ بِالْعُمْرَةِ إِلَى الْحَجِّ فَمَا اسْتَيْسَرَ مِنَ الْهَدْيِ فَمَن لَّمْ يَجِدْ فَصِيَامُ ثَلاثَةِ أَيَّامٍ فِي الْحَجِّ وَسَبْعَةٍ إِذَا رَجَعْتُمْ تِلْكَ عَشَرَةٌ كَامِلَةٌ ذَلِكَ لِمَن لَّمْ يَكُنْ أَهْلُهُ حَاضِرِي الْمَسْجِدِ الْحَرَامِ وَاتَّقُواْ اللّهَ وَاعْلَمُواْ أَنَّ اللّهَ شَدِيدُ الْعِقَابِ
আর তোমরা আল্লাহর উদ্দেশ্যে হজ্জ্ব ওমরাহ পরিপূর্ণ ভাবে পালন কর। যদি তোমরা বাধা প্রাপ্ত হও, তাহলে কোরবানীর জন্য যাকিছু সহজলভ্য, তাই তোমাদের উপর ধার্য। আর তোমরা ততক্ষণ পর্যন্ত মাথা মুন্ডন করবে না, যতক্ষণ না কোরবাণী যথাস্থানে পৌছে যাবে। যারা তোমাদের মধ্যে অসুস্থ হয়ে পড়বে কিংবা মাথায় যদি কোন কষ্ট থাকে, তাহলে তার পরিবর্তে রোজা করবে কিংবা খয়রাত দেবে অথবা কুরবানী করবে। আর তোমাদের মধ্যে যারা হজ্জ্ব ওমরাহ একত্রে একই সাথে পালন করতে চাও, তবে যাকিছু সহজলভ্য, তা দিয়ে কুরবানী করাই তার উপর কর্তব্য। বস্তুতঃ যারা কোরবানীর পশু পাবে না, তারা হজ্জ্বের দিনগুলোর মধ্যে রোজা রাখবে তিনটি আর সাতটি রোযা রাখবে ফিরে যাবার পর। এভাবে দশটি রোযা পূর্ণ হয়ে যাবে। এ নির্দেশটি তাদের জন্য, যাদের পরিবার পরিজন মসজিদুল হারামের আশে-পাশে বসবাস করে না। আর আল্লাহকে ভয় করতে থাক। সন্দেহাতীতভাবে জেনো যে, আল্লাহর আযাব বড়ই কঠিন।(সূরা আল বাক্বারাহ ১৯৬)
الْحَجُّ أَشْهُرٌ مَّعْلُومَاتٌ فَمَن فَرَضَ فِيهِنَّ الْحَجَّ فَلاَ رَفَثَ وَلاَ فُسُوقَ وَلاَ جِدَالَ فِي الْحَجِّ وَمَا تَفْعَلُواْ مِنْ خَيْرٍ يَعْلَمْهُ اللّهُ وَتَزَوَّدُواْ فَإِنَّ خَيْرَ الزَّادِ التَّقْوَى وَاتَّقُونِ يَا أُوْلِي الأَلْبَابِ
হজ্জ্বে কয়েকটি মাস আছে সুবিদিত। এসব মাসে যে লোক হজ্জ্বের পরিপূর্ণ নিয়ত করবে, তার পক্ষে স্ত্রীও সাথে নিরাভরণ হওয়া জায়েজ নয়। না অশোভন কোন কাজ করা, না ঝাগড়া-বিবাদ করা হজ্জ্বের সেই সময় জায়েজ নয়। আর তোমরা যাকিছু সৎকাজ কর, আল্লাহ তো জানেন। আর তোমরা পাথেয় সাথে নিয়ে নাও। নিঃসন্দেহে সর্বোত্তম পাথেয় হচ্ছে আল্লাহর ভয়। আর আমাকে ভয় করতে থাক, হে বুদ্ধিমানগন! তোমাদের উপর তোমাদের পালনকর্তার অনুগ্রহ অন্বেষণ করায় কোন পাপ নেই। (সূরা আল বাক্বারাহ ১৯৭)

❖ হজ্জের প্রকার ❖
═════════
হজ তিন প্রকার,এগুলো হলো তামাত্তু, কিরান ও ইফরাদ।
➮ হজে তামাত্তু হজের মাসসমূহে (শাওয়াল, জিলকদ, জিলহজ) উমরাহর নিয়তে ইহরাম করে, উমরাহ পালন করে,পরে হজের নিয়ত করে হজ পালন করাকে ‘হজে তামাত্তু বলে।
➮ হজে কিরান হজের মাসসমূহে একই সঙ্গে হজ ও উমরাহ পালনের নিয়তে ইহরাম করে উমরাহ ও হজ করাকে ‘হজে কিরান’ বলে।
➮ হজে ইফরাদ শুধু হজ পালনের উদ্দেশ্যে ইহরাম বেঁধে হজ সম্পাদনকে ‘হজে ইফরাদ’ বলে।

❖হজ্ব ফরয হওয়ার শর্ত ❖
════════════
(১) মুসলমান হওয়া (২) আর্থিক সামর্থ্য থাকা অর্থাৎ হজ্বে গমনের সৌদি আরবে যাওয়া-আসার খরচ, সেখানে থাকাকালীন ব্যয়নির্বাহ এবং হজ্ব সম্পাদকালীন সময়ে পরিবার পরিজনের ভরণ পোষণের সংগতি থাকা (৩) শারীরিক সুস্থ ও সক্ষম হওয়া (৪) আক্কেল বা বালেগ তথা শরীয়তের দৃষ্টিতে প্রাপ্ত বয়স্ব ও সুস্থ মস্তিষ্কের হওয়া (৫) যাতায়াতের রাস্তা নিরাপদ থাকা এবং (৬) মহিলাদের সাথে মহরাম থাকা।

❖ হজ্জের তালবিয়াহ/দোয়া পাঠ করা ❖
══════════════════
➲ হজরত আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমর রাদিয়াল্লাহু তালা আনহু থেকে বর্ণিত যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর তালবিয়া নিম্নরূপঃ
لَبَّيْكَ اللَّهُمَّ لَبَّيْكَ، لَبَّيْكَ لاَ شَرِيكَ لَكَ لَبَّيْكَ، إِنَّ الْحَمْدَ، وَالنِّعْمَةَ، لَكَ وَالْمُلْكَ، لاَ شَرِيكَ لَكَ
‘লাব্বাইকা আল্লাহুম্মা লাব্বাইকা,লাব্বাইকা লা-শারীকা লাকা লাব্বাইকা। ইন্নাল হামদা ওয়ান নেয়ামাতা লাকা ওয়াল মুলকা লা-শারীকা লাকা। এর অর্থ হলো, হে আল্লাহ, আমি হাজির আছি, আমি হাজির আছি। আপনার কোনো শরীক নেই, আমি হাজির আছি। নিশ্চয় সকল প্রশংসা ও নেয়ামত আপনারই এবং সমগ্র বিশ্বজাহান আপনার। আপনার কোনো শরীক নেই।(সহীহ বুখারি)
(ইহরামের কাপড় পরার পর যখনই নিয়ত করা শেষ করবেন তখন থেকে তালবিয়াহ পাঠ শুরু করবেন৷ দাড়িয়ে,বসে, শুয়ে, চলন্ত অবস্থায় সর্বাবস্থায় পড়া যায়৷

❖ হজ্জ্ব এ করনীয়❖
════════ ❶ ইহরাম (ফরয)
ইহরাম এর আভিধানিক অর্থ হারাম বা নিষিদ্ধ করা৷হজ্জকালীন সার্বিক অবস্থাকে বলা হয় ইহরাম যার প্রধান চিহ্ন হলো দুই খণ্ড সিলাইবিহীন সাদা কাপড় পরিধান। ইহরাম-এর নির্দ্দিষ্ট স্থানকে বলা হয় মীক্বাত। প্রয়োজন মোতাবেক অযু বা গোছল শেষে, ইহরামের কাপড় পরে নিয়ে, দুই রাকাত নফল নামায পড়ে ইহরামের নিয়ত করতে হয়। মহিলাদের ইহরাম পুরুষদের ইহরামেরই অনুরুপ৷ শুধু পার্থক্য এইযে, মহিলাদের জন্য মাথা ঢেকে রাখা ওয়াজিব এবং কাপড় দ্বারা মুখ আবৃত করা নিষিদ্ধ, আর সেলাই যুক্ত কাপড় পরিধান করা জায়েয৷
➲ হজরত ইবনু উমর রাদিয়াল্লাহু তালা আনহু থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, মদিনাবাসীগণ যুল-হুলায়ফা থেকে, সিরিয়াবাসী গণ আল-জুহ্ফা থেকে এবং নাজদবাসীগণ কারন থেকে ইহরাম বাধবে। আবদুল্লাহ (রাঃ) বলেন, আমার কাছে খবর পৌছেছে যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ইয়েমেনবাসীগণ ইয়ালামলাম থেকে ইহরাম বাঁধবে। (সহীহ মুসলিম)
❷ উকুফ
হজ্জ সম্পাদনক্রমে মক্কার অদূরবর্তী বিভিন্ন স্থানে অবস্থানকে বলা হয় অকুফ।যে ৩টি স্থানে উকুফ করতে হয় সে গুলো হলো মিনা,
আরাফাত (আরাফা-ফরয) এবং মুযদালীফা।
❸ শয়তানকে কংকর নিক্ষেপ
মিনার পূর্ব প্রান্তে অবস্থিত জামরাহ্ নামক স্থানে তিনটি খুঁটিতে কংকর নিক্ষেপ করা হজ্জের আবশ্যকীয় অঙ্গ।
❹ পশু কুরবানী
পশু কুরবানী হজ্জ্বের একটি অপরিহার্য করণীয়।
❺ কেশ মুণ্ডন
তাওয়াফের পূর্বে কেশ মুণ্ডন আবশ্যক। তবে লক্ষ্য রাখা আবশ্যক যে যেন কেশ মুণ্ডনের পূর্বেই পশু কোরবানী সম্পন্ন হয়ে যায়। বিকল্পে মাথায় যথেষ্ট চুল থাকলে কিছু অংশ ছেঁটে ফেলা যায়। তবে মেয়েরা মাথা চাঁছবে না
❻ তাওয়াফ (ফরয)
কাবার চুতুর্দিক হচ্ছে তাওয়াফ করার দিক ক্বাবা শরীফের দক্ষিণ-পূর্ব থেকে শুরু করে একাদিক্রমে ৭বার ক্বাবা শরীফ প্রদক্ষিণ করাকে বলে ‌তাওয়াফ।এটি হজ্জের একটি অপরিহার্য আঙ্গিক।তাওয়াফ শুরুর আগে নিয়ত করতে হয়। প্রথম ৩ চক্করে একটু দ্রুত চলতে হয় - এক বলে 'রমল'। এ সময় ইহরামের কাপড় ডান কাঁধ থেকে নামিয়ে দিতে হয়। প্রতি চক্কর শেষে হযরে আসওয়াদ নামক বেহেশ্‌তী পাথরে চুম্বন করতে হয় বা ভীড়ের জন্য হাত ঠেকিয়ে হাতে চুম্বন করা সম্ভব না হলে দূর থেকে ইশারায় চুম্বন করতে হয়।
❼ সাফা-মারওয়া
ক্ববা শরীফের অদূরে অবস্থিত দুটি টিলার নাম যথাক্রমে সাফা ও মারওয়া। এ দুটির মধ্যে দ্রুত গতিতে হেঁটে একাদিক্রমে সাত বার যাতায়াত করতে হয়। কার্যতঃ সাফা থেকে মারওয়া পর্যন্ত ৪বার এবং মারওয়া ৩বার যেতে হয়। অর্থাৎ সাফায় শুরু হয়ে এই হাঁটা মারওয়ায় শেষ হয়। নিয়ত করে সাফা থেকে হাঁটা শুরু করতে হয়। মাঝামাঝি স্থানে যেখান থেকে ক্বাবা দৃষ্টিগোচর হয় সেখানে দ্রুত গতিতে চলতে হয়।
إِنَّ الصَّفَا وَالْمَرْوَةَ مِن شَعَآئِرِ اللّهِ فَمَنْ حَجَّ الْبَيْتَ أَوِ اعْتَمَرَ فَلاَ جُنَاحَ عَلَيْهِ أَن يَطَّوَّفَ بِهِمَا وَمَن تَطَوَّعَ خَيْرًا فَإِنَّ اللّهَ شَاكِرٌ عَلِيمٌ
নিঃসন্দেহে সাফা ও মারওয়া আল্লাহ তা’আলার নিদর্শন গুলোর অন্যতম। সুতরাং যারা কা’বা ঘরে হজ্ব বা ওমরাহ পালন করে, তাদের পক্ষে এ দুটিতে প্রদক্ষিণ করাতে কোন দোষ নেই। বরং কেউ যদি স্বেচ্ছায় কিছু নেকীর কাজ করে, তবে আল্লাহ তা’আলার অবশ্যই তা অবগত হবেন এবং তার সে আমলের সঠিক মুল্য দেবেন।(সূরা আল বাক্বারাহ ১৫৮)

❖ হজ্জের গুরুত্ব ওফযীলত ❖
═════════════
হজ্জ একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। শুধু ইবাদতই নয় ইহা বিশ্ব মুসলিম জাতিকে ঐক্যবদ্ধ রাখার অন্যতম ও প্রধান পন্থাও বটে। তাই হজ্জকে বলা যায় মুসলিম উম্মাহর মহা ঐক্যের মহা সম্মেলন বা মহা ঐক্যের মহামিলন কেন্দ্র।
➲ উম্মুল মু’মিনীন হজরত ‘আয়িশা রাদিয়াল্লাহু তালা আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ইয়া রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ! জিহাদকে আমরা সর্বোত্তম আমল মনে করি। কাজেই আমরা কি জিহাদ করবো না? তিনি বললেনঃ না, বরং তোমাদের জন্য সর্বোত্তম আমল হল, হাজ্জে (হজ্জ) মাবরূর।
(সহীহ বুখারি)
➲ হজরত আবূ হুরাইরাহ রাদিয়াল্লাহু তালা আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে বলতে শুনেছিঃ যে ব্যাক্তি আল্লাহর উদ্দেশ্যে হাজ্জ (হজ্জ) করলো এবং অশালীন কথাবার্তা ও গুনাহ থেকে বিরত রইল, সে নবজাতক শিশু, যাকে তাঁর মা এ মুহূর্তেই প্রসব করেছে, তার ন্যায় নিষ্পাপ হয়ে ফিরবে। (সহীহ বুখারি)
#মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন- মহান আল্লাহ আরাফাতের দিন যত মানুষকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দান করেন অন্য কোন দিনে এত লোককে মুক্তি দেন না। (মুসলিম)

❖ওমরা কি?❖
═══════
ওমরা আরবী শব্দ, অর্থ যিয়ারত করা, ভ্রমণ করা, হজ্বের নির্দিষ্ট দিনগুলোতে তথা ৮ই জিলহজ্ব থেকে ১৩ই জিলহজ্ব ব্যতিত শরিয়ত নির্ধারিত পন্থায় কাবা শরীফ তাওয়াফ ও সাফা-মারওয়ায় সায়ী করাকে ওমরা বলা হয়।
--------اللهم ارزقنا زيارة بيتك الحرام---------

✪সম্মানিত বন্ধুরা
════════➲ আমি ক্ষুদ্র জ্ঞানে চেস্টা করেছি মাত্র,আমার এই চেষ্টায় কোনো ভাইয়ের যদি সামান্যতম উপকারও হয় এটাই আল্লাহ পাকের কাছে আমার প্রাপ্তি।মহান আল্লাহ আমাদের সবাইকে হজ্জের মত গুরুত্বপূর্ণ ইবাদতটি সঠিকভাবে যথা সময়ে আদায় করার তাওফীক দান করুন।
ইসলামকে সৌন্দর্যমন্ডিত করতে আল্লাহ আমাদের সবাইকে তাঁর মনোনীত একমাত্র দীনের সঠিক বুঝ দান করুন এবং সেই দীনে আমাদেরকে পুরোপুরিভাবে দাখিল হওয়ার তৌফিক দিন। আমীন
══════════════════

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৪৬

হানিফঢাকা বলেছেন: লেখাটা পড়লাম। অনেক গুলি প্রশ্ন আছে, এর মধ্য দুইটা প্রশ্ন করছি, যদি উত্তর দেন তবে বাধিত হব।

প্রথম প্রশ্নঃ
আপনি বলেছেন "আজ থেকে প্রায় ৫০০০ বছর পূর্বে বাক্কা তথা বর্তমান মক্কা নগরীতে.." - বাক্কা এবং মক্কা একই জায়গা, বা বাক্কা মক্কার একটি নিদৃস্ট জায়গা, বা বাক্কা মক্কার পূর্ব নাম -এই ধরণের কোন রকম প্রমান কোথাও আছে কি না। দয়া করে বলবেন না অমুকে বলেছেন, বা অমুকে মনে করেছেন। আমি জানতে চাচ্ছি কোন আরব স্ক্রিপচার, আর্কিওলজি, কোন প্রি ইসলামিক যে কোন ডকুমেন্ট হতে পারে কোন চিঠি, কবিতা ইত্যাদি যে কোন জায়গায় আপনার কথার স্বপক্ষে কোন প্রমান আছে কি না। কোরআনে বাক্কা এবং মক্কা দুইটা শব্দই এসেছে।

দ্বিতীয় প্রশ্নঃ
নবী ইব্রাহিম হজ্জের ডাক দিয়েছেন এবং আপনার ভাষ্য অনুযায়ী এর পর থেকে হজ্জ ফরয। মানলাম। আমার প্রশ্ন হচ্ছে নবী ইব্রাহিমের পরবর্তী এবং নবী মুহাম্মদের আগে যত নবী রাসুল এসেছেন যেমন ইউসুফ, ইয়াকুব, মুসা, দাউদ, সুলাইমান, সালেহ, ঈসা তাঁদের কেউ মক্কা এসে হজ্জ করেছেন এমন কোন প্রমান যে কোন ধর্মের যে কোন গ্রন্থে আছে কি না। দুই একটা দেখাতে পারবেন কি না?

ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.