![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বাংলাদেশের লালমনিরহাটের বুড়িমারীতে মানসিক বিকারগ্রস্থ জনৈক শহীদুন্নবী জুয়েল নামের একব্যক্তিকে কয়েক হাজার মানুষ পিটিয়ে মেরে ফেলেছে। মেরেই ক্ষান্ত হয়নি তার মরদেহ আগুনে নিক্ষেপ ক’রে পুড়িয়ে দিয়েছে। কী অপরাধ জুয়েলের? তিনি নাকি ধর্ম অবমাননা করেছেন? রংপুর ক্যান্ট পাবলিক স্কুলের শিক্ষক জুয়েল মানসিক অবসাদগ্রস্থ ছিলেন। এই একজন মানসিক অবসাদগ্রস্থ শিক্ষককে সমাজের তথাকথিত সুস্থ ধর্মপ্রাণ মানুষেরা পাশবিকতার চূড়ান্ত নিদর্শন দেখিয়ে বাংলাদেশে ধর্মের মান বাঁচিয়েছে!আমরা কোন্ অসভ্য দেশে বাস করছি, ভাবতে পারেন?
একজন মানসিক রোগী – যাকে আমরা ভুল করে পাগল বলি, সেই একজন পাগলের অবমাননায় যদি ১৮০ কোটি মানুষের যাপিত ধর্ম এবং সে ধর্মের মালিক ওরফে স্রষ্টা বিপদে পড়েন, তবে সে ঠুনকো ধর্ম এবং সর্বশক্তিমান স্রষ্টার দরকার আছে কি?
যাঁরা প্রতিদিন প্রতিমুহুর্তে এই সব না-দেখা সর্বশক্তিমানের শক্তিমত্তার প্রার্থনা করেন, তাঁরা একটু দয়া করে ভেবে দেখবেন। আর যদি পারেন তবে জুয়েল নামের এই মানসিক ভারসাম্যহীন মানুষটার পরিবারের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করবেন। কেননা, “এ আমার এ তোমার পাপ”
১,
আমাদের একুশে ফেব্রুয়ারি গানের রচয়িতা আব্দুল গাফফার চৌধুরী এখন কী বলবেন?ফ্রান্সের স্কুল শিক্ষক কার্টুন প্রদর্শন করে গর্হিত অন্যায় করেছিলেন। আর ১৮ বছরের চেচেন নাদান বালক ধর্ম অবমাননার ক্ষোভ থামিয়ে রাখতে না পেরে “গর্দান উড়াইয়া” দিয়েছে। ফ্রান্সের পুলিশ অন্যায় করেছে এই বালককে বাঁচিয়ে না রেখে।
গাফফার ভাই,আপনার সব যুক্তিই মেনে নিয়েছিলাম সেদিন আপনার কলাম পড়ে। আপনি ফ্রান্সে মৃত্যু দেখে ব্যথিত হয়েছিলেন কিন্তু বাংলাদেশে বিচার-বর্হিভুত হত্যাকান্ডে ব্যথিত হোন না কেন? বাংলাদেশে মৃত্যুদন্ডের পক্ষেও তো অসংখ্য কলাম লিখেছেন আপনি-ই।
আরেক ধর্মপ্রাণ তিউনিশিয়ান নাদান আজকেই তিনজনকে হত্যা করেছে ফ্রান্সের এক গীর্জায়। ৭০ বছর বয়সের এক বৃদ্ধার “গর্দান উড়াইয়া” দিয়েছে। ওই বৃদ্ধার কী দোষ ছিল, আব্দুল গাফফার চৌধুরী, আপনি বলতে পারবেন?
ধর্মের নামে, জাতীয়তাবাদের নামে এই সব বর্বরতাকে প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষ কোনোভাবেই সমর্থন করতে নেই। হিংসা-ঘৃণা-নৃশংসতা কোনো অজুহাতেই কোনো স্থানেই সমর্থন যোগ্য নয়। তাহ’লে আপনি চিনের উইঘুর কিংবা ভারত-বসনিয়াসহ নানান জায়গার সাম্প্রদায়িকতাকেই সমর্থন করলেন, আপনি সমর্থন করলেন হিটলারের নাৎসিবাদকেও।
এখন যে পরিস্থিতি দাঁড়িয়েছে ফ্রান্সসহ ইউরোপ-আমেরিকার সব জায়গায় যদি ধর্মীয় উগ্রবাদীর উত্থান ঘটে, তাহ’লে আমি-আপনি কোথায় গিয়ে লুকাবো, গাফফার ভাই? আপনি না হয় ধর্ম প্রাণ মানুষ কিন্তু আপনার একই জাতীয়তাবাদে বিশ্বাসের জন্য আমাকেও ধর্ম-কর্ম বিশ্বাস না -করেও যে আপনার সাথে “গর্দান পাতিয়া” দিতে হতে পারে, গাফফার ভাই!
©somewhere in net ltd.