নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

:) :) :)

জুবায়ের চৌধুরী ঈশান

জুবায়ের চৌধুরী ঈশান › বিস্তারিত পোস্টঃ

স্ট্রোক

২৫ শে মার্চ, ২০১৫ রাত ৯:৩৮

কতগুলো বিশেষ বিশেষ রোগ সম্পর্কে কম-বেশী জেনে রাখা জরুরী।

“স্ট্রোক”
যা নিয়ে নানা ধারণা মানুষের মনে বিদ্যমান। আসলে এটা কি জিনিস? কিইবা হয় এই রোগে? কেনই বা হয়? ব্রেইনে (মস্তিষ্ক/মগজ) হয় নাকি হার্টে (হৃদপিন্ড) হয়? অনেক জানা-অজানা আছে আমাদের মাঝে। আসুন জেনে নেই এই রোগটা সম্পর্কে, যেন পরিবারের আক্রান্ত মানুষটাকে সময় মত বাঁচানো যায়, ক্ষয়-ক্ষতি কমিয়ে আনা যায়।

প্রথমেই জেনে নেই স্ট্রোক কি?

স্ট্রোক হল ব্রেইন/মস্তিষ্ক কেন্দ্রীক কর্মকান্ডের বন্ধ হয়ে যাওয়া, যেটা কোন আঘাতের কারণে হয়না, ২৪ ঘন্টার বেশী সময় ধরে এই অবস্থা বজায় থাকে অথবা অন্য কোন রোগ ছাড়াই ঐ ২৪ ঘন্টার মধ্যেই মৃত্যুবরণ করে আর তা CT scan/MRI দিয়ে নিশ্চিতকরণ করা যায়।

২৪ ঘন্টার মধ্যে রোগী স্বাভাবিক হয়ে গেলে তাকে বলে Transient Ischemic Attack (TIA)

অনেকে কথার কথায় বলে- “হার্ট-স্ট্রোক করেছে”। এটা ভুল। হার্টে স্ট্রোক হয়না। হয় ব্রেইন তথা মস্তিষ্কে।

কি দেখে বুঝবেন ব্রেইন কাজ করছে না?

ব্রেইন কাজ না করা মানে কি মাথা হ্যাং হয়ে গেছে? মাথা কাজ করছে না? হিসাব মিলছে না? চশমাটা কোথায় রেখেছি মনে পড়ছে না? ছাতাটা দোকানে ভুলে ফেলে রেখে এসেছেন? এসব?

না, এসব কিছু নয়।

আমাদের শরীরে গরম ঠান্ডা স্পর্শ, এরকম বিভিন্ন স্নায়ু অনুভুতি শরীরের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মস্তিষ্কে পৌছায় এবং তখন আমরা তা বুঝতে পারি।
আমাদের শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ, হাত-পা সঞ্চালন, কথা বলা, শোনা, দেখা থেকে শুরু করে মলমূত্র ত্যাগ সবই ব্রেইনের ইলেক্ট্রিকাল সিগনালের মাধ্যমে হয়ে থাকে।

এগুলোর মধ্যে কিছু কাজ করা বন্ধ হয়ে যাওয়াই স্ট্রোকের অন্তর্ভুক্ত।

তাহলে একজন স্ট্রোকের রোগীর কি কি বৈশিষ্ট্য থাকবে, আসুন জেনে নেই-

১। শরীরে একপাশের/দুইপাশের হাত বা পা অথবা, হাত ও পা দুটোই অবশ হয়ে যাওয়া, অথবা দুর্বলতা অনুভব করা যা বাড়তে থাকে। এই অবশ/দুর্বলতা আবার দুই ধরণের হয়। রোগীর অবশ হওয়া হাত/পা আপনি নিজের হাতে যদি নাড়াতে চেষ্টা করেন তবে দেখবেন যে তা শক্ত (Spastic) হয়ে থাকতে পারে আবার একদম ঢলঢলে (Flaccid) দুর্বলও হতে পারে। রোগী নিজের থেকে তা নাড়াতে পারবে না।

২। কথা বলতে পারবেনা, অথবা বললেও তা বোঝা যাবে না।

৩। চোখে দেখতে পারবে না। যদি রোগী বলতে না পারে, তাহলে হয়তো আপনি এটা বুঝতে পারবেন না।

৪। মাথা ঘোরানো, শরীরের ভারসাম্য রাখতে না পারা। সূক্ষ্ম কাজ করতে পারবে না। যেমন- জামার বোতাম লাগানো।

৫। মাথায় প্রচন্ড ব্যথা থাকতে পারে।

৬। খিচুনি হতে পারে। খিচুনি কি? হঠাত মুখ হাত পা গুটিয়ে যাওয়া, বাকা করে ফেলা, পড়ে যাওয়া, অস্বাভাবিক শারীরিক সঞ্চালন কিংবা, একদম স্থবির। কোনদিকে না তাকানো, মাথা না ঘোরানো, ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থাকা, সাড়া না দেওয়া ইত্যাদি।

৭। কোমা (coma)। সম্পুর্ণ অজ্ঞান, অচেতন হয়ে যাওয়া।

এই সমস্যাগুলো কেন হয়? মগজের মধ্যে কি সমস্যাটা হয় যে তারা কাজ করা বন্ধ করে দেয়? আসুন জেনে নেই-

আমাদের শরীরে পুষ্টি সরবরাহ করে রক্তনালী। রক্তনালী আছে দুই ধরণের। ১। ধমনী (Artery) ২। শিরা (Vein).

ব্রেইন সহ সকল অঙ্গে ধমনী দ্বারা অক্সিজেন ও খাবার তথা পুষ্টিসমৃদ্ধ রক্ত পৌছায়। শিরা সেই অঙ্গের যাবতীয় বর্জ্য ও কার্বন ডাই অক্সাইড সংগ্রহ করে নিয়ে ফেরত চলে আসে। ব্যতিক্রম হল ফুসফুস। এখানে শিরা ও ধমনী উলটো কাজ করে।

মস্তিষ্ককে কয়েকটি অঞ্চলে ভাগ করা হয়েছে। ঐ অঞ্চলগুলোর কাজ ভিন্ন ভিন্ন। কেউ স্নায়ু অনুভুতি গ্রহণ করে, কেউ দৃষ্টি অনুভুতি, কেউ শ্রবণ অনুভুতি, কেউ বিবেক, কেউ স্মৃতি সংরক্ষণ করে, কেউ মাংসপেশী সঞ্চালনের সিগনাল দেয়, কেউ ফুসফুস-হৃদপিন্ড সঞ্চালনের সিগনাল পাঠায় ইত্যাদি।
এই অঞ্চলগুলো ঐ রক্তনালীগুলো দ্বারা পুষ্টি পায়। যদি কোন কারনে রক্তনালিগুলো সেখানে রক্ত পৌছাতে না পারে তবে ঐ স্থানের নিউরোন তথা স্নায়ুকোষগুলো ক্ষতিগ্রস্থ হবে। ফলাফল, সেই অঞ্চলের কাজগুলো বাধাগ্রস্থ অথবা বন্ধ হয়ে যাবে। রক্তনালী বন্ধ হতে পারে বিভিন্ন কারণে। যেমনঃ রক্ত জমাট বেধে গেলে, শরীরের অন্য কোথাকার জমাট বাধা রক্ত, রক্তনালী দ্বারা বাহিত হয়ে মস্তিষ্কে এসে আটকে গেলে, রক্তনালী সংকুচিত হয়ে গেলে । এভাবে রক্ত না পাওয়ার দরুন মস্তিষ্কের কাজ বন্ধের ফলে যে স্ট্রোক হয়, তার নাম Ischemic Stroke.

কোন কারণে যদি মস্তিষ্কের রক্তনালি ছিড়ে যায় তখন সেখানে রক্তক্ষরণ হয়। এই রক্তক্ষরণে রক্ত জমাট বেধে যায় যা আসেপাশের স্নায়ু কোষ ও রক্তনালীর উপর চাপ প্রয়োগ করে, ফলাফল আবার একই, তারা চাপের কারনে কাজ করা বন্ধ করে দেয়। এই ধরণের স্ট্রোকের নাম Haemorrhagic Stroke.

কোনটা খারাপ?

Ischemic Stroke. কেননা মস্তিষ্কের যে কোষটা মারা যায়, তা আর পুনর্গঠিত হয় না। নিউরোন বা স্নায়ুকোষের পুনরুৎপাদনের ক্ষমতা নেই। তাই কার্যত যে কোষ মারা যায়, তার আর কোন বিকল্প নেই। Haemorrhagic Stroke এর ক্ষেত্রে জমাট বাধা রক্ত ওষুধ/অপারেশন/বিশ্রামে চলে যায়। চাপ কমে গেলে নিউরোনগুলো আবার ধীরে ধীরে কাজ করে। রোগী তার পূর্বের শক্তি সামর্থ্য আবার ফিরে পেতে পারে। তবে সঠিক সময়ে এবং দ্রুত চিকিৎসা না পেলে তা মৃত্যুর কারন ঘটাতে পারে।

মেডিকেলীয় জরুরী রোগগুলোর মধ্যে স্ট্রোক খুবই কমন। বয়স যত বাড়ে, স্ট্রোক হওয়ার সম্ভাবনাও তত বাড়ে। সাস্থ্যসম্মত জীবনযাপন পদ্ধতি না মানার কারনে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে স্ট্রোক বেশী হতে দেখা যায়। হঠাত করে স্ট্রোক (Acute Stroke) হয় যাদের তাদের ৫ ভাগের ১ ভাগ একমাসের মধ্যে মৃত্যুবরণ করতে পারে। আর যারা এ থেকে বেঁচে যান তাদের অর্ধেকই বাকি জীবন শারীরিক প্রতিবন্ধকতা নিয়ে বেঁচে থাকতে হয়। এই কঠিন কঠিন কথাগুলো শুনে হতাশ হবেন না। বাঁকি অর্ধেক রোগীই স্ট্রোকের চিকিৎসা নিয়ে, ফিজিওথেরাপী নিয়ে কিংবা স্বাভাবিক ব্যায়াম ও নিয়ম মেনে চলে সুস্থ, সুন্দর, সচল জীবনযাপনে ফিরে আসেন। এটা আশার বাণী।

এত শত ঝামেলার মধ্যে কেন যাবেন? রোগটা না হলেই কি ভাল নয়? তাই না? এর জন্য জানতে হবে কাদের মাঝে এটি হবার সম্ভাবনা বেশী থাকে। কি কি জীবন পদ্ধতি বা অভ্যাস এই রোগের ঝুঁকি বাড়ায়। আসুন জেনে নেই-

প্রথমেই ঝুঁকিগুলোকে দুই ভাগে ভাগ করে নেই।

১। যে ঝুঁকিগুলো আপনি শত চেষ্টা করেও কমাতে পারবেন না। এদেরকে বলা হয় Fixed/Non-modifiable Risk Factor। এগুলো হল-
ক) ক্রমবর্ধিষ্ণু বয়স
খ) লিঙ্গ (পুরুষে হওয়ার সম্ভাবনা মহিলাদের তুলনা বেশী)
গ) জাত (আফ্রো-ক্যারিবিয়ান> এশীয়>ইউরোপীয়)
ঘ) ইতিপুর্বে রক্তনালীতে ঘটে যাওয়া কোন রোগ যেমন- মায়োকার্ডিয়াল ইনফার্কশন (Myocardial Infarction), স্ট্রোক নিজেই
ঙ) বংশীয়/পরিবারে ঘটে এসেছে ইতিপূর্বে এরকম অর্থাৎ উত্তরাধিকার সূত্র

২। যে ঝুঁকিগুলোকে আপনি নিজের নিয়ন্ত্রনে রাখতে পারবেন। এদেরকে বলা হয় Modifiable Risk Factor। এগুলো হল-
ক) রক্তচাপ (Blood Pressure) [১১০/৬০ থেকে ১৪০/৯০ মিমি মার্কারীর মধ্যে রাখা]
খ) ধুমপান [অবশ্যই বন্ধ করতে হবে]
গ) রক্তে চর্বির পরিমান নিয়ন্ত্রন [নিয়মিত ব্যায়াম যেমন হাটা, সাঁতার, দৌড়, জগিং ইত্যাদি; নিম্ন চর্বিযুক্ত খাবার গ্রহণ-বর্জন/ প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শে ওষুধ গ্রহন করা]
ঘ) হৃদরোগ (যদি থাকে তা চিকিৎসকের পরামর্শে ওষুধ গ্রহন করে নিয়ন্ত্রনে রাখা)
ঙ) ডায়াবেটিস (অবশ্যই অবশ্যই নিয়ন্ত্রন করতে হবে)
চ) মদ্যপান (বন্ধ করতে হবে)
ছ) ইস্ট্রোজেন হরমোন আছে এমন ওষুধ যেমন- জন্ম বিরতিকরন পিল, HRT থেরাপী
জ) পলিসাইথেমিয়া (রক্তে প্রয়োজনের অতিরিক্ত লোহিত রক্ত কণিকা থাকে এমন একটি রোগ)

Non-modifiable ঝুকিগুলো আপনি কমাতে পারবেননা, তা নিয়ে মাথা না ঘামিয়ে যেগুলো আপনি নিয়ন্ত্রন করতে পারছেন সেগুলোকে ভালভাবে নিয়ন্ত্রনে রাখুন। বেপরোয়া, সেচ্ছাচারি জীবন পদ্ধতি পরিহার করে সুনিয়ন্ত্রিত জীবন আপনার হায়াত থাকা পর্যন্ত আপনাকে সুস্থ রাখবে।

রোগটা নির্ণয়ের ও রোগীর সামগ্রিক অবস্থা বোঝার জন্য কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়। এগুলোর সম্পর্কে কিছু ধারনা রাখা যাক-

কোন ধরণের স্ট্রোক তা সঠিকভাবে নির্ণয় ও মস্তিষ্কের কোন কোন অঞ্চল ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে তা বোঝার জন্য-
১। Computed tomography scanning (CT scan)
২। Magnetic Resonance Imaging (MRI)

রোগীর রক্ত সংগ্রহ করে তা থেকে কিছু পরীক্ষা করা হয়। যেমনঃ-
১। ডায়াবেটিসের জন্য রক্তে শর্করা/চিনি/শ্যুগার এর পরিমান জানার জন্য করা হয় Random blood Sugar (RBS)
২। রক্তের চর্বির পরিমান দেখার জন্য Serum triglyceride & cholesterol
৩। রক্তকণিকার পরিমান জানার জন্য Full Blood Count বা Complete blood count (CBC)
৪। রক্তনালিতে কোন সংক্রমনের সন্দেহ থাকলে Erythrocyte Sedimentation Rate (ESR), Antineutrophil cytoplasmic antibody (ANCA) টেস্ট দুইটি করা হয়।
৫। হৃদপিন্ডের অবস্থা জানার জন্য, তাতে কোন ত্রুটি আছে কিনা তা দেখার জন্য Electrcardiograpy (ECG), Echocardiography (Echo/ইকো) করা হয়।

এছাড়াও রোগীর স্ট্রোকের বাইরে যদি অন্য কোন রোগ বা জটিলতা থেকে থাকে, সেগুলো সম্পর্কে বিভিন্ন পরীক্ষা করা হয়। যেমনঃ Serum electrolytes, Lumbar puncture, Duplex ultrasound ইত্যাদি।

এতক্ষন যা পড়লেন, তাতে স্ট্রোক সম্পর্কে আপনি মোটামুটি জেনে গেছেন। আপনার বন্ধু, আপনার বাবা, মা, ভাই-বোন বা কোন আত্মীয়ের, কোন কলিগ, প্রতিবেশী বা যে কেউ আপনার আসে পাশে উপোরোক্ত লক্ষনগুলো প্রকাশ করলে দ্রুত তাকে হাসপাতালে নিবেন।

আর জরুরী কতগুলো বিষয় অবশ্যই অবশ্যই মনে রাখতে হবে। তাহলে স্ট্রোকের পাশাপাশি রোগীর নতুন করে কোন জটিলতা সৃষ্টি হবে না। জেনে রাখুন-

১। ঘটনা আকস্মিকতায় কি করবো কোথায় যাবো, মাথায় আসে না। যে কোন জরুরীবিভাগ সম্বলিত হাসপাতালের জরুরী বিভাগে যাবেন।

২। রোগীকে এম্বুলেন্স বা গাড়িতে যদি শুইয়ে আনার ব্যবস্থা থাকে তবে তাকে অবশ্যই যেকোন দিকে কাত করে শুইয়ে আনবেন। নাহলে, অবশ হয়ে থাকা জিহ্বা পেছনে পড়ে শাসনালী আটকে রোগী মারা যেতে পারে। পাকস্থলিতে থাকা খাবার উঠে শাসনালীতে চলে যেতে পারে।

৩। রোগীর আগের থেকে কোন রোগ যেমন হাপানি, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ আছে কিনে জেনে রাখুন বা যিনি জানেন পারলে তাকে সাথে আনুন। সেগুলোর কাগজপত্র থাকলে সাথে রাখুন।

৪। একজন রোগীর সঙ্গে দুই/তিনজন যাবেন। পরিবারের ১০/১৫ জন নিয়ে গিয়ে হাসপাতালে ভীড় জমাবেন না। সাথে গেলেও ২/৩ জনের বেশী ভিতরে যাবেন না। তাতে চিকিৎসকদের চিকিৎসা দিতে সমস্যা হয়। অন্য রোগীদের কষ্ট বৃদ্ধি পায়। ইনফেকশন হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। সুস্থ ব্যক্তি হাসপাতালের রোগীদের কাছ থেকেও সংক্রমিত হয়ে যেতে পারে। ব্যাক ফায়ার। কথায় আছে-“অধিক সন্ন্যাসীতে গাজন নষ্ট”।

৪। চিকিৎসকের পরামর্শ মোতাবেক রোগীর সেবা প্রদানের ব্যবস্থা করবেন। হাসপাতালে থাকাকালীন রোগীকে যদি নাকে নল দিয়ে বা মুখে যেভাবেই খাবার খেতে দেওয়া হোক তাকে হেলান দিয়ে বসিয়ে খাওয়াতে হবে। কখনোই কোন অবস্থাতেই শুয়ে খাওয়ানো যাবে না। খাওয়ানো শেষে সাথে সাথে শোয়ায়ে দেওয়া যাবে না। এসবের কারনে খাবার সরাসরি শ্বাসনালীতে অথবা পাকস্থলি-অন্ননালী থেকে খাবার উঠে শ্বাসনালীতে চলে যেতে পারে। ফলাফল নিউমোনিয়া এবং শ্বাস জনিত বিভিন্ন জটিলতা। রোগী স্ট্রোকের জন্য যতটা না বেশী ক্ষতি হয়, এরকম জটিলতার কারণে আরো বেশি ক্ষতি হয়, এমনকি মৃত্যুও ঘটতে পারে।

৫। রোগীকে রিলিজ দেওয়ার সময় যে ওষুধগুলো দেওয়া হয় তা
সময় মত,
পরিমানমত
রোজ
খাওয়াতে হবে।

৬। যে ওষুধগুলো চলবে/রোজ খেয়ে যেতে বলা হয়, তা চলবে, কোন অবস্থাতে যেন তা বাদ না পড়ে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। রোগীকে, রোগীর বাসার লোককেও সে ব্যাপারে সচেতন করতে হবে।

৭। উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ কখনোই বন্ধ করা যাবে না। যদি কোন কারণে বন্ধ করাও হয় তবে রক্তচাপ নিয়মিত পরিমাপ করতে হবে। রক্তচাপ বাড়ার সাথে সাথে আবার ওষুধ শুরু করতে হবে। যদি নিয়ন্ত্রনে না আসে, তবে চিকিৎসকের সরনাপন্ন হতে হবে।

৮। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রনে রাখতে হবে।

৯। ফিজিওথেরাপী যা দেওয়া হবে, তা নিয়ম মত নিতে হবে, সাথে বাসায় যে ব্যায়াম দেওয়া হবে তা নিয়মিত চর্চা করতে হবে। ফলে সর্বোচ্চ কার্যক্ষমতা পর্যন্ত পৌছানো সম্ভব হবে।

১০। যেটুকু প্যারালাইসিস/পক্ষাঘাতগ্রস্থতা/অবশাঙ্গতা থেকে যাবে সেটুকু নিউরোন কোষ মরে যাওয়ার ফলে হয়। এটাকে মেনে নিতে হবে। রোগীকে, রোগীর স্বজনকে। তাকে অবহেলা করা যাবে না। তাকে সহযোগীতা করতে হবে। তার মনোবল অটুট রাখতে হবে। সাথে নিজেদের মনোবলও শক্ত রাখতে হবে।

ধন্যবাদ।

আল্লাহ আমাদেরকে সুস্থ রাখুন। আমিন।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.